রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। কিন্তু জাতীয় পার্টিকে এখনো এই সংলাপে ঢাকা হয়নি। জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতৃত্বের পক্ষ থেকে দলটির ব্যাপারে আপত্তি আছে বলে জানা গেছে।
আপত্তির পেছনে যেসব অভিযোগ পাওয়া গেছে তা হলো, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সহযোগী ছিল জাপা। এমন প্রেক্ষাপটে সংলাপে জাপার ডাক পাওয়ার বিষয়টি অনিশ্চিত। জানা যায়, সংলাপে জাপাকে ডাকা হবে কি না, সে ব্যাপারে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি অন্তর্বর্তী সরকার।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তৃতীয় দফায় সংলাপ করছেন। গত শনিবার প্রথম দিনের সংলাপে অংশ নেয় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, গণ অধিকার পরিষদসহ পাঁচটি দল এবং গণতন্ত্র মঞ্চসহ তিনটি জোট।
অন্তর্বর্তী সরকারের একজন উপদেষ্টা গণমাধ্যমকে জানান, দুর্গাপূজার পর ১৯ অক্টোবর বাকি দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ হবে। সেদিনের সংলাপের জন্য অলি আহমদের নেতৃত্বাধীন এলডিপি, বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা ১২–দলীয় জোট, বাংলাদেশ জাসদ ও আন্দালিব রহমান পার্থর নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ জাতীয় পার্টিকে আমন্ত্রণ জানানো হবে। ছোট আরও দু–একটি দল আমন্ত্রণ পেতে পারে। তবে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ ও ১৪–দলীয় জোটকে সংলাপে ডাকা হবে না। এমনকি আওয়ামী লীগের মিত্র বা দোসর হিসেবে পরিচিতি কোনো দলের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকার আলোচনায় বসবে না। এটি সরকারের নীতিগত অবস্থান বলে সূত্রগুলো বলছে।
তবে জাতীয় পার্টি দাবি করেছে তারা জুলাই বিপ্লবে পক্ষে ছিল। আজ সোমবার (৭ সেপ্টেম্বর) জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানীস্থ কার্যালয় মিলনায়তনে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক মণ্ডলীর সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে দলটির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেন, আমরা সবাই এই ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় সমর্থন দিয়েছে। আমাদের দলের নেতাকর্মীরাও রক্ত
গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় অংশ নেওয়ার কারণে আমাদের দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে রংপুরে মামলা হয়েছে পার্টির পদ পদবি উল্লেখ করে। আমাদের নেতাকর্মীরা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যোগ দেওয়ার কারণে গ্রেপ্তার হয়ে হাজতবাস করেছে। ১ জুলাই ছাত্ররা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন শুরু করলে, আমি ৩ জুলাই সংসদে তখনকার প্রধানমন্ত্রীর সামনে ছাত্র আন্দোলনে সমর্থন দিয়ে বক্তৃতা করেছি। বক্তৃতায় আমি বলেছি, ছাত্রদের এই আন্দোলন যৌক্তিক। চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংবিধান পরিপন্থী। বৈষম্যের বিরুদ্ধে দেশের মানুষ যেকোনো ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত।
তিনি বলেন, ৬ জুলাই গাজীপুরে জাতীয় পার্টির কাউন্সিলে বক্তৃতায় আমি বলেছি, চাকরিতে কোটা পদ্ধতি মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা যুদ্ধের চেতনা পরিপন্থী। তখন আমি বলেছিলাম, চাকরিতে কোটা পদ্ধতি হচ্ছে বৈষম্য। আমাদের শহীদ মিনার হচ্ছে বৈষম্যের বিরুদ্ধে জীবন দেওয়ার প্রতীক। আমি ছাত্রদের শহীদ মিনারে গিয়ে শপথ নিতে বলেছি। যখন ছাত্র আন্দোলনের ৬ সমন্বয়ককে আটক করা হলো, আমরা তাদের মুক্তি দাবি করেছি। ছাত্র আন্দোলনে যখন গুলি চালানো হলো, আমরা এর প্রতিবাদ করেছি। প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করেছি আমরা।