শিরোনাম :
Logo হাতপাখা বিজয়ী হলে জনগনের বাজেটের  টাকা জনগণের উন্নয়নে খরচ হবে – মানসুর আহমদ সাকী Logo ফুটপাতে ভাত বিক্রেতা ভাইরাল চাঁদপুরের মিজানের সম্পত্তি ফিরে পেতে মানববন্ধন Logo খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দিলো প্রাণ-আরএফএল Logo খুবির ওংকার শৃণুতা’র নেতৃত্বে খায়রুন নাহার ও কৌশিক Logo চর্যাপদ সাহিত্য একাডেমি ও ইয়ূথ ফোরামের উদ্যোগে কবর’ কবিতার শতবর্ষ উদযাপন Logo ইবির সাবেক প্রক্টরের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল Logo একটি চলাচলের রাস্তা বদলে দিতে পারে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দৈনন্দিন জীবন,  শিক্ষার্থীদের নিরাপদ যাতায়াতের দাবি Logo সিরাজগঞ্জে মিথ্যা সংবাদ প্রচারে ডিলারশীপ বাতিলের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ Logo খুবিতে চতুর্থ নৈয়ায়িক ন্যাশনালস চ্যাম্পিয়ন যবিপ্রবি Logo রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু

কখন-কোথায় হবে ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরীর জানাজা ও দাফন

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০৯:২১:৩৬ পূর্বাহ্ণ, শনিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৪
  • ৭৩৫ বার পড়া হয়েছে

প্রয়াত সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর প্রথম নামাজে জানাজা শনিবার (৫ অক্টোবর) সকাল ৮টায় তার নিজের প্রতিষ্ঠিত উত্তরা মহিলা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে অনুষ্ঠিত হয়।

দ্বিতীয় নামাজে জানাজা বাদ জোহর বারিধারা কূটনৈতিক এলাকার ৮ নম্বর সড়কে অবস্থিত বায়তুল আতিক জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে।

রোববার (৬ অক্টোবর) সকাল ১০টায় মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর স্টেডিয়ামে তৃতীয় নামাজে জানাজা এবং বাদ জোহর গ্রামের বাড়ি মজিদপুর দয়হাটায় চতুর্থ নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।

প্রয়াত সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরীর প্রেস সচিব জাহাঙ্গীর আলম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

অধ্যাপক ডা. একিউএম বরুদ্দোজ্জা চৌধুরী শুক্রবার মধ্যরাতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ২ মেয়ে এবং নাতি-নাতনীসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

গত ২ অক্টোবর সকালে ফুসফুসে সংক্রমণ হওয়ায় বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে উত্তরা মহিলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেদিন তার মেয়ে ডা. শায়লা চৌধুরী জানান যে, তার বাবা আগে থেকেই স্কিমিক হার্ট ডিজিজেস ভুগছিলেন।

২০০১ সালের নভেম্বর থেকে পরের বছরের জুন পর্যন্ত দেশের ১২তম রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি।

১৯৩০ সালের ১১ অক্টোবর কুমিল্লা শহরে জন্মগ্রহণ করেন বদরুদ্দোজা চৌধুরী। ১৯৪৭ সালে ঢাকার বিখ্যাত স্কুল সেন্ট গ্রেগরি থেকে প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিকুলেশন এবং ১৯৪৯ সালে ঢাকা কলেজ থেকে প্রথম বিভাগে আইএসসি পাস করেন। তিনি ১৯৫৪-৫৫ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি লাভ করেন। যুক্তরাজ্যের তিনটি রয়েল কলেজ অব ফিজিশিয়ানস লন্ডন, এডিনবার্গ ও গ্লাসগো থেকে নির্বাচিত ফেলো-এফ.আর.সি.পি এবং বাংলাদেশের (সম্মানিত) এফ.সি.পি.এস ডিগ্রিও অর্জন করেন তিনি।

রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম নিলেও সত্তরের দশকের শেষ দিকের আগে তাকে প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে দেখা যায় নি। তার বাবা অ্যাডভোকেট কফিল উদ্দিন চৌধুরী কৃষক প্রজা পার্টির সহ-সভাপতি, যুক্তফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক ও তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন। সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের অনুরোধে তিনি রাজনীতিতে আসেন। ১৯৭৭ সালে জিয়াউর রহমান সরকারে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা হিসেবে যোগ দেন। ১৯৭৯ সালে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব হিসেবে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন বদরুদ্দোজা চৌধুরী।

মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর থেকে ১৯৭৯ সালে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং কেবিনেট মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। জিয়াউর রহমানের সরকারের উপ-প্রধানমন্ত্রীর পদেও ছিলেন তিনি। ১৯৯১ সালের পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি দ্বিতীয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং প্রথমে শিক্ষামন্ত্রী ও পরে সংসদ উপনেতা হন। সপ্তম জাতীয় সংসদে তিনি বিরোধীদলীয় উপনেতার দায়িত্ব পালন করেন।

২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভের পর সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবেও কিছুদিন দায়িত্ব পালন করেন তিনি। পরে একই বছরের ১৪ নভেম্বর বিএনপির মনোনয়নে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী।

২০০২ সালের ২১ জুন রাষ্ট্রপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি। প্রেসিডেন্ট পদ থেকে পদত্যাগের পর ড. চৌধুরী বিএনপি থেকেও পদত্যাগ করেন। ২০০৪ সালের ৮ মে বিকল্পধারা বাংলাদেশ নামে একটি রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত দলটির সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন তিনি।

১৯৯৩ সালে তিনি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়া জনপ্রিয় টিভি অনুষ্ঠান ‘আপনার ডাক্তার’-এর উপস্থাপক ছিলেন বদরুদ্দোজা চৌধুরী। শ্রেষ্ঠ টিভি উপস্থাপক হিসেবে তিনি ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশন পুরস্কারও লাভ করেন তিনি।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

হাতপাখা বিজয়ী হলে জনগনের বাজেটের  টাকা জনগণের উন্নয়নে খরচ হবে – মানসুর আহমদ সাকী

কখন-কোথায় হবে ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরীর জানাজা ও দাফন

আপডেট সময় : ০৯:২১:৩৬ পূর্বাহ্ণ, শনিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৪

প্রয়াত সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর প্রথম নামাজে জানাজা শনিবার (৫ অক্টোবর) সকাল ৮টায় তার নিজের প্রতিষ্ঠিত উত্তরা মহিলা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে অনুষ্ঠিত হয়।

দ্বিতীয় নামাজে জানাজা বাদ জোহর বারিধারা কূটনৈতিক এলাকার ৮ নম্বর সড়কে অবস্থিত বায়তুল আতিক জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে।

রোববার (৬ অক্টোবর) সকাল ১০টায় মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর স্টেডিয়ামে তৃতীয় নামাজে জানাজা এবং বাদ জোহর গ্রামের বাড়ি মজিদপুর দয়হাটায় চতুর্থ নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।

প্রয়াত সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরীর প্রেস সচিব জাহাঙ্গীর আলম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

অধ্যাপক ডা. একিউএম বরুদ্দোজ্জা চৌধুরী শুক্রবার মধ্যরাতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ২ মেয়ে এবং নাতি-নাতনীসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

গত ২ অক্টোবর সকালে ফুসফুসে সংক্রমণ হওয়ায় বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে উত্তরা মহিলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেদিন তার মেয়ে ডা. শায়লা চৌধুরী জানান যে, তার বাবা আগে থেকেই স্কিমিক হার্ট ডিজিজেস ভুগছিলেন।

২০০১ সালের নভেম্বর থেকে পরের বছরের জুন পর্যন্ত দেশের ১২তম রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি।

১৯৩০ সালের ১১ অক্টোবর কুমিল্লা শহরে জন্মগ্রহণ করেন বদরুদ্দোজা চৌধুরী। ১৯৪৭ সালে ঢাকার বিখ্যাত স্কুল সেন্ট গ্রেগরি থেকে প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিকুলেশন এবং ১৯৪৯ সালে ঢাকা কলেজ থেকে প্রথম বিভাগে আইএসসি পাস করেন। তিনি ১৯৫৪-৫৫ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি লাভ করেন। যুক্তরাজ্যের তিনটি রয়েল কলেজ অব ফিজিশিয়ানস লন্ডন, এডিনবার্গ ও গ্লাসগো থেকে নির্বাচিত ফেলো-এফ.আর.সি.পি এবং বাংলাদেশের (সম্মানিত) এফ.সি.পি.এস ডিগ্রিও অর্জন করেন তিনি।

রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম নিলেও সত্তরের দশকের শেষ দিকের আগে তাকে প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে দেখা যায় নি। তার বাবা অ্যাডভোকেট কফিল উদ্দিন চৌধুরী কৃষক প্রজা পার্টির সহ-সভাপতি, যুক্তফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক ও তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন। সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের অনুরোধে তিনি রাজনীতিতে আসেন। ১৯৭৭ সালে জিয়াউর রহমান সরকারে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা হিসেবে যোগ দেন। ১৯৭৯ সালে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব হিসেবে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন বদরুদ্দোজা চৌধুরী।

মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর থেকে ১৯৭৯ সালে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং কেবিনেট মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। জিয়াউর রহমানের সরকারের উপ-প্রধানমন্ত্রীর পদেও ছিলেন তিনি। ১৯৯১ সালের পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি দ্বিতীয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং প্রথমে শিক্ষামন্ত্রী ও পরে সংসদ উপনেতা হন। সপ্তম জাতীয় সংসদে তিনি বিরোধীদলীয় উপনেতার দায়িত্ব পালন করেন।

২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভের পর সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবেও কিছুদিন দায়িত্ব পালন করেন তিনি। পরে একই বছরের ১৪ নভেম্বর বিএনপির মনোনয়নে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী।

২০০২ সালের ২১ জুন রাষ্ট্রপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি। প্রেসিডেন্ট পদ থেকে পদত্যাগের পর ড. চৌধুরী বিএনপি থেকেও পদত্যাগ করেন। ২০০৪ সালের ৮ মে বিকল্পধারা বাংলাদেশ নামে একটি রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত দলটির সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন তিনি।

১৯৯৩ সালে তিনি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়া জনপ্রিয় টিভি অনুষ্ঠান ‘আপনার ডাক্তার’-এর উপস্থাপক ছিলেন বদরুদ্দোজা চৌধুরী। শ্রেষ্ঠ টিভি উপস্থাপক হিসেবে তিনি ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশন পুরস্কারও লাভ করেন তিনি।