শিরোনাম :
Logo রাঙ্গামাটিতে কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য আহরণের নিষেধাজ্ঞা বৃদ্ধি Logo বিমান বিধ্বস্তে মারা যাওয়া আট অজ্ঞাতনামা মৃত দেহের ডিএনএ প্রোফাইল তৈরির অনুমতি Logo এমপি প্রার্থী মানসুর আহমদ সাকী’র পক্ষে প্রচারণা ও লিফলেট বিতরণ Logo বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত শহীদদের কবর জিয়ারতে জাতীয় ছাত্র সমাজ নেতৃবৃন্দ Logo সিরাজগঞ্জে পারফরমেন্স বেজড গ্রান্টস পুরস্কার বিতরণ Logo রাকসুর তপশিল ঘোষণা, নির্বাচন ১৫ সেপ্টেম্বর Logo শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে পালাখাল উচ্চ বিদ্যালয়ে অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত Logo “লাশ লাগলে লাশ নে, রংপুরে বাজেট দে” : বেরোবি শিক্ষার্থীরা Logo কয়রায় নৌবাহিনীর ফ্রী মেডিকেল ক্যাম্প Logo পলাশবাড়ী উপ: স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত নার্সিং সুপারভাইজারের টিকটক ভিডিও ভাইরাল: সমালোচনার ঝড়

ড. ইউনূস-ব্লিঙ্কেন বৈঠক: বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়াবে যুক্তরাষ্ট্র

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০৭:২৮:২১ পূর্বাহ্ণ, শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ৭৪২ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের সবচেয়ে বড় উৎস যুক্তরাষ্ট্র এবং আগামী বছরগুলোতে তা আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। এছাড়া বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনা, রোহিঙ্গা সংকট, সন্ত্রাস দমন, শ্রমবিষয়ক সংকটসহ বিভিন্ন বিষয়ে সহায়তা করতে প্রস্তুত দেশটি।

গতকাল বৃহস্পতিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে ১১টায় নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে একটি হোটেলে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে এসব কথা বলেন ব্লিঙ্কেন।  বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ব্লিঙ্কেন জানান, ওয়াশিংটন বাংলাদেশের পুনর্গঠনে সহায়তার জন্য একসঙ্গে কাজ করবে। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূসের প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘অসাধারণ’ শ্রদ্ধা রয়েছে। এছাড়া সংকটময় সময়ে দেশের নেতৃত্ব গ্রহণ করায় ড. ইউনূসের প্রশংসাও করে যুক্তরাষ্ট্র।

বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূস বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে দেশ পুনর্গঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল এবং তিনি দেশের অর্থনীতি এবং এর প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঠিক করার জন্য বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ এবং ইউএসএআইডি’র মতো বহুপাক্ষিক সংস্থার সহায়তা চেয়েছিলেন।

সরকার প্রধান ব্লিঙ্কেনকে জানান, দেশের সব জনগণ তার সরকারের পেছনে ‘একত্রিত’ এবং যত দ্রুত সম্ভব দেশকে পুনর্গঠনের জন্য উন্মুখ।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, দুর্নীতি দমন ও আইন-শৃঙ্খলার উন্নতি সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। গত সরকারের শাসনামলে দেশ দুর্নীতির সাগরে তলিয়ে গিয়েছিল। দেশ থেকে চুরি করা বিলিয়ন ডলার ফেরত পেতে আমরা মার্কিন সমর্থন প্রত্যাশা করছি। পূর্ববর্তী সরকারের সাথে জড়িত ব্যক্তিরা বিদেশে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করেছিলেন।

প্রেক্ষিতে ব্লিঙ্কেন এ ব্যাপারে মার্কিন সরকারের সহায়তার প্রস্তাব দেন, আমরা সাহায্য করতে পারলে খুশি। স্থানীয় দুর্নীতি মোকাবিলায় আমাদের অনেক দক্ষতা রয়েছে, যোগ করেন ব্লিঙ্কেন।

এছাড়া বাংলাদেশকে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে এবং সংস্কার ও সুষ্ঠু নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন থাকবে বলেও জানান সেক্রেটারি অব স্টেট।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শ্রমের মান উন্নয়ন সরকারের শীর্ষ লক্ষ্যগুলোর মধ্যে একটি, কারণ এটি দেশে আরও বিদেশি সরাসরি বিনিয়োগের পথ প্রশস্ত করবে।

কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক গৃহীত সংস্কার, দুর্নীতি বিরোধী পদক্ষেপ, বিদেশে লুকিয়ে রাখা বাংলাদেশের অর্থ ফেরত, শ্রম সমস্যা, বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং আইন-শৃঙ্খলা আলোচনায় স্থান পেয়েছে।

কূটনৈতিক সূত্রে আরও জানা গেছে, ইউনূস-ব্লিঙ্কেন বৈঠকে জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থান এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতার সময় নৃশংসতার তদন্তকারী জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

ড. ইউনূস বলেন, তার সরকার বাকস্বাধীনতা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে সমুন্নত রেখেছে। মিডিয়াকে ‘যতটা সম্ভব তাদের’ সমালোচনা করতে বলা হয়েছে।

এছাড়া সরকার দেশে জাতিগত সম্প্রীতি বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, পুরো বাংলাদেশ একটি বড় পরিবার। আমাদের মধ্যে মতভেদ আছে। কিন্তু আমরা শত্রু নই।

বৈঠকে এ দুই নেতা রোহিঙ্গা সংকট নিয়েও আলোচনা করেন। প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের শিবিরে বেড়ে ওঠা লক্ষাধিক তরুণ রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য মার্কিন সমর্থন চেয়েছেন।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

রাঙ্গামাটিতে কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য আহরণের নিষেধাজ্ঞা বৃদ্ধি

ড. ইউনূস-ব্লিঙ্কেন বৈঠক: বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়াবে যুক্তরাষ্ট্র

আপডেট সময় : ০৭:২৮:২১ পূর্বাহ্ণ, শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের সবচেয়ে বড় উৎস যুক্তরাষ্ট্র এবং আগামী বছরগুলোতে তা আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। এছাড়া বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনা, রোহিঙ্গা সংকট, সন্ত্রাস দমন, শ্রমবিষয়ক সংকটসহ বিভিন্ন বিষয়ে সহায়তা করতে প্রস্তুত দেশটি।

গতকাল বৃহস্পতিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে ১১টায় নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে একটি হোটেলে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে এসব কথা বলেন ব্লিঙ্কেন।  বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ব্লিঙ্কেন জানান, ওয়াশিংটন বাংলাদেশের পুনর্গঠনে সহায়তার জন্য একসঙ্গে কাজ করবে। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূসের প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘অসাধারণ’ শ্রদ্ধা রয়েছে। এছাড়া সংকটময় সময়ে দেশের নেতৃত্ব গ্রহণ করায় ড. ইউনূসের প্রশংসাও করে যুক্তরাষ্ট্র।

বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূস বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে দেশ পুনর্গঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল এবং তিনি দেশের অর্থনীতি এবং এর প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঠিক করার জন্য বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ এবং ইউএসএআইডি’র মতো বহুপাক্ষিক সংস্থার সহায়তা চেয়েছিলেন।

সরকার প্রধান ব্লিঙ্কেনকে জানান, দেশের সব জনগণ তার সরকারের পেছনে ‘একত্রিত’ এবং যত দ্রুত সম্ভব দেশকে পুনর্গঠনের জন্য উন্মুখ।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, দুর্নীতি দমন ও আইন-শৃঙ্খলার উন্নতি সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। গত সরকারের শাসনামলে দেশ দুর্নীতির সাগরে তলিয়ে গিয়েছিল। দেশ থেকে চুরি করা বিলিয়ন ডলার ফেরত পেতে আমরা মার্কিন সমর্থন প্রত্যাশা করছি। পূর্ববর্তী সরকারের সাথে জড়িত ব্যক্তিরা বিদেশে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করেছিলেন।

প্রেক্ষিতে ব্লিঙ্কেন এ ব্যাপারে মার্কিন সরকারের সহায়তার প্রস্তাব দেন, আমরা সাহায্য করতে পারলে খুশি। স্থানীয় দুর্নীতি মোকাবিলায় আমাদের অনেক দক্ষতা রয়েছে, যোগ করেন ব্লিঙ্কেন।

এছাড়া বাংলাদেশকে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে এবং সংস্কার ও সুষ্ঠু নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন থাকবে বলেও জানান সেক্রেটারি অব স্টেট।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শ্রমের মান উন্নয়ন সরকারের শীর্ষ লক্ষ্যগুলোর মধ্যে একটি, কারণ এটি দেশে আরও বিদেশি সরাসরি বিনিয়োগের পথ প্রশস্ত করবে।

কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক গৃহীত সংস্কার, দুর্নীতি বিরোধী পদক্ষেপ, বিদেশে লুকিয়ে রাখা বাংলাদেশের অর্থ ফেরত, শ্রম সমস্যা, বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং আইন-শৃঙ্খলা আলোচনায় স্থান পেয়েছে।

কূটনৈতিক সূত্রে আরও জানা গেছে, ইউনূস-ব্লিঙ্কেন বৈঠকে জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থান এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতার সময় নৃশংসতার তদন্তকারী জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

ড. ইউনূস বলেন, তার সরকার বাকস্বাধীনতা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে সমুন্নত রেখেছে। মিডিয়াকে ‘যতটা সম্ভব তাদের’ সমালোচনা করতে বলা হয়েছে।

এছাড়া সরকার দেশে জাতিগত সম্প্রীতি বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, পুরো বাংলাদেশ একটি বড় পরিবার। আমাদের মধ্যে মতভেদ আছে। কিন্তু আমরা শত্রু নই।

বৈঠকে এ দুই নেতা রোহিঙ্গা সংকট নিয়েও আলোচনা করেন। প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের শিবিরে বেড়ে ওঠা লক্ষাধিক তরুণ রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য মার্কিন সমর্থন চেয়েছেন।