চুয়াডাঙ্গার স্থানীয় বাজারে সরবরাহ কমেছে আমদানি নির্ভর সব ধরনের বিদেশি ফলের। ডলারের দাম ওঠানামা আর ভারত থেকে চালান না আসায় সরবরাহ কমেছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। এজন্য বাজারে দাম বেড়েছে আপেল, কমলা, মাল্টা, আঙুর, বেদানা, মাল্টাসহ বিভিন্ন রকমের ফলের।
গতকাল শুক্রবার চুয়াডাঙ্গার ফল বাজার ঘুরে দেখা যায়, অন্যান্য সময়ের তুলনায় চুয়াডাঙ্গার বাজারে ফলের যোগান তলানীতে নেমেছে। দোকানে দোকানে হরেক রকমের ফলের দেখা মিলছে না সেভাবে। আবার সব প্রকার ফলের দাম আকাশ ছোঁয়া। চায়না থেকে আমদানি করা আপেলের দাম কেজিতে ৩০ টাকা বেড়ে ৩৪০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। সাউথ আফ্রিকা থেকে আমদানি করা আপেল কেজিতে ৬০ টাকা বেড়ে ৩৬০ টাকায় দাঁড়িয়েছে।
ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল কমলা কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে চায়না কমলা ৩৪০ টাকা। আর সাউথ আফ্রিকার কমলার দাম কেজিতে ৫০ টাকা বেড়ে ৩৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে সব সময় চাহিদা থাকে ক্রেতাদের লাল ও সাদা আঙুরের। লাল আঙুরের দাম কেজিতে ৮০ টাকা বেড়ে ৪৮০ টাকা আর সাদা আঙুর দামে সবার ৫০ টাকা বেড়ে ৬০০ টাকা হাঁকাচ্ছে বিক্রেতারা। চুয়াডাঙ্গার মাটিতে ড্রাগন চাষ হলেও দাম একেবারে কম নয়। কেজিতে এই ফলের দাম ৩০ টাকা বেড়ে ১৫০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। বাজারে এখন দেখা মিলছে সাউথ আফ্রিকার মাল্টার। কেজিতে ৬০ টাকা বেড়ে ৩২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে মাল্টা। সব প্রকার ফলের দাম পিছনে ফেলে আকাশ ছুঁয়েছে বেদানা। পাশের দেশ ভারত থেকে আমদানি নির্ভর এই ফল কেজিতে ২৫০ টাকা বেড়ে হয়ে ৬৫০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। আবার বাজার ঘুরে খুব একটা দেখা মিলবে না এই বেদানা ফলের। এছাড়া, ৫০ টাকার পিসের আনারস এখন ৮০ টাকা। গরমের স্বস্তির ডাব প্রতি পিসে ২০ টাকা বেড়ে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ফল ব্যবসায়িদের যুক্তি, এখন ফলের মৌসুম শেষ দিক। পাশের দেশ ভারত থেকে কোন ফল দেশের স্থানীয় বাজারে ঢুকছে না। আবার ডলারের দাম ওঠানাম করছে। সেভাবে সরবরাহ না থাকায় বিদেশি ফলের যোগান কমছে। এজন্য পাইকারি পর্যায়ে সব ধরনের ফলের দাম বাড়তি। তবে শীত মৌসুমের আগেই ফলের দাম কমার সম্ভাবনা রয়েছে।
ফল কিনতে আসা ক্রেতা জামান মিয়া বলেন, এক কেজি ড্রাগন কিনলাম। দাম ১৫০ টাকা। আর অন্যান্য ফলের দামের কাছে যাওয়াই যাচ্ছে না। এভাবে ফলের দাম বাড়তে থাকলে তো ফল খাওয়াই বাদ দিতে হবে। তবে সব থেকে দাম বেশি বেদানার। যা আমাদের সামর্থের বাইরে চলে যাচ্ছে।বাজারে দেখা মিললো রহিমা বেগম নামে আরেক ক্রেতার। তিনি ফল কিনে নিয়ে যাবে সদর হাসপাতালে রোগী দেখতে। তবে এই ক্রেতার আপেল আর কমলার দাম শুনে নাজেহাল অবস্থা। চোখ পড়ে গেল টাকার ব্যাগে। ফলের দাম শুনেই টাকাই হবে কি না তা নিয়ে পড়েছে দুশ্চিন্তায়। এসময় তিনি বলেন, এক কেজি কমলার দাম যদি ৪০০ টাকার কাছাকাছি হয়, তাহলে আর অন্য ফল কিনবো কিভাবে। সুতরাং নিত্যপণ্যের দামের সাথে ফলের দাম পাল্লা দিলে আমরা তো পারবো না। তবে এই মাসের আগের মাসে ফলের এত বেশি দাম ছিল না। এই কয়েকদিন ধরে এই ফলে দাম অনেক বেশি।
এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সজল আহমেদ বলেন, আমদানি কমে যাওয়ায় কিছুটা সংকট দেখা দিয়েছে। তবে যদি কোন ফল ব্যবসায়ী কৃত্রিম সংকটকে কাজে লাগায় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ি ব্যবস্থা নেয়া হবে। সেইসাথে বাজার অভিযান অব্যাহত আছে।