শিরোনাম :
Logo প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ Logo ঢাকায় হামলার প্রতিবাদে চাঁবিপ্রবিতে প্রকৌশল অধিকার আন্দোলনে বিক্ষোভ Logo ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ গঠনে ১১ সদস্যের কমিটি Logo দিনাজপুরের বীরগঞ্জ শহীদ মিনার চত্বরে ২৭ই আগস্ট বুধবার দুপুর ১২ টায় পশ্চিম ভোগডোমায় খেলার মাঠ রক্ষায় মানববন্ধন করেন স্থানীয় জনগণ Logo উল্লাপাড়ায় বিএনপি নেতার ওপর প্রতিপক্ষের হামলার অভিযোগ Logo ঢাকায় প্রকৌশল অধিকার আন্দোলনে যোগ দিতে বাসের ব্যবস্থা করল যবিপ্রবি প্রশাসন Logo আওয়ামী ফ্যাসিস্ট দোষরদের শান্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতাকর্মীরা Logo সাতক্ষীরায় নিখোঁজের ৪ দিন পর রাজমিস্ত্রির অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার Logo সাজিদের হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা Logo চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদে আইনশৃঙ্খলা ও মাসিক সাধারণ সভা

প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ

ঢাকার শাহবাগে প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের ওপর ঘৃণ্য ও ন্যাক্কারজনক হামলার তীব্র প্রতিবাদ এবং বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের ন্যায্য ৩ দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
আজ বুধবার (২৭ আগস্ট) সন্ধ্যা ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক জিয়া মোড় থেকে এক বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে প্রধান ফটকের সামনে গিয়ে শেষ হয়। ‘প্রকৌশল অধিকার আন্দোলন’-এর ব্যানারে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন।
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগানে হামলার প্রতিবাদ ও কোটা সংস্কারের দাবি জানান। উল্লেখযোগ্য স্লোগানগুলোর মধ্যে ছিল— ‘আমার সোনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘প্রকৌশলীর রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’, ‘কোটা না মেধা, মেধা, মেধা’, ‘বুয়েট হামলা কেন, এন্টিরিম জবাব দে’, ‘কোটার নামে বৈষম্য, চলবে না, চলবে না’, ‘এই মুহূর্তে দরকার, কোটা প্রথার সংস্কার’, ‘জনে জনে খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’।
মিছিল শেষে সমাবেশে বক্তারা বলেন, “যদি কোটা রাখতেই হয়, তাহলে চব্বিশের আন্দোলন কেন হয়েছিল? সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার পদে শতভাগ ডিপ্লোমা কোটাধারীদের নিয়োগ দেওয়া হয়। আবার সহকারী প্রকৌশলী পদে ৩৩ শতাংশ পদে প্রমোশনের মাধ্যমে ডিপ্লোমাধারীদের নিয়োগ দেওয়া হয়, যেখানে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের কোনো সুযোগই রাখা হয় না। এই ৯ম গ্রেডে ৩৩ শতাংশ কোটা ভেঙে শিক্ষার্থীদের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।”
তারা আরও বলেন, “যৌক্তিক দাবি নিয়ে আন্দোলন করায় আজ আমাদের ভাইদের রক্তাক্ত করা হয়েছে। যে ছাত্রদের রক্তের উপর দিয়ে আপনারা ইন্টেরিম সরকারে গিয়েছেন, সেই ছাত্রদের আজ আবার রক্তাক্ত হতে হলো কেন? আজকের ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে জবাবদিহি করতে হবে। ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারীদের জন্য ৩৩ শতাংশ কোটা অবশ্যই বাতিল করতে হবে এবং ৯ম গ্রেডে ডিপ্লোমাধারীদের আর স্থান দেওয়া যাবে না। যতদিন পর্যন্ত আমাদের তিন দফা দাবি বাস্তবায়ন না হবে, ততদিন পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।”
সমাবেশে আইসিটি বিভাগের শিক্ষার্থী সাজ্জাদ সৈকত বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে বিএসসি ইঞ্জিনিয়াররা যৌক্তিক ৩টি দাবি নিয়ে আন্দোলন করে আসছে, কিন্তু সরকার এতদিন কোনো কর্ণপাত করেনি। কেন চব্বিশের আন্দোলনের পরে আজ আবার আমাদের আন্দোলন করতে হলো? আমরা মাঝেমধ্যেই বলি, ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়াররা দেশ থেকে চলে যাচ্ছে। কিন্তু দেশে যদি মেধাবী শিক্ষার্থীদের এইভাবে রক্তাক্ত করা হয়, তাহলে তারা কেন দেশেই থাকবে, কীভাবে দেশকে সেবা দেবে? আমি এই ন্যাক্কারজনক হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে যৌক্তিক তিন দফা দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।”
উল্লেখ্য, এর আগে দুপুরে সরকার প্রকৌশল পেশায় বিএসসি ডিগ্রিধারীদের দাবির যৌক্তিকতা যাচাই ও সুপারিশ প্রণয়নের জন্য আট সদস্যের একটি অন্তর্বর্তী কমিটি গঠন করে। তবে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ওই কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করেন এবং নতুন করে পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করেন।
৫ দফা দাবি হলো—
১. প্রকৌশল অধিকার আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে আন্দোলনকারীদের সামনে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে এবং জবাবদিহি করতে হবে।
২. বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রতিনিধিসহ প্রকৌশল অধিকার আন্দোলনের স্টেকহোল্ডারদের অন্তর্ভুক্ত করে গঠিত কমিটিকে অবিলম্বে সংস্কার করতে হবে।
৩. পূর্বে পেশ করা যৌক্তিক ৩ দফা দাবি দ্রুততম সময়ে মেনে নিয়ে নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।
৪. উপদেষ্টা মোহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, আদিলুর রহমান ও সৈয়দ রিজওয়ানা হাসানকে এর আজই লিখিত নিশ্চয়তা দিতে হবে।
৫. পুলিশের হামলায় আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা ব্যয় সরকারকে বহন করতে হবে, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং হামলাকারী পুলিশ সদস্যদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও চাকরিচ্যুত করতে হবে।
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ

প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ

আপডেট সময় : ০৮:৫৯:৫২ অপরাহ্ণ, বুধবার, ২৭ আগস্ট ২০২৫
ঢাকার শাহবাগে প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের ওপর ঘৃণ্য ও ন্যাক্কারজনক হামলার তীব্র প্রতিবাদ এবং বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের ন্যায্য ৩ দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
আজ বুধবার (২৭ আগস্ট) সন্ধ্যা ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক জিয়া মোড় থেকে এক বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে প্রধান ফটকের সামনে গিয়ে শেষ হয়। ‘প্রকৌশল অধিকার আন্দোলন’-এর ব্যানারে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন।
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগানে হামলার প্রতিবাদ ও কোটা সংস্কারের দাবি জানান। উল্লেখযোগ্য স্লোগানগুলোর মধ্যে ছিল— ‘আমার সোনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘প্রকৌশলীর রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’, ‘কোটা না মেধা, মেধা, মেধা’, ‘বুয়েট হামলা কেন, এন্টিরিম জবাব দে’, ‘কোটার নামে বৈষম্য, চলবে না, চলবে না’, ‘এই মুহূর্তে দরকার, কোটা প্রথার সংস্কার’, ‘জনে জনে খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’।
মিছিল শেষে সমাবেশে বক্তারা বলেন, “যদি কোটা রাখতেই হয়, তাহলে চব্বিশের আন্দোলন কেন হয়েছিল? সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার পদে শতভাগ ডিপ্লোমা কোটাধারীদের নিয়োগ দেওয়া হয়। আবার সহকারী প্রকৌশলী পদে ৩৩ শতাংশ পদে প্রমোশনের মাধ্যমে ডিপ্লোমাধারীদের নিয়োগ দেওয়া হয়, যেখানে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের কোনো সুযোগই রাখা হয় না। এই ৯ম গ্রেডে ৩৩ শতাংশ কোটা ভেঙে শিক্ষার্থীদের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।”
তারা আরও বলেন, “যৌক্তিক দাবি নিয়ে আন্দোলন করায় আজ আমাদের ভাইদের রক্তাক্ত করা হয়েছে। যে ছাত্রদের রক্তের উপর দিয়ে আপনারা ইন্টেরিম সরকারে গিয়েছেন, সেই ছাত্রদের আজ আবার রক্তাক্ত হতে হলো কেন? আজকের ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে জবাবদিহি করতে হবে। ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারীদের জন্য ৩৩ শতাংশ কোটা অবশ্যই বাতিল করতে হবে এবং ৯ম গ্রেডে ডিপ্লোমাধারীদের আর স্থান দেওয়া যাবে না। যতদিন পর্যন্ত আমাদের তিন দফা দাবি বাস্তবায়ন না হবে, ততদিন পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।”
সমাবেশে আইসিটি বিভাগের শিক্ষার্থী সাজ্জাদ সৈকত বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে বিএসসি ইঞ্জিনিয়াররা যৌক্তিক ৩টি দাবি নিয়ে আন্দোলন করে আসছে, কিন্তু সরকার এতদিন কোনো কর্ণপাত করেনি। কেন চব্বিশের আন্দোলনের পরে আজ আবার আমাদের আন্দোলন করতে হলো? আমরা মাঝেমধ্যেই বলি, ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়াররা দেশ থেকে চলে যাচ্ছে। কিন্তু দেশে যদি মেধাবী শিক্ষার্থীদের এইভাবে রক্তাক্ত করা হয়, তাহলে তারা কেন দেশেই থাকবে, কীভাবে দেশকে সেবা দেবে? আমি এই ন্যাক্কারজনক হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে যৌক্তিক তিন দফা দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।”
উল্লেখ্য, এর আগে দুপুরে সরকার প্রকৌশল পেশায় বিএসসি ডিগ্রিধারীদের দাবির যৌক্তিকতা যাচাই ও সুপারিশ প্রণয়নের জন্য আট সদস্যের একটি অন্তর্বর্তী কমিটি গঠন করে। তবে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ওই কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করেন এবং নতুন করে পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করেন।
৫ দফা দাবি হলো—
১. প্রকৌশল অধিকার আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে আন্দোলনকারীদের সামনে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে এবং জবাবদিহি করতে হবে।
২. বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রতিনিধিসহ প্রকৌশল অধিকার আন্দোলনের স্টেকহোল্ডারদের অন্তর্ভুক্ত করে গঠিত কমিটিকে অবিলম্বে সংস্কার করতে হবে।
৩. পূর্বে পেশ করা যৌক্তিক ৩ দফা দাবি দ্রুততম সময়ে মেনে নিয়ে নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।
৪. উপদেষ্টা মোহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, আদিলুর রহমান ও সৈয়দ রিজওয়ানা হাসানকে এর আজই লিখিত নিশ্চয়তা দিতে হবে।
৫. পুলিশের হামলায় আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা ব্যয় সরকারকে বহন করতে হবে, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং হামলাকারী পুলিশ সদস্যদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও চাকরিচ্যুত করতে হবে।