টেস্ট ক্রিকেটে দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ সবারই হয় না। যেকোনো ক্রিকেটারের জন্যই টেস্ট অধিনায়কত্বটা দারুণ আরাধ্য। কিন্তু একজন প্রিয় সতীর্থের দুর্ভাগ্যের কারণে অন্যজন এটিকে হঠাৎ পেয়ে গেলে কি খুব খুশি হতে পারেন? নিশ্চয়ই না। পেশাদারি দৃষ্টিকোণ থেকে এটি তাঁর জন্য সুযোগ হলেও মনের মধ্যে একটা খচখচানি কিন্তু থাকেই। তারপরও হঠাৎ পাওয়া সুযোগের সর্বোত্তম সদ্ব্যবহারটা করতে হয়, সেটি করতে হয় দলের বৃহত্তর স্বার্থেই।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ দিয়েই বাংলাদেশের ‘অধিনায়ক’ হিসেবে নাম উঠে যাচ্ছে মাহমুদউল্লাহর। ব্যক্তিগতভাবে এটা বিরাট গৌরবের ব্যাপার। কিন্তু মাহমুদউল্লাহ ঠিক এভাবে অধিনায়কত্বটা পেতে চাননি বলেই জানিয়েছেন আজকের সংবাদ সম্মেলনে। সাকিব আল হাসানের মতো একজন দুর্দান্ত পারফরমারের অনুপস্থিতি যে দলের জন্যও সমস্যা, সেটি মন দিয়েই অনুধাবন করছেন মাহমুদউল্লাহ। তবে হঠাৎ পাওয়া সুযোগটা এখন কাজে লাগাতে চান তিনি, ‘(অধিনায়কত্ব) যেভাবে পেয়েছি, সেভাবে পেতে চাইনি। সাকিব আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। ওকে হারানোটা আমাদের দলের জন্য একটা বিপর্যয়ই বলতে হবে। ও টপ ক্লাস খেলোয়াড়। ওকে না পাওয়াটা দলের জন্য ক্ষতিকর দিক। তারপরও দিন শেষে সবাই আমরা বাংলাদেশ দলকে প্রতিনিধিত্ব করছি। সবার জন্যই একটা সুযোগ, বাংলাদেশের জন্য ভালো কিছু করা। সেদিক দিয়ে আমরা সবাই উজ্জীবিত।’
সাকিবের জন্য দুঃখবোধ থাকলেও সেটি খেলার মধ্যে নিতে চান না। মনে-প্রাণেই প্রতিজ্ঞা করে রেখেছেন শ্রীলঙ্কাকে এক বিন্দুও ছাড় দেওয়ার সুযোগ রাখবেন না মাহমুদউল্লাহ, ‘আমি যখন আমার নিজের কাজে থাকব, তখন কোনো কিছুতেই ছাড় দেব না। যেভাবেই হোক দলকে অনুপ্রাণিত করার চেষ্টা করব। সেটি শক্তভাবেই হোক কিংবা যেভাবেই হোক। সবদিক দিয়েই চেষ্টা করব। প্রথম কথা হচ্ছে বাংলাদেশের ক্রিকেট। বাংলাদেশকে ভালো কিছু দিতে হবে। এটাই আমার দায়িত্ব ও কর্তব্য।’
মাহমুদউল্লাহর অধিনায়কত্বের মূলমন্ত্র ‘মাথা ঠান্ডা রাখা’। নিজের কাজের সুবিধার জন্যই এমনটা জরুরি বলে অভিমত তাঁর, ‘আমার মনে হয়, অধিনায়কত্বের বড় একটা কাজ হচ্ছে মাঠের মধ্যে অনেক সিদ্ধান্ত নিতে হয়। আপনি যদি মাথা ঠান্ডা না রাখতে পারেন, তাহলে সেটা কঠিন হয়ে যাবে। মাথা ঠান্ডা না রাখলে সিদ্ধান্ত এদিক-সেদিক হয়ে যেতে পারে। আমি ঘরোয়া ক্রিকেটেও যখন অধিনায়কত্ব করি, তখন মাথা ঠান্ডা রাখি।’