মোঃ সুমন আলী খাঁন ॥ চিত্র নায়ক শাকিব খানের বিরুদ্ধে হবিগঞ্জে মামলা দায়ের করা হয়েছে। একই মামলায় “রাজনীতি” সিনেমার পরিচালক বুলবুল বিশ্বাস, প্রযোজক আশফাক আহমেদকে আসামী করা হয়েছে। প্রতারণা ও ৫০ লক্ষ টাকার মানহানির অভিযোগে গতকাল রবিবার হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট সম্পা জাহানের আদালতের মামলাটি দায়ের করেন বানিয়াচং উপজেলার যাত্রাপাশা গ্রামের ইজাজুল মিয়া। প্রায় ২ ঘন্টা ১৬ মিনিট ১১ সেকেন্ড ব্যাপ্তী রাজনীতি চলচ্চিত্রের ২৬ মিনিট ১২ সেকেন্ডর সময় চলচ্চিত্রের নায়িকা অপু বিশ্বাস একটি ডায়লগ দেন “ এভাবে বার বার আর কোনো দিন চলে যেতে দেব না আমার স্বপ্নের রাজকুমার, জবাবে নায়ক শাকিব খান ডায়লগ দেন “আমিও তোমাকে আর ছেড়ে যাব না আমার রাজ কুমারী”, নায়িকা অপু বিশ্বাসের ডায়লগ “আমার ফেইসবুক আইডি যে “রাজকুমারী” তুমি তা জানলে কী করে, জবাবে নায়ক শাকিব খান ডায়লগ দেন “যেভাবে তুমি জান আমার মোবাইল নাম্বার ০১৭১৫-২৯৫২২৬”। প্রকৃতপক্ষের গ্রামীণ ফোনের ০১৭১৫-২৯৫২২৬ মোবাইল নাম্বারটি চিত্র নায়ক শাকিব খানের নয়। সেই মোবাইল নাম্বারের মালিক হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার যাত্রাপাশা গ্রামের ইজাজুল মিয়া। আসামীগনের মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে প্রচারিত ইজাজুল মিয়ার মোবাইল ফোন নাম্বার ০১৭১৫-২৯৫২২৬ এ গত ১০/৭/২০১৭ ইং রোজ সোমবার রাত ১০টা ৬মিনিট ৫৯ সেকেন্ড হইতে ১৫/৭/২০১৭ ইং রোজ শনিবার রাত ৯টা ২৯ মিনিট ৩৩ সেকেন্ড এর মধ্যে ৪৩২টি কল আসে। তাদের বেশির ভাগ মেয়ে। শাকিব খান মনে করে খুলনা থেকে এক গৃহ কর্মী চলে আসে ইজাজুলের বানিয়াচং এর বাড়িতে। তাছাড়া রাত বিরাতে অনবরত মেয়েরা ফোন করতে থাকে ইজাজুলের মোবাইল নাম্বারে। ফলে ১ সন্তানের জনক ইজাজুলের সংসার ভাঙ্গার উপক্রম হয়। অনুমতি ছাড়া সিনেমায় মোবাইল নাম্বার ব্যবহার করায় এবং সেটি বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচারিত হওয়ায় প্রতারণা ও ৫০ লক্ষ টাকার মানহানির মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিজ্ঞ ম্যাজিষ্ট্রেট সম্পা জাহান মামলাটি গ্রহণ করে ওসি ডিবিকে তদন্ত করে আগামী ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এব্যাপারে মামলার আইনজীবী এডভোকেট এম এ মজিদ জানান- কারও অনুমতি ছাড়া ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন আমার (নায়েক শাকিব খান যেভাবে বলেছেন) বলে প্রচার করা একটি সুস্পষ্ট প্রতারনা। মোবাইল নাম্বারটি ব্যাপকভাবে প্রচারিত হওয়ায় বাদীর দিনের অধিকাংশ সময় ব্যয় হচ্ছে মোবাইল ফোন রিসিভ করতে গিয়ে। তাতে বাদী আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। আমরা মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত রাজনীতি সিনেমা প্রচার বন্ধের আবেদন জানিয়েছে। একই সাথে প্রতারণা ও মানহানি করায় আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের আবেদন জানিয়েছি। তদন্ত প্রতিবেদন আসলে পরে বিজ্ঞ আদালতের পরবর্তী আদেশ পাওয়া যাবে। সিএনজি অটোরিকশাচালক ইজাজুল মিয়া জানান, আমি বিব্রতকর ভাবে জীবনযাপন করছি,আমার অনুমতি ছাড়াও আমার নাম্বার ব্যবহার করা হয়েছে যার ফলে আমার পরিবার ভেঙ্গে যাওয়ার উপক্রম । বাধ্য হয়ে আমি মামলা দায়ের করেছি । শাকিব খানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি প্রযোজক ও পরিচালকের উপর চাপিয়ে দেন। এদিকে পরিচালক বুলবুল বিশ্বাস বলেন, ‘ইজাজুল মিয়ার প্রতি আমাদের দু:খ প্রকাশ করা ছাড়া কিছু বলার নেই। ছবির নির্মাণের সময় একটি বন্ধ নাম্বার ব্যবহার করেছিলাম। যেটি ওইসময় বন্ধ ছিল। কিন্তু সেটি এমন বিব্রতকর অবস্থার জন্ম দেবে ভাবতেও পারিনি। আমি প্রযোজক ও শাকিব খানের সঙ্গে কথা বলে আইনিভাবেই বিষয়টি মিটিয়ে নিতে চেষ্টা করবো।’