জাহিদুর রহমান তারিক,ঝিনাইদহঃ ঝিনাইদহে এক সময় গ্রাম-বাংলার মানুষের কাছে খুবই জনপ্রিয় ছিল কালোজিরা ধান। কালোজিরা, কাশিয়া, বিন্নি সহ বিভিন্ন জাতের সুগন্ধি চিকন চাল দিয়ে তৈরী হত খিচুড়ি সিন্নি-পায়েশ, ফিরনি ও জর্দা সহ আরও অনেক মুখরোচক খাবার। কিন্তু এসবই এখন কালের স্মৃতি। ঝিনাইদহের হাট বাজারে এখন আর এ চাল পাওয়া যায় না। বলা চলে সারাদেশেই প্রায় বিলুপ্তির পথে ঐতিহ্যবাহী এই সুগন্ধি চাল। শুধু কালো জিরা ধান নয়, ক্রমবর্ধমান খাদ্যের চাহিদা মেটাতে সারাদেশ থেকেই হারিয়ে যাচ্ছে প্রাকৃতিক বান্ধব হাজারো জাতের দেশি ধান। অল্প কিছু বছরের ব্যবধানে এই ধান গুলোর জায়গা দখল করে নিয়েছে উফশী ও উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে এসব জাতের ধান আবাদকারী কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এ জাতের ধানের ফলন হয় কম। বিঘা প্রতি অন্য জাতের ধান যেখানে ১৫ থেকে সবোর্চ্চ ২০ মণ উংপাদন হয় সেখানে এ জাতের ফলন হয় সর্বচ্চ ৮ মণ পর্যন্ত।
তবে বাজারে দাম দিগুন পাওয়া যায়। সার, সেচ ও পরিচর্যাও লাগে কম। সেই হিসেবে আবাদে লোকসান হয়না বললেই চলে । এখনও গ্রামের গৃহস্থ পরিবারের কাছে এ ধানের কদর যথেষ্ট। তথ্যানুযায়ী, এ জাতের ধান আগে বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে আবাদ হত। কিন্তু এসব ধানের উৎপাদন কম হওয়ায় কৃষকরা বীজ আমদানীর উপর নির্ভশীল হয়ে পড়েন। এর ফলে হারিয়ে যাচ্ছে এক সময়ের জনপ্রিয় কালো জিরা, কাশিয়া-বিন্নি, সরু, বেগুন বিচি, জামাই ভোগ, দাদখানি ও খৈয়া মটর সহ নান জাতের দেশী ধান। জেলার কৃষকরা জানান, এজাতের ধান আবাদে প্রয়োজনীয় সহযোগীতা বা প্রদর্শনী প্লট প্রকল্প গ্রহন করলে বিলুপ্তির হাত থেকে তা ফেরানো সম্ভব হবে। কালো জিরা ধান ঝিনাইদহ জেলা উপজেলায় প্রায় জমিতে চাষ হয় । উচ্চ ফলনশীল জাতের ধানের চেয়ে এ ধানের ফলন কম হয় বিধায় কৃষকরা এ ধানের চাষ কম করেন। কৃষকরা নিজ আগ্রহেই এ ধান চাষ করেন। এ ধানটি দেশীয় জাতের ধানের মধ্যে অন্যতম।