শিরোনাম :
Logo আন্তর্জাতিক সেমিনারে যাচ্ছেন ইবি ভিসি Logo সিরাজগঞ্জে জেলা পুলিশের মাসিক কল্যাণ ও অপরাধ পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত Logo কচুয়ার পালাখাল রোস্তম আলী ডিগ্রী কলেজে নবীন বরণ ও ওরিয়েন্টেশন ক্লাস অনুষ্ঠিত Logo শহীদ রুমি স্মৃতি পাঠাগারের সাময়িকী  ” মুক্তবাক” এর মোড়ক উন্মোচন Logo খুলনার কয়রায় প্রায় ১০৩ কেজি হরিণের মাংস, মাথা এবং হরিণ শিকারের ফাঁদসহ ১ জন হরিণ শিকারিকে আটক করেছে কোস্ট গার্ড Logo জসিম সভাপতি, ফখরুল সম্পাদক দীর্ঘ ছয় বছর পর চাঁদপুর জেলা সমিতি ইউকের নির্বাচন সম্পন্ন Logo নির্ধারিত ছয় মাসের আগেই নতুন বেতন কাঠামো চূড়ান্ত হবে: প্রধান উপদেষ্টাকে কমিশন চেয়ারম্যান Logo ইবি অভয়ারণ্যের শরৎ সম্ভাষণ: “গ্রামীণ ঐতিহ্যের ছোঁয়া ও বায়োস্কোপের রঙিন আবেশ” Logo চাঁদপুর সদরের ১৪ ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক নিয়োগে সেবা প্রার্থীদের হয়রানি ও ভোগান্তি কমেছে Logo চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বদলী জনিত বিদায় সংবর্ধনা

জেনে নিন ৯১ বছর বয়সে স্নাতক ডিগ্রী অর্জনর করলেন যিনি !

  • amzad khan
  • আপডেট সময় : ০১:১৪:২১ অপরাহ্ণ, রবিবার, ১৩ আগস্ট ২০১৭
  • ৭৫০ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক:

থাইল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ ‘হায়াও’ এর এক নারী ৯১ বছর বয়সে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করে তার জীবনের স্বপ্ন পূরণ করেছেন।

দীর্ঘ দশ বছরের পড়া শেষে আজ বুধবার তিনি স্নাতক ডিগ্রির সার্টিফিকেট গ্রহণ করতে যাচ্ছেন।

৯১ বছর বয়সী ‘নানী’ কিমলান জিনাকুল বলেন, আমার মধ্যে সব সময় শিক্ষাগ্রহণের প্রতি আলাদা একটা আকর্ষণ কাজ করতো। সব সময় ভাবতাম শিক্ষা গ্রহণের কোনো বয়স নেই, যে কোনো সময়েই এটা করা যায়। আর এই নীতিতে বিশ্বাসী এই নারী সন্তান হারিয়েও, এই বয়সেও তার স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছেন।

থাইল্যান্ডের সুখোথাই থাম্মাথিরাত ওপেন ইউনিভার্সিটির হাজার হাজার শিক্ষার্থীদের একজন কিমলান জিনাকুল।
তার জীবনের আরেকটা বিশেষ দিন হতে যাচ্ছে বুধবার। তাকে আজ স্নাতক ডিগ্রির সার্টিফিকেট প্রদান করবেন থাই রাজা ‘দশম রাম’।

মিস কিমলান লামপাং প্রদেশের বাসিন্দা ছিলেন। কিন্তু পরে তিনি ফায়াও প্রদেশে বসবাস শুরু করেন। একজন বৃদ্ধ নারী হিসেবে কিমলানের প্রতিদিনের রুটিন ছিল-সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রথমে তিনি যেতেন বুদ্ধ মন্দিরে প্রার্থনার জন্য। এরপর প্রতিবেশী একটি মন্দির ঘুরে পড়ালেখার জন্য চলে যেতেন। ‘হিউম্যান এন্ড ফ্যামিলি ডেভেলপমেন্ট’ নিয়ে পড়েছেন তিনি।

তিনি বলেন, এই বিশ্ব কখনো থামে না। নিজস্ব গতিতে সে চলছে। আমাদের কাছে কাছে নতুন নতুন তথ্য আসছে, বিজ্ঞান ও গবেষণা নিত্যনতুন আবিষ্কার দেখছি। পুরনো সমস্যা সমাধানের জন্য সব সময় আমাদের সামনে নিত্যনতুন উপায় আসছে। যখন বিজ্ঞান-গবেষণায় নতুন কিছু আর থাকবে না, এই বিশ্বও থেমে যাবে।

চীনা বংশোদ্ভুত পরিবারে জন্ম নেয়া কিমলান বেড়ে উঠেছেন লামপাং-এ। প্রদেশের শীর্ষ স্কুলে তিনি ছিলেন মেধাবী শিক্ষার্থীদের একজন।

কিন্তু রাজনৈতিক কারণে তার পরিবারে ব্যাংককে চলে আসতে বাধ্য হয় এবং সেখানেই তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর নিজের পড়ালেখাটাও আবার শুরু করেন কিমলান।

কিমলান বলেন, আমি সব সময় চাইতাম আমার ছেলে-মেয়েরা যেন অনেকদূর পর্যন্ত পড়ালেখা করতে পারে, যতদূর তারা পড়তে চায় ততদূর। আমার এই দৃঢ় ইচ্ছার কথা তাদের জানিয়েছি, তাদের সবসময় সমর্থন দিয়েছি”।

পাঁচ সন্তানের মা কিমলানের চার সন্তানই মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেছেন এবং একজন যুক্তরাষ্ট্র থেকে পিএইচডি করেন।
কিমলানের এক মেয়ে তাকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জনে উৎসাহ জোগায়। সুখোথাই থাম্মাথিরাত ওপেন ইউনিভার্সিটিতে তার মেয়েই তাকে ভর্তি করেন।

কিমলানের ওই মেয়ে চিয়াং মাই নামের একটা হাসপাতালে প্রভাষক ছিলেন এবং একইসঙ্গে সেখানকার নার্স হিসেবে কাজ করতেন। যদিও ৭২ বছর বয়সে কিমলান তার পড়ালেখা আবারও শুরু করার কিছুদিন পরই তার এই মেয়েটি মারা যায়।
মেয়ের মৃত্যুর শোকে কয়েক বছর ক্লাস করেননি কিমলান।

প্রায় এক দশক পর মেয়ের মৃত্যুর কষ্ট ভুলে পড়ালেখা শুরু করেন কিমলান। তখন তার বয়স ৮৫ বছর।

হিউম্যান এন্ড ফ্যামিলি ডেভেলপমেন্ট’ বিষয়টি বেছে নেন কারণ তার মতে এই বিষয়টা তাকে শেখাবে কীভাবে অর্থপূর্ণ ও হাসিখুশি জীবনযাপন করা যায়।

মেয়ের হারানোর দুঃখ ভুলে আমি পুরোপুরি পড়ায় নিমজ্জিত হলাম। মনের মধ্যে শুধু এটা কাজ করতো-আমি স্নাতক পাস করলে আমার মেয়ের আত্মা খুশি হবে। বিবিসি থাই সার্ভিসকে দেয়া সাক্ষাৎকারে নিজের কথাগুলো শেয়ার করেন কিমলান।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

আন্তর্জাতিক সেমিনারে যাচ্ছেন ইবি ভিসি

জেনে নিন ৯১ বছর বয়সে স্নাতক ডিগ্রী অর্জনর করলেন যিনি !

আপডেট সময় : ০১:১৪:২১ অপরাহ্ণ, রবিবার, ১৩ আগস্ট ২০১৭

নিউজ ডেস্ক:

থাইল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ ‘হায়াও’ এর এক নারী ৯১ বছর বয়সে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করে তার জীবনের স্বপ্ন পূরণ করেছেন।

দীর্ঘ দশ বছরের পড়া শেষে আজ বুধবার তিনি স্নাতক ডিগ্রির সার্টিফিকেট গ্রহণ করতে যাচ্ছেন।

৯১ বছর বয়সী ‘নানী’ কিমলান জিনাকুল বলেন, আমার মধ্যে সব সময় শিক্ষাগ্রহণের প্রতি আলাদা একটা আকর্ষণ কাজ করতো। সব সময় ভাবতাম শিক্ষা গ্রহণের কোনো বয়স নেই, যে কোনো সময়েই এটা করা যায়। আর এই নীতিতে বিশ্বাসী এই নারী সন্তান হারিয়েও, এই বয়সেও তার স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছেন।

থাইল্যান্ডের সুখোথাই থাম্মাথিরাত ওপেন ইউনিভার্সিটির হাজার হাজার শিক্ষার্থীদের একজন কিমলান জিনাকুল।
তার জীবনের আরেকটা বিশেষ দিন হতে যাচ্ছে বুধবার। তাকে আজ স্নাতক ডিগ্রির সার্টিফিকেট প্রদান করবেন থাই রাজা ‘দশম রাম’।

মিস কিমলান লামপাং প্রদেশের বাসিন্দা ছিলেন। কিন্তু পরে তিনি ফায়াও প্রদেশে বসবাস শুরু করেন। একজন বৃদ্ধ নারী হিসেবে কিমলানের প্রতিদিনের রুটিন ছিল-সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রথমে তিনি যেতেন বুদ্ধ মন্দিরে প্রার্থনার জন্য। এরপর প্রতিবেশী একটি মন্দির ঘুরে পড়ালেখার জন্য চলে যেতেন। ‘হিউম্যান এন্ড ফ্যামিলি ডেভেলপমেন্ট’ নিয়ে পড়েছেন তিনি।

তিনি বলেন, এই বিশ্ব কখনো থামে না। নিজস্ব গতিতে সে চলছে। আমাদের কাছে কাছে নতুন নতুন তথ্য আসছে, বিজ্ঞান ও গবেষণা নিত্যনতুন আবিষ্কার দেখছি। পুরনো সমস্যা সমাধানের জন্য সব সময় আমাদের সামনে নিত্যনতুন উপায় আসছে। যখন বিজ্ঞান-গবেষণায় নতুন কিছু আর থাকবে না, এই বিশ্বও থেমে যাবে।

চীনা বংশোদ্ভুত পরিবারে জন্ম নেয়া কিমলান বেড়ে উঠেছেন লামপাং-এ। প্রদেশের শীর্ষ স্কুলে তিনি ছিলেন মেধাবী শিক্ষার্থীদের একজন।

কিন্তু রাজনৈতিক কারণে তার পরিবারে ব্যাংককে চলে আসতে বাধ্য হয় এবং সেখানেই তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর নিজের পড়ালেখাটাও আবার শুরু করেন কিমলান।

কিমলান বলেন, আমি সব সময় চাইতাম আমার ছেলে-মেয়েরা যেন অনেকদূর পর্যন্ত পড়ালেখা করতে পারে, যতদূর তারা পড়তে চায় ততদূর। আমার এই দৃঢ় ইচ্ছার কথা তাদের জানিয়েছি, তাদের সবসময় সমর্থন দিয়েছি”।

পাঁচ সন্তানের মা কিমলানের চার সন্তানই মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেছেন এবং একজন যুক্তরাষ্ট্র থেকে পিএইচডি করেন।
কিমলানের এক মেয়ে তাকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জনে উৎসাহ জোগায়। সুখোথাই থাম্মাথিরাত ওপেন ইউনিভার্সিটিতে তার মেয়েই তাকে ভর্তি করেন।

কিমলানের ওই মেয়ে চিয়াং মাই নামের একটা হাসপাতালে প্রভাষক ছিলেন এবং একইসঙ্গে সেখানকার নার্স হিসেবে কাজ করতেন। যদিও ৭২ বছর বয়সে কিমলান তার পড়ালেখা আবারও শুরু করার কিছুদিন পরই তার এই মেয়েটি মারা যায়।
মেয়ের মৃত্যুর শোকে কয়েক বছর ক্লাস করেননি কিমলান।

প্রায় এক দশক পর মেয়ের মৃত্যুর কষ্ট ভুলে পড়ালেখা শুরু করেন কিমলান। তখন তার বয়স ৮৫ বছর।

হিউম্যান এন্ড ফ্যামিলি ডেভেলপমেন্ট’ বিষয়টি বেছে নেন কারণ তার মতে এই বিষয়টা তাকে শেখাবে কীভাবে অর্থপূর্ণ ও হাসিখুশি জীবনযাপন করা যায়।

মেয়ের হারানোর দুঃখ ভুলে আমি পুরোপুরি পড়ায় নিমজ্জিত হলাম। মনের মধ্যে শুধু এটা কাজ করতো-আমি স্নাতক পাস করলে আমার মেয়ের আত্মা খুশি হবে। বিবিসি থাই সার্ভিসকে দেয়া সাক্ষাৎকারে নিজের কথাগুলো শেয়ার করেন কিমলান।