বুধবার | ৩ ডিসেম্বর ২০২৫ | হেমন্তকাল
শিরোনাম :
Logo খুবিতে রফিক আজম ট্রাভেল স্কলারশিপ চালুর লক্ষ্যে এমওইউ স্বাক্ষর Logo খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় সোনালী ব্যাংক এমপ্লয়ীজ এসোসিয়েশন সিবি’এর দোয়া মাহফিল Logo জলবায়ু সহিষ্ণু ফসল উৎপাদনে বাংলাদেশের কৃষকদের সক্ষম করে তুলতে হবে— আন্তর্জাতিক সেমিনারে নোবিপ্রবি উপাচার্য Logo পুলিশের অভিযানে পলাশবাড়ীতে চোরাই মাল উদ্ধার : দুই ভাঙ্গারি ব্যবসায়ী আটক Logo পলাশবাড়ীতে জুলাই যোদ্ধার বাবার প্রভাব খাটিয়ে জমি দখলের অভিযোগ Logo পর্যটক সেন্টমার্টিন পৌঁছলে ফুল দিয়ে পর্যটকদের বরণ Logo বিএনপি চেয়ারপার্সনের রোগমুক্তি ও সুস্থতা কামনায় জীবননগরে ছাত্রদল ও শ্রমিকদের দোয়া Logo জাতীয় নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নিরাপত্তা জোরদারে ব্যাপক প্রস্তুতি সরকারের Logo কারুবাক পাণ্ডুলিপি পুরস্কার পেলেন এইচএম জাকির Logo চাঁদপুরে নতুন খাবারের আকর্ষণ ‘কাচ্চি ডাইন’ গ্রাহকদের ভিড় বেড়েই চলছে

যে কারণে ৩০ বছর পর লেবানন ছেড়ে যেতে হল সিরীয় সৈন্যদের !

  • amzad khan
  • আপডেট সময় : ১২:১৬:৫৪ অপরাহ্ণ, শনিবার, ১৫ জুলাই ২০১৭
  • ৭৬৮ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক:

সিরীয় সেনাবাহিনীর শেষ সৈন্য লেবানন ত্যাগ করেছিলেন ২০০৫ সালের ২৬ এপ্রিল। প্রায় ৩০ বছর ধরে লেবাননে মোতায়েন থাকার পর জাতিসংঘের দেওয়া চূড়ান্ত সময়সীমা শেষ হবার চারদিন আগে লেবাননে সিরীয় বাহিনীর উপস্থিতির আনুষ্ঠানিক ইতি ঘটে।

সিরীয় সৈন্য লেবাননে প্রথম পা রাখে ১৯৭৬ সালে। লেবাননে গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার এক বছর পরে। সিরীয়দের দাবি ছিল লেবাননের তিক্ত সংঘাত থেকে খ্রিস্টান সম্প্রদায়কে রক্ষা করার জন্য তারা সেখানে ঢুকেছে।

বৈরুৎ এর ৩০ মাইল দূরে লেবাননের উত্তরাঞ্চলে চার হাজার সৈন্য এবং ২০০ ট্যাংক তখন মোতায়েন করা হয়েছে। উর্বর বেকা উপত্যকার অধিকাংশই তখন সিরিয়ার নিয়ন্ত্রণে। পরে তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিল অন্যান্য আরব দেশ থেকে যাওয়া সৈন্যরা। গঠন করা হয়েছিল আরব প্রতিরোধ বাহিনী নামে একটি সেনাদল।

সেসময় পশ্চিমা গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছিল, সিরীয় ট্যাংক সেখানে ঢুকেছে বিজয় নিশান উড়িয়ে। কিন্তু সিরীয় সৈন্যদের উপস্থিতি সত্ত্বেও লেবাননে এরপর আরো ১৪ বছর ধরে গৃহযুদ্ধ চলে। এবং সিরীয় সৈন্য সেখানে থেকে যায় আরো এক বছর।

তবে লেবানন সেনা বাহিনীর পরিচিতি ও জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার এলিয়াস ফারহাত সিরীয় বাহিনীকে দখলদার বাহিনী হিসাবে ব্যাখ্যা করতে রাজি নন। তিনি বলেন, ‘তারা যখন ফিলিস্তিনি এবং লেবানিজ ন্যাশানাল মুভমেন্টের হাত থেকে খ্রিস্টানদের রক্ষা করছিল, খ্রিস্টানদের বাঁচাতে দু’টি বড় গ্রামে ফিলিস্তিনিদের উপর হামলা চালাচ্ছিল- তখন তাদের দখলদার বলি কী করে? তারা যখন ত্রিপলিতে ঢুকে মুসলিম ব্রাদারহুডের উপর আক্রমণ চালাল এবং লেবানন থেকে আরাফাতকে উৎখাত করল, তখন তো তারা দখলদার ছিল না। ‘

এরপর ১৯৯০ সালে গৃহযুদ্ধ শেষ হয়ে যাবার পরেও সিরীয় সৈন্যরা লেবাননে থেকে গিয়েছিল। পরে ১৯৯১ সালে সিরিয়া আর লেবাননের মধ্যে একটা মৈত্রী চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। যার আওতায় প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্রনীতি ও অর্থনীতি বিষয়ক যৌথ সরকারি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়। এরপর ২০০৪ সালে লেবানন থেকে অ-লেবানী সব সৈন্য প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘে একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়। কিন্তু এরপরেও সিরীয় সৈন্যরা থেকে যায়।

পরবর্তীতে ২০০৫এর ফেব্রুয়ারিতে লেবাননের প্রখ্যাত ব্যবসায়ী ও দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী রফিক হারিরি আততায়ীর বিশাল এক বোমা হামলায় নিহত হন। ওই হামলার জন্য সিরিয়াকে দোষারোপ করা হয় এবং তার হত্যার পর লেবাননে সিরিয়ার উপস্থিতির প্রতিবাদে পরপর বড়ধরনের বিক্ষোভ হয়।

এরই ধারাবাহিকতায় ৫ই মার্চ বাশার আল আসাদ সিরিয়ার সংসদে লেবানন থেকে সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়ে বলেন, ‘আমরা লেবাননের আল বেকা এলাকা থেকে আমাদের সেনা সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করে নেব। সেনা থাকবে শুধু সিরিয়া লেবানন সীমান্তে। ‘

আর তারই জের ধরে ২০০৫ সালের ২৬ এপ্রিল শেষ সিরীয় সৈন্য লেবানন ছেড়ে যায়।

সূত্রঃ বিবিসি

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

খুবিতে রফিক আজম ট্রাভেল স্কলারশিপ চালুর লক্ষ্যে এমওইউ স্বাক্ষর

যে কারণে ৩০ বছর পর লেবানন ছেড়ে যেতে হল সিরীয় সৈন্যদের !

আপডেট সময় : ১২:১৬:৫৪ অপরাহ্ণ, শনিবার, ১৫ জুলাই ২০১৭

নিউজ ডেস্ক:

সিরীয় সেনাবাহিনীর শেষ সৈন্য লেবানন ত্যাগ করেছিলেন ২০০৫ সালের ২৬ এপ্রিল। প্রায় ৩০ বছর ধরে লেবাননে মোতায়েন থাকার পর জাতিসংঘের দেওয়া চূড়ান্ত সময়সীমা শেষ হবার চারদিন আগে লেবাননে সিরীয় বাহিনীর উপস্থিতির আনুষ্ঠানিক ইতি ঘটে।

সিরীয় সৈন্য লেবাননে প্রথম পা রাখে ১৯৭৬ সালে। লেবাননে গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার এক বছর পরে। সিরীয়দের দাবি ছিল লেবাননের তিক্ত সংঘাত থেকে খ্রিস্টান সম্প্রদায়কে রক্ষা করার জন্য তারা সেখানে ঢুকেছে।

বৈরুৎ এর ৩০ মাইল দূরে লেবাননের উত্তরাঞ্চলে চার হাজার সৈন্য এবং ২০০ ট্যাংক তখন মোতায়েন করা হয়েছে। উর্বর বেকা উপত্যকার অধিকাংশই তখন সিরিয়ার নিয়ন্ত্রণে। পরে তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিল অন্যান্য আরব দেশ থেকে যাওয়া সৈন্যরা। গঠন করা হয়েছিল আরব প্রতিরোধ বাহিনী নামে একটি সেনাদল।

সেসময় পশ্চিমা গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছিল, সিরীয় ট্যাংক সেখানে ঢুকেছে বিজয় নিশান উড়িয়ে। কিন্তু সিরীয় সৈন্যদের উপস্থিতি সত্ত্বেও লেবাননে এরপর আরো ১৪ বছর ধরে গৃহযুদ্ধ চলে। এবং সিরীয় সৈন্য সেখানে থেকে যায় আরো এক বছর।

তবে লেবানন সেনা বাহিনীর পরিচিতি ও জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার এলিয়াস ফারহাত সিরীয় বাহিনীকে দখলদার বাহিনী হিসাবে ব্যাখ্যা করতে রাজি নন। তিনি বলেন, ‘তারা যখন ফিলিস্তিনি এবং লেবানিজ ন্যাশানাল মুভমেন্টের হাত থেকে খ্রিস্টানদের রক্ষা করছিল, খ্রিস্টানদের বাঁচাতে দু’টি বড় গ্রামে ফিলিস্তিনিদের উপর হামলা চালাচ্ছিল- তখন তাদের দখলদার বলি কী করে? তারা যখন ত্রিপলিতে ঢুকে মুসলিম ব্রাদারহুডের উপর আক্রমণ চালাল এবং লেবানন থেকে আরাফাতকে উৎখাত করল, তখন তো তারা দখলদার ছিল না। ‘

এরপর ১৯৯০ সালে গৃহযুদ্ধ শেষ হয়ে যাবার পরেও সিরীয় সৈন্যরা লেবাননে থেকে গিয়েছিল। পরে ১৯৯১ সালে সিরিয়া আর লেবাননের মধ্যে একটা মৈত্রী চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। যার আওতায় প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্রনীতি ও অর্থনীতি বিষয়ক যৌথ সরকারি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়। এরপর ২০০৪ সালে লেবানন থেকে অ-লেবানী সব সৈন্য প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘে একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়। কিন্তু এরপরেও সিরীয় সৈন্যরা থেকে যায়।

পরবর্তীতে ২০০৫এর ফেব্রুয়ারিতে লেবাননের প্রখ্যাত ব্যবসায়ী ও দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী রফিক হারিরি আততায়ীর বিশাল এক বোমা হামলায় নিহত হন। ওই হামলার জন্য সিরিয়াকে দোষারোপ করা হয় এবং তার হত্যার পর লেবাননে সিরিয়ার উপস্থিতির প্রতিবাদে পরপর বড়ধরনের বিক্ষোভ হয়।

এরই ধারাবাহিকতায় ৫ই মার্চ বাশার আল আসাদ সিরিয়ার সংসদে লেবানন থেকে সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়ে বলেন, ‘আমরা লেবাননের আল বেকা এলাকা থেকে আমাদের সেনা সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করে নেব। সেনা থাকবে শুধু সিরিয়া লেবানন সীমান্তে। ‘

আর তারই জের ধরে ২০০৫ সালের ২৬ এপ্রিল শেষ সিরীয় সৈন্য লেবানন ছেড়ে যায়।

সূত্রঃ বিবিসি