ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, গাজায় কাজ (ইসরাইলের পরিকল্পনা) শেষ করা ও হামাসকে সম্পূর্ণভাবে পরাজিত করার বিকল্প নেই। জেরুজালেমে বিদেশি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন। এসময় নেতানিয়াহু গাজায় পরিকল্পিত সামরিক অভিযানের পক্ষেই সাফাই গেয়েছেন।
ইহুদিবাদী রাষ্ট্রটির প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য গাজা দখল করা নয়, আমাদের লক্ষ্য গাজাকে মুক্ত করা।’ পাশাপাশি তিনি ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক সমালোচনাকে ‘মিথ্যার বৈশ্বিক প্রচারণা’ বলে অভিহিত করেন।
তিনি জানান, গাজার পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য একটি ‘তুলনামূলকভাবে স্বল্প সময়সীমা’ নির্ধারণ করা হয়েছে। তার মতে, লক্ষ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে গাজাকে নিরস্ত্রীকরণ, ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর ‘সম্পূর্ণ নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ’ নিশ্চিত করা এবং একটি অ-ইসরাইলি বেসামরিক প্রশাসনের হাতে দায়িত্ব দেওয়া।
তিনি আবারও গাজার সংকটের জন্য হামাসকে দায়ী করেন। গত একদিনে গাজা উপত্যকায় ত্রাণ নিতে গিয়ে কমপক্ষে ২৬জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে গাজার হাসপাতাল ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। এদিকে, ইসরাইলি জিম্মিদের পরিবারের সদস্যরা নেতানিয়াহুর সামরিক অভিযান সম্প্রসারণ পরিকল্পনার প্রতিবাদে সাধারণ ধর্মঘটের আহ্বান জানিয়েছেন।
রোববার আন্তর্জাতিক নিন্দার মধ্যেই নেতানিয়াহু বিদেশি ও স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের জন্য একটি সংবাদ সম্মেলন করবেন বলে জানা গেছে। তার এই বক্তব্য জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকের ঠিক আগে হবে, যেখানে ইসরাইলের গাজা সিটি দখল পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হবে।
গাজার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা এমন এলাকাগুলো থেকে মৃতদেহ পেয়েছে যেখানে ফিলিস্তিনিরা সাহায্য পাওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন— হয় খাদ্য কনভয় রুট বরাবর অথবা ব্যক্তিগতভাবে পরিচালিত সাহায্য বিতরণ কেন্দ্রের কাছে।
গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুসারে, এ বছরের জুনের শেষ দিক থেকে অপুষ্টিজনিত কারণে ১১৭ জন প্রাপ্তবয়স্ক মারা গেছেন। তবে এ মৃত্যুগুলো মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত মোট মৃত্যু সংখ্যায় (৬১,৪০০) অন্তর্ভুক্ত নয়। নিহতদের প্রায় অর্ধেকই নারী ও শিশু।
গাজায় নেতানিয়াহুর যুদ্ধ সম্প্রসারণের সম্ভাবনা আন্তর্জাতিকভাবে যেমন ক্ষোভ উসকে দিয়েছে, তেমনি ইসরাইলের অভ্যন্তরেও প্রতিবাদ জোরদার করেছে। নিহতদের পরিবার ও গাজায় এখনো আটক জিম্মিদের স্বজনরা সতর্ক করেছেন, গাজা সিটি দখলের সিদ্ধান্ত জিম্মিদের জীবনের জন্য হুমকি হতে পারে।
গত ৭ অক্টোবর হামাস-নেতৃত্বাধীন যোদ্ধারা দক্ষিণ ইসরাইলে অপারেশন চালিয়ে ২৫১ জনকে জিম্মি করেন। এর মধ্যে প্রায় ৫০ জন এখনো গাজায় রয়েছেন এবং ইসরাইল মনে করছে তাদের মধ্যে প্রায় ২০ জন জীবিত।