হুতিরা জাহাজে হামলা বন্ধের ঘোষণা না দিলে অভিযান চলবে: যুক্তরাষ্ট্র

লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজে হুতি হামলা বন্ধের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত ইয়েমেনে তাদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। রোববার (১৬ মার্চ) মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ এই ঘোষণা দেন। সোমবার (১৭ মার্চ) পৃথক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু এবং সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

শনিবার রাতে হুতিদের বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। হুতি পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, এতে অন্তত ৫৩ জন নিহত এবং ৯৮ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে পাঁচ শিশু ও দুই নারী রয়েছেন। মার্কিন প্রশাসন এখনো সাধারণ মানুষের প্রাণহানির বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। এদিকে ওয়াশিংটন বলছে, শনিবারের বিমান হামলায় নিহতদের মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ হুতি নেতা রয়েছেন, কিন্তু গোষ্ঠীটি এই তথ্য নিশ্চিত করেনি।

হুতি নেতা আব্দুল মালিক আল-হুতি পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র হামলা চালানো অব্যাহত রাখলে লোহিত সাগরে মার্কিন ও মিত্র দেশের জাহাজগুলো তাদের টার্গেট থাকবে। হুতি সামরিক মুখপাত্র দাবি করেছেন, তারা মার্কিন রণতরি ইউএসএস হ্যারি এস. ট্রুম্যানসহ কয়েকটি যুদ্ধজাহাজে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছেন। তবে মার্কিন সেনারা দাবি করেছে, তারা হুতিদের ১১টি ড্রোন গুলি করে ধ্বংস করেছে, যার কোনোটি রণতরির কাছাকাছি আসতে পারেনি।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হেগসেথ বলেছেন, হুতিরা হামলা বন্ধের ঘোষণা দিলেই যুক্তরাষ্ট্রের অভিযান বন্ধ হবে। তবে নিরাপদ নৌ চলাচল নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত এই অভিযান চলবে। অন্যদিকে, হুতিদের সমর্থন দেওয়ার জন্য ইরানকে দায়ী করে ওয়াশিংটন তেহরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে।

মূলত, গাজা উপত্যকায় সম্পূর্ণ অবরোধ জারি করেছে ইসরায়েল। ফলে সেখানে কোনো ধরনের খাদ্যদ্রব্য, পানি বা ওষুধ সরবরাহ করা যাচ্ছে না। এ অবস্থায় লোহিত সাগরে ইসরায়েল-সংশ্লিষ্ট জাহাজগুলোতে পুনরায় আক্রমণ শুরু করার হুমকি দেয় হুতি বিদ্রোহীরা। এই হুমকির পরপরই শনিবার ইয়েমেনে হুতিদের অবস্থান লক্ষ্য করে বিমান হামলা শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র।

এক দশকের বেশি সময় ধরে হুতিরা ইয়েমেনে সক্রিয়, এবং ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে তারা লোহিত সাগরে ১০০-এর বেশি হামলা চালিয়েছে। তাদের দাবি, গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ হিসেবেই এসব হামলা হচ্ছে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

হুতিরা জাহাজে হামলা বন্ধের ঘোষণা না দিলে অভিযান চলবে: যুক্তরাষ্ট্র

আপডেট সময় : ১১:৩৭:৩১ পূর্বাহ্ণ, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫
লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজে হুতি হামলা বন্ধের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত ইয়েমেনে তাদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। রোববার (১৬ মার্চ) মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ এই ঘোষণা দেন। সোমবার (১৭ মার্চ) পৃথক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু এবং সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

শনিবার রাতে হুতিদের বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। হুতি পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, এতে অন্তত ৫৩ জন নিহত এবং ৯৮ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে পাঁচ শিশু ও দুই নারী রয়েছেন। মার্কিন প্রশাসন এখনো সাধারণ মানুষের প্রাণহানির বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। এদিকে ওয়াশিংটন বলছে, শনিবারের বিমান হামলায় নিহতদের মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ হুতি নেতা রয়েছেন, কিন্তু গোষ্ঠীটি এই তথ্য নিশ্চিত করেনি।

হুতি নেতা আব্দুল মালিক আল-হুতি পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র হামলা চালানো অব্যাহত রাখলে লোহিত সাগরে মার্কিন ও মিত্র দেশের জাহাজগুলো তাদের টার্গেট থাকবে। হুতি সামরিক মুখপাত্র দাবি করেছেন, তারা মার্কিন রণতরি ইউএসএস হ্যারি এস. ট্রুম্যানসহ কয়েকটি যুদ্ধজাহাজে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছেন। তবে মার্কিন সেনারা দাবি করেছে, তারা হুতিদের ১১টি ড্রোন গুলি করে ধ্বংস করেছে, যার কোনোটি রণতরির কাছাকাছি আসতে পারেনি।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হেগসেথ বলেছেন, হুতিরা হামলা বন্ধের ঘোষণা দিলেই যুক্তরাষ্ট্রের অভিযান বন্ধ হবে। তবে নিরাপদ নৌ চলাচল নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত এই অভিযান চলবে। অন্যদিকে, হুতিদের সমর্থন দেওয়ার জন্য ইরানকে দায়ী করে ওয়াশিংটন তেহরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে।

মূলত, গাজা উপত্যকায় সম্পূর্ণ অবরোধ জারি করেছে ইসরায়েল। ফলে সেখানে কোনো ধরনের খাদ্যদ্রব্য, পানি বা ওষুধ সরবরাহ করা যাচ্ছে না। এ অবস্থায় লোহিত সাগরে ইসরায়েল-সংশ্লিষ্ট জাহাজগুলোতে পুনরায় আক্রমণ শুরু করার হুমকি দেয় হুতি বিদ্রোহীরা। এই হুমকির পরপরই শনিবার ইয়েমেনে হুতিদের অবস্থান লক্ষ্য করে বিমান হামলা শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র।

এক দশকের বেশি সময় ধরে হুতিরা ইয়েমেনে সক্রিয়, এবং ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে তারা লোহিত সাগরে ১০০-এর বেশি হামলা চালিয়েছে। তাদের দাবি, গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ হিসেবেই এসব হামলা হচ্ছে।