পাকিস্তান-আফগানিস্তান সংঘর্ষ থামছেই না

পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে টানা তিন দিন ধরে সংঘর্ষ চলছে। আফগান বাহিনীর ছোড়া আর্টিলারি শেলে পাকিস্তানের এক নাগরিক আহত হয়েছেন এবং বেশ কয়েকটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ডন পত্রিকার অনলাইন প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।

এপি নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, তোরখাম সীমান্তবর্তী এলাকায় সংঘর্ষের কারণে স্থানীয় বাসিন্দারা বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে পালিয়ে যাচ্ছেন। বেসামরিক সূত্রের বরাতে ডন জানায়, আফগানিস্তান থেকে ছোড়া মর্টার শেলে বাছা মাইনার এলাকার বাসিন্দা ইশহাক খান আহত হয়েছেন। তবে তার অবস্থা গুরুতর নয়। আহত ইশহাক খানকে প্রথমে লান্দি কোটাল হাসপাতালে নেওয়া হয়, পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য পেশোয়ার পাঠানো হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দুই পক্ষই পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত চেকপয়েন্ট এবং সামরিক স্থাপনার ওপর ভারী অস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। পাকিস্তানি বাহিনীর হামলায় আফগানিস্তানের ভেতরে কিছু ভবনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে গোলাগুলির শব্দ থেমে গেলেও, বুধবার দুপুর থেকে আবারও আর্টিলারি শেলের পাল্টাপাল্টি হামলা শুরু হয়।

একজন পাকিস্তানি কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সংঘর্ষের কারণে সীমান্তের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। উভয়পক্ষই হালকা ও ভারী অস্ত্র ব্যবহার করেছে। তিনি আরও জানান, আফগান বাহিনীর হামলায় পাকিস্তানের তিনজন নিরাপত্তা রক্ষী আহত হয়েছে এবং সীমান্তে হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।

এর আগে, গত ২৪ ডিসেম্বর আফগানিস্তানের পাকতিকা প্রদেশে পাকিস্তানের বিমান হামলায় ৪৬ জন নিহত হয়েছিলেন, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুও ছিল। এই হামলার প্রতিশোধ হিসেবে তালেবান যোদ্ধারা পাকিস্তানি সীমান্ত চৌকিগুলোর ওপর পাল্টা আক্রমণ চালায়, যাতে ১৯ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়। সেই ঘটনার পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি থমথমে থাকলেও সংঘর্ষ আবারও শুরু হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

পাকিস্তান-আফগানিস্তান সংঘর্ষ থামছেই না

আপডেট সময় : ০৩:২২:০৫ অপরাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ ২০২৫
পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে টানা তিন দিন ধরে সংঘর্ষ চলছে। আফগান বাহিনীর ছোড়া আর্টিলারি শেলে পাকিস্তানের এক নাগরিক আহত হয়েছেন এবং বেশ কয়েকটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ডন পত্রিকার অনলাইন প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।

এপি নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, তোরখাম সীমান্তবর্তী এলাকায় সংঘর্ষের কারণে স্থানীয় বাসিন্দারা বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে পালিয়ে যাচ্ছেন। বেসামরিক সূত্রের বরাতে ডন জানায়, আফগানিস্তান থেকে ছোড়া মর্টার শেলে বাছা মাইনার এলাকার বাসিন্দা ইশহাক খান আহত হয়েছেন। তবে তার অবস্থা গুরুতর নয়। আহত ইশহাক খানকে প্রথমে লান্দি কোটাল হাসপাতালে নেওয়া হয়, পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য পেশোয়ার পাঠানো হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দুই পক্ষই পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত চেকপয়েন্ট এবং সামরিক স্থাপনার ওপর ভারী অস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। পাকিস্তানি বাহিনীর হামলায় আফগানিস্তানের ভেতরে কিছু ভবনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে গোলাগুলির শব্দ থেমে গেলেও, বুধবার দুপুর থেকে আবারও আর্টিলারি শেলের পাল্টাপাল্টি হামলা শুরু হয়।

একজন পাকিস্তানি কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সংঘর্ষের কারণে সীমান্তের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। উভয়পক্ষই হালকা ও ভারী অস্ত্র ব্যবহার করেছে। তিনি আরও জানান, আফগান বাহিনীর হামলায় পাকিস্তানের তিনজন নিরাপত্তা রক্ষী আহত হয়েছে এবং সীমান্তে হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।

এর আগে, গত ২৪ ডিসেম্বর আফগানিস্তানের পাকতিকা প্রদেশে পাকিস্তানের বিমান হামলায় ৪৬ জন নিহত হয়েছিলেন, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুও ছিল। এই হামলার প্রতিশোধ হিসেবে তালেবান যোদ্ধারা পাকিস্তানি সীমান্ত চৌকিগুলোর ওপর পাল্টা আক্রমণ চালায়, যাতে ১৯ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়। সেই ঘটনার পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি থমথমে থাকলেও সংঘর্ষ আবারও শুরু হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।