স্কুলের ওপর ৫০০ পাউন্ডের দুটি বোমা ফেলল মিয়ানমার জান্তা

ভয়াবহ ভূমিকম্পের পরেও মিয়ানমারে সেনাশাসিত জান্তা সরকারের হামলা অব্যাহত রয়েছে। দেশটির সাগাইং অঞ্চল ও চিন রাজ্যে চালানো সামরিক বিমান হামলায় ইতোমধ্যে ৫০ জনেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে শিশু ও ধর্মীয় নেতাও রয়েছেন।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ইরাবতির খবরে বলা হয়েছে, গত বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) সাগাইং অঞ্চলের কাওলিন টাউনশিপের ইন পিন হ্লা গ্রামের একটি স্কুলে দুটি ৫০০ পাউন্ড বোমা নিক্ষেপ করে সরকারি বাহিনী। এতে এক শিশুসহ ৩ জন নিহত হন।

এর আগে ২৮ মার্চের ভূমিকম্পে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটায় ২২ এপ্রিল পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়। তবে জাতিসংঘ জানিয়েছে, ভূমিকম্প পরবর্তী সময়ে জান্তা বাহিনী ১২০টিরও বেশি হামলা চালিয়েছে, যার অর্ধেকেরও বেশি ঘটেছে যুদ্ধবিরতির সময়।

গত বুধবার বিকেলে উত্তর সাগাইংয়ের নানখাম গ্রামে খাবারের দোকান ও সরকারি হাসপাতালের কাছে এক ক্যাফেতে চালানো বিমান হামলায় কয়েকজন শিশু ও বেসামরিক লোক নিহত হন। এছাড়া দক্ষিণ চিন রাজ্যের মিন্দাত টাউনশিপে পিউই গ্রামে দুটি ভারী বোমা নিক্ষেপে ছয়জন নিহত হন, যাদের মধ্যে ছিলেন একজন যাজক ও আট মাসের একটি শিশু।

গতকাল (বৃহস্পতিবার) রাতে উত্তর চিন রাজ্যের টেডিম টাউনশিপের সাইজাং গ্রামে বিমান হামলায় এক পরিবারের ছয় সদস্য নিহত হয়েছেন। ধ্বংস হয়েছে একাধিক ভবন ও একটি স্কুল লাইব্রেরি, ফলে গ্রামবাসীরা নিরাপত্তার জন্য জঙ্গলে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন।

জাতীয় ঐক্য সরকারের মানবাধিকার মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২৮ মার্চ থেকে ৮ এপ্রিলের মধ্যে জান্তা বাহিনী ১৫টি অঞ্চল ও রাজ্যের মধ্যে ১২টিতে মোট ৯২টি বিমান ও গোলাবর্ষণ হামলা চালিয়েছে, এতে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৭২ জন এবং আহত হয়েছেন আরও ৯১ জন।

তবে জান্তার মুখপাত্র মেজর জেনারেল জাও মিন তুন দাবি করেছেন, যুদ্ধবিরতির মাঝেও সরকারবিরোধী গোষ্ঠীগুলো সাগাইং, মাগওয়ে, রাখাইন, কারেনি এবং উত্তর শানে তাদের বাহিনীর ওপর আক্রমণ চালিয়েছে।

জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো এসব হামলাকে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন হিসেবে অভিহিত করে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

স্কুলের ওপর ৫০০ পাউন্ডের দুটি বোমা ফেলল মিয়ানমার জান্তা

আপডেট সময় : ০৭:৫৮:৪৩ অপরাহ্ণ, শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫
ভয়াবহ ভূমিকম্পের পরেও মিয়ানমারে সেনাশাসিত জান্তা সরকারের হামলা অব্যাহত রয়েছে। দেশটির সাগাইং অঞ্চল ও চিন রাজ্যে চালানো সামরিক বিমান হামলায় ইতোমধ্যে ৫০ জনেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে শিশু ও ধর্মীয় নেতাও রয়েছেন।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ইরাবতির খবরে বলা হয়েছে, গত বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) সাগাইং অঞ্চলের কাওলিন টাউনশিপের ইন পিন হ্লা গ্রামের একটি স্কুলে দুটি ৫০০ পাউন্ড বোমা নিক্ষেপ করে সরকারি বাহিনী। এতে এক শিশুসহ ৩ জন নিহত হন।

এর আগে ২৮ মার্চের ভূমিকম্পে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটায় ২২ এপ্রিল পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়। তবে জাতিসংঘ জানিয়েছে, ভূমিকম্প পরবর্তী সময়ে জান্তা বাহিনী ১২০টিরও বেশি হামলা চালিয়েছে, যার অর্ধেকেরও বেশি ঘটেছে যুদ্ধবিরতির সময়।

গত বুধবার বিকেলে উত্তর সাগাইংয়ের নানখাম গ্রামে খাবারের দোকান ও সরকারি হাসপাতালের কাছে এক ক্যাফেতে চালানো বিমান হামলায় কয়েকজন শিশু ও বেসামরিক লোক নিহত হন। এছাড়া দক্ষিণ চিন রাজ্যের মিন্দাত টাউনশিপে পিউই গ্রামে দুটি ভারী বোমা নিক্ষেপে ছয়জন নিহত হন, যাদের মধ্যে ছিলেন একজন যাজক ও আট মাসের একটি শিশু।

গতকাল (বৃহস্পতিবার) রাতে উত্তর চিন রাজ্যের টেডিম টাউনশিপের সাইজাং গ্রামে বিমান হামলায় এক পরিবারের ছয় সদস্য নিহত হয়েছেন। ধ্বংস হয়েছে একাধিক ভবন ও একটি স্কুল লাইব্রেরি, ফলে গ্রামবাসীরা নিরাপত্তার জন্য জঙ্গলে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন।

জাতীয় ঐক্য সরকারের মানবাধিকার মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২৮ মার্চ থেকে ৮ এপ্রিলের মধ্যে জান্তা বাহিনী ১৫টি অঞ্চল ও রাজ্যের মধ্যে ১২টিতে মোট ৯২টি বিমান ও গোলাবর্ষণ হামলা চালিয়েছে, এতে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৭২ জন এবং আহত হয়েছেন আরও ৯১ জন।

তবে জান্তার মুখপাত্র মেজর জেনারেল জাও মিন তুন দাবি করেছেন, যুদ্ধবিরতির মাঝেও সরকারবিরোধী গোষ্ঠীগুলো সাগাইং, মাগওয়ে, রাখাইন, কারেনি এবং উত্তর শানে তাদের বাহিনীর ওপর আক্রমণ চালিয়েছে।

জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো এসব হামলাকে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন হিসেবে অভিহিত করে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে।