সৌদি আরবে সম্প্রতি এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটছে- অনেক নারী, যারা বিয়ের বয়স পার করে ফেলেছেন, তবে বিয়ে করছেন না। শুধু নারীরাই যে এমন তা নয়, পুরুষরাও সে দেশের নারীদের বিয়ে করতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।
সৌদি আইন অনুযায়ী, নারীদের বিয়ের জন্য কোনো নির্দিষ্ট বয়সসীমা নেই। দেশটিতে আট থেকে নয় বছরের মেয়েদেরও বিয়ে দেওয়া হয়। তবে, বিয়ের ক্ষেত্রে নারীদের মতামত প্রায়ই গ্রহণ করা হয় না। যদি কোনো নারী নিজের পছন্দের পুরুষকে বিয়ে করতে চান, তাও তিনি পুরুষের অভিভাবকদের লিখিত অনুমতির উপর নির্ভরশীল। এমনকি যদি পরিবার থেকে বিয়ে ঠিক করা হয় এবং মেয়েটি সম্মতি না দেয়, তবুও তার কিছু করার থাকে না।
অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, সৌদি নারীরা এখন দেশের বাইরে অন্য দেশের পুরুষদের সাথে বিয়ে করতে পারবে, যা সৌদি সরকার সম্প্রতি অনুমোদন করেছে। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সৌদি নারীরা এখন বিদেশি পাত্রদের সাথে বিয়ে করতে পারবে এবং রোজগারের সুযোগও পাবে।
তবে, বিদেশি পাত্রকে বিয়ে করার জন্য কিছু শর্ত রয়েছে। যেমন:-
সৌদি নারীর বয়স অন্তত ২৫ বছর হতে হবে (পূর্বে যা ছিল ৩০ বছর)।
পাত্র-পাত্রীর বয়সের পার্থক্য ১৫ বছরের বেশি হওয়া যাবে না।
বিদেশি পাত্র যদি আগে বিবাহিত হয়ে থাকেন, তবে তিনি সৌদি নারীকে বিয়ে করতে পারবেন না।
এছাড়া, অনেক সৌদি পরিবার তাদের মেয়েদের নিজ গোত্র ছাড়া অন্য গোত্রের পুরুষের সাথে বিয়ে দিতে চায় না, যা তাদের সামাজিক নিয়মাবলী ও ঐতিহ্যের সাথে মিলে না।
এদিকে, সৌদি পুরুষরা কেন সৌদি নারীদের বিয়ে করতে ভয় পাচ্ছে? এর পেছনে মোট ৪৫টি কারণ রয়েছে, তবে অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে, স্ত্রীকে মোহরানার টাকা জোগাড় করতে না পারা। সরকারের নির্ধারিত মোটা অঙ্কের মোহরানা সৌদি যুবকদের জন্য একটি বড় বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে, এবং তাই অনেক সৌদি পুরুষ বিদেশি পাত্রীকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। এছাড়া, বিয়ের অতিরিক্ত খরচও বেশ বেড়ে গেছে, যা বর্তমানে প্রায় ২ লাখ রিয়েলে পৌঁছেছে।
মোহরানার টাকা জোগাড় করতে না পারা এবং সরকার নির্ধারিত মোটা অঙ্কের টাকা জোগাড় করতে না পরার কারণে সৌদি যুবকরা বিয়ে করতে পারছেন না।
অর্থনৈতিক কারণই শুধু নয়, অনেক সামাজিক কারণেও তারা সৌদি নারীদের বিয়ে করতে পারছেন না।
সৌদি আরবের নারীরও স্বামী হিসেবে সৌদি পুরুষদের অপছন্দ করেন। স্বাচ্ছন্দ দাম্পত্য জীবনের জন্য তারা বিদেশি পুরুষদের বেশি পছন্দ করেন। অনেকে বিদেশি পুরুষদের বিয়ে করে বিদেশে গিয়ে স্বাধীনভাবে জীবন যাপন করতে চান।