পরিবেশ রক্ষা এবং জলবায়ু সংকটের বিষয়টি বিশ্বব্যাপী অত্যন্ত গুরুতর সমস্যা হিসেবে উঠে আসার প্রেক্ষিতে “জীবাশ্ম জ্বালানির বিনিয়োগ বন্ধ এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি নির্ভর বিদ্যুৎ মহাপরিকল্পনার” দাবি জানিয়ে সারাদেশের ন্যায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পালিত হয়েছে বৈশ্বিক জলবায়ু ধর্মঘট।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) সকাল ১০টায়
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে ইয়োথনেট গ্লোবালের উদ্যোগ উক্ত জলবায়ু ধর্মঘট পালিত হয়।
এসময় শিক্ষার্থীদের হাতে থাকা বিভিন্ন ফ্ল্যাকার্ডে লেখাগুলো ছিলো,“জলবায়ু ন্যায়বিচার, এখানেই,এখনই”।“ভুয়া সমাধান নয়,আমাদের জ্বালানি মহাপরিকল্পনা লাগবে”।“বৈশ্বিক জলবায়ু তহবিলে বাংলাদেশেকে অগ্রাধিকার দিতে হবে”। “কয়লা-এলএনজি নয়, নবায়নযোগ্য জ্বালানি আমাদের ভবিষ্যত”।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের এমফিল গবেষক তৌফিক আহমেদ বলেন, বিজ্ঞানীরা বলছেন আগামী একশ বছররের মধ্যে যদি পৃথিবী ধ্বংস হয় সেটা কোন যুদ্ধের মাধ্যমে হবে না বরং হবে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে। আজ আমরা যদি পৃথিবীর অন্যান্য দেশের দিকে তাকাই সবাই রয়েছে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে। এই ঝুকি নিরেশনে বাংলাদেশের মতো ক্লাইমেট ভালনারেবল দেশগুলোকে বৈশ্বিকভাবে সহায়তা করা দরকার। ক্লাইমেট ফাইনেন্সের আওতায় নিয়ে আসা।
এসময় তিনি আরও বলেন, পরিসংখ্যানে দেখা যায় বাংলাদেশ কার্বোন নিরশনে মাত্র ০.৪৭ শতাংশ অংশগ্রহণ করতেছে। সুতরাং এই জায়গা থেকে আমরা মনে করি বাংলাদেশের দিকে বিশ্ববাসীর নজর দেওয়া দরকার। বাংলাদেশ চরম হুমকির মধ্যে রয়েছে। বিজ্ঞানীরা বলছে আগামী ৫০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় ১৭ শতাংশ জায়গা হারাবে। তবে এটা কোন যুদ্ধের মাধ্যমে নয় বরং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে। সুতরাং আমাদের জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে এখনই রুখে দাঁড়ানো উচিত।
জলবায়ু ধর্মঘটে উপস্থিত আর এক শিক্ষার্থী ওয়াজেদ হোসেন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য জনগন দায়ী নয়। সরকার আমাদের প্লাস্টিকের পরিবর্তে পাটের ব্যাগ সরবরাহ করছে না তাই আমরা প্লাস্টিকের ব্যবহার কমাতে পারছি না। এখান থেকে আমাদের পরিবেশ ধ্বংসের শুরু। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশের যত উন্নয়ন প্রকল্প হয়েছে তার বেশিরভাগই দেশি-বিদেশি কর্পোরেটদের পকেট ভারি করার জন্য। সেসব উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য যে দেশের জলবায়ুতে প্রভাব পড়বে তা কখনো ভাবা হয়নি। এ সমস্যা সমাধানের জন্য জন সচেতনের পাশাপাশি সরকারের বিভিন্ন বিভাগ কে পেশারাইজ করতে হবে।
এ সময় উপস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা ড. আমিরুল ইসলাম বলেন, আমরা সভ্যতা বা শিক্ষার নামে পৃথিবীকে বিপর্যয়ের মুখে ফেলে দিচ্ছি। পরিবেশের জীব বৈচিত্র্য নষ্ট করছি।পরিবেশের বিভিন্ন উপাদান রয়েছে। মানুষ, জীবজন্তু এবং গাছপালা পরিবেশের অন্যতম উপাদান।আমরা সাদা চোখে যে পরিবেশ দেখি এর বাহিরে আরো অনেক অনুজীব ও পরজীব নিয়েই আমদের জীববৈচিত্র্য।
তিনি আরও বলেন, কিন্তু আমরা মানুষেরা নিজেদের সুবিধার্থে পরিবেশকে বিপর্যয়ের মুখে ফেলে দিচ্ছি। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির নানাবিধ সুবিধার নামে আমরা প্লাস্টিকের বিভিন্ন পণ্য ব্যবহার এবং গাছপালা নিধন করে পরিবেশকে বিপর্যয়ের মুখে ফেলছি যা জনগণকে দায়ী করছে। বিভিন্ন ধরনের নবায়নযোগ্য ও অনবায়নযোগ্য বর্জ্য নিষ্কাশন করে পরিবেশকে রক্ষা করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।