শিরোনাম :
Logo মৃত্যুদণ্ড বজায় রেখে গুম প্রতিরোধ, প্রতিকার ও সুরক্ষা অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন Logo সিরাজদিখানে মরহুম হাজী জয়নাল আবেদীন মাষ্টার স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টের দুটি ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত Logo ঢাকায় হামলার প্রতিবাদে খুবিতে প্রকৌশল অধিকার দাবিতে মানববন্ধন Logo চিকিৎসার অভাবে মানবেতর জীবন যাপন করছেন প্রবাসফেরত ইসমাইল হোসেন Logo চিত্রা-নড়াইল জেলা ছাত্রকল্যাণ ফাউন্ডেশনের নেতৃত্বে আরমান ও বোরহান Logo চাঁদপুর সদরের জনবান্ধব ইউএনও সাখাওয়াত জামিল সৈকতকে লক্ষ্মীপুরের এডিসি পদে বদলী Logo বেরোবিতে ভর্তি পরীক্ষার আসন বরাদ্দে অনিময়ের অভিযোগ ; প্রশাসন বলছে শিক্ষার্থীদের বুঝার ভুল Logo প্রকাশিত হয়েছে কবি ও কথাসাহিত্যিক নুরুন্নাহার মুন্নির সাহিত্য পত্রিকা ‘আখ্যান’ Logo পলাশবাড়ী পৌর এলাকায় জমি জবর দখলের অভিযোগ Logo প্রবাসফেরত ইসমাইলের পাশে দাঁড়ালেন এনসিপি নেতা ডা. আরিফুল ইসলাম
রাজনীতি

নতুন রাজনৈতিক দল

  • সম্পাদকীয় ডেস্ক সম্পাদকীয় ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০২:৫৪:১৭ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • ৭৪৮ বার পড়া হয়েছে

জুলাই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রদের উদ্যোগে নতুন একটি রাজনৈতিক দল আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে। ১৪ ফেব্রুয়ারি আজকের পত্রিকায় ‘ছাত্রদের দলে থাকবে না এক ব্যক্তির কর্তৃত্ব’ শিরোনামে খবর থেকে জানা যায়, দলটির মূল লক্ষ্য হবে ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা বিলোপ, গণতন্ত্রচর্চা নিশ্চিতকরণ ও তরুণ নেতৃত্বকে এগিয়ে নেওয়া। তবে বাস্তবতা হলো, বাংলাদেশে নতুন রাজনৈতিক দলের আবির্ভাব বরাবরই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে। অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়ে নতুন রাজনৈতিক দল যাত্রা শুরু করলেও সময়ের ব্যবধানে নানা কারণে দুর্বল হয়ে পড়েছে কিংবা প্রচলিত রাজনীতির ধারার বাইরে যেতে পারেনি।

 

নতুন দলটি আদৌ দীর্ঘস্থায়ী ও কার্যকর হতে পারবে কি না, সেটি এখন মূল প্রশ্ন। ছাত্রদের রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রতি মানুষের আগ্রহ ও প্রত্যাশা থাকলেও রাজনৈতিক বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন। প্রতিষ্ঠিত দু-একটি রাজনৈতিক দলের শক্তিশালী সাংগঠনিক কাঠামো, অর্থ ও জনসম্পৃক্ততার বিপরীতে নবগঠিত দলটিকে প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হতে হবে।

নতুন দলটি তাদের গঠনতন্ত্রে একক নেতৃত্বের আধিপত্য ঠেকাতে চায়, যা ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি। বাংলাদেশে রাজনৈতিক দলগুলো সাধারণত ব্যক্তিনির্ভর হয়ে ওঠে এবং গণতান্ত্রিক চর্চার বদলে একক নেতৃত্বের হুকুম বরদার হয়ে পড়ে। নতুন দলটি যদি সত্যিই অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র বজায় রাখতে পারে, তবে এটি রাজনীতিতে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারবে।

সংগঠনটি জানিয়েছে, তারা ইস্যুভিত্তিক আন্দোলনের মাধ্যমে জনগণের মধ্যে নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে চায়। সরকারের কোনো সিদ্ধান্ত জনগণের স্বার্থের বিরুদ্ধে গেলে তারা তার বিরোধিতা করবে এবং মাঠে থাকবে। এটি কার্যকর হলে তাদের জন্য একটি রাজনৈতিক ক্ষেত্র তৈরি হতে পারে। তবে শুধু প্রতিবাদ ও আন্দোলননির্ভর রাজনীতি কতটা টেকসই হবে, সেটি নিয়ে চিন্তা করা দরকার।

উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তুরস্ক, চিলি, ভারত, পাকিস্তান, দক্ষিণ কোরিয়াসহ বিভিন্ন দেশের উদাহরণ পর্যালোচনা করা হচ্ছে; যেখানে তরুণদের নেতৃত্বে নতুন দল গঠিত হয়েছে। তবে বিদেশি মডেলের প্রতিলিপি তৈরি না করে, দেশীয় বাস্তবতার উপযোগী একটি রাজনৈতিক কাঠামো গঠন করা জরুরি।

নতুন দলটি যদি সত্যিকার অর্থে একটি বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে গড়ে উঠতে চায়, তবে শুধু আওয়ামী লীগ-বিরোধিতার পরিবর্তে সুস্পষ্ট রাজনৈতিক দর্শন, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও নীতি থাকা দরকার। ইতিমধ্যে তারা ২০৩৫ ও ২০৪৭ সালকে কেন্দ্র করে মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচির কথা বলেছে, যা ইতিবাচক। তবে এগুলো বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন সুশৃঙ্খল দলীয় কাঠামো, দক্ষ নেতৃত্ব ও মানুষের আস্থা অর্জন।

বাংলাদেশের তরুণসমাজের মধ্যে রাজনৈতিক সচেতনতা ও অংশগ্রহণের আগ্রহ বাড়ছে। দলটি যদি সত্যিই নতুন কিছু করতে চায়, তবে তাদের জন্য এটি একটি সুযোগ। কিন্তু তারা যদি প্রচলিত রাজনৈতিক সংস্কৃতির ফাঁদে পড়ে, তাহলে অন্য অনেক দলের মতো তারাও হারিয়ে যাবে। এখন দেখার বিষয়, তারা সত্যিকারের পরিবর্তনের সূচনা করতে পারে কি না।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

মৃত্যুদণ্ড বজায় রেখে গুম প্রতিরোধ, প্রতিকার ও সুরক্ষা অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন

রাজনীতি

নতুন রাজনৈতিক দল

আপডেট সময় : ০২:৫৪:১৭ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

জুলাই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রদের উদ্যোগে নতুন একটি রাজনৈতিক দল আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে। ১৪ ফেব্রুয়ারি আজকের পত্রিকায় ‘ছাত্রদের দলে থাকবে না এক ব্যক্তির কর্তৃত্ব’ শিরোনামে খবর থেকে জানা যায়, দলটির মূল লক্ষ্য হবে ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা বিলোপ, গণতন্ত্রচর্চা নিশ্চিতকরণ ও তরুণ নেতৃত্বকে এগিয়ে নেওয়া। তবে বাস্তবতা হলো, বাংলাদেশে নতুন রাজনৈতিক দলের আবির্ভাব বরাবরই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে। অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়ে নতুন রাজনৈতিক দল যাত্রা শুরু করলেও সময়ের ব্যবধানে নানা কারণে দুর্বল হয়ে পড়েছে কিংবা প্রচলিত রাজনীতির ধারার বাইরে যেতে পারেনি।

 

নতুন দলটি আদৌ দীর্ঘস্থায়ী ও কার্যকর হতে পারবে কি না, সেটি এখন মূল প্রশ্ন। ছাত্রদের রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রতি মানুষের আগ্রহ ও প্রত্যাশা থাকলেও রাজনৈতিক বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন। প্রতিষ্ঠিত দু-একটি রাজনৈতিক দলের শক্তিশালী সাংগঠনিক কাঠামো, অর্থ ও জনসম্পৃক্ততার বিপরীতে নবগঠিত দলটিকে প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হতে হবে।

নতুন দলটি তাদের গঠনতন্ত্রে একক নেতৃত্বের আধিপত্য ঠেকাতে চায়, যা ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি। বাংলাদেশে রাজনৈতিক দলগুলো সাধারণত ব্যক্তিনির্ভর হয়ে ওঠে এবং গণতান্ত্রিক চর্চার বদলে একক নেতৃত্বের হুকুম বরদার হয়ে পড়ে। নতুন দলটি যদি সত্যিই অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র বজায় রাখতে পারে, তবে এটি রাজনীতিতে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারবে।

সংগঠনটি জানিয়েছে, তারা ইস্যুভিত্তিক আন্দোলনের মাধ্যমে জনগণের মধ্যে নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে চায়। সরকারের কোনো সিদ্ধান্ত জনগণের স্বার্থের বিরুদ্ধে গেলে তারা তার বিরোধিতা করবে এবং মাঠে থাকবে। এটি কার্যকর হলে তাদের জন্য একটি রাজনৈতিক ক্ষেত্র তৈরি হতে পারে। তবে শুধু প্রতিবাদ ও আন্দোলননির্ভর রাজনীতি কতটা টেকসই হবে, সেটি নিয়ে চিন্তা করা দরকার।

উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তুরস্ক, চিলি, ভারত, পাকিস্তান, দক্ষিণ কোরিয়াসহ বিভিন্ন দেশের উদাহরণ পর্যালোচনা করা হচ্ছে; যেখানে তরুণদের নেতৃত্বে নতুন দল গঠিত হয়েছে। তবে বিদেশি মডেলের প্রতিলিপি তৈরি না করে, দেশীয় বাস্তবতার উপযোগী একটি রাজনৈতিক কাঠামো গঠন করা জরুরি।

নতুন দলটি যদি সত্যিকার অর্থে একটি বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে গড়ে উঠতে চায়, তবে শুধু আওয়ামী লীগ-বিরোধিতার পরিবর্তে সুস্পষ্ট রাজনৈতিক দর্শন, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও নীতি থাকা দরকার। ইতিমধ্যে তারা ২০৩৫ ও ২০৪৭ সালকে কেন্দ্র করে মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচির কথা বলেছে, যা ইতিবাচক। তবে এগুলো বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন সুশৃঙ্খল দলীয় কাঠামো, দক্ষ নেতৃত্ব ও মানুষের আস্থা অর্জন।

বাংলাদেশের তরুণসমাজের মধ্যে রাজনৈতিক সচেতনতা ও অংশগ্রহণের আগ্রহ বাড়ছে। দলটি যদি সত্যিই নতুন কিছু করতে চায়, তবে তাদের জন্য এটি একটি সুযোগ। কিন্তু তারা যদি প্রচলিত রাজনৈতিক সংস্কৃতির ফাঁদে পড়ে, তাহলে অন্য অনেক দলের মতো তারাও হারিয়ে যাবে। এখন দেখার বিষয়, তারা সত্যিকারের পরিবর্তনের সূচনা করতে পারে কি না।