শিরোনাম :
Logo অদ্য অপরাহ্ন থেকে সাজেক পর্যটক ভ্রমণের জন্য উন্মুক্ত Logo সিরাজদিখানে এস,এস,সি পরীক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠান Logo “ফেব্রুয়ারি-আমাদের অস্তিত্ব “ Logo কচুয়ার রাগদৈল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্রীড়া সাংস্কৃতিক ও পুরস্কার বিতরণ Logo প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য সুখবর, সময় আছে আরও দুইদিন Logo জনপ্রশাসনের দুই সচিবকে বদলি Logo খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বাসেডর  -খুবি উপাচার্য  Logo নতুন দলে অংশ নিতেই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত: নাহিদ ইসলাম Logo ধর্ষণের প্রতিবাদে যবিপ্রবির এলামনাইদের মানববন্ধন Logo আন্তঃ বিশ্ববিদ্যালয় ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় বিজয়ী “বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ “
স্থানীয় সরকার

স্থানীয় সরকার নির্বাচন সংস্কার ও চ্যালেঞ্জ

  • তোহা ইসলাম তোহা ইসলাম
  • আপডেট সময় : ০১:৪৬:১৪ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • ৭১৪ বার পড়া হয়েছে
  • সৈয়দা লাসনা কবীর ও মোহাম্মাদ ঈসা ইবন বেলাল

স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে নির্বাচন সংস্কার কমিশন এরই মধ্যে কিছু সুপারিশ জমা দিয়েছে, পাশাপাশি স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনও বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ করার পরিকল্পনা করছে। তবে এ সুপারিশগুলোর বাস্তবায়ন ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সুস্পষ্ট মতপার্থক্য দেখা যাচ্ছে। এক পক্ষ মনে করছে, এসব সংস্কার দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে আরো শক্তিশালী করবে এবং স্থানীয় সরকারকে কার্যকর ও উন্নয়নমুখী করবে, অন্যদিকে কিছু রাজনৈতিক দল এটিকে বর্তমান শাসন ব্যবস্থার একটি কৌশলগত পরিকল্পনা হিসেবে দেখছে, যা ভবিষ্যতে ক্ষমতার ভারসাম্য ও জাতীয় নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে। ফলে স্থানীয় সরকার নির্বাচন সংস্কার প্রশ্নে রাজনৈতিক অঙ্গনে এক ধরনের মতপার্থক্য তৈরি হয়েছে, যা এর বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াকে আরো জটিল করে তুলতে পারে।

জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন

নির্বাচন কমিশন সম্প্রতি একটি সংস্কার রিপোর্ট প্রকাশ করেছে, যেখানে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের জন্য বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে যে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজন করা উচিত, যাতে স্থানীয় প্রশাসন কার্যকরভাবে গঠন হতে পারে এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকে।

কিছু রাজনৈতিক দল মনে করছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হলে ফ্যাসিবাদের সুবিধাভোগীরা এ নির্বাচনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে পুনরায় রাজনীতির মাঠে শক্তিশালী হয়ে উঠবে, যা ভবিষ্যতের বাংলাদেশ ও কাঙ্ক্ষিত সংস্কার প্রক্রিয়ার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তাদের মতে, আগে জাতীয় নির্বাচন হওয়া জরুরি, যাতে একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হয় এবং তার তত্ত্বাবধানে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ স্থানীয় সরকার নির্বাচন পরিচালিত হতে পারে।

অন্যদিকে কিছু রাজনৈতিক দল, বিশেষ করে ইসলামপন্থী দলগুলো ও ছাত্রদের একাংশ মনে করছে যে বাংলাদেশে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন ছাড়া ভোটের সঠিক প্রতিফলন অতীতে খুব বেশি দেখা যায়নি। তাদের যুক্তি হলো, প্রথমে স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে একটি কার্যকর ও শক্তিশালী স্থানীয় প্রশাসন গঠন করা সম্ভব হবে, যা পরবর্তী সময়ে একটি অংশগ্রহণমূলক জাতীয় নির্বাচনের জন্য ইতিবাচক দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে। পাশাপাশি এটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন কতটা বাস্তবায়নযোগ্য তা যাচাই করার ক্ষেত্রেও সহায়ক হবে।

অনেক বিশ্লেষক মনে করেন, জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন একই দিনে আয়োজন করা হলে বেশকিছু সুবিধা পাওয়া যেতে পারে। প্রথমত, এতে নির্বাচনী ব্যয় কমানো সম্ভব হবে। কারণ প্রশাসনিক, লজিস্টিক ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা একসঙ্গে পরিচালনা করা গেলে সময় ও শ্রম সাশ্রয় হবে। দ্বিতীয়ত, রাজনৈতিক দলগুলো একই সঙ্গে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে পারবে, যা তাদের প্রচারণা ও সাংগঠনিক কার্যক্রমকে আরো কার্যকর করতে পারে। তৃতীয়ত, নির্বাচন কমিশনের জন্যও এটি সুবিধাজনক হতে পারে। কারণ আলাদাভাবে নির্বাচন পরিচালনা করতে হলে বারবার নতুনভাবে নিরাপত্তা, ভোট কেন্দ্র পরিচালনা ও ব্যালট সরবরাহের প্রয়োজন হয়।

তবে এ পরিকল্পনার কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। প্রথমত, জাতীয় নির্বাচনের প্রভাব স্থানীয় নির্বাচনে পড়তে পারে, যা ছোট ও স্বাধীন প্রার্থীদের জন্য প্রতিযোগিতা কঠিন করে তুলতে পারে। দ্বিতীয়ত, নির্বাচন কমিশনের ওপর দায়িত্ব বহুগুণ বেড়ে যাবে, কারণ স্থানীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় ভোট গণনা ও ফলাফল প্রকাশ জটিল হয়ে উঠতে পারে। তৃতীয়ত, নিরাপত্তার চ্যালেঞ্জ দ্বিগুণ হবে। কারণ দুটি স্তরের নির্বাচন একসঙ্গে হলে সহিংসতার আশঙ্কা বাড়তে পারে।

এ কারণে নির্বাচন কমিশনকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে একটি কার্যকর পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। যদি প্রশাসনিক ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা যথাযথভাবে নিশ্চিত করা যায়, তবে একই দিনে নির্বাচন আয়োজন সামগ্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে আরো স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য করতে পারে।

নির্দলীয় স্থানীয় সরকার নির্বাচন

নির্বাচন সংস্কার কমিশন স্থানীয় সরকার নির্বাচনকে নির্দলীয়ভাবে আয়োজনের সুপারিশ করেছে। কমিশনের মতে, দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে ভোটারদের পাশাপাশি প্রশাসনও রাজনৈতিক প্রভাবের শিকার হয়, যা উন্নয়ন ও জনসেবামূলক কার্যক্রমকে ব্যাহত করে। স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে দলীয় রাজনীতি থেকে মুক্ত রেখে শুধু স্থানীয় উন্নয়ন ও প্রশাসনিক কার্যক্রমের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা প্রয়োজন, যাতে জনগণের সেবা কার্যক্রম রাজনৈতিক হস্তক্ষেপমুক্ত থেকে কার্যকরভাবে পরিচালিত হতে পারে।

তবে বাস্তবতা হলো, নির্দলীয় নির্বাচনের বিধান থাকলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই প্রার্থীরা রাজনৈতিক দলের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সমর্থন নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেন। ভোটাররাও সচেতন থাকেন কোন প্রার্থী কোন দলের ঘনিষ্ঠ বা সমর্থিত। ফলে নির্দলীয় নির্বাচন পদ্ধতির মূল উদ্দেশ্য বাস্তবে কার্যকর হয় না এবং প্রশাসন দলীয় রাজনীতির প্রভাব থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত থাকতে পারে না।

এ বাস্তবতায় নির্বাচন কমিশনের উচিত নির্বাচন প্রচারণার ধরন সীমিত করা, প্রার্থীদের দলীয় পরিচয় ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা এবং নির্বাচনী কার্যক্রমের ওপর প্রশাসনিক তদারকি বাড়ানো। পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসনকে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ রাখা এবং এটি নিশ্চিত করা জরুরি যে কোনো রাজনৈতিক দল বা গোষ্ঠী যেন নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় প্রভাব বিস্তার করতে না পারে কিংবা ভোট কারচুপির মতো অনিয়মে জড়িত না হয়।

মেম্বারদের ভোটে মেয়র ও চেয়ারম্যান নির্বাচন

স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন নির্বাচনী ব্যবস্থায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের সুপারিশ করছে, যার মধ্যে অন্যতম হলো মেয়র ও চেয়ারম্যান সরাসরি জনগণের ভোটে নির্বাচিত না হয়ে মেম্বারদের ভোটে নির্বাচিত হবেন। এছাড়া এ পদগুলোয় প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য নির্দিষ্ট যোগ্যতা নির্ধারণের প্রস্তাবও করা হয়েছে, যার মধ্যে ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে স্নাতক ডিগ্রি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ফলে স্বল্পশিক্ষিত বা নিরক্ষর ব্যক্তিরা এসব পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না।

প্রশাসনের যুক্তি অনুসারে, বর্তমানে দলীয় প্রভাব ও পেশিশক্তির কারণে শিক্ষিত ও দক্ষ ব্যক্তিরা মেয়র বা চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হতে পারছেন না। ফলে সমাজের গুণী ও যোগ্য ব্যক্তিরা নির্বাচন থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন, যেখানে অল্পশিক্ষিত বা নিরক্ষর ব্যক্তিরা রাজনৈতিক সুবিধা কাজে লাগিয়ে নির্বাচিত হচ্ছেন। প্রশাসনের মতে, যদি মেম্বারদের ভোটের মাধ্যমে মেয়র ও চেয়ারম্যান নির্বাচিত করা হয়, তাহলে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় শিক্ষিত ও দক্ষ ব্যক্তিদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

তবে এ প্রস্তাব নিয়ে বেশকিছু বিতর্ক ও সমালোচনা রয়েছে। প্রথমত, সংবিধানে জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। এটি সংবিধানের মৌলিক চেতনাবিরোধী হতে পারে। কারণ জনপ্রতিনিধিত্বের অধিকার কেবল শিক্ষাগত যোগ্যতার ভিত্তিতে সীমিত করা হলে তা গণতন্ত্রের অন্তর্নিহিত নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক হতে পারে।

দ্বিতীয়ত, জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা সরাসরি জনগণের কাছে জবাবদিহি থাকেন। কিন্তু যদি ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বারদের মাধ্যমে উচ্চপদস্থ জনপ্রতিনিধিরা নির্বাচিত হন, তাহলে তাদের মূল লক্ষ্য জনগণের সেবা করা না হয়ে বরং যারা তাদের নির্বাচিত করেছেন, তাদের সন্তুষ্ট রাখা। এর ফলে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার কার্যকারিতা ব্যাহত হতে পারে এবং রাজনৈতিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীগুলোর প্রভাব আরো দৃঢ় হতে পারে।

তৃতীয়ত, এ ধরনের পরিবর্তনের ফলে জনগণের সাংবিধানিক ভোটাধিকার হরণ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। নাগরিকদের অধিকার রয়েছে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে মেয়র বা চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত করার। কিন্তু যদি স্থানীয় সরকার নির্বাচনে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটের সুযোগ বাতিল করা হয়, তাহলে এটি রাজনৈতিক ও সামাজিক এলিটদের প্রভাব আরো সুসংহত করবে। এতে অর্থ ও ক্ষমতাসম্পন্ন গোষ্ঠীর প্রতিনিধিরাই নির্বাচনে প্রাধান্য পাবে, যা প্রকৃত জনগণের প্রতিনিধিত্বের পরিবর্তে রাজনৈতিক স্বার্থকে গুরুত্ব দেবে।

চতুর্থত, এ ব্যবস্থার মাধ্যমে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে পৃষ্ঠপোষকতামূলক রাজনীতির প্রসার ঘটবে। মেম্বারদের ভোটে নির্বাচিত মেয়র ও চেয়ারম্যানরা জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ না থেকে বরং রাজনৈতিক দলের উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের প্রতি আনুগত্য দেখাতে বাধ্য হবেন। ফলে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় ক্ষমতাসীন দল বা প্রভাবশালী রাজনৈতিক মহলের আধিপত্য আরো বৃদ্ধি পাবে।

ঐতিহাসিকদের মতে, ভারতীয় উপমহাদেশে গণতন্ত্রের সূচনা স্থানীয় সরকার নির্বাচন দিয়ে হয়েছিল, যেখানে জনগণের সরাসরি অংশগ্রহণ ছিল অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য। যদি বর্তমানে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে জনগণের অংশগ্রহণ সংকুচিত করা হয়, তাহলে এটি শুধু স্থানীয় পর্যায়ের শাসন ব্যবস্থাকেই দুর্বল করবে না, বরং সামগ্রিক গণতন্ত্রের পথেও বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।

সর্বোপরি স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করতে হলে তাকে পর্যাপ্ত অর্থ, প্রশাসনিক ক্ষমতা এবং নীতিনির্ধারণে স্বাধীনতা প্রদান করতে হবে। স্থানীয় পর্যায়ে উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন, জনসেবার মানোন্নয়ন এবং প্রশাসনিক দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ ও কার্যকর স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি। একই সঙ্গে, স্থানীয় সরকারের কার্যক্রমের প্রতি জনগণের সম্পৃক্ততা বাড়ানো এবং নির্বাচিত প্রতিনিধিদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করাও গুরুত্বপূর্ণ, যাতে স্থানীয় প্রশাসন কেবল সরকারি নির্দেশনার অনুসারী না হয়ে জনগণের চাহিদা ও প্রয়োজনের প্রতি অধিক মনোযোগী হতে পারে।

একটি গণতান্ত্রিক ও কার্যকর স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হলে এর নীতিগত স্বচ্ছতা, প্রশাসনিক দক্ষতা এবং দায়িত্বশীলতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। স্থানীয় সরকার যদি কার্যকরভাবে পরিচালিত হয়, তাহলে এটি শুধু গ্রাসরুট পর্যায়ে গণতন্ত্রের বিকাশ ঘটাবে না, বরং সামগ্রিক শাসন ব্যবস্থার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

সৈয়দা লাসনা কবীর : অধ্যাপক, লোকপ্রশাসন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ,মোহাম্মাদ ঈসা ইবন বেলাল: গবেষণা সহযোগী, সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব পলিসি অ্যান্ড গভর্ন্যান্স (এসআইপিজি), নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

অদ্য অপরাহ্ন থেকে সাজেক পর্যটক ভ্রমণের জন্য উন্মুক্ত

স্থানীয় সরকার

স্থানীয় সরকার নির্বাচন সংস্কার ও চ্যালেঞ্জ

আপডেট সময় : ০১:৪৬:১৪ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • সৈয়দা লাসনা কবীর ও মোহাম্মাদ ঈসা ইবন বেলাল

স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে নির্বাচন সংস্কার কমিশন এরই মধ্যে কিছু সুপারিশ জমা দিয়েছে, পাশাপাশি স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনও বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ করার পরিকল্পনা করছে। তবে এ সুপারিশগুলোর বাস্তবায়ন ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সুস্পষ্ট মতপার্থক্য দেখা যাচ্ছে। এক পক্ষ মনে করছে, এসব সংস্কার দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে আরো শক্তিশালী করবে এবং স্থানীয় সরকারকে কার্যকর ও উন্নয়নমুখী করবে, অন্যদিকে কিছু রাজনৈতিক দল এটিকে বর্তমান শাসন ব্যবস্থার একটি কৌশলগত পরিকল্পনা হিসেবে দেখছে, যা ভবিষ্যতে ক্ষমতার ভারসাম্য ও জাতীয় নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে। ফলে স্থানীয় সরকার নির্বাচন সংস্কার প্রশ্নে রাজনৈতিক অঙ্গনে এক ধরনের মতপার্থক্য তৈরি হয়েছে, যা এর বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াকে আরো জটিল করে তুলতে পারে।

জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন

নির্বাচন কমিশন সম্প্রতি একটি সংস্কার রিপোর্ট প্রকাশ করেছে, যেখানে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের জন্য বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে যে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজন করা উচিত, যাতে স্থানীয় প্রশাসন কার্যকরভাবে গঠন হতে পারে এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকে।

কিছু রাজনৈতিক দল মনে করছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হলে ফ্যাসিবাদের সুবিধাভোগীরা এ নির্বাচনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে পুনরায় রাজনীতির মাঠে শক্তিশালী হয়ে উঠবে, যা ভবিষ্যতের বাংলাদেশ ও কাঙ্ক্ষিত সংস্কার প্রক্রিয়ার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তাদের মতে, আগে জাতীয় নির্বাচন হওয়া জরুরি, যাতে একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হয় এবং তার তত্ত্বাবধানে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ স্থানীয় সরকার নির্বাচন পরিচালিত হতে পারে।

অন্যদিকে কিছু রাজনৈতিক দল, বিশেষ করে ইসলামপন্থী দলগুলো ও ছাত্রদের একাংশ মনে করছে যে বাংলাদেশে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন ছাড়া ভোটের সঠিক প্রতিফলন অতীতে খুব বেশি দেখা যায়নি। তাদের যুক্তি হলো, প্রথমে স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে একটি কার্যকর ও শক্তিশালী স্থানীয় প্রশাসন গঠন করা সম্ভব হবে, যা পরবর্তী সময়ে একটি অংশগ্রহণমূলক জাতীয় নির্বাচনের জন্য ইতিবাচক দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে। পাশাপাশি এটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন কতটা বাস্তবায়নযোগ্য তা যাচাই করার ক্ষেত্রেও সহায়ক হবে।

অনেক বিশ্লেষক মনে করেন, জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন একই দিনে আয়োজন করা হলে বেশকিছু সুবিধা পাওয়া যেতে পারে। প্রথমত, এতে নির্বাচনী ব্যয় কমানো সম্ভব হবে। কারণ প্রশাসনিক, লজিস্টিক ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা একসঙ্গে পরিচালনা করা গেলে সময় ও শ্রম সাশ্রয় হবে। দ্বিতীয়ত, রাজনৈতিক দলগুলো একই সঙ্গে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে পারবে, যা তাদের প্রচারণা ও সাংগঠনিক কার্যক্রমকে আরো কার্যকর করতে পারে। তৃতীয়ত, নির্বাচন কমিশনের জন্যও এটি সুবিধাজনক হতে পারে। কারণ আলাদাভাবে নির্বাচন পরিচালনা করতে হলে বারবার নতুনভাবে নিরাপত্তা, ভোট কেন্দ্র পরিচালনা ও ব্যালট সরবরাহের প্রয়োজন হয়।

তবে এ পরিকল্পনার কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। প্রথমত, জাতীয় নির্বাচনের প্রভাব স্থানীয় নির্বাচনে পড়তে পারে, যা ছোট ও স্বাধীন প্রার্থীদের জন্য প্রতিযোগিতা কঠিন করে তুলতে পারে। দ্বিতীয়ত, নির্বাচন কমিশনের ওপর দায়িত্ব বহুগুণ বেড়ে যাবে, কারণ স্থানীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় ভোট গণনা ও ফলাফল প্রকাশ জটিল হয়ে উঠতে পারে। তৃতীয়ত, নিরাপত্তার চ্যালেঞ্জ দ্বিগুণ হবে। কারণ দুটি স্তরের নির্বাচন একসঙ্গে হলে সহিংসতার আশঙ্কা বাড়তে পারে।

এ কারণে নির্বাচন কমিশনকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে একটি কার্যকর পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। যদি প্রশাসনিক ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা যথাযথভাবে নিশ্চিত করা যায়, তবে একই দিনে নির্বাচন আয়োজন সামগ্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে আরো স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য করতে পারে।

নির্দলীয় স্থানীয় সরকার নির্বাচন

নির্বাচন সংস্কার কমিশন স্থানীয় সরকার নির্বাচনকে নির্দলীয়ভাবে আয়োজনের সুপারিশ করেছে। কমিশনের মতে, দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে ভোটারদের পাশাপাশি প্রশাসনও রাজনৈতিক প্রভাবের শিকার হয়, যা উন্নয়ন ও জনসেবামূলক কার্যক্রমকে ব্যাহত করে। স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে দলীয় রাজনীতি থেকে মুক্ত রেখে শুধু স্থানীয় উন্নয়ন ও প্রশাসনিক কার্যক্রমের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা প্রয়োজন, যাতে জনগণের সেবা কার্যক্রম রাজনৈতিক হস্তক্ষেপমুক্ত থেকে কার্যকরভাবে পরিচালিত হতে পারে।

তবে বাস্তবতা হলো, নির্দলীয় নির্বাচনের বিধান থাকলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই প্রার্থীরা রাজনৈতিক দলের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সমর্থন নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেন। ভোটাররাও সচেতন থাকেন কোন প্রার্থী কোন দলের ঘনিষ্ঠ বা সমর্থিত। ফলে নির্দলীয় নির্বাচন পদ্ধতির মূল উদ্দেশ্য বাস্তবে কার্যকর হয় না এবং প্রশাসন দলীয় রাজনীতির প্রভাব থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত থাকতে পারে না।

এ বাস্তবতায় নির্বাচন কমিশনের উচিত নির্বাচন প্রচারণার ধরন সীমিত করা, প্রার্থীদের দলীয় পরিচয় ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা এবং নির্বাচনী কার্যক্রমের ওপর প্রশাসনিক তদারকি বাড়ানো। পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসনকে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ রাখা এবং এটি নিশ্চিত করা জরুরি যে কোনো রাজনৈতিক দল বা গোষ্ঠী যেন নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় প্রভাব বিস্তার করতে না পারে কিংবা ভোট কারচুপির মতো অনিয়মে জড়িত না হয়।

মেম্বারদের ভোটে মেয়র ও চেয়ারম্যান নির্বাচন

স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন নির্বাচনী ব্যবস্থায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের সুপারিশ করছে, যার মধ্যে অন্যতম হলো মেয়র ও চেয়ারম্যান সরাসরি জনগণের ভোটে নির্বাচিত না হয়ে মেম্বারদের ভোটে নির্বাচিত হবেন। এছাড়া এ পদগুলোয় প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য নির্দিষ্ট যোগ্যতা নির্ধারণের প্রস্তাবও করা হয়েছে, যার মধ্যে ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে স্নাতক ডিগ্রি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ফলে স্বল্পশিক্ষিত বা নিরক্ষর ব্যক্তিরা এসব পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না।

প্রশাসনের যুক্তি অনুসারে, বর্তমানে দলীয় প্রভাব ও পেশিশক্তির কারণে শিক্ষিত ও দক্ষ ব্যক্তিরা মেয়র বা চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হতে পারছেন না। ফলে সমাজের গুণী ও যোগ্য ব্যক্তিরা নির্বাচন থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন, যেখানে অল্পশিক্ষিত বা নিরক্ষর ব্যক্তিরা রাজনৈতিক সুবিধা কাজে লাগিয়ে নির্বাচিত হচ্ছেন। প্রশাসনের মতে, যদি মেম্বারদের ভোটের মাধ্যমে মেয়র ও চেয়ারম্যান নির্বাচিত করা হয়, তাহলে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় শিক্ষিত ও দক্ষ ব্যক্তিদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

তবে এ প্রস্তাব নিয়ে বেশকিছু বিতর্ক ও সমালোচনা রয়েছে। প্রথমত, সংবিধানে জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। এটি সংবিধানের মৌলিক চেতনাবিরোধী হতে পারে। কারণ জনপ্রতিনিধিত্বের অধিকার কেবল শিক্ষাগত যোগ্যতার ভিত্তিতে সীমিত করা হলে তা গণতন্ত্রের অন্তর্নিহিত নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক হতে পারে।

দ্বিতীয়ত, জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা সরাসরি জনগণের কাছে জবাবদিহি থাকেন। কিন্তু যদি ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বারদের মাধ্যমে উচ্চপদস্থ জনপ্রতিনিধিরা নির্বাচিত হন, তাহলে তাদের মূল লক্ষ্য জনগণের সেবা করা না হয়ে বরং যারা তাদের নির্বাচিত করেছেন, তাদের সন্তুষ্ট রাখা। এর ফলে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার কার্যকারিতা ব্যাহত হতে পারে এবং রাজনৈতিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীগুলোর প্রভাব আরো দৃঢ় হতে পারে।

তৃতীয়ত, এ ধরনের পরিবর্তনের ফলে জনগণের সাংবিধানিক ভোটাধিকার হরণ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। নাগরিকদের অধিকার রয়েছে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে মেয়র বা চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত করার। কিন্তু যদি স্থানীয় সরকার নির্বাচনে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটের সুযোগ বাতিল করা হয়, তাহলে এটি রাজনৈতিক ও সামাজিক এলিটদের প্রভাব আরো সুসংহত করবে। এতে অর্থ ও ক্ষমতাসম্পন্ন গোষ্ঠীর প্রতিনিধিরাই নির্বাচনে প্রাধান্য পাবে, যা প্রকৃত জনগণের প্রতিনিধিত্বের পরিবর্তে রাজনৈতিক স্বার্থকে গুরুত্ব দেবে।

চতুর্থত, এ ব্যবস্থার মাধ্যমে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে পৃষ্ঠপোষকতামূলক রাজনীতির প্রসার ঘটবে। মেম্বারদের ভোটে নির্বাচিত মেয়র ও চেয়ারম্যানরা জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ না থেকে বরং রাজনৈতিক দলের উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের প্রতি আনুগত্য দেখাতে বাধ্য হবেন। ফলে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় ক্ষমতাসীন দল বা প্রভাবশালী রাজনৈতিক মহলের আধিপত্য আরো বৃদ্ধি পাবে।

ঐতিহাসিকদের মতে, ভারতীয় উপমহাদেশে গণতন্ত্রের সূচনা স্থানীয় সরকার নির্বাচন দিয়ে হয়েছিল, যেখানে জনগণের সরাসরি অংশগ্রহণ ছিল অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য। যদি বর্তমানে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে জনগণের অংশগ্রহণ সংকুচিত করা হয়, তাহলে এটি শুধু স্থানীয় পর্যায়ের শাসন ব্যবস্থাকেই দুর্বল করবে না, বরং সামগ্রিক গণতন্ত্রের পথেও বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।

সর্বোপরি স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করতে হলে তাকে পর্যাপ্ত অর্থ, প্রশাসনিক ক্ষমতা এবং নীতিনির্ধারণে স্বাধীনতা প্রদান করতে হবে। স্থানীয় পর্যায়ে উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন, জনসেবার মানোন্নয়ন এবং প্রশাসনিক দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ ও কার্যকর স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি। একই সঙ্গে, স্থানীয় সরকারের কার্যক্রমের প্রতি জনগণের সম্পৃক্ততা বাড়ানো এবং নির্বাচিত প্রতিনিধিদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করাও গুরুত্বপূর্ণ, যাতে স্থানীয় প্রশাসন কেবল সরকারি নির্দেশনার অনুসারী না হয়ে জনগণের চাহিদা ও প্রয়োজনের প্রতি অধিক মনোযোগী হতে পারে।

একটি গণতান্ত্রিক ও কার্যকর স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হলে এর নীতিগত স্বচ্ছতা, প্রশাসনিক দক্ষতা এবং দায়িত্বশীলতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। স্থানীয় সরকার যদি কার্যকরভাবে পরিচালিত হয়, তাহলে এটি শুধু গ্রাসরুট পর্যায়ে গণতন্ত্রের বিকাশ ঘটাবে না, বরং সামগ্রিক শাসন ব্যবস্থার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

সৈয়দা লাসনা কবীর : অধ্যাপক, লোকপ্রশাসন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ,মোহাম্মাদ ঈসা ইবন বেলাল: গবেষণা সহযোগী, সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব পলিসি অ্যান্ড গভর্ন্যান্স (এসআইপিজি), নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়।