শিরোনাম :
শিক্ষা

দীর্ঘ ছুটিতে শিক্ষার্থীরা কী করবে?

  • তোহা ইসলাম তোহা ইসলাম
  • আপডেট সময় : ০১:০৬:০৭ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • ৭১৩ বার পড়া হয়েছে
  •  আনিসুর বুলবুল, 

দেশের সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগামী ৪০ দিনের ছুটিতে যাচ্ছে। পবিত্র রমজান, ঈদুল ফিতর, স্বাধীনতা দিবসসহ বিভিন্ন ধর্মীয় ও জাতীয় ছুটির সমন্বয়ে এই দীর্ঘ ছুটি শুরু হচ্ছে ২ মার্চ থেকে এবং শেষ হবে ৮ এপ্রিল। এ ছাড়া এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার কারণে কিছু প্রতিষ্ঠান ১০ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। এই দীর্ঘ ছুটির সময় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ও মানসিক বিকাশের দিকে নজর দেওয়া জরুরি।

প্রথমত, এই ছুটিকে শিক্ষার্থীদের জন্য একটি সুযোগ হিসেবে দেখা উচিত। স্কুলের রুটিনমাফিক জীবন থেকে সাময়িক বিরতি পেয়ে তারা নিজেদের আত্মোন্নয়নের দিকে মনোযোগ দিতে পারে। পড়াশোনার ক্ষেত্রে তারা যেসব বিষয়ে দুর্বল, সেগুলোকে এই সময়ে শক্তিশালী করার চেষ্টা করতে পারে। অনলাইন ক্লাস, ভিডিও লেকচার বা কোচিং সেন্টারের মাধ্যমে তারা তাদের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে এ ছাড়া, বই পড়া, নতুন ভাষা শেখা বা কোনো দক্ষতা অর্জনের জন্য এই সময়টি কাজে লাগানো যেতে পারে।

দ্বিতীয়ত, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের দিকেও নজর দেওয়া প্রয়োজন। স্কুলের ব্যস্ত রুটিনে অনেক শিক্ষার্থীই পর্যাপ্ত বিশ্রাম বা শরীরচর্চার সময় পায় না। এই ছুটিতে তারা নিয়মিত হালকা ব্যায়াম, ইয়োগা বা খেলাধুলার মাধ্যমে নিজেদের সুস্থ রাখতে পারে| এতে শারীরিক সুস্থতার পাশাপাশি মানসিক চাপও কমবে।

তৃতীয়ত, পারিবারিক বন্ধন দৃঢ় করার জন্য এই ছুটিটি একটি আদর্শ সময়। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো, রান্না করা, গল্প বলা বা একসঙ্গে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাদের সামাজিক দক্ষতা বাড়াতে পারে। এ ছাড়া রমজান মাসের রোজা ও ইবাদতের মাধ্যমে তারা আধ্যাত্মিক উন্নতিও সাধন করতে পারে।

চতুর্থত, এই ছুটিতে শিক্ষার্থীরা তাদের শখ বা আগ্রহের দিকে মনোযোগ দিতে পারে। দেশের সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগামী ৪০ দিনের ছুটিতে যাচ্ছে। পবিত্র রমজান, ঈদুল ফিতর, স্বাধীনতা দিবসসহ বিভিন্ন ধর্মীয় ও জাতীয় ছুটির সমন্বয়ে এই দীর্ঘ ছুটি শুরু হচ্ছে ২ মার্চ থেকে এবং শেষ হবে ৮ এপ্রিল। এ ছাড়া এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার কারণে কিছু প্রতিষ্ঠান ১০ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। এই দীর্ঘ ছুটির সময় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ও মানসিক বিকাশের দিকে নজর দেওয়া জরুরি।

পঞ্চমত, এই দীর্ঘ ছুটিতে অভিভাবকদেরও বিশেষ ভূমিকা রাখা উচিত। তাদের উচিত সন্তানদের পড়াশোনা ও অন্যান্য কার্যক্রমে উৎসাহ দেওয়া। বাড়িতে একটি রুটিন তৈরি করে দেওয়া যেতে পারে, যাতে তারা সময়ের সদ্ব্যবহার করতে পারে। এ ছাড়া অনলাইন ক্লাস বা পড়াশোনার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও পরিবেশ নিশ্চিত করা অভিভাবকদের দায়িত্ব।

অবশ্যই, এই দীর্ঘ ছুটির কিছু চ্যালেঞ্জও আছে। যেমন—স্কুল বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ধারাবাহিকতা নষ্ট হতে পারে। এ জন্য শিক্ষক ও অভিভাবকদের সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। অনলাইন প্ল্যাটফরম বা বাড়ির কাজের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার গতি বজায় রাখা যেতে পারে।

শেষ কথা হলো, এই দীর্ঘ ছুটিকে শিক্ষার্থীদের জন্য একটি উৎপাদনশীল ও আনন্দময় সময় হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব। পড়াশোনা, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য, পারিবারিক বন্ধন এবং সৃজনশীলতার মধ্যে সমন্বয় রেখে তারা এই সময়টিকে কাজে লাগাতে পারে। এতে তারা শুধু পিছিয়ে পড়বে না বরং নতুন কিছু শিখে আরো এগিয়ে যাবে। অভিভাবক, শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই এই ছুটিকে সফল ও অর্থবহ করে তুলতে পারে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

শহিদ আবু সাইদকে নিয়ে কটুক্তি করায় বেরোবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

শিক্ষা

দীর্ঘ ছুটিতে শিক্ষার্থীরা কী করবে?

আপডেট সময় : ০১:০৬:০৭ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  •  আনিসুর বুলবুল, 

দেশের সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগামী ৪০ দিনের ছুটিতে যাচ্ছে। পবিত্র রমজান, ঈদুল ফিতর, স্বাধীনতা দিবসসহ বিভিন্ন ধর্মীয় ও জাতীয় ছুটির সমন্বয়ে এই দীর্ঘ ছুটি শুরু হচ্ছে ২ মার্চ থেকে এবং শেষ হবে ৮ এপ্রিল। এ ছাড়া এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার কারণে কিছু প্রতিষ্ঠান ১০ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। এই দীর্ঘ ছুটির সময় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ও মানসিক বিকাশের দিকে নজর দেওয়া জরুরি।

প্রথমত, এই ছুটিকে শিক্ষার্থীদের জন্য একটি সুযোগ হিসেবে দেখা উচিত। স্কুলের রুটিনমাফিক জীবন থেকে সাময়িক বিরতি পেয়ে তারা নিজেদের আত্মোন্নয়নের দিকে মনোযোগ দিতে পারে। পড়াশোনার ক্ষেত্রে তারা যেসব বিষয়ে দুর্বল, সেগুলোকে এই সময়ে শক্তিশালী করার চেষ্টা করতে পারে। অনলাইন ক্লাস, ভিডিও লেকচার বা কোচিং সেন্টারের মাধ্যমে তারা তাদের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে এ ছাড়া, বই পড়া, নতুন ভাষা শেখা বা কোনো দক্ষতা অর্জনের জন্য এই সময়টি কাজে লাগানো যেতে পারে।

দ্বিতীয়ত, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের দিকেও নজর দেওয়া প্রয়োজন। স্কুলের ব্যস্ত রুটিনে অনেক শিক্ষার্থীই পর্যাপ্ত বিশ্রাম বা শরীরচর্চার সময় পায় না। এই ছুটিতে তারা নিয়মিত হালকা ব্যায়াম, ইয়োগা বা খেলাধুলার মাধ্যমে নিজেদের সুস্থ রাখতে পারে| এতে শারীরিক সুস্থতার পাশাপাশি মানসিক চাপও কমবে।

তৃতীয়ত, পারিবারিক বন্ধন দৃঢ় করার জন্য এই ছুটিটি একটি আদর্শ সময়। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো, রান্না করা, গল্প বলা বা একসঙ্গে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাদের সামাজিক দক্ষতা বাড়াতে পারে। এ ছাড়া রমজান মাসের রোজা ও ইবাদতের মাধ্যমে তারা আধ্যাত্মিক উন্নতিও সাধন করতে পারে।

চতুর্থত, এই ছুটিতে শিক্ষার্থীরা তাদের শখ বা আগ্রহের দিকে মনোযোগ দিতে পারে। দেশের সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগামী ৪০ দিনের ছুটিতে যাচ্ছে। পবিত্র রমজান, ঈদুল ফিতর, স্বাধীনতা দিবসসহ বিভিন্ন ধর্মীয় ও জাতীয় ছুটির সমন্বয়ে এই দীর্ঘ ছুটি শুরু হচ্ছে ২ মার্চ থেকে এবং শেষ হবে ৮ এপ্রিল। এ ছাড়া এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার কারণে কিছু প্রতিষ্ঠান ১০ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। এই দীর্ঘ ছুটির সময় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ও মানসিক বিকাশের দিকে নজর দেওয়া জরুরি।

পঞ্চমত, এই দীর্ঘ ছুটিতে অভিভাবকদেরও বিশেষ ভূমিকা রাখা উচিত। তাদের উচিত সন্তানদের পড়াশোনা ও অন্যান্য কার্যক্রমে উৎসাহ দেওয়া। বাড়িতে একটি রুটিন তৈরি করে দেওয়া যেতে পারে, যাতে তারা সময়ের সদ্ব্যবহার করতে পারে। এ ছাড়া অনলাইন ক্লাস বা পড়াশোনার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও পরিবেশ নিশ্চিত করা অভিভাবকদের দায়িত্ব।

অবশ্যই, এই দীর্ঘ ছুটির কিছু চ্যালেঞ্জও আছে। যেমন—স্কুল বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ধারাবাহিকতা নষ্ট হতে পারে। এ জন্য শিক্ষক ও অভিভাবকদের সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। অনলাইন প্ল্যাটফরম বা বাড়ির কাজের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার গতি বজায় রাখা যেতে পারে।

শেষ কথা হলো, এই দীর্ঘ ছুটিকে শিক্ষার্থীদের জন্য একটি উৎপাদনশীল ও আনন্দময় সময় হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব। পড়াশোনা, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য, পারিবারিক বন্ধন এবং সৃজনশীলতার মধ্যে সমন্বয় রেখে তারা এই সময়টিকে কাজে লাগাতে পারে। এতে তারা শুধু পিছিয়ে পড়বে না বরং নতুন কিছু শিখে আরো এগিয়ে যাবে। অভিভাবক, শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই এই ছুটিকে সফল ও অর্থবহ করে তুলতে পারে।