শিরোনাম :
Logo বীরগঞ্জে ৪টি ইউনিয়ন বাল্যবিবাহ ও ১টি ইউনিয়ন শিশু শ্রম মুক্ত ঘোষণা Logo ৭৮ তম বুনিয়াদি প্রশিক্ষণার্থীদের সঙ্গে চাঁদপুর এলজিইডির অবহিতকরন সভা Logo পিয়াস আফ্রিদির উদ্যোগে চিত্রনায়ক ডিএ তায়েব অফিসিয়াল ফ্যান ক্লাবের পথচলা Logo প্রান্তিক মানুষের আস্থার নাম সরাইলকান্দি কমিউনিটি ক্লিনিক Logo ইবিতে সিরাতুন নবি (সা.) উপলক্ষে আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী Logo ইবি ক্যাম্পাসে তালিকাভুক্ত নয় এমন  সংগঠনের সভা-সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা Logo সুন্দরবনের বিনা পাশে প্রবেশ করায় তিন জেলা কটক  Logo খুবি রিসার্চ সোসাইটির নতুন নেতৃত্বে বকসী-গৌর Logo চাঁদপুরে কল্যাণ ট্রাস্টের চেক পেয়েছেন ১৯ সাংবাদিক Logo কাল চাঁদপুরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের বিশাল সমাবেশ

শান্তিশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সরকারের প্রথম দায়িত্ব: ডয়েচে ভেলেকে ড. ইউনূস

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০৭:০০:৫৫ পূর্বাহ্ণ, শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ৭৩৫ বার পড়া হয়েছে

দেশে শান্তিশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনাই নিজের প্রথম দায়িত্ব বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। জার্মানভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম ডয়েচে ভেলেকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেন তিনি।

ড. ইউনূসকে প্রশ্ন করা হয়, আপনি প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণের পর এক মাস পূর্ণ হলো। গত কয়েক সপ্তাহে কোন কোন বিষয়কে আপনি অগ্রাধিকার দিয়েছেন? জবাবে তিনি বলেন, আমার তো অগ্রাধিকার দেয়ার কথা না। অগ্রাধিকারগুলো সামনে এসে গেছে। আমি বাছাই করার সুযোগও পাইনি। শান্তিশৃঙ্খলা হলো সবার প্রথমে। যেহেতু বিপ্লবের মধ্য দিয়ে আসছি, সরকার গঠন করেছি, কাজেই প্রথম দায়িত্ব হলো শান্তিশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা। এটার ওপরেই জোর দেয়া হচ্ছে। এ রকম বিপ্লব বাংলাদেশের ইতিহাসে আগে হয়নি।

তিনি বলেন, এদিকে বিপ্লব আরেকদিকে স্বপ্ন। শান্তিশৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনে আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়বো। মানুষের সীমাহীন আকাঙ্ক্ষা। আমাদের দায়িত্ব অনেক। অর্থনীতি বিশৃঙ্খল, ভঙ্গুর হয়ে গিয়েছিল। যে কারণে মানুষ এতো বিক্ষুব্ধ। সবকিছু লুটপাট। এটা লুটের একটা সরকার ছিল। কাজেই সেই লুটের সরকার থেকে সত্যিকার সরকার, জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা—এটাও মানুষের একটা আকাঙ্ক্ষা।

প্রধান উপদেষ্টাকে প্রশ্ন করা হয় দেশের ডলার সংকট, অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা ও শেখ হাসিনা সরকারের আমলের নানা অনিয়ম-দুর্নীতি ও টাকা পাচার নিয়ে। এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তার একমাত্র লক্ষ্য ছিল নিজের টাকাপয়সা করা। ৬০ হাজার কোটি টাকা শুধু ছাপানো হয়েছে তাদের সুবিধার জন্য; কিন্তু মানুষের যে মূল্যস্ফীতি হবে, এটার দিকে তাদের কোনো মনোযোগ ছিল না। ব্যাংকিং সিস্টেম পুরোটাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলতে কোনো জিনিস ছিল না। এগুলো সমস্ত কিছু নতুন করে গড়ে তুলতে হচ্ছে। সব কিছু নতুন করে করতে হচ্ছে। দেশকে বাঁচাতে হলে, সামনে নিয়ে যেতে হলে করতে হবে। আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য ভিত্তিটা করতে হবে।

ড. ইউনূস বলেন, আর্থিকখাতে কিছুটা শৃঙ্খলা এসেছে। সবটা পেরে গেছি তা না। বৈদেশিক মুদ্রার অভাব আছে। বড় বড় প্রকল্প নেয়া হয়েছে। বিশাল বিশাল অঙ্কের ঋণ নেয়া হয়েছে, সেগুলো শোধ করার পালা এসেছে আমাদের ওপরে। ওনারা নিয়ে গেছেন, ভোগদখল করেছেন। এখন টাকাটা জনগণকে শোধ করতে হবে। সেই পরিশোধের টাকা কোথা থেকে আসবে, কীভাবে আসবে—এটা আমাদের বড়চিন্তা। আমরা পৃথিবীর সামনে এমন একটা রাষ্ট্র হতে চাই না, যে তার অঙ্গীকার রক্ষা করতে পারে না। আমরা অঙ্গীকার রক্ষা করতে চাই। অর্থনীতিকে মজবুত ভিত্তির ওপরে দাঁড় করাতে চাই, যেন ভবিষ্যতে এই পরিস্থিতি না হয়।

ভারত ইস্যুতে করা এক প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন, ভারত আমাদের প্রতিবেশী এবং একমাত্র প্রতিবেশী বলা যায়। কারণ, চারদিক থেকেই ভারত আমাদের আছে। কাজেই তার সঙ্গে আমাদের সবচেয়ে ভালো সম্পর্ক হওয়া উচিত এবং হবে। এ ছাড়া আমাদের গত্যন্তর নাই, তাদেরও গত্যন্তর নাই। দুই দেশের মধ্যে বৈরী সম্পর্ক রেখে কেউ লাভবান হবে না। আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা হবে সবচেয়ে সুসম্পর্ক বজায় রাখা। বন্ধুত্বের শীর্ষ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া—এটাই আমাদের উদ্যোগ।

তিনি বলেন, পানিবণ্টন চুক্তি নিয়ে আন্তর্জাতিক আইন আছে। দুই দেশের মধ্যকার চলমান বিরোধ নিরসনে দুই দেশ আন্তর্জাতিক আইন মেনে নিলেই সেটির সমাধান হবে। সার্ক একটা পরিবারের মতো ছিল। আমরা সেই কাঠামোতে ফিরে যেতে পারি কি না দেখবো। শুধু ভারতের সঙ্গে না, দক্ষিণ এশিয়ায় যতো দেশ আছে সবাই যেন পরস্পরের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখে। শান্তিপূর্ণ জোন হিসেবে আমরা একে গড়তে চাই। বাধাবিপত্তি এড়িয়ে সার্ক ও বিমসটেককে সক্রিয় করার করার চেষ্টা করবেন বলেও জানান প্রধান উপদেষ্টা।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

বীরগঞ্জে ৪টি ইউনিয়ন বাল্যবিবাহ ও ১টি ইউনিয়ন শিশু শ্রম মুক্ত ঘোষণা

শান্তিশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সরকারের প্রথম দায়িত্ব: ডয়েচে ভেলেকে ড. ইউনূস

আপডেট সময় : ০৭:০০:৫৫ পূর্বাহ্ণ, শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

দেশে শান্তিশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনাই নিজের প্রথম দায়িত্ব বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। জার্মানভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম ডয়েচে ভেলেকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেন তিনি।

ড. ইউনূসকে প্রশ্ন করা হয়, আপনি প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণের পর এক মাস পূর্ণ হলো। গত কয়েক সপ্তাহে কোন কোন বিষয়কে আপনি অগ্রাধিকার দিয়েছেন? জবাবে তিনি বলেন, আমার তো অগ্রাধিকার দেয়ার কথা না। অগ্রাধিকারগুলো সামনে এসে গেছে। আমি বাছাই করার সুযোগও পাইনি। শান্তিশৃঙ্খলা হলো সবার প্রথমে। যেহেতু বিপ্লবের মধ্য দিয়ে আসছি, সরকার গঠন করেছি, কাজেই প্রথম দায়িত্ব হলো শান্তিশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা। এটার ওপরেই জোর দেয়া হচ্ছে। এ রকম বিপ্লব বাংলাদেশের ইতিহাসে আগে হয়নি।

তিনি বলেন, এদিকে বিপ্লব আরেকদিকে স্বপ্ন। শান্তিশৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনে আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়বো। মানুষের সীমাহীন আকাঙ্ক্ষা। আমাদের দায়িত্ব অনেক। অর্থনীতি বিশৃঙ্খল, ভঙ্গুর হয়ে গিয়েছিল। যে কারণে মানুষ এতো বিক্ষুব্ধ। সবকিছু লুটপাট। এটা লুটের একটা সরকার ছিল। কাজেই সেই লুটের সরকার থেকে সত্যিকার সরকার, জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা—এটাও মানুষের একটা আকাঙ্ক্ষা।

প্রধান উপদেষ্টাকে প্রশ্ন করা হয় দেশের ডলার সংকট, অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা ও শেখ হাসিনা সরকারের আমলের নানা অনিয়ম-দুর্নীতি ও টাকা পাচার নিয়ে। এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তার একমাত্র লক্ষ্য ছিল নিজের টাকাপয়সা করা। ৬০ হাজার কোটি টাকা শুধু ছাপানো হয়েছে তাদের সুবিধার জন্য; কিন্তু মানুষের যে মূল্যস্ফীতি হবে, এটার দিকে তাদের কোনো মনোযোগ ছিল না। ব্যাংকিং সিস্টেম পুরোটাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলতে কোনো জিনিস ছিল না। এগুলো সমস্ত কিছু নতুন করে গড়ে তুলতে হচ্ছে। সব কিছু নতুন করে করতে হচ্ছে। দেশকে বাঁচাতে হলে, সামনে নিয়ে যেতে হলে করতে হবে। আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য ভিত্তিটা করতে হবে।

ড. ইউনূস বলেন, আর্থিকখাতে কিছুটা শৃঙ্খলা এসেছে। সবটা পেরে গেছি তা না। বৈদেশিক মুদ্রার অভাব আছে। বড় বড় প্রকল্প নেয়া হয়েছে। বিশাল বিশাল অঙ্কের ঋণ নেয়া হয়েছে, সেগুলো শোধ করার পালা এসেছে আমাদের ওপরে। ওনারা নিয়ে গেছেন, ভোগদখল করেছেন। এখন টাকাটা জনগণকে শোধ করতে হবে। সেই পরিশোধের টাকা কোথা থেকে আসবে, কীভাবে আসবে—এটা আমাদের বড়চিন্তা। আমরা পৃথিবীর সামনে এমন একটা রাষ্ট্র হতে চাই না, যে তার অঙ্গীকার রক্ষা করতে পারে না। আমরা অঙ্গীকার রক্ষা করতে চাই। অর্থনীতিকে মজবুত ভিত্তির ওপরে দাঁড় করাতে চাই, যেন ভবিষ্যতে এই পরিস্থিতি না হয়।

ভারত ইস্যুতে করা এক প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন, ভারত আমাদের প্রতিবেশী এবং একমাত্র প্রতিবেশী বলা যায়। কারণ, চারদিক থেকেই ভারত আমাদের আছে। কাজেই তার সঙ্গে আমাদের সবচেয়ে ভালো সম্পর্ক হওয়া উচিত এবং হবে। এ ছাড়া আমাদের গত্যন্তর নাই, তাদেরও গত্যন্তর নাই। দুই দেশের মধ্যে বৈরী সম্পর্ক রেখে কেউ লাভবান হবে না। আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা হবে সবচেয়ে সুসম্পর্ক বজায় রাখা। বন্ধুত্বের শীর্ষ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া—এটাই আমাদের উদ্যোগ।

তিনি বলেন, পানিবণ্টন চুক্তি নিয়ে আন্তর্জাতিক আইন আছে। দুই দেশের মধ্যকার চলমান বিরোধ নিরসনে দুই দেশ আন্তর্জাতিক আইন মেনে নিলেই সেটির সমাধান হবে। সার্ক একটা পরিবারের মতো ছিল। আমরা সেই কাঠামোতে ফিরে যেতে পারি কি না দেখবো। শুধু ভারতের সঙ্গে না, দক্ষিণ এশিয়ায় যতো দেশ আছে সবাই যেন পরস্পরের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখে। শান্তিপূর্ণ জোন হিসেবে আমরা একে গড়তে চাই। বাধাবিপত্তি এড়িয়ে সার্ক ও বিমসটেককে সক্রিয় করার করার চেষ্টা করবেন বলেও জানান প্রধান উপদেষ্টা।