সোমবার | ২২ ডিসেম্বর ২০২৫ | শীতকাল
শিরোনাম :
Logo খুলনায় এনসিপি নেতাকে গুলি: সাতক্ষীরা সীমান্ত সিল, বিজিবির ৫৭ চেকপোস্ট ও ৮৭টি অতিরিক্ত টহল Logo কুয়াশার চাদরে মোড়া ডিসেম্বরের ক্যাম্পাস Logo যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রকে রাশিয়ার ওপর আরও চাপ প্রয়োগের আহ্বান জেলেনস্কির Logo নির্বাচনে আস্থার পরিবেশ তৈরিতে অপারেশন শুরু করবে যৌথবাহিনী: ইসি সানাউল্লাহ Logo রজব মাসের চাঁদ দেখা গেছে Logo কুমিল্লায় আইদি পরিবহন প্রবেশে প্রতিবন্ধকতা, চাঁদপুরে মানববন্ধন Logo মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন চাঁদপুর-৩ আসনে ইসলামী ফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থী সাংবাদিক আহসান উল্লাহ Logo আগামী ২৭ ডিসেম্বর শনিবার চর্যাপদ সাহিত্য একাডেমির শীতকালীন গিটারসন্ধ্যা Logo তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষ্যে সাতক্ষীরায় স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রস্তুতি সভা ও শুভেচ্ছা মিছিল Logo সুদানের আবেই শান্তিরক্ষা মিশনের ড্রোন হামলায় শহীদ সেনা সদস্যের রাষ্টীয় মর্যাদায় দাফন সম্পন্ন পলাশবাড়ীতে

প্রত্যন্ত এলাকায় খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০৯:১৯:২৪ পূর্বাহ্ণ, সোমবার, ২৬ আগস্ট ২০২৪
  • ৭৬৫ বার পড়া হয়েছে

বন্যা উপদ্রুত এলাকায় সরকারি–বেসরকারি পর্যায়ে শুকনা খাবার, পানি, ওষুধপত্র বিতরণ অব্যাহত থাকলেও প্রত্যন্ত ও দুর্গম এলাকায় অনেকে ত্রাণ পাচ্ছেন না বলে জানা গেছে। বন্যাকবলিত বেশির ভাগ এলাকায় মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। অনেকে পানির মধ্যে বসবাস করছে। খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে বিপাকে পড়েছে মানুষ।

দুর্গতদের অভিযোগ, প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম ত্রাণ সরবরাহ করা হচ্ছে।

এমনকি অনেক এলাকায় চার-পাঁচ দিনেও কোনো ত্রাণ পৌঁছেনি। এত দিনেও সরকারি-বেসরকারি সাহায্য নিয়ে যায়নি কেউ। অনাহারে দিন কাটছে অনেকের। সব মিলিয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে আক্রান্ত এলাকার জনজীবন।

প্রতিনিধিদের পাঠানো প্রতিবেদনে বন্যার চিত্র:

ফেনী: ফেনীতে কমতে শুরু করেছে বন্যার পানি। শহরের এসএসকে রোড, ট্রাংক রোডসহ যেসব সড়ক তিন-চার ফুট পানির নিচে ছিল, সেগুলোতেও পানির পরিমাণ দু-এক ফুট কমেছে। তবে এখনো জেলার সব জায়গায় ত্রাণ সহায়তা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ অনেকের। ছাগলনাইয়া উপজেলা থেকে জেলা শহরে অফিসে এসেছেন কবির হোসেন। তিনি জানান, এখনো তাঁর পরিবারসহ বেশ কয়েকটি পরিবার পুরোপুরি পানিবন্দি। কোনো রকম ত্রাণ সহায়তা পাচ্ছেন না তাঁরা। অনেক কষ্টে একটি নৌকায় করে শহরে এসেছেন। বেশ কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবীকে ত্রাণ নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করলেও কেউ যায়নি বলে অভিযোগ কবির হোসেনের।

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুর জেলার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। গতকাল সকাল থেকে নতুন করে পানির চাপ বাড়ছে। এর আগে গত শনিবার নোয়াখালীর পানির চাপ আসা শুরু করে লক্ষ্মীপুরে। এর সঙ্গে যোগ হয় রাতের ভারি বৃষ্টি। ফলে জেলার বেশ কিছু এলাকায় বেড়েছে পানি। জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে। বানভাসি মানুষের দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে।

কুমিল্লা ও দাউদকান্দি: কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, জেলার ১৭ উপজেলার মধ্যে ১৪টির পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা আট লাখ ২৪ হাজারের বেশি। জেলার বুড়িচং উপজেলায় এখনো লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। উপজেলার বুড়বুড়িয়া এলাকায় গোমতীর প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা।

আক্রান্ত অনেক মানুষ এখনো আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে পারেনি। তাদের অনেকে অবস্থান নিয়েছে বাড়ির ছাদে। আবার অনেকে গলা সমান পানি ডিঙিয়ে বাড়িতেই রয়ে গেছে। বাড়িঘরের মায়ায় পড়ে থাকলেও এখন নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে চায় তারা। তবে সেখানে নৌকা ও খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।

সদরের বাসিন্দা আবদুল হান্নান বলেন, বুড়িচং সদর পানির নিচে। অন্তত ২০০টি পরিবার এখনো কোনো ত্রাণ পায়নি। তাদের কাছে কোনো খাবার নেই। বুড়িচং উপজেলা থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল সকালে উপজেলার আগানগর গ্রামে বন্যার পানিতে মরদেহটি ভাসতে দেখা যায়। পরে সেখান থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। তবে মরদেহের পরিচয় জানা যায়নি।

এদিকে তিতাস উপজেলায় বন্যার পানিতে ডুবে দুই বোনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বাগাইরামপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। মৃতরা হলো ওই গ্রামের প্রবাসী মনির হোসেনের মেয়ে আয়েশা আক্তার (১০) ও মোক্তার হোসেনের মেয়ে ছামিয়া আক্তার (৯)। দুজন নয়াকান্দি ইসহাকিয়া সহিনিয়া দারুল কোরআন মাদরাসার ছাত্রী ছিল।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া: কসবা ও আখাউড়া উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। গতকাল পানি কমেছে দুই উপজেলায়ই। কসবায় কিছু সড়কে পানি থাকলেও বেশির ভাগ জায়গার বাড়িঘর থেকে পানি সরে গেছে। আখাউড়ায় বন্যার পানি না থাকলেও কিছু বাড়িতে জলাবদ্ধতা রয়েছে। এদিকে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে গতকাল বিকেল থেকে যাত্রী পারাপার শুরু হয়েছে।

মৌলভীবাজার: গতকাল বন্যাকবলিত এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মনু নদে পানি অনেকটাই কমে গেছে। তবে কদমহাটা মনু নদের ভাঙন দিয়ে পানি ঢুকছে। বন্যাকবলিত গ্রামগুলোর বাড়িঘর, রাস্তাঘাট থেকে পানি কিছুটা নামলেও ফসলি জমি থেকে এখনো পানি নামেনি। নিম্নাঞ্চলে পানিবন্দি মানুষের খাবার ও বিশুদ্ধ পানি সংকট দেখা দিয়েছে।

মিরসরাই (চট্টগ্রাম): মিরসরাইয়ে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে দুই লাখের বেশি মানুষ। টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে ফেনী নদীর পানি বাড়ায় গত বুধবার থেকে এখানকার ১৬৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়। তবে গতকাল সকাল থেকে কিছু কিছু এলাকায় পানি কমেছে।

জানা গেছে, একদিকে বন্যায় পানিবন্দি লাখো অসহায় মানুষ। অন্যদিকে ফেনী নদীর ভাটিতে অবস্থিত দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প মুহুরীর দুটি গেট পানির তোড়ে ভেঙে গেছে। অকেজো আছে আরো দুটি গেট। এ কারণে জোয়ারের সময় ফেনী নদী হয়ে অভ্যন্তরে ঢুকছে বঙ্গোপসাগরের পানি। আবার ভাটার সময় দুটি গেট অকেজো থাকার কারণে পানি নিষ্কাশন ব্যাহত হচ্ছে।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পানি ওঠায় সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ ছিল। গতকাল রোববার সকাল থেকে ঢাকামুখী লেনে যান চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করে।

নোয়াখালী: বন্যার পানি নামতে শুরু করলেও বর্ষণ অব্যাহত থাকায় মানুষের দুর্ভোগ কমেনি। এদিকে সেনবাগ উপজেলায় পানিতে ডুবে একটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এদিকে সেনবাগ উপজেলার বীরকোর্ট এলাকায় আবদুর রহমান (২) নামের একটি শিশু ঘরের সামনে বন্যার পানিতে ডুবে মারা গেছে।

হবিগঞ্জ: খোয়াই নদের বাল্লা পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার ওপরে হলেও শায়েস্তাগঞ্জ ও মাছুলিয়া পয়েন্টে পানি এখন বিপৎসীমার অনেক নিচে রয়েছে। কুশিয়ারা ও কালনী কুশিয়ারা নদীর পানি কমলেও এখনো বিপৎসীমার ওপরে রয়েছে। নদীর পানির পাশাপাশি বন্যাকবলিত জেলার ছয়টি উপজেলার অবস্থা উন্নতি হয়েছে। সরকারিভাবে আশ্রয়কেন্দ্র চালু করা হলেও বেশির বাগ মানুষ বাড়ি ফিরে যাচ্ছে। জেলার পাঁচ উপজেলার ১৮ হাজার ২৪০ পরিবার পানিবন্দি রয়েছে।

টানা বর্ষণ এবং ভারত থেকে নেমে আসা ঢলে আকস্মিক বন্যায় দেশের ১১ জেলা কমবেশি প্লাবিত হয়েছে। সরকারি হিসাবে ১০ লাখ ৪৭ হাজার ২৯টি পরিবার পানিবন্দি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫২ লাখ ৯ হাজার ৭৯৮ জন। মারা গেছে ২০ জন।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

খুলনায় এনসিপি নেতাকে গুলি: সাতক্ষীরা সীমান্ত সিল, বিজিবির ৫৭ চেকপোস্ট ও ৮৭টি অতিরিক্ত টহল

প্রত্যন্ত এলাকায় খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট

আপডেট সময় : ০৯:১৯:২৪ পূর্বাহ্ণ, সোমবার, ২৬ আগস্ট ২০২৪

বন্যা উপদ্রুত এলাকায় সরকারি–বেসরকারি পর্যায়ে শুকনা খাবার, পানি, ওষুধপত্র বিতরণ অব্যাহত থাকলেও প্রত্যন্ত ও দুর্গম এলাকায় অনেকে ত্রাণ পাচ্ছেন না বলে জানা গেছে। বন্যাকবলিত বেশির ভাগ এলাকায় মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। অনেকে পানির মধ্যে বসবাস করছে। খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে বিপাকে পড়েছে মানুষ।

দুর্গতদের অভিযোগ, প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম ত্রাণ সরবরাহ করা হচ্ছে।

এমনকি অনেক এলাকায় চার-পাঁচ দিনেও কোনো ত্রাণ পৌঁছেনি। এত দিনেও সরকারি-বেসরকারি সাহায্য নিয়ে যায়নি কেউ। অনাহারে দিন কাটছে অনেকের। সব মিলিয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে আক্রান্ত এলাকার জনজীবন।

প্রতিনিধিদের পাঠানো প্রতিবেদনে বন্যার চিত্র:

ফেনী: ফেনীতে কমতে শুরু করেছে বন্যার পানি। শহরের এসএসকে রোড, ট্রাংক রোডসহ যেসব সড়ক তিন-চার ফুট পানির নিচে ছিল, সেগুলোতেও পানির পরিমাণ দু-এক ফুট কমেছে। তবে এখনো জেলার সব জায়গায় ত্রাণ সহায়তা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ অনেকের। ছাগলনাইয়া উপজেলা থেকে জেলা শহরে অফিসে এসেছেন কবির হোসেন। তিনি জানান, এখনো তাঁর পরিবারসহ বেশ কয়েকটি পরিবার পুরোপুরি পানিবন্দি। কোনো রকম ত্রাণ সহায়তা পাচ্ছেন না তাঁরা। অনেক কষ্টে একটি নৌকায় করে শহরে এসেছেন। বেশ কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবীকে ত্রাণ নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করলেও কেউ যায়নি বলে অভিযোগ কবির হোসেনের।

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুর জেলার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। গতকাল সকাল থেকে নতুন করে পানির চাপ বাড়ছে। এর আগে গত শনিবার নোয়াখালীর পানির চাপ আসা শুরু করে লক্ষ্মীপুরে। এর সঙ্গে যোগ হয় রাতের ভারি বৃষ্টি। ফলে জেলার বেশ কিছু এলাকায় বেড়েছে পানি। জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে। বানভাসি মানুষের দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে।

কুমিল্লা ও দাউদকান্দি: কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, জেলার ১৭ উপজেলার মধ্যে ১৪টির পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা আট লাখ ২৪ হাজারের বেশি। জেলার বুড়িচং উপজেলায় এখনো লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। উপজেলার বুড়বুড়িয়া এলাকায় গোমতীর প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা।

আক্রান্ত অনেক মানুষ এখনো আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে পারেনি। তাদের অনেকে অবস্থান নিয়েছে বাড়ির ছাদে। আবার অনেকে গলা সমান পানি ডিঙিয়ে বাড়িতেই রয়ে গেছে। বাড়িঘরের মায়ায় পড়ে থাকলেও এখন নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে চায় তারা। তবে সেখানে নৌকা ও খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।

সদরের বাসিন্দা আবদুল হান্নান বলেন, বুড়িচং সদর পানির নিচে। অন্তত ২০০টি পরিবার এখনো কোনো ত্রাণ পায়নি। তাদের কাছে কোনো খাবার নেই। বুড়িচং উপজেলা থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল সকালে উপজেলার আগানগর গ্রামে বন্যার পানিতে মরদেহটি ভাসতে দেখা যায়। পরে সেখান থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। তবে মরদেহের পরিচয় জানা যায়নি।

এদিকে তিতাস উপজেলায় বন্যার পানিতে ডুবে দুই বোনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বাগাইরামপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। মৃতরা হলো ওই গ্রামের প্রবাসী মনির হোসেনের মেয়ে আয়েশা আক্তার (১০) ও মোক্তার হোসেনের মেয়ে ছামিয়া আক্তার (৯)। দুজন নয়াকান্দি ইসহাকিয়া সহিনিয়া দারুল কোরআন মাদরাসার ছাত্রী ছিল।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া: কসবা ও আখাউড়া উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। গতকাল পানি কমেছে দুই উপজেলায়ই। কসবায় কিছু সড়কে পানি থাকলেও বেশির ভাগ জায়গার বাড়িঘর থেকে পানি সরে গেছে। আখাউড়ায় বন্যার পানি না থাকলেও কিছু বাড়িতে জলাবদ্ধতা রয়েছে। এদিকে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে গতকাল বিকেল থেকে যাত্রী পারাপার শুরু হয়েছে।

মৌলভীবাজার: গতকাল বন্যাকবলিত এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মনু নদে পানি অনেকটাই কমে গেছে। তবে কদমহাটা মনু নদের ভাঙন দিয়ে পানি ঢুকছে। বন্যাকবলিত গ্রামগুলোর বাড়িঘর, রাস্তাঘাট থেকে পানি কিছুটা নামলেও ফসলি জমি থেকে এখনো পানি নামেনি। নিম্নাঞ্চলে পানিবন্দি মানুষের খাবার ও বিশুদ্ধ পানি সংকট দেখা দিয়েছে।

মিরসরাই (চট্টগ্রাম): মিরসরাইয়ে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে দুই লাখের বেশি মানুষ। টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে ফেনী নদীর পানি বাড়ায় গত বুধবার থেকে এখানকার ১৬৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়। তবে গতকাল সকাল থেকে কিছু কিছু এলাকায় পানি কমেছে।

জানা গেছে, একদিকে বন্যায় পানিবন্দি লাখো অসহায় মানুষ। অন্যদিকে ফেনী নদীর ভাটিতে অবস্থিত দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প মুহুরীর দুটি গেট পানির তোড়ে ভেঙে গেছে। অকেজো আছে আরো দুটি গেট। এ কারণে জোয়ারের সময় ফেনী নদী হয়ে অভ্যন্তরে ঢুকছে বঙ্গোপসাগরের পানি। আবার ভাটার সময় দুটি গেট অকেজো থাকার কারণে পানি নিষ্কাশন ব্যাহত হচ্ছে।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পানি ওঠায় সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ ছিল। গতকাল রোববার সকাল থেকে ঢাকামুখী লেনে যান চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করে।

নোয়াখালী: বন্যার পানি নামতে শুরু করলেও বর্ষণ অব্যাহত থাকায় মানুষের দুর্ভোগ কমেনি। এদিকে সেনবাগ উপজেলায় পানিতে ডুবে একটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এদিকে সেনবাগ উপজেলার বীরকোর্ট এলাকায় আবদুর রহমান (২) নামের একটি শিশু ঘরের সামনে বন্যার পানিতে ডুবে মারা গেছে।

হবিগঞ্জ: খোয়াই নদের বাল্লা পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার ওপরে হলেও শায়েস্তাগঞ্জ ও মাছুলিয়া পয়েন্টে পানি এখন বিপৎসীমার অনেক নিচে রয়েছে। কুশিয়ারা ও কালনী কুশিয়ারা নদীর পানি কমলেও এখনো বিপৎসীমার ওপরে রয়েছে। নদীর পানির পাশাপাশি বন্যাকবলিত জেলার ছয়টি উপজেলার অবস্থা উন্নতি হয়েছে। সরকারিভাবে আশ্রয়কেন্দ্র চালু করা হলেও বেশির বাগ মানুষ বাড়ি ফিরে যাচ্ছে। জেলার পাঁচ উপজেলার ১৮ হাজার ২৪০ পরিবার পানিবন্দি রয়েছে।

টানা বর্ষণ এবং ভারত থেকে নেমে আসা ঢলে আকস্মিক বন্যায় দেশের ১১ জেলা কমবেশি প্লাবিত হয়েছে। সরকারি হিসাবে ১০ লাখ ৪৭ হাজার ২৯টি পরিবার পানিবন্দি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫২ লাখ ৯ হাজার ৭৯৮ জন। মারা গেছে ২০ জন।