নিউজ ডেস্ক:
বিয়ের পর স্বামীর পদবি গ্রহণ করবে স্ত্রী সেটাই তো স্বাভাবিক। অন্তত দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় সব দেশে তো এমনটাই রীতি চালু রয়েছে। ঐতিহ্য, সংস্কারের অজুহাত দিয়ে যুগ যুগ ধরে এমন প্রথাই মেনে চলে এসেছি আমরা। সমাজের বিরাগভাজন হওয়ার ভয়ে এই প্রথাবিরোধী কার্যকলাপ করার সাহস কেউ দেখায় না।
কিন্তু ভারতের পাঞ্জাবের ভাটিন্ডাতে এমনই প্রথাভাঙা বিরল দৃশ্য দেখা গেল। যেখানে কনে এল বরের বেশে এবং বর তার ঠিক উল্টোটা। শেষপর্যন্ত বিয়ের পর কনের পদবি গ্রহণ করলেন বর।
ভারিতের পাঞ্জাব প্রদেশের ভাটিন্ডার মণ্ডি গোবিন্দগড়ে এমনই এক রূপকথার বিয়ের সাক্ষী থাকলেন বহু মানুষ। ৩০ বছরের পাত্র পেশায় জীবনবিমা কর্মী সুখমিন্দর ২৬ বছরের বলজিতকে বিয়ে করে চলে গেলেন শ্বশুরবাড়ি। গত ২৬ ফেব্রয়ারি ভাটিন্ডার মণ্ডি গোবিন্দগড়ে অনুষ্ঠিত হয় এমন অভিনব বিয়ে। দ্বাদশ শ্রেণি উত্তীর্ণ পেশায় বুটিক ব্যবসায়ী বলজিত এদিন বিয়ে করতে আসেন কন্যাপক্ষের লোকজনকে নিয়ে। বরের মতোই সেহরা বেঁধে, হাতে কৃপাণ নিয়ে বিয়ের মণ্ডপে বসেন তিনি। আর হাতে মেহেন্দি লাগিয়ে কনের মতোই বিয়ের মণ্ডপে ছিলেন সুখমিন্দর। বিবাহ সম্পন্ন হওয়ার পর চোখের জলে মা-বাবা, পরিজনদের বিদায় জানিয়ে চলে আসেন কনের বাড়িতে।
সুখমিন্দর জানিয়েছেন, “তার একটি ভাই এবং বোন রয়েছে বাড়িতে। তার অনুপস্থিতিতে তারা মা-বাবার দেখাশোনা করতে পারবে। কিন্তু বলজিতরা পাঁচ বোন। তার একমাত্র ভাইও এই পৃথিবীতে আর নেই। তাই এমন বিয়েতে মা-বাবার দেখাশোনাও করতে পারবে।
ভারতে এমন বিয়েকে ‘কুল কা ক্রাউন’ নামে অভিহিত করা হয়। এর উদ্দেশ্য ভবিষ্যতে কন্যাপক্ষই বংশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। তাই বিয়ের পর কনে শ্বশুরবাড়িতে না বাপের বাড়িতে ফিরে আসে। তারপর সেখানেই স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে থাকেন।
বলজিতের মা জসবিন্দর জানিয়েছেন, “তার মেয়ে বরকে সঙ্গে নিয়ে আসেননি। বরং তার ছেলে বিয়ে করে বউ নিয়ে এসেছে। আমার মেয়ে এমনটা না করলে তাদের বংশ থেমে যেত। এখন আমি খুব খুশি। বংশ এবার মেয়েই এগিয়ে নিয়ে যাবে।