শিরোনাম :
Logo বেরোবির ছাত্র সংসদের দাবিতে অনশনে ২৪ ঘন্টায় অসুস্থ ৪ ‎ Logo খালেদা জিয়ার ৮০তম জন্মবার্ষিকীতে শেরপুর জেলা ছাত্রদলের কুরআন খতম ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত Logo অব্যাহত সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত Logo ওয়েব পোর্টাল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে ইবির আইসিটি বিভাগে নবীনবরণ Logo পলাশবাড়ীতে ভিডাব্লিউ ডি প্রকল্পে অনিয়মসহ স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। Logo যবিপ্রবি ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা: নিষিদ্ধ সংগঠনের দুই কর্মীকে পুলিশে সোপর্দ Logo তেকানী ইউনিয়নের সচিব হালিমের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ Logo কচুয়ার শিক্ষা ও পরিবেশ উন্নয়নে ইঞ্জিনিয়ার হাবিবুর রহমানের অনন্য উদ্যোগ Logo কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট অক্টোবর থেকে: বেবিচক চেয়ারম্যান” Logo মাদকসহ সাতক্ষীরা শহরের চিহ্নিত চোরাকারবারি আটক

চুয়াডাঙ্গা মাথাভাঙ্গা ব্রিজের ওপর বসেছে অস্থায়ী ছাগলের হাট

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ১০:০৭:৫৭ পূর্বাহ্ণ, রবিবার, ১৬ জুন ২০২৪
  • ৭৭৫ বার পড়া হয়েছে

স্থানীয় ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে চুয়াডাঙ্গা বড় বাজারে মাথাভাঙ্গা ব্রিজের ওপর কোরবানি ঈদকে কেন্দ্র করে জমে উঠেছে ছাগল বেচাকেনা। দীর্ঘ ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ঈদুল আজহার আগের পাঁচ দিন মাথাভাঙ্গা ব্রিজের ওপর স্থানীয়সহ আশপাশের এলাকা থেকে বিক্রেতারা কোরবানির জন্য ছাগল নিয়ে আসনে। বছরের পর বছর ধরে কোরবানির ছাগল বেচাকেনার জন্য স্থানটি এখন অস্থায়ী ছাগলের হাটে পরিণত হয়েছে। কোরবানির ঈদের আগের পাঁচ দিনে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গড়ে ২০ থেকে ৩০টির অধিক ছাগল বিক্রি হয়।

জানা গেছে, কোরবানির ঈদের আগে স্থানীয়দের ব্যক্তিগত উদ্যোগে এই হাটটি পরিচালিত হয়। যেখানে শুধুমাত্র ছাগল বেচাকেনা হয়। ক্রেতারা কোরবানির জন্য সহজেই এ হাট থেকে প্রয়োজন ও পছন্দ অনুযায়ী দরদাম করে ছাগল কিনতে পারেন। হাটে আসা বেশিরভাগ ছাগলের বিক্রেতা স্থানীয়। যারা কোরবানির ঈদকে উপলক্ষ করে নিজ বাড়িতে ছাগল লালন-পালন করেন। হাটের ছাগল বিক্রেতা ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৯৬২ সালে মাথাভাঙ্গা নদীর ওপর ব্রিজটি নির্মাণ হওয়ার পর থেকে এখানে স্থানীয় কেউ কেউ কোরবানির ঈদের আগে বিক্রির জন্য ছাগল আনতে শুরু করেন। তবে সময়ের পরিক্রমায় গত ২০ বছর ধরে কোরবানির ঈদের সময় স্থানটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ছাগলের বাজার হিসেবে পরিচিত হয়েছে।

গতকাল শনিবার সরেজমিনে বড় বাজার মাথাভাঙ্গা নদীর পুরাতন ব্রিজের দুই পাশেই ছাগলের ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সরব উপস্থিতি দেখা যায়। বিজ্রের দৌলতদিয়াড়ে অংশে অল্প কিছু সংখ্যক ক্রেতা-বিক্রেতা থাকলেও বড় বাজারের অংশটি যেন পরিপূর্ণ ছাগলের হাটে রূপ নিয়েছে। হাটে আসা বেশিরভাগ ছাগলই বিখ্যাত ব্লাক বেঙ্গল প্রজাতির। এছাড়াও হাটে বিভিন্ন প্রজাতির ছাগল চোখে পড়ে।
চুয়াডাঙ্গা শহরতলীর দৌলতদিয়াড় এলাকার মুদি ব্যবসায়ী স্বপন মিয়া নিজের পোষা এক জোড়া ছাগল বিক্রির জন্য হাটে এনেছিলেন। দুটি ছাগলের জন্য তিনি ৩২ হাজার টাকা দাম চেয়েছেন। স্বপন মিয়া বলেন, শুক্রবারও ছাগল দুটি হাটে এনেছিলাম, তবে চাহিদা অনুযায়ী দাম না পাওয়ায় বিক্রি করিনি। আজ (গতকাল) বড় ছাগলটির ১৪ হাজার পর্যন্ত দাম উঠেছে।

পৌর শহরের বেলগাছি ঈদগাহপাড়া থেকে হাটে নিজের বাড়িতে পোষা একটি ছাগল বিক্রির জন্য এনেছেন অপর এক বিক্রতা নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘চাকরি থেকে অবসর নিয়েছি। শখের বসে ছাগল পালন করি। এ বছর তিনটি ছাগল পালন করেছিলাম, যার মধ্যে একটি বাড়ি থেকেই বিক্রি হয়েছে। বড় ছাগলটি বিক্রির জন্য আজ বড় বাজারে এনেছি। ক্রেতারা ছাগলের জন্য ভালো দাম বলছে না। গত বছর এই হাটে একটি ছাগল বিক্রি করেছিলাম।’ তিনি মন্তব্য করেন, এবারের ক্রেতা সংখ্যা গত বছরের তুলনায় কম, যা বিক্রির ওপর প্রভাব ফেলেছে।

কথা হয় হাটের ইজ্জতদার ফরহাদ হাসানের সঙ্গে। তিনি বলেন, গত বুধবার থেকে বিক্রেতারা ছাগল আনতে শুরু করেন। মূলত ঈদের আগের চার থেকে পাঁচ দিন এখানে বেচা-বিক্রি হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের বাড়িতে পোষা ছাগল এখানে বিক্রির জন্য আনেন। ক্রেতারাও স্থানীয়। ঈদের আগের এই কয়দিনে প্রতিদিন গড়ে ২০ থেকে ৩০টি ছাগল বিক্রি হয়। কোনো বছর এর কম আবার কোনো বছর এর থেকে বেশিও বিক্রি হয়। শুক্রবার হাটে একটি ছাগল সর্বোচ্চ ৪১ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। এছাড়া মানভেদে সর্বনিম্ন ১০ হাজার টাকার ছাগলও হাটে আছে। ছাগলগুলো বিক্রিই এই হাটের একটি সাফল্য। অন্য বছর হাটটিতে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বেচাকেনা হলেও এ বছর রাত আটটার পরেও ক্রেতা-বিক্রেতারা অবস্থান করছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাটের সংশ্লিষ্ট এক ব্যক্তি জানান, স্থানীয় বিক্রেতা ও ক্রেতারাদের আগমনই হাটটি পরিচালনা করে। হাটে আসা ছাগল স্থানীয়দের বাড়িতে পোষা হওয়ায় ক্রেতারাও নিরাপদে ছাগল ক্রয় করতে পারে। এরপরেও এই পাঁচ দিন অস্থায়ী হাটটি পরিচালনার জন্য স্থানীয় কয়েকজন কাজ করেন। তাদের পারিশ্রমিক বাবদ প্রতিটি বিক্রিত ছাগলের জন্য ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে। তবে এর জন্য কাউকে জোর করা হচ্ছে না। বিক্রেতারা খুশি হয়েই দিচ্ছেন, অনেকে দিচ্ছেনও না।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

বেরোবির ছাত্র সংসদের দাবিতে অনশনে ২৪ ঘন্টায় অসুস্থ ৪ ‎

চুয়াডাঙ্গা মাথাভাঙ্গা ব্রিজের ওপর বসেছে অস্থায়ী ছাগলের হাট

আপডেট সময় : ১০:০৭:৫৭ পূর্বাহ্ণ, রবিবার, ১৬ জুন ২০২৪

স্থানীয় ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে চুয়াডাঙ্গা বড় বাজারে মাথাভাঙ্গা ব্রিজের ওপর কোরবানি ঈদকে কেন্দ্র করে জমে উঠেছে ছাগল বেচাকেনা। দীর্ঘ ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ঈদুল আজহার আগের পাঁচ দিন মাথাভাঙ্গা ব্রিজের ওপর স্থানীয়সহ আশপাশের এলাকা থেকে বিক্রেতারা কোরবানির জন্য ছাগল নিয়ে আসনে। বছরের পর বছর ধরে কোরবানির ছাগল বেচাকেনার জন্য স্থানটি এখন অস্থায়ী ছাগলের হাটে পরিণত হয়েছে। কোরবানির ঈদের আগের পাঁচ দিনে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গড়ে ২০ থেকে ৩০টির অধিক ছাগল বিক্রি হয়।

জানা গেছে, কোরবানির ঈদের আগে স্থানীয়দের ব্যক্তিগত উদ্যোগে এই হাটটি পরিচালিত হয়। যেখানে শুধুমাত্র ছাগল বেচাকেনা হয়। ক্রেতারা কোরবানির জন্য সহজেই এ হাট থেকে প্রয়োজন ও পছন্দ অনুযায়ী দরদাম করে ছাগল কিনতে পারেন। হাটে আসা বেশিরভাগ ছাগলের বিক্রেতা স্থানীয়। যারা কোরবানির ঈদকে উপলক্ষ করে নিজ বাড়িতে ছাগল লালন-পালন করেন। হাটের ছাগল বিক্রেতা ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৯৬২ সালে মাথাভাঙ্গা নদীর ওপর ব্রিজটি নির্মাণ হওয়ার পর থেকে এখানে স্থানীয় কেউ কেউ কোরবানির ঈদের আগে বিক্রির জন্য ছাগল আনতে শুরু করেন। তবে সময়ের পরিক্রমায় গত ২০ বছর ধরে কোরবানির ঈদের সময় স্থানটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ছাগলের বাজার হিসেবে পরিচিত হয়েছে।

গতকাল শনিবার সরেজমিনে বড় বাজার মাথাভাঙ্গা নদীর পুরাতন ব্রিজের দুই পাশেই ছাগলের ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সরব উপস্থিতি দেখা যায়। বিজ্রের দৌলতদিয়াড়ে অংশে অল্প কিছু সংখ্যক ক্রেতা-বিক্রেতা থাকলেও বড় বাজারের অংশটি যেন পরিপূর্ণ ছাগলের হাটে রূপ নিয়েছে। হাটে আসা বেশিরভাগ ছাগলই বিখ্যাত ব্লাক বেঙ্গল প্রজাতির। এছাড়াও হাটে বিভিন্ন প্রজাতির ছাগল চোখে পড়ে।
চুয়াডাঙ্গা শহরতলীর দৌলতদিয়াড় এলাকার মুদি ব্যবসায়ী স্বপন মিয়া নিজের পোষা এক জোড়া ছাগল বিক্রির জন্য হাটে এনেছিলেন। দুটি ছাগলের জন্য তিনি ৩২ হাজার টাকা দাম চেয়েছেন। স্বপন মিয়া বলেন, শুক্রবারও ছাগল দুটি হাটে এনেছিলাম, তবে চাহিদা অনুযায়ী দাম না পাওয়ায় বিক্রি করিনি। আজ (গতকাল) বড় ছাগলটির ১৪ হাজার পর্যন্ত দাম উঠেছে।

পৌর শহরের বেলগাছি ঈদগাহপাড়া থেকে হাটে নিজের বাড়িতে পোষা একটি ছাগল বিক্রির জন্য এনেছেন অপর এক বিক্রতা নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘চাকরি থেকে অবসর নিয়েছি। শখের বসে ছাগল পালন করি। এ বছর তিনটি ছাগল পালন করেছিলাম, যার মধ্যে একটি বাড়ি থেকেই বিক্রি হয়েছে। বড় ছাগলটি বিক্রির জন্য আজ বড় বাজারে এনেছি। ক্রেতারা ছাগলের জন্য ভালো দাম বলছে না। গত বছর এই হাটে একটি ছাগল বিক্রি করেছিলাম।’ তিনি মন্তব্য করেন, এবারের ক্রেতা সংখ্যা গত বছরের তুলনায় কম, যা বিক্রির ওপর প্রভাব ফেলেছে।

কথা হয় হাটের ইজ্জতদার ফরহাদ হাসানের সঙ্গে। তিনি বলেন, গত বুধবার থেকে বিক্রেতারা ছাগল আনতে শুরু করেন। মূলত ঈদের আগের চার থেকে পাঁচ দিন এখানে বেচা-বিক্রি হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের বাড়িতে পোষা ছাগল এখানে বিক্রির জন্য আনেন। ক্রেতারাও স্থানীয়। ঈদের আগের এই কয়দিনে প্রতিদিন গড়ে ২০ থেকে ৩০টি ছাগল বিক্রি হয়। কোনো বছর এর কম আবার কোনো বছর এর থেকে বেশিও বিক্রি হয়। শুক্রবার হাটে একটি ছাগল সর্বোচ্চ ৪১ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। এছাড়া মানভেদে সর্বনিম্ন ১০ হাজার টাকার ছাগলও হাটে আছে। ছাগলগুলো বিক্রিই এই হাটের একটি সাফল্য। অন্য বছর হাটটিতে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বেচাকেনা হলেও এ বছর রাত আটটার পরেও ক্রেতা-বিক্রেতারা অবস্থান করছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাটের সংশ্লিষ্ট এক ব্যক্তি জানান, স্থানীয় বিক্রেতা ও ক্রেতারাদের আগমনই হাটটি পরিচালনা করে। হাটে আসা ছাগল স্থানীয়দের বাড়িতে পোষা হওয়ায় ক্রেতারাও নিরাপদে ছাগল ক্রয় করতে পারে। এরপরেও এই পাঁচ দিন অস্থায়ী হাটটি পরিচালনার জন্য স্থানীয় কয়েকজন কাজ করেন। তাদের পারিশ্রমিক বাবদ প্রতিটি বিক্রিত ছাগলের জন্য ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে। তবে এর জন্য কাউকে জোর করা হচ্ছে না। বিক্রেতারা খুশি হয়েই দিচ্ছেন, অনেকে দিচ্ছেনও না।