শনিবার | ২৯ নভেম্বর ২০২৫ | হেমন্তকাল
শিরোনাম :
Logo খালেদা জিয়ার দ্রুত সুস্থতা কামনায় দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা Logo টেকনাফে বিজিবির অভিযানে আগ্নেয়াস্ত্রসহ একজন সন্ত্রাসী আটক Logo মহেশখালীতে কোস্ট গার্ডের অভিযানে দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র, গোলা-বারুদ ও আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির সরঞ্জামাদিসহ আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির কারিগর আটক: Logo সাতক্ষীরা-০২ এ ধানের শীষের জয়ে নতুন অধ্যায়—বিএনপির একতাবদ্ধ ঘোষণা Logo বুটেক্স অ্যালামনাই ইউএসএ-এর আত্মপ্রকাশ: যুক্তরাষ্ট্রে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের মিলনমেলা ও কমিটি গঠন Logo বুটেক্সের প্রথম সমাবর্তন আগামী ২৭ ডিসেম্বর Logo রাবিতে ইলা মিত্রকে নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত Logo নোবিপ্রবির সঙ্গে তুরস্কের রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর Logo নোবিপ্রবিতে গবেষণা, বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিং এবং সরকারের নীতিনির্ধারকদের করণীয় শীর্ষক প্রশিক্ষণ Logo রাবি ময়মনসিংহ জেলা সমিতির নতুন কমিটি ঘোষণা

তেকানী ইউনিয়নের সচিব হালিমের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০৮:৫৭:৩২ অপরাহ্ণ, রবিবার, ১৭ আগস্ট ২০২৫
  • ৭৭৪ বার পড়া হয়েছে

নজরুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ:
সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার তেকানী ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (সচিব) আব্দুল হালিমের বিরুদ্ধে নিয়মিত অফিসে অনুপস্থিত থাকা, জন্মনিবন্ধনসহ বিভিন্ন সেবার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত অর্থ আদায়সহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
রোববার (১৭ আগস্ট) সরেজমিনে তেকানী ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে গিয়ে সচিবকে পাওয়া যায়নি। এ সময় সেবা নিতে আসা কয়েকজন স্থানীয় অভিযোগ করে বলেন, সচিব নিয়মিত অফিসে উপস্থিত থাকেন না। সপ্তাহে মাত্র দুই-তিন দিন আসেন, বাকী দিনগুলো ব্যক্তিগত কাজে ব্যস্ত থাকেন। এ কারণে ইউনিয়ন পরিষদের সেবা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১৫ সালের ১৮ মে তিনি তেকানী ইউনিয়ন পরিষদে যোগদান করেন এবং প্রায় ১০ বছর ধরে একই কর্মস্থলে দায়িত্ব পালন করছেন। সেবাগ্রহীতাদের অভিযোগ, সচিব প্রতিদিন দেরিতে আসেন। যার ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। অনেকেই নির্দিষ্ট সময়ে সেবা না পেয়ে ক্ষোভ নিয়ে ফিরে যান।
আরও জানা যায়, জন্মনিবন্ধনের ক্ষেত্রে সরকার নির্ধারিত ফি’র বাইরে সচিব অতিরিক্ত অর্থ আদায় করেন। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী শিশুর জন্ম থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে জন্মনিবন্ধন ফ্রি ৫ বছর পর্যন্ত ২৫ টাকা, ৫ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য ৫০ টাকা, সংশোধনের ক্ষেত্রে ১০০ টাকা কিন্তু সচিব আব্দুল হালিম প্রতিটি জন্মনিবন্ধনের জন্য ১৫০ টাকা নিচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া নাগরিকত্ব সনদ, ওয়ারিশ সনদ, চেয়ারম্যান প্রত্যয়নপত্র ও ট্রেড লাইসেন্সের ক্ষেত্রেও নির্ধারিত ফি’র বাইরে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার অভিযোগ করেছেন সেবাগ্রহীতারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক সেবাগ্রহীতা বলেন, আমি দুই ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করছি, কিন্তু সচিবের দেখা পাইনি। এর আগেও একবার এসে একই অভিজ্ঞতা হয়েছে। তিনি নিয়ম-কানুন মানেন না।
এ বিষয়ে তেকানী ইউনিয়ন পরিষদের একজন ইউপি সদস্য জানান, সচিব মাঝে মধ্যে অফিসে আসেন, আর যেদিন আসেন সেদিনও দেরি করে প্রবেশ করেন। গ্রাম পুলিশ বলেন, গত সপ্তাহে সচিব কেবল রবিবার ও বৃহস্পতিবার অফিস করেছেন। কাজ থাকলে আসেন, না হলে আসেন না।

অভিযোগ বিষয়ে সচিব আব্দুল হালিমের কাছে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনার কাছে যদি তথ্য থাকে, তাহলে নিউজ করেন। ইতিপূর্বে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েও কেউ কিছু করতে পারেনি। শুধু আমাকে ভয় দেখায়। এ জায়গায় আপনি থাকলেও একই কাজ করতেন।
এ বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক ফয়সাল আহমেদ বলেন, সচিবের বিরুদ্ধে এর আগে অনুপস্থিতি ও অতিরিক্ত ফি’র বিষয়ে কেউ অভিযোগ না থাকায় কোন ব্যবস্থা নেইনি। আমি প্রশাসক হিসেবে নতুন যোগদান করেছি তদন্তে প্রমাণ হলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

কাজিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (অ. দা.) মো. হুমায়ুন কবিরের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আপনার কাছ থেকেই প্রথম শুনলাম। দ্রুতই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

সিরাজগঞ্জের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম বলেন, কর্মে ফাকি ও সরকারি ফি ব্যতিত অতিরিক্ত অর্থ নেওয়ার কোন সুযোগ নেই। এবিষয়ে উপজেলা ইউএনওকে এ বিষয়ে অবহিত করছি।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

খালেদা জিয়ার দ্রুত সুস্থতা কামনায় দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা

তেকানী ইউনিয়নের সচিব হালিমের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ

আপডেট সময় : ০৮:৫৭:৩২ অপরাহ্ণ, রবিবার, ১৭ আগস্ট ২০২৫

নজরুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ:
সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার তেকানী ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (সচিব) আব্দুল হালিমের বিরুদ্ধে নিয়মিত অফিসে অনুপস্থিত থাকা, জন্মনিবন্ধনসহ বিভিন্ন সেবার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত অর্থ আদায়সহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
রোববার (১৭ আগস্ট) সরেজমিনে তেকানী ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে গিয়ে সচিবকে পাওয়া যায়নি। এ সময় সেবা নিতে আসা কয়েকজন স্থানীয় অভিযোগ করে বলেন, সচিব নিয়মিত অফিসে উপস্থিত থাকেন না। সপ্তাহে মাত্র দুই-তিন দিন আসেন, বাকী দিনগুলো ব্যক্তিগত কাজে ব্যস্ত থাকেন। এ কারণে ইউনিয়ন পরিষদের সেবা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১৫ সালের ১৮ মে তিনি তেকানী ইউনিয়ন পরিষদে যোগদান করেন এবং প্রায় ১০ বছর ধরে একই কর্মস্থলে দায়িত্ব পালন করছেন। সেবাগ্রহীতাদের অভিযোগ, সচিব প্রতিদিন দেরিতে আসেন। যার ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। অনেকেই নির্দিষ্ট সময়ে সেবা না পেয়ে ক্ষোভ নিয়ে ফিরে যান।
আরও জানা যায়, জন্মনিবন্ধনের ক্ষেত্রে সরকার নির্ধারিত ফি’র বাইরে সচিব অতিরিক্ত অর্থ আদায় করেন। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী শিশুর জন্ম থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে জন্মনিবন্ধন ফ্রি ৫ বছর পর্যন্ত ২৫ টাকা, ৫ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য ৫০ টাকা, সংশোধনের ক্ষেত্রে ১০০ টাকা কিন্তু সচিব আব্দুল হালিম প্রতিটি জন্মনিবন্ধনের জন্য ১৫০ টাকা নিচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া নাগরিকত্ব সনদ, ওয়ারিশ সনদ, চেয়ারম্যান প্রত্যয়নপত্র ও ট্রেড লাইসেন্সের ক্ষেত্রেও নির্ধারিত ফি’র বাইরে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার অভিযোগ করেছেন সেবাগ্রহীতারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক সেবাগ্রহীতা বলেন, আমি দুই ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করছি, কিন্তু সচিবের দেখা পাইনি। এর আগেও একবার এসে একই অভিজ্ঞতা হয়েছে। তিনি নিয়ম-কানুন মানেন না।
এ বিষয়ে তেকানী ইউনিয়ন পরিষদের একজন ইউপি সদস্য জানান, সচিব মাঝে মধ্যে অফিসে আসেন, আর যেদিন আসেন সেদিনও দেরি করে প্রবেশ করেন। গ্রাম পুলিশ বলেন, গত সপ্তাহে সচিব কেবল রবিবার ও বৃহস্পতিবার অফিস করেছেন। কাজ থাকলে আসেন, না হলে আসেন না।

অভিযোগ বিষয়ে সচিব আব্দুল হালিমের কাছে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনার কাছে যদি তথ্য থাকে, তাহলে নিউজ করেন। ইতিপূর্বে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েও কেউ কিছু করতে পারেনি। শুধু আমাকে ভয় দেখায়। এ জায়গায় আপনি থাকলেও একই কাজ করতেন।
এ বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক ফয়সাল আহমেদ বলেন, সচিবের বিরুদ্ধে এর আগে অনুপস্থিতি ও অতিরিক্ত ফি’র বিষয়ে কেউ অভিযোগ না থাকায় কোন ব্যবস্থা নেইনি। আমি প্রশাসক হিসেবে নতুন যোগদান করেছি তদন্তে প্রমাণ হলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

কাজিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (অ. দা.) মো. হুমায়ুন কবিরের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আপনার কাছ থেকেই প্রথম শুনলাম। দ্রুতই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

সিরাজগঞ্জের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম বলেন, কর্মে ফাকি ও সরকারি ফি ব্যতিত অতিরিক্ত অর্থ নেওয়ার কোন সুযোগ নেই। এবিষয়ে উপজেলা ইউএনওকে এ বিষয়ে অবহিত করছি।