শিরোনাম :
Logo আশিকাটি ইউনিয়নে বিভিন্ন ওয়ার্ড বিএনপির প্রাথমিক সদস্য সংগ্রহ ও নবায় কর্মসূচীর উদ্বোধন Logo মেধাভিত্তিক নিয়োগ হলে নিয়োগপ্রাপ্ত সকলেই দেশের সম্পদ হবে : আসিফ মাহমুদ Logo অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে হাঙরের আক্রমণে নিহত ১ Logo দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টি২০ সিরিজে ডাকেটকে বিশ্রাম দিয়েছে ইংল্যান্ড Logo সাইবার নিরাপত্তা আইন এখন অনেক সক্রিয় : ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব Logo পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) আজ Logo সাতক্ষীরায় ধর্মীয় ভাবগম্ভীর পরিবেশে ঈদে মিলাদুন্নবী পালিত Logo ইবিতে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে র‍্যালি ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত Logo সুন্দরগঞ্জে স্কুলছাত্রী সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার Logo চাঁদপুর টেলিভিশনের সাংবাদিকদের সাথে জেলা বিএনপির সভাপতির মতবিনিময়

ঝিনাইদহে গরীব অসহায়দের সমাজসেবার টাকা জনপ্রতিনিধিদের পকেটে!

  • rahul raj
  • আপডেট সময় : ০৫:০১:১৫ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ১০ নভেম্বর ২০২০
  • ৭৬৮ বার পড়া হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহঃ
নজরুল ইসলাম প্রতিবন্ধি হিসেবে এককালীন নয় হাজার টাকা ভাতা পেয়েছেন। অগ্রনী ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের পর তার কাছ থেকে এলাকার মেম্বর এক হাজার টাকা নিয়ে নেন। একই কথা জনালেন বিধবা রোকেয়া খাতুন ও বাক প্রতিবন্ধি লিয়াতক আলী। নতুন ভাতাভোগী হলেই তাদের কাছ থেকে ৫০০ থেকে চার হাজার টাকা পর্যন্ত কেটে রাখা হয়। এই চিত্র ঝিনাইদহের প্রতিটি ইউনিয়নের ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে। কখনো সমাজসেব কর্মকর্তা বা ইউপি চেয়ারম্যানদের নাম ভাঙ্গিয়ে ইউনিয়ন পরষিদের সদস্যরা টাকা হাতিয়ে নিয়ে থাকেন। ইউপি সদস্যদের এই দুর্নীতির অভিযোগ নতুন কিছু নয়। বছরের পর বছর ধরে ইউপি সদস্যরা গ্রামাঞ্চলে এই অনৈতিক কাজ করে যাচ্ছেন। এ বিষয়ে অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পায় না ভুক্তভোগীরা। কারণ বেশির ভাগ ইউপি সদস্য রাজনৈতিক ও সামাজিক ভাবে প্রভাবশালী। আবার ইউপি চেয়ারম্যানদের সাথেও রয়েছে তাদের সখ্যতা। ঝিনাইদহ জেলা সমাজসেবা অফিসের দেওয়া তথ্যমতে ২০১৯ সালের জুন থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত ঝিনাইদহ জেলায় নতুন করে বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবিন্ধ ভাতার জন্য তালিকাভুক্ত হয়েছেন ২০ হাজার ৭৩ জন। গত জুন মাস থেকে তারা ভাতা পাচ্ছেন। এর মধ্যে ৬ উপজেলায় নতুন বয়স্ক ভাতা পাচ্ছেন ৪৯১৪ জন, বিধবা ভাতা পাচ্ছেন ৪৮৫৮ জন ও প্রতিবন্ধি ভাতা পাচ্ছেন ১০ হাজার ৩০১ জন। নতুন ভাতাপ্রাপ্ত সকলেরই টাকা উত্তোলনের সময় ইউপি সদস্যদের কমবেশি ভাগ দিতে হয়েছে। গড়ে ৫০০ টাকা করে জনপ্রতি ইউপি সদস্যরা নিলে হিসাব দাড়ায় কোটি টাকার উপরে। ভাতাভোগীদের অভিযোগ কখনো জোর করে আবার কখনো মিষ্টি খাওয়ার নামে ইউপি মেম্বরা টাকা নিয়ে থাকেন। অনেক সময় ভাতা করে দেওয়ার নাম করে আগে থেকেই ২৫০০ টাকা থেকে ৩০০০ হাজার টাকা নেওয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া ভিজিএফ, ভিজিডি, ১০ টাকা কেজি দরের চালের কার্ড ও সরকারী বাড়ি করে দেওয়ার নাম করে চেয়ারম্যান মেম্বররা অবলিলায় টাকা হাতিয়ে নিয়ে পার পেয়ে যাচ্ছেন। ইউপি মেম্বরদের টাকা গ্রহনের বিষয়ে ঝিনাইদহ সদরের হলিধানী ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান মতি বলেন, আমরা সচ্ছতা আনার জন্য মাইকিং করি। আবার কোন সদস্যের এমন সংশ্লিষ্টতা পেলে ভাতার কার্ড বাতিল করে দিই। তারপরও রোধ করা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, যে সব ইউপি সদস্য এমন অনৈতিক কাজ করেন তাদের সদস্য পদ থাকা উচিৎ নয়। বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোঃ আব্দুল লতিফ শেখ বলেন, ইউপি মেম্বরদের এই দুর্নীতি প্রমানহীন। অহরহ অভিযোগ আমাদের কানে আসলেও আমরা প্রমান করতে পারি না। ফলে তারা পার পেয়ে যান। যারা টাকা দেন (নতুন ভাতাভাগী) তারা স্বীকার না করায় মেম্বরদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয় না। তিনি আরো জানান, আমরা বয়স্ক, বধিবা ও প্রতিবন্ধি ভাতায় সচ্ছতা আনতে সরেজমিন যাচাই বাছাই করছি। এই কাজে অনেকটা সফল হয়েছি। তিনি বলেন, আগামীতে ভাতাভোগীরা বিকাশসহ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা পাবেন। ফলে ইউপি সদস্যদের দুর্নীতি কমে আসবে বলে উপ-পরিচালক মোঃ আব্দুল লতিফ শেখ আশা ব্যক্ত করেন।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

আশিকাটি ইউনিয়নে বিভিন্ন ওয়ার্ড বিএনপির প্রাথমিক সদস্য সংগ্রহ ও নবায় কর্মসূচীর উদ্বোধন

ঝিনাইদহে গরীব অসহায়দের সমাজসেবার টাকা জনপ্রতিনিধিদের পকেটে!

আপডেট সময় : ০৫:০১:১৫ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ১০ নভেম্বর ২০২০

স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহঃ
নজরুল ইসলাম প্রতিবন্ধি হিসেবে এককালীন নয় হাজার টাকা ভাতা পেয়েছেন। অগ্রনী ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের পর তার কাছ থেকে এলাকার মেম্বর এক হাজার টাকা নিয়ে নেন। একই কথা জনালেন বিধবা রোকেয়া খাতুন ও বাক প্রতিবন্ধি লিয়াতক আলী। নতুন ভাতাভোগী হলেই তাদের কাছ থেকে ৫০০ থেকে চার হাজার টাকা পর্যন্ত কেটে রাখা হয়। এই চিত্র ঝিনাইদহের প্রতিটি ইউনিয়নের ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে। কখনো সমাজসেব কর্মকর্তা বা ইউপি চেয়ারম্যানদের নাম ভাঙ্গিয়ে ইউনিয়ন পরষিদের সদস্যরা টাকা হাতিয়ে নিয়ে থাকেন। ইউপি সদস্যদের এই দুর্নীতির অভিযোগ নতুন কিছু নয়। বছরের পর বছর ধরে ইউপি সদস্যরা গ্রামাঞ্চলে এই অনৈতিক কাজ করে যাচ্ছেন। এ বিষয়ে অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পায় না ভুক্তভোগীরা। কারণ বেশির ভাগ ইউপি সদস্য রাজনৈতিক ও সামাজিক ভাবে প্রভাবশালী। আবার ইউপি চেয়ারম্যানদের সাথেও রয়েছে তাদের সখ্যতা। ঝিনাইদহ জেলা সমাজসেবা অফিসের দেওয়া তথ্যমতে ২০১৯ সালের জুন থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত ঝিনাইদহ জেলায় নতুন করে বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবিন্ধ ভাতার জন্য তালিকাভুক্ত হয়েছেন ২০ হাজার ৭৩ জন। গত জুন মাস থেকে তারা ভাতা পাচ্ছেন। এর মধ্যে ৬ উপজেলায় নতুন বয়স্ক ভাতা পাচ্ছেন ৪৯১৪ জন, বিধবা ভাতা পাচ্ছেন ৪৮৫৮ জন ও প্রতিবন্ধি ভাতা পাচ্ছেন ১০ হাজার ৩০১ জন। নতুন ভাতাপ্রাপ্ত সকলেরই টাকা উত্তোলনের সময় ইউপি সদস্যদের কমবেশি ভাগ দিতে হয়েছে। গড়ে ৫০০ টাকা করে জনপ্রতি ইউপি সদস্যরা নিলে হিসাব দাড়ায় কোটি টাকার উপরে। ভাতাভোগীদের অভিযোগ কখনো জোর করে আবার কখনো মিষ্টি খাওয়ার নামে ইউপি মেম্বরা টাকা নিয়ে থাকেন। অনেক সময় ভাতা করে দেওয়ার নাম করে আগে থেকেই ২৫০০ টাকা থেকে ৩০০০ হাজার টাকা নেওয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া ভিজিএফ, ভিজিডি, ১০ টাকা কেজি দরের চালের কার্ড ও সরকারী বাড়ি করে দেওয়ার নাম করে চেয়ারম্যান মেম্বররা অবলিলায় টাকা হাতিয়ে নিয়ে পার পেয়ে যাচ্ছেন। ইউপি মেম্বরদের টাকা গ্রহনের বিষয়ে ঝিনাইদহ সদরের হলিধানী ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান মতি বলেন, আমরা সচ্ছতা আনার জন্য মাইকিং করি। আবার কোন সদস্যের এমন সংশ্লিষ্টতা পেলে ভাতার কার্ড বাতিল করে দিই। তারপরও রোধ করা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, যে সব ইউপি সদস্য এমন অনৈতিক কাজ করেন তাদের সদস্য পদ থাকা উচিৎ নয়। বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোঃ আব্দুল লতিফ শেখ বলেন, ইউপি মেম্বরদের এই দুর্নীতি প্রমানহীন। অহরহ অভিযোগ আমাদের কানে আসলেও আমরা প্রমান করতে পারি না। ফলে তারা পার পেয়ে যান। যারা টাকা দেন (নতুন ভাতাভাগী) তারা স্বীকার না করায় মেম্বরদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয় না। তিনি আরো জানান, আমরা বয়স্ক, বধিবা ও প্রতিবন্ধি ভাতায় সচ্ছতা আনতে সরেজমিন যাচাই বাছাই করছি। এই কাজে অনেকটা সফল হয়েছি। তিনি বলেন, আগামীতে ভাতাভোগীরা বিকাশসহ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা পাবেন। ফলে ইউপি সদস্যদের দুর্নীতি কমে আসবে বলে উপ-পরিচালক মোঃ আব্দুল লতিফ শেখ আশা ব্যক্ত করেন।