বুড়িগঙ্গা নাগরমহল ঘাটের সাত্তার মাঝি আটক
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার মারুফদহ গ্রামের মাইনউদ্দীনের ছেলে ও জবি’র মেধাবী ছাত্র চাঞ্চল্যকর আরিফুল মৃত্যুর ঘটনা এখনো রহস্যঘেরা। এ মামলার তদন্তকারী অফিসার মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে বুড়িগঙ্গার বিভিন্ন ঘাটের অনুসন্ধান শেষে নাগরমহল ঘাটের মাঝি সাত্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে। আটক সাত্তার মাঝির বাড়ী বরিশাল জেলার নেছারাবাদ । সে ঢাকার কেরানীগঞ্জের ইস্পাহানী এলাকায় থেকে বুড়িগঙ্গার নাগরমহল ঘাটে মাঝির কাজ করে।
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার এস আই ও এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জানান, সাত্তার মাঝিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট এখনো হাতে এসে পৌঁছায়নি। রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে নৌকাডুবিতে আরিফুলের মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে।
জগন্নাাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের মেধাবী ছাত্র আরিফুল দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের ইস্পাহানী মেসে থেকে পড়াশোনা করতো । পরিবারের দাবী আরিফুলের ইয়ারমেট ছুমাইয়া নামের এক সহপাঠি গত তিন বছর ধরে তাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। নিহত আরিফুল ছুমাইয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় তার মৃত্যুর কারণ কী না এনিয়েও পরিবারের সদস্যদের মনে সন্দেহ রয়েছে ।
তবে, তদন্ত কর্মকর্তা এস আই ইয়াকুব আলী সমীকরণকে জানান, গত ২ আগষ্ট পর্যন্ত সর্বশেষ তদন্তে বেরিয়ে এসেছে নৌকা ডুবিতে আরিফুলের মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। তদন্ত কর্মকর্তার এমন ধারণার প্রেক্ষিতে সমীকরণের পক্ষ থেকে প্রশ্ন করা হয় নৌকা ডুবিতেই যে আরিফুল মারা গেছে এটা আপনি কিভানে নিশ্চিত হলেন ? এমন প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি ওই তদন্ত কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য গত ৩০ জুলাই নিখোঁজ হয় আরিফুল। ৩০ ঘন্টা নিখোঁজের পর ৩১ জুলাই বুড়িগঙ্গা থেকে আরিফুলের লাশ উদ্ধার করে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ । ১ আগষ্ট বুধবার সকালে তার মহরদেহ চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার মারুফদহে নিজ বাড়িতে পৌঁছায় এবং ঐদিনই সকাল ৯টায় তার দাফন কার্য সম্পন্ন হয়।
এদিকে আরিফুলের পরিবারের জোরালো দাবী আরিফুল দীর্ঘদিন ধরে ওই ঘাট দিয়ে নৌকায় যাতায়াত করতো। তাছাড়া সে সাঁতারও জানতো। আরিফুলের নৌকা ডুবিতে মৃত্যু হয়েছে এটি বিশ্বাসযোগ্য নয়। পরিবার ও এলাকাবাসীর সন্দেহ আরিফুলের মৃত্যুর ঘটনাটি কেউ অন্যখাতে নিতে চাইছে নাতো?
এছাড়া ৩০ জুলাই সকাল সাড়ে ১০টায় বুড়িগঙ্গায় নৌকাডুবির ঘটনা ঘটেছে এমন কোনো সংবাদ এর আগে যেমন জানা যায়নি তেমনি এ সংক্রান্ত কোনো সংবাদ সংবাদপত্রে বা ইলেকট্রনিক্স মিডিয়াতেও প্রচার হয়নি। তাই তদন্ত কর্মকর্তার এমন প্রাথমিক ধারণার সাথে কোনোভাবেই একমত হতে পারছেন না আরিফুলের পরিবার, শিক্ষক ও সহপাঠিরা।
এদিকে আরিফুলের হত্যার সাথে যারাই জড়িত থাকুক তাদেরকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করেছে তার স্বজন ও গ্রামবাসীরা।