শিরোনাম :
Logo প্রধানমন্ত্রী পদে একজন ১০ বছরের বেশি নয়, একমত সব দল Logo থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়াকে যুদ্ধ বন্ধ করতে বললেন ট্রাম্প Logo চুয়াডাঙ্গা পৌরসভায় ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশক নিধন কর্মসূচি শুরু জনসচেতনতা বাড়াতে লিফলেট বিতরণের উদ্যোগ, পুরো পৌর এলাকায় চলবে স্প্রে কার্যক্রম Logo এক বছরের ব্যবধানে বিএনপির আয় বেড়েছে ১৪ গুণ Logo পানিতে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু Logo দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন নিউজিল্যান্ড Logo হংকংয়ের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে এশিয়া কাপের ১৭তম আসর শুরু করবে বাংলাদেশ Logo ইবিতে শিক্ষার্থীকে হুমকির অভিযোগ, মানহানির পাল্টা অভিযোগ দায়ের সহ-সমন্বয়কের Logo কয়রায় যৌথ অভিযানে জব্দকৃত ৭০০ কেজি কাকড়া অবমুক্ত Logo চলচ্চিত্র নায়ক সংগ্রাম খান এবার “লস্কর” সিনেমায়

লামায় বিজিবি’র অভিযানে ৯ ট্রাকসহ অবৈধ পাথর জব্দ ঃ উপজেলা প্রশাসন নিবর ভুমিকা পালন

  • Nil Kontho
  • আপডেট সময় : ০৮:০২:২৩ অপরাহ্ণ, সোমবার, ৫ মার্চ ২০১৮
  • ৭৫৭ বার পড়া হয়েছে

ফরিদ উদ্দিন,লামা ঃ  বান্দরবানের লামা উপজেলায় রাতের আধাঁরে অবৈধভাবে পাচারকালে ৯ ট্রাক পাথর আটক করেছে নাইক্ষ্যংছড়ি নিয়ন্ত্রণাধীন বনপুর ত্রিশডেবা ক্যাম্পের বিজিবি সদস্যরা। গতকাল শনিবার উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের বনপুর-রামগতি এলাকা হতে এই পাথর ভর্তি ট্রাকসহ জব্দ করা হয়।এদিকে পাথর বোঝায় ট্রাক আটকের ৪২ ঘন্টা সময় পেরিয়ে গেলেও এখনো অবৈধ পাথর ব্যবসায়ী এবং জব্দ পাথরের বিরুদ্ধে লামা উপজেলা প্রশাসন হতে কোন আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি বলে জানিয়েছেন, নাইক্ষ্যংছড়ি ৩১ বিজিবি’র অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল আনোয়ারুল আজিম। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বনপুর হতে রামগতি সড়কে পাথর ভর্তি ৯টি ট্রাক পড়ে আছে। বিজিবি বনপুর ক্যাম্পের সদস্যরা ট্রাক গুলো পাহারা দিচ্ছে।
স্থানীয়দের সাথে আলাপকালে জানা যায়, ইউনিয়নের বনপুর হতে ইয়াংছা সড়ক, কালিরঝিরি মুখ হতে ঘিলাতলী হয়ে ডুলহাজারা সড়ক ও গয়ালমারা হতে ডুলহাজারা সড়ক দিয়ে প্রতিদিন কমপক্ষে ১২০ হতে ১৫০ ট্রাক অবৈধ পাথর পাচার হচ্ছে। সরজমিনে গিয়ে এই প্রতিবেদক সহ সংবাদকর্মীদের একটি টিম ট্রাকে পাথর পাচারের বিষয়ে সত্যতা পেয়েছে। আরো জানা যায়, অনুমোদন না থাকায় দিনের চেয়েও রাতের অন্ধকার বেশী পাথর পাচার হয়। গভীর রাত পর্যন্ত ট্রাক গুলো চলাচল করে। স্থানীয় কেউ প্রতিবাদ করলে পাথর ব্যাবসায়ীদের রোষানলে পড়তে হয়।
স্থানীয় পাহাড়ি বাঙ্গালীদের কাছ থেকে জানা যায়, ইউনিয়নের ১,২,৩ ও ৯নং ওয়ার্র্ডের ছমুখাল, পাইকঝিরি, ওয়াক্রা পাড়া, খ্রিস্টান পাড়া, মরা ঝিরি, চচাই পাড়া,কেরানী ঝিরি, কইতরের ঝিরি, বুদুম ঝিরি, চিনির ঝিরি, গয়ালমারা, বালস্ট কারবারী পাড়া ঝিরি, জোয়াকি পাড়া, বাকঁখালী ঝিরি, হরিণ ঝিরি, রবাট কারবারী পাড়া ঝিরি, বালুর ঝিরি, আলিক্ষ্যং ঝিরি, কাঁঠালছড়া ও বদুর ঝিরি হতে পাথর উত্তোলন করছে ব্যবসায়ীরা।এইসব নদী, খাল, ছড়া ও ঝিরি হতে প্রায় ৬০ জন ব্যবসায়ী পাথর উত্তোলন করে বলে জানা যায়। উক্ত ব্যবসায়ীরা হল, চকরিয়ার মনু মেম্বার, মহিউদ্দিন চৌধুরী, নাছির উদ্দিন, জামাল উদ্দিন ফকির, জমির উদ্দিন ভেন্ডি বাজার), মো. দলিল (পালাকাটা),আবচার উদ্দিন, জকির উলাহ, জয়নাল আবেদীন ড্রাইভার, ছৈয়দ আলম, বেলাল উদ্দিন কোং, শুক্কুর মিস্ত্রি, মো. সোহেল ভুট্টু, আমির হামজা (হাঁসের দিঘি), এখলাস (হাঁসের দিঘি), মুজিব, এনাম, ফাঁসিয়াখালীর হুমায়ন কবির চৌধুরী, চংপাত মুরুং, মো. আক্তার হোসেন (নতুন পাড়া), ওছালা মার্মা, ফেরদৌস (ইয়াংছা), ছুট্টু সহ প্রমূখ।
এদিকে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের বান্দরবান শাখার সচিব সাংবাদিক রুহুল আমিন বলেন, ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নে বেপরোয়া পাথর পাচারের কারণে দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে সাধারণ মানুষের জীবন যাত্রা। পাথর পাচারে রাস্তাঘাট ও ব্রিজ-কালর্ভাট ভেঙ্গে স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত হয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে ইউনিয়নের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ। পার্শ্ববর্তী কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ৩০/৪০টি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট স্থানীয় প্রশাসনকে বৃদ্ধাংগুলী দেখিয়ে কোন প্রকার অনুমোদন ছাড়া পাহাড় কেটে ও খুঁড়ে পাথর উত্তোলন করছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার ধ্বংসের পাশাপাশি অবৈধ পাথর উত্তোলনের কারণে এলাকার নদী, খাল, ছড়া ও ঝিরি গুলো ইতিমধ্যে শুকিয়ে তীব্র পানির সংকট দেখা দিয়েছে। গ্রামীণ কাঁচা সড়কে অসংখ্য গাড়ি চলাচলের কারণে ধূলাবালিতে রাস্তাঘাটে চলাফেরা করা যায়না। এছাড়া অতিরিক্ত ধূলার কারণে স্কুল, মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে যেতে পারছেনা এবং শ্বাসকষ্টসহ অসংখ্য রোগে ভুগছে সাধারণ জনগণ।
ফাঁসিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান জাকের হোসেন মজুমদার জানায়, আমার ইউনিয়নের কোন ঝিরি ছড়াতে ভাসমান পাথর নেই। প্রভাবশালী সিন্ডিকেট গত ৬/৭ বছর ধরে পাহাড় খুঁড়ে ও মাটি কেটে পাথর উত্তোলন করছে। আমাদের বাধা প্রশাসন সহ কেউ পাত্তা দিচ্ছেনা।প্রতিদিন যে,ভাবে অবৈধ পাথর পাচার হচেছ অচিরেই আমার এলাকায় পানি শুন্যতা দেখা দিবে।
এ ব্যাপারে লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার খিনওয়ান নু সাংবাদিকদের কে বলেন, বিজিবি অবৈধ ধরেছে শুনেছি আর বর্তমানে পাথরের পারমিন দেয়া হয় না। রাতের আধাঁরে পাথর পাচার হচ্ছে বিষয়টি আমাকে অনেকে জানিয়েছে। ্এসকল অবৈধ পাথর ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

প্রধানমন্ত্রী পদে একজন ১০ বছরের বেশি নয়, একমত সব দল

লামায় বিজিবি’র অভিযানে ৯ ট্রাকসহ অবৈধ পাথর জব্দ ঃ উপজেলা প্রশাসন নিবর ভুমিকা পালন

আপডেট সময় : ০৮:০২:২৩ অপরাহ্ণ, সোমবার, ৫ মার্চ ২০১৮

ফরিদ উদ্দিন,লামা ঃ  বান্দরবানের লামা উপজেলায় রাতের আধাঁরে অবৈধভাবে পাচারকালে ৯ ট্রাক পাথর আটক করেছে নাইক্ষ্যংছড়ি নিয়ন্ত্রণাধীন বনপুর ত্রিশডেবা ক্যাম্পের বিজিবি সদস্যরা। গতকাল শনিবার উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের বনপুর-রামগতি এলাকা হতে এই পাথর ভর্তি ট্রাকসহ জব্দ করা হয়।এদিকে পাথর বোঝায় ট্রাক আটকের ৪২ ঘন্টা সময় পেরিয়ে গেলেও এখনো অবৈধ পাথর ব্যবসায়ী এবং জব্দ পাথরের বিরুদ্ধে লামা উপজেলা প্রশাসন হতে কোন আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি বলে জানিয়েছেন, নাইক্ষ্যংছড়ি ৩১ বিজিবি’র অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল আনোয়ারুল আজিম। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বনপুর হতে রামগতি সড়কে পাথর ভর্তি ৯টি ট্রাক পড়ে আছে। বিজিবি বনপুর ক্যাম্পের সদস্যরা ট্রাক গুলো পাহারা দিচ্ছে।
স্থানীয়দের সাথে আলাপকালে জানা যায়, ইউনিয়নের বনপুর হতে ইয়াংছা সড়ক, কালিরঝিরি মুখ হতে ঘিলাতলী হয়ে ডুলহাজারা সড়ক ও গয়ালমারা হতে ডুলহাজারা সড়ক দিয়ে প্রতিদিন কমপক্ষে ১২০ হতে ১৫০ ট্রাক অবৈধ পাথর পাচার হচ্ছে। সরজমিনে গিয়ে এই প্রতিবেদক সহ সংবাদকর্মীদের একটি টিম ট্রাকে পাথর পাচারের বিষয়ে সত্যতা পেয়েছে। আরো জানা যায়, অনুমোদন না থাকায় দিনের চেয়েও রাতের অন্ধকার বেশী পাথর পাচার হয়। গভীর রাত পর্যন্ত ট্রাক গুলো চলাচল করে। স্থানীয় কেউ প্রতিবাদ করলে পাথর ব্যাবসায়ীদের রোষানলে পড়তে হয়।
স্থানীয় পাহাড়ি বাঙ্গালীদের কাছ থেকে জানা যায়, ইউনিয়নের ১,২,৩ ও ৯নং ওয়ার্র্ডের ছমুখাল, পাইকঝিরি, ওয়াক্রা পাড়া, খ্রিস্টান পাড়া, মরা ঝিরি, চচাই পাড়া,কেরানী ঝিরি, কইতরের ঝিরি, বুদুম ঝিরি, চিনির ঝিরি, গয়ালমারা, বালস্ট কারবারী পাড়া ঝিরি, জোয়াকি পাড়া, বাকঁখালী ঝিরি, হরিণ ঝিরি, রবাট কারবারী পাড়া ঝিরি, বালুর ঝিরি, আলিক্ষ্যং ঝিরি, কাঁঠালছড়া ও বদুর ঝিরি হতে পাথর উত্তোলন করছে ব্যবসায়ীরা।এইসব নদী, খাল, ছড়া ও ঝিরি হতে প্রায় ৬০ জন ব্যবসায়ী পাথর উত্তোলন করে বলে জানা যায়। উক্ত ব্যবসায়ীরা হল, চকরিয়ার মনু মেম্বার, মহিউদ্দিন চৌধুরী, নাছির উদ্দিন, জামাল উদ্দিন ফকির, জমির উদ্দিন ভেন্ডি বাজার), মো. দলিল (পালাকাটা),আবচার উদ্দিন, জকির উলাহ, জয়নাল আবেদীন ড্রাইভার, ছৈয়দ আলম, বেলাল উদ্দিন কোং, শুক্কুর মিস্ত্রি, মো. সোহেল ভুট্টু, আমির হামজা (হাঁসের দিঘি), এখলাস (হাঁসের দিঘি), মুজিব, এনাম, ফাঁসিয়াখালীর হুমায়ন কবির চৌধুরী, চংপাত মুরুং, মো. আক্তার হোসেন (নতুন পাড়া), ওছালা মার্মা, ফেরদৌস (ইয়াংছা), ছুট্টু সহ প্রমূখ।
এদিকে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের বান্দরবান শাখার সচিব সাংবাদিক রুহুল আমিন বলেন, ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নে বেপরোয়া পাথর পাচারের কারণে দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে সাধারণ মানুষের জীবন যাত্রা। পাথর পাচারে রাস্তাঘাট ও ব্রিজ-কালর্ভাট ভেঙ্গে স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত হয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে ইউনিয়নের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ। পার্শ্ববর্তী কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ৩০/৪০টি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট স্থানীয় প্রশাসনকে বৃদ্ধাংগুলী দেখিয়ে কোন প্রকার অনুমোদন ছাড়া পাহাড় কেটে ও খুঁড়ে পাথর উত্তোলন করছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার ধ্বংসের পাশাপাশি অবৈধ পাথর উত্তোলনের কারণে এলাকার নদী, খাল, ছড়া ও ঝিরি গুলো ইতিমধ্যে শুকিয়ে তীব্র পানির সংকট দেখা দিয়েছে। গ্রামীণ কাঁচা সড়কে অসংখ্য গাড়ি চলাচলের কারণে ধূলাবালিতে রাস্তাঘাটে চলাফেরা করা যায়না। এছাড়া অতিরিক্ত ধূলার কারণে স্কুল, মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে যেতে পারছেনা এবং শ্বাসকষ্টসহ অসংখ্য রোগে ভুগছে সাধারণ জনগণ।
ফাঁসিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান জাকের হোসেন মজুমদার জানায়, আমার ইউনিয়নের কোন ঝিরি ছড়াতে ভাসমান পাথর নেই। প্রভাবশালী সিন্ডিকেট গত ৬/৭ বছর ধরে পাহাড় খুঁড়ে ও মাটি কেটে পাথর উত্তোলন করছে। আমাদের বাধা প্রশাসন সহ কেউ পাত্তা দিচ্ছেনা।প্রতিদিন যে,ভাবে অবৈধ পাথর পাচার হচেছ অচিরেই আমার এলাকায় পানি শুন্যতা দেখা দিবে।
এ ব্যাপারে লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার খিনওয়ান নু সাংবাদিকদের কে বলেন, বিজিবি অবৈধ ধরেছে শুনেছি আর বর্তমানে পাথরের পারমিন দেয়া হয় না। রাতের আধাঁরে পাথর পাচার হচ্ছে বিষয়টি আমাকে অনেকে জানিয়েছে। ্এসকল অবৈধ পাথর ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব।