ফরিদ উদ্দিন, লামা বান্দরবান প্রতিনিধি:- লামা পেঁয়াজের প্রতি কেজি মূল্য ৬০-৬৫ টাকা, কাচা মরিচ দু’শ্ টকা। পেঁয়াজের ঝাঁজে ক্লান্ত নিন্ম আয়ের মানুষ। লামায় পেঁয়াজ-রসুন চাষের ঐতিহ্য ভুলতে বসেছে কৃষকরা।
এক সময় এই উপজেলার প্রতিটি কৃষক অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি পেঁয়াজ, মরিচ, রসুন ইত্যাদি মসলাজাত ফসল চাষ করতেন। নিজেদের সংসারের চাহিদা মেটানোর পাশা পাশি এসব বৈচিত্রময় চাষ কৃষকের চিরায়ত ঐতিহ্য ছিল। বস্তা ভরে কৃষকের রান্নাঘরে ঝুলিয়ে রাখা হতো শুকনো মরিচ; পেঁয়াজ-রসুন ঢাঁটা পেঁছিয়ে স্তরে স্তরে টাঙ্গিয়ে রাখতেন কৃষাণিরা। রান্না ঘরের শৈল্পিক দৃশ্য প্রতিভাত হতো বাংলার কৃষি পরিবারের ঐতিহ্য। হাট থেকে কেনার প্রয়োজন হতোনা এসব পন্য।
কিন্তু দ্রুত সময়ে বেশি বাণিজ্যিক মানসিকতায় উদ্ভুদ্ধ করে কৃষক সমাজকে জীবনের এসব নিত্য উপ-জীব্যর প্রয়োজনীয়তা ভুলিদিয়েছে সংশিষ্টরা। ফলশ্রুতিতে বিন দেশের প্রতি নির্ভরতা; এর লম্বা একটি প্রভাব পড়েছে ঘোটা সমাজ পরিমন্ডলে। সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ, ভারতে প্রাকৃতিক দূর্যোগের ফলে বাংলাদেশে পেঁয়াজ আমদানি বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। এর ফলে বাজারে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে দ্বীগুন।
মাতামুহুরী নদী, শাখা নদী, ছড়া নালায় তীরের উর্বর পলিযুক্ত মাটিতে এসব চাষ হতো। মৌসুমে হাট বাজারের অলিগলিতে বসরা সাজিয়ে বসতেন কৃষকরা। এর মধ্যে, শুকনো মরিচ, পেঁয়াজ, বাদাম ও রসুন ছিল উল্লেখযোগ্য। বিগত তিন দশকে তামাকের রাহুগ্রাসে এসব নিত্য প্রয়োজনীয় পন্য উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। কয়েক হাজার একর পলিযুক্ত নদী-শাখা খালের বালি চরে পেঁয়াজ, রসুন, মরিচ ও বাদাম চাষের অভ্যাস ভুলতে বসেছে কৃষকরা।
ইতো মধ্যে স্থানীয় কয়েক হাজার চাষী তামাক চাষের সকল প্রস্ততি সম্পন্ন করতে চলেছে। এ বাস্তবতায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ব্যাপক প্রচারণার মাধ্যমে নদী-শাখাখাল ও ছড়ার পাশে পলি মাটিতে পেঁয়াজ-রসুন, মরিচসহ অন্যান্য মসল্লাজাত পন্য চাষে উদ্ভুদ্ধ করা প্রয়োজন। এখানকার নদী পারের পলিযুক্ত বালু চরে এসব মসলাজাত ফসল ভালো হয় বলে অনেক কৃষকের অভিমত। কর্তৃপক্ষের সমচিত প্রয়াস না থাকায় ক্ষতিকারক তামাক চাষের প্রতিযোগিতায় কৃষকরা এসব চাষের অভ্যাস ভুলে গেছে।
এদিকে কৃষি অফিসের দায়িত্বশীল কর্মচারী কর্মকর্তারদের গাফলতির কারনে বিষক্ত তামাক চাষ পেয়াজ রসুন,মরিচসহ বিভন্ন রকমের শীতকালিন ফসলের জমিতে ব্যাপক হারে তামাক চাষের দখলে চলে যাচেছ বলে কলিংগাবিলের শফিকুর নামের এক কৃষক জানায়।
স্থানীয় কৃষকদের মতে সরকারিভাবে বাধ্যবাধকতা ও এসব চাষানুকুল সহায়তা দেয়া হলে মসলাজাত চাষে কৃষকদের মাঝে পূর্ব ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।একই সাথে বিন দেশের উপর নির্ভরতা হ্রাস পেয়ে দেশিয় মুদ্রা সাশ্রয় হবে।