শিরোনাম :
Logo ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা কমাতে মধ্যস্থতা করতে চায় ইরান Logo জবিতে প্রথম পর্যায়ের ভর্তি কার্যক্রম শুরু ২৭ এপ্রিল Logo রাবিতে এ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত Logo কচুয়ায় সাচারে মাদক বিরোধী প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত Logo কুবিতে ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত Logo গুচ্ছ ভর্তিচ্ছুদের জন্য প্রশংসনীয় উদ্দ্যোগ ইবির ছাত্রসংগঠনগুলোর Logo ইবিতে গুচ্ছ ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত Logo রিকশাচালক বাবার সন্তান আরাফাতের কৃতিত্ব: রাবির ‘বি’ ইউনিটে প্রথম Logo পোপের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিতে ভ্যাটিকানের পথে প্রধান উপদেষ্টা Logo ইলিয়াস কাঞ্চনের নেতৃত্বে নতুন রাজনৈতিক দল ‘জনতা পার্টি বাংলাদেশ’-এর আত্মপ্রকাশ

ব্যাংকগুলোর কারণেই দেশের ঋণগ্রহীতারা ঋণখেলাপী চর্চায় উৎসাহিত হয়: অর্থমন্ত্রী !

  • amzad khan
  • আপডেট সময় : ০৫:৫৯:৪৬ অপরাহ্ণ, রবিবার, ২৭ আগস্ট ২০১৭
  • ৭৫৫ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক:

ব্যাংকগুলোর কারণেই দেশের বড় বড় ঋণগ্রহীতারা ঋণখেলাপী চর্চায় উৎসাহিত হয়। ব্যাংকগুলো যে মূলধন সংকটে ভোগে তার জন্যও নিজেরাই দায়ী। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে আর্থিক খাতে সংস্কার চলছে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

গতকাল শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকের অবস্থা পর্যালোচনা : চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার উপায়’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব ইউনুসুর রহমান।

অনুষ্ঠানে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান, জাতীয় সংসদে অর্থ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ড. আব্দুর রাজ্জাক, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবীর, অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুনসহ বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান, রাষ্ট্রয়াত্ব আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, কিছু কিছু ব্যাংকার তাদের ঋণগ্রহীতাদেরকে ঋণ বিতরণের প্রথম দিন থেকে ঋণখেলাপী হওয়ার জন্য উৎসাহিত করে আসছে। ব্যাংকগুলো মনে করে ঋণখেলাপী করতে পারলে ঋণগ্রহীতারা ব্যাংকগুলোর নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে।

তিনি বলেন, ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি রয়েছে। এটাই তাদের একমাত্র সমস্যা নয়, তাদের আরো সমস্যা রয়েছে। সরকার বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। প্রয়োজনে লোকসানি ব্যাংকগুলোকে একীভূত করার পরিকল্পনা আছে সরকারের। এ বিষয়ে কাজ চলছে।

মূল প্রবন্ধে ইউনুসুর রহমান বলেন, দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ব্যাংকিং সেক্টরের গুরুত্ব অপরিসীম। স্বাধীনতার অব্যবহিত পরে শুরু হয়ে বেশ কিছুকাল পর্যন্ত বাংলাদেশের ব্যাংকিং কার্যক্রমের সিংহভাগ রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকের মাধ্যমে পরিচালিত হতো। পরবর্তীতে দেশের অর্থনৈতিক নীতি-কৌশল পরির্তনের সাথে সাথে ব্যাংকিং সেক্টরে ব্যাপক পরিবর্তন হতে শুরু করে। বর্তমানে ব্যাংকিং সেক্টরের প্রায় সব সূচক বিবেচনায় রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকসমূহ এ সেক্টরের কনিষ্ট অংশীদারে পরিণত হয়েছে। পক্ষান্তরে কয়েকটি বিদেশি ব্যাংকসহ দেশের বেসরকারি ব্যাংকসমূহ সিংহভাগ মার্কেট শেয়ারের নিয়ন্ত্রকে পরিণত হয়েছে।

তিনি বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকসমূহ নবীন দেশটির পূনর্গঠনসহ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। সে থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত এ ব্যাংকগুলো অগ্রাধিকার খাতে ঋণ দিয়ে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি, শিল্পায়ন এবং সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রম বাস্তবায়নে গঠণমূলক দায়িত্ব পালন করে আসছে। এমনকি বেসরকারি খাতে ব্যাংক সৃষ্টিতেও রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকের উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে।

সচিব বলেন, সৃষ্টির শুরু থেকেই রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোকে অদক্ষতা ও অপর্যাপ্ত ব্যবস্থাপনাসহ নানাবিধ সমালোচনা শুনতে হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকটি ব্যাংকে সংঘটিত ঘটনাবলী সমালোচনার মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে। সংবাদপত্রের কিছু প্রতিবেদন পর্যালোচনা করলে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকসমূহ অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে কি না এমন প্রশ্ন দেখা দেয়। তবে এ কথা সত্য যে, দেশের অগ্রসরমান অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদানে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকসমূহ অসমর্থ বা ব্যর্থ হয়েছে এমন প্রমাণ নেই। এ অবস্থায় রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর সার্বিক অবস্থা পর্যালোচনা করে সঠিক অবস্থা জানা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, কিছুদিন আগে এক চিঠির মাধ্যমে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর ঋণ অনুমোদন, বিতরণ ও আদায়ের ক্ষেত্রে দুর্নীতি প্রতিরোধকল্পে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে কতিপয় সুপারিশ পঠিয়েছে। উক্ত সুপারিশ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে এর টেকনিক্যাল বিষয়গুলো এরূপ একটি ফোরামে আলোচিত হলে সঠিক দিক নির্দেশনা পাওয়া যাবে বলে আশা করি।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা কমাতে মধ্যস্থতা করতে চায় ইরান

ব্যাংকগুলোর কারণেই দেশের ঋণগ্রহীতারা ঋণখেলাপী চর্চায় উৎসাহিত হয়: অর্থমন্ত্রী !

আপডেট সময় : ০৫:৫৯:৪৬ অপরাহ্ণ, রবিবার, ২৭ আগস্ট ২০১৭

নিউজ ডেস্ক:

ব্যাংকগুলোর কারণেই দেশের বড় বড় ঋণগ্রহীতারা ঋণখেলাপী চর্চায় উৎসাহিত হয়। ব্যাংকগুলো যে মূলধন সংকটে ভোগে তার জন্যও নিজেরাই দায়ী। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে আর্থিক খাতে সংস্কার চলছে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

গতকাল শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকের অবস্থা পর্যালোচনা : চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার উপায়’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব ইউনুসুর রহমান।

অনুষ্ঠানে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান, জাতীয় সংসদে অর্থ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ড. আব্দুর রাজ্জাক, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবীর, অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুনসহ বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান, রাষ্ট্রয়াত্ব আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, কিছু কিছু ব্যাংকার তাদের ঋণগ্রহীতাদেরকে ঋণ বিতরণের প্রথম দিন থেকে ঋণখেলাপী হওয়ার জন্য উৎসাহিত করে আসছে। ব্যাংকগুলো মনে করে ঋণখেলাপী করতে পারলে ঋণগ্রহীতারা ব্যাংকগুলোর নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে।

তিনি বলেন, ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি রয়েছে। এটাই তাদের একমাত্র সমস্যা নয়, তাদের আরো সমস্যা রয়েছে। সরকার বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। প্রয়োজনে লোকসানি ব্যাংকগুলোকে একীভূত করার পরিকল্পনা আছে সরকারের। এ বিষয়ে কাজ চলছে।

মূল প্রবন্ধে ইউনুসুর রহমান বলেন, দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ব্যাংকিং সেক্টরের গুরুত্ব অপরিসীম। স্বাধীনতার অব্যবহিত পরে শুরু হয়ে বেশ কিছুকাল পর্যন্ত বাংলাদেশের ব্যাংকিং কার্যক্রমের সিংহভাগ রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকের মাধ্যমে পরিচালিত হতো। পরবর্তীতে দেশের অর্থনৈতিক নীতি-কৌশল পরির্তনের সাথে সাথে ব্যাংকিং সেক্টরে ব্যাপক পরিবর্তন হতে শুরু করে। বর্তমানে ব্যাংকিং সেক্টরের প্রায় সব সূচক বিবেচনায় রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকসমূহ এ সেক্টরের কনিষ্ট অংশীদারে পরিণত হয়েছে। পক্ষান্তরে কয়েকটি বিদেশি ব্যাংকসহ দেশের বেসরকারি ব্যাংকসমূহ সিংহভাগ মার্কেট শেয়ারের নিয়ন্ত্রকে পরিণত হয়েছে।

তিনি বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকসমূহ নবীন দেশটির পূনর্গঠনসহ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। সে থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত এ ব্যাংকগুলো অগ্রাধিকার খাতে ঋণ দিয়ে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি, শিল্পায়ন এবং সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রম বাস্তবায়নে গঠণমূলক দায়িত্ব পালন করে আসছে। এমনকি বেসরকারি খাতে ব্যাংক সৃষ্টিতেও রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকের উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে।

সচিব বলেন, সৃষ্টির শুরু থেকেই রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোকে অদক্ষতা ও অপর্যাপ্ত ব্যবস্থাপনাসহ নানাবিধ সমালোচনা শুনতে হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকটি ব্যাংকে সংঘটিত ঘটনাবলী সমালোচনার মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে। সংবাদপত্রের কিছু প্রতিবেদন পর্যালোচনা করলে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকসমূহ অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে কি না এমন প্রশ্ন দেখা দেয়। তবে এ কথা সত্য যে, দেশের অগ্রসরমান অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদানে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকসমূহ অসমর্থ বা ব্যর্থ হয়েছে এমন প্রমাণ নেই। এ অবস্থায় রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর সার্বিক অবস্থা পর্যালোচনা করে সঠিক অবস্থা জানা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, কিছুদিন আগে এক চিঠির মাধ্যমে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর ঋণ অনুমোদন, বিতরণ ও আদায়ের ক্ষেত্রে দুর্নীতি প্রতিরোধকল্পে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে কতিপয় সুপারিশ পঠিয়েছে। উক্ত সুপারিশ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে এর টেকনিক্যাল বিষয়গুলো এরূপ একটি ফোরামে আলোচিত হলে সঠিক দিক নির্দেশনা পাওয়া যাবে বলে আশা করি।