নিউজ ডেস্ক:
ভারতের প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগের (আইপিএল) দশম আসর শুরু হতে আর মাত্র মাঝে একটি দিন বাকি। এরপরই মাঠে গড়াবে চার-ছক্কার সবচেয়ে জমকালো টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট। তার আগেই আলোচনা চলছে কারা হয়ে উঠতে পারেন প্রতিপক্ষের জন্য ভয়ংয়ক, নিমিষেই পাল্টে দেবেন ম্যাচের রং। চলুন দেখে নেওয়া যাক ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকার আট দলের প্রত্যেক দল থেকে একজন করে নিয়ে করা সেই তালিকা।
এবি ডি ভিলিয়ার্স: ক্রিকেটে এমন অলরাউন্ড ব্যাটসম্যান আর দেখা যায়নি। যেমন টেস্ট ক্রিকেটে জেতাতে পারেন, তেমন ড্রয়ের খেলা খেলতে পারেন। তেমনই বিধ্বংসী হতে পারেন ওয়ানডে বা টি-টোয়েন্টিতে। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের হয়ে গতবার বিরাট কোহালির দুরন্ত মৌসুমের মধ্যেও উজ্জ্বল ছিলেন এবি। ১৬ ম্যাচে করেছিলেন ৬৮৭ রান। স্ট্রাইক রেট ছিল ১৬৮.৭৯। ব্যাট হাতে তিনি খেলার মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারেন যে কোনো সময়। রকমারি সব স্ট্রোক আছে। সুইপ, রিভার্স সুইপের সঙ্গে ধ্রুপদী শটও খেলতে পারেন।
গ্লেন ম্যাক্সওয়েল: সদ্য সমাপ্ত ভারত-অস্ট্রেলিয়া উত্তপ্ত সিরিজে তিনি শিরোনামে ছিলেন। শুধু সেঞ্চুরি করার জন্য নয়, কোহালির কাঁধের চোটকে টিপ্পনি কেটেও। তবে কে অস্বীকার করতে পারবেন টি-টোয়েন্টিতে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের প্রভাব! স্ট্রাইক রেট ১৫৬। একটা সেঞ্চুরিও আছে। প্রীতি জিনতার কিংস ইলেভেন পঞ্জাব গতবার খুবই খারাপ ফল করেছিল। ম্যাক্সওয়েলও ব্যর্থ হয়েছিলেন। এবার অধিনায়ক হিসেবে দলের হাল ফেরানোর চ্যালেঞ্জ থাকছে।
ইউসুফ পাঠান: একটা সময় পাঠান ভাই বলতে লোকে বেশি করে বলত ইরফান পাঠানের নাম। এখন পাঠানদের সেই রমরমা নেই। ছোট ভাই ইরফান আইপিএলে বিক্রিই হননি। কিন্তু আছেন ইউসুফ। গতবারও বিরাট কোহালিদের মাঠে গিয়ে ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে একা হারিয়েছিলেন আরসিবিকে। গত বারে ছিলেন নাইটদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান স্কোরার। ব্যাটিং গড়ে ছিলেন শীর্ষে। টি-টোয়েন্টিতে স্ট্রাইক রেট এখনও দেড়শোর কাছাকাছি। কিং খানের বাজিকর হতে পারেন তিনিই।
অমিত মিশ্র: টি-টোয়েন্টিতে লেগ স্পিনার অচল, এই ধারণা যাঁরা বদলে দিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে খুব উপরের দিকেই থাকবে অমিত মিশ্রের নাম। আইপিএলে তিনটে হ্যাটট্রিকের মালিক। তবে শুধু সেজন্যই নয়, অমিতের সবচেয়ে বড় গুণ হল চাপের মুখে উইকেট তোলার ক্ষমতা। স্লগ ওভারে এসে অনেকবারই ম্যাচ ঘুরিয়েছেন। লেগ ব্রেকের সঙ্গে গুগলিটাও দুর্দান্ত করতে পারেন।
মহেন্দ্র সিং ধোনি: পুণে সুপারজায়ান্ট তাঁকে সরিয়ে দিয়েছে নেতৃত্ব থেকে। শুধু তা-ই নয়, অনেকের মতে বেশ অপমান সহ্য করতে হয়েছে মহেন্দ্র সিং ধোনিকে। তা বলে ধোনির ব্যাটিং শক্তিকে হেলাফেলা করার দুঃসাহস মনে হয় না প্রতিপক্ষ বোলাররা দেখাবে! এখনও ক্লিন হিট করতে পারেন তিনি। ছক্কা মারায় অন্য যে কারও সঙ্গে পাল্লা দিতে পারেন। দু’তিন ওভারের মধ্যে ম্যাচের রং পাল্টে দিতে পারেন এমএসডি।
ডেভিড ওয়ার্নার: ভারতের বিরুদ্ধে উত্তপ্ত টেস্ট সিরিজে একেবারেই ফর্মে ছিলেন না। কিন্তু কে না জানে টি-টোয়েন্টি মঞ্চে একা পার্থক্য গড়ে দিতে পারেন ডেভিড ওয়ার্নার। ব্যাট হাতে গতবার সানরাইজার্স হায়দরাবাদের আইপিএল জয়ের নায়ক ছিলেন তিনি। ১৭ ম্যাচে করেছিলেন ৮৫৮ রান। গড় ছিল ৬০.৫৭। স্ট্রাইক রেট ছিল ১৫১.৪২। ভয়ডরহীন। সুইচ হিটও মারতে পারেন।
জসপ্রীত বুমরাহ: টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন, বল হাতেও গেমচেঞ্জার হওয়া যায়। মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের ওপেন ক্যাম্পে তাঁকে দেখে পছন্দ হয় জন রাইটের। তারপর ঢুকে পড়লেন লাসিথ মালিঙ্গার ক্লাসে। ডেথ ওভারে মালিঙ্গার ঢংয়েই ইয়র্কার বর্ষণ করেন তিনি। বুম বুম বেকারের সার্ভের মতো।
সুরেশ রায়না: চেন্নাই সুপার কিংসের সাফল্যের পিছনে ক্যাপ্টেন কুল ধোনির মস্তিষ্ক থাকলে, ছিল সুরেশ রায়নার দুরন্ত ব্যাটিংও। তিন নম্বরে ব্যাট করতে পারেন, আবার ফিনিশারের ভূমিকাও পালন করে থাকেন। গুজরাট লায়ন্সের হয়ে তাঁর উদ্দীপিত নেতৃত্ব গত বার বড় চমক ছিল। এবারও দলের সেরা স্তম্ভ। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা