মঙ্গলবার | ১৮ নভেম্বর ২০২৫ | হেমন্তকাল
শিরোনাম :
Logo বাংলার মাটিতে ছেলের হত্যাকারীদের ফাঁসি দেখে মরতে চাই: শহীদ আবু সাঈদের বাবা Logo শেখ হাসিনা ও কামালের প্রত্যর্পণ চেয়ে নয়াদিল্লিকে চিঠি পাঠাবে ঢাকা : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা Logo প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে দিনাজপুর-১ আসনে বিএনপির সংবাদ সম্মেলন! Logo খালেদা জিয়াকে ধানের শীষে ভোট দিয়ে দেশের সেরা জয় উপহার দিতে চাই Logo জীবননগরে ব্রিজের কাজে অনিয়মের অভিযোগে প্রতিবাদ ঠিকাদারের থানায় অভিযোগ, গ্রামবাসীর মানববন্ধন Logo হাসিনার ফাঁসির রায় আবু সাঈদের ক্যাম্পাসে মিষ্টি বিতরণ আনন্দ মিছিল Logo পলাশবাড়ীতে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অবৈধ জন্ম নিবন্ধনের অভিযোগ প্রমানিত ,ডিসির কারণ দর্শানোর নোটিশ।  Logo আসাদুজ্জামান খান কামালেরও মৃত্যুদণ্ড Logo শেখ হাসিনার মৃৃত্যুদণ্ডের রায় Logo চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন বিমর্ষ মুখে চুপচাপ রায় শুনছেন

‘যুবশক্তিকে অন্তর্ভুক্ত না করে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়’ : প্রধান উপদেষ্টা

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ১২:১২:২০ পূর্বাহ্ণ, শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ৭৫০ বার পড়া হয়েছে

বেকারত্ব টেকসই উন্নয়নের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘যুবকদের অন্তর্ভুক্তি ছাড়া টেকসই বৈশ্বিক অগ্রগতি সম্ভব নয়। প্রযুক্তি উদ্ভাবনের মাধ্যমে অন্তর্ভুক্তির বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে, তবে এর সুফল যেন লোভের প্রাচীরে বন্ধ রাখা না হয়।’

প্রধান উপদেষ্টা বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কে ‘যুবদের জন্য বিশ্ব কর্মসূচি’র ৩০তম বার্ষিকী উপলক্ষে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের সাইডলাইনে আয়োজিত এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে এসব কথা বলেন।

তিনি অনুষ্ঠানে ‘বিশ্ব যুব কর্মসূচি’র চেয়ারপার্সনকে উচ্চ পর্যায়ের এই যুব বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য ধন্যবাদ জানান।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘পঁচাশি বছর বয়সে এসে আজকের আলোচ্য বিষয় ‘অন্তঃপ্রজন্মীয় সহযোগিতার মাধ্যমে বৈশ্বিক অগ্রগতি ত্বরান্বিত করা’-এর গভীরতা আমি অনুভব করছি। গত বছর বাংলাদেশে আমরা দেখেছি যুবশক্তির অসাধারণ ক্ষমতা। তারা সাহসের সঙ্গে বহু বছরের স্বৈরশাসনের অবসান ঘটিয়েছে, আমাদের জাতির পথ পুনঃনির্ধারণ করেছে এবং আমাকে সংস্কার ও গণতান্ত্রিক রূপান্তরের দায়িত্ব দিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘যুবরা বিশ্বে পরিবর্তনের এজেন্ট। কিন্তু তারা প্রথমেই ভোগেন বৈষম্য, সংঘাত, জলবায়ু পরিবর্তন, সংরক্ষণবাদ এবং ডিজিটাল বিভাজনের নেতিবাচক প্রভাব।’

প্রধান উপদেষ্টা জোর দিয়ে বলেন, ‘সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো বেকারত্ব। যুব বেকারত্ব প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় চারগুণ বেশি, বিশেষত নিম্ন আয়ের দেশে।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে আমরা একটি জাতীয় যুব উদ্যোক্তা নীতি চালু করেছি, যা অর্থ, দক্ষতা ও বাজার প্রবেশ নিশ্চিত করে। এর ফলে যুবরা চাকরি প্রার্থী নয়, চাকরি সৃষ্টিকারী হয়ে উঠবে। আমরা স্বাধীন সংস্কার কমিশনগুলোতে যুব অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছি এবং একটি জাতীয় নীতি প্রতিযোগিতা চালু করেছি, যাতে যুবদের কণ্ঠস্বর গণতান্ত্রিক নবায়নে অন্তর্ভুক্ত হয়।’

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে ‘যুবদের জন্য বিশ্ব কর্মসূচি’, ‘ভবিষ্যতের জন্য চুক্তি’, ‘জাতিসংঘের যুব নীতি ২০৩০’ এবং ‘যুব, শান্তি ও নিরাপত্তা’ এজেন্ডাকে সমর্থন করে।

তিনি সতর্ক করে বলেন, “কোনো দেশ একা যুবশক্তিকে ক্ষমতায়িত করতে পারে না। বাধা দূর করতে, ন্যায় নিশ্চিত করতে এবং অন্তঃপ্রজন্মীয় নেতৃত্বকে উৎসাহিত করতে বৈশ্বিক সহযোগিতা প্রয়োজন। নয়তো হতাশা অশান্তিতে রূপ নিতে পারে, যা দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে।”

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘মূল কথা খুব সহজ— আমাদের ভবিষ্যৎ একা বহন করতে হবে না। আমাদের শুধু যুবদের তাদের অধিকার, নিরাপদ স্থান ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ দিতে হবে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, তারা সঠিকভাবে নির্বাচন করবে — নিজেদের জন্য, পৃথিবীর জন্য এবং আমাদের ভবিষ্যতের জন্য।’

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

বাংলার মাটিতে ছেলের হত্যাকারীদের ফাঁসি দেখে মরতে চাই: শহীদ আবু সাঈদের বাবা

‘যুবশক্তিকে অন্তর্ভুক্ত না করে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়’ : প্রধান উপদেষ্টা

আপডেট সময় : ১২:১২:২০ পূর্বাহ্ণ, শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বেকারত্ব টেকসই উন্নয়নের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘যুবকদের অন্তর্ভুক্তি ছাড়া টেকসই বৈশ্বিক অগ্রগতি সম্ভব নয়। প্রযুক্তি উদ্ভাবনের মাধ্যমে অন্তর্ভুক্তির বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে, তবে এর সুফল যেন লোভের প্রাচীরে বন্ধ রাখা না হয়।’

প্রধান উপদেষ্টা বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কে ‘যুবদের জন্য বিশ্ব কর্মসূচি’র ৩০তম বার্ষিকী উপলক্ষে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের সাইডলাইনে আয়োজিত এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে এসব কথা বলেন।

তিনি অনুষ্ঠানে ‘বিশ্ব যুব কর্মসূচি’র চেয়ারপার্সনকে উচ্চ পর্যায়ের এই যুব বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য ধন্যবাদ জানান।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘পঁচাশি বছর বয়সে এসে আজকের আলোচ্য বিষয় ‘অন্তঃপ্রজন্মীয় সহযোগিতার মাধ্যমে বৈশ্বিক অগ্রগতি ত্বরান্বিত করা’-এর গভীরতা আমি অনুভব করছি। গত বছর বাংলাদেশে আমরা দেখেছি যুবশক্তির অসাধারণ ক্ষমতা। তারা সাহসের সঙ্গে বহু বছরের স্বৈরশাসনের অবসান ঘটিয়েছে, আমাদের জাতির পথ পুনঃনির্ধারণ করেছে এবং আমাকে সংস্কার ও গণতান্ত্রিক রূপান্তরের দায়িত্ব দিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘যুবরা বিশ্বে পরিবর্তনের এজেন্ট। কিন্তু তারা প্রথমেই ভোগেন বৈষম্য, সংঘাত, জলবায়ু পরিবর্তন, সংরক্ষণবাদ এবং ডিজিটাল বিভাজনের নেতিবাচক প্রভাব।’

প্রধান উপদেষ্টা জোর দিয়ে বলেন, ‘সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো বেকারত্ব। যুব বেকারত্ব প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় চারগুণ বেশি, বিশেষত নিম্ন আয়ের দেশে।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে আমরা একটি জাতীয় যুব উদ্যোক্তা নীতি চালু করেছি, যা অর্থ, দক্ষতা ও বাজার প্রবেশ নিশ্চিত করে। এর ফলে যুবরা চাকরি প্রার্থী নয়, চাকরি সৃষ্টিকারী হয়ে উঠবে। আমরা স্বাধীন সংস্কার কমিশনগুলোতে যুব অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছি এবং একটি জাতীয় নীতি প্রতিযোগিতা চালু করেছি, যাতে যুবদের কণ্ঠস্বর গণতান্ত্রিক নবায়নে অন্তর্ভুক্ত হয়।’

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে ‘যুবদের জন্য বিশ্ব কর্মসূচি’, ‘ভবিষ্যতের জন্য চুক্তি’, ‘জাতিসংঘের যুব নীতি ২০৩০’ এবং ‘যুব, শান্তি ও নিরাপত্তা’ এজেন্ডাকে সমর্থন করে।

তিনি সতর্ক করে বলেন, “কোনো দেশ একা যুবশক্তিকে ক্ষমতায়িত করতে পারে না। বাধা দূর করতে, ন্যায় নিশ্চিত করতে এবং অন্তঃপ্রজন্মীয় নেতৃত্বকে উৎসাহিত করতে বৈশ্বিক সহযোগিতা প্রয়োজন। নয়তো হতাশা অশান্তিতে রূপ নিতে পারে, যা দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে।”

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘মূল কথা খুব সহজ— আমাদের ভবিষ্যৎ একা বহন করতে হবে না। আমাদের শুধু যুবদের তাদের অধিকার, নিরাপদ স্থান ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ দিতে হবে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, তারা সঠিকভাবে নির্বাচন করবে — নিজেদের জন্য, পৃথিবীর জন্য এবং আমাদের ভবিষ্যতের জন্য।’