রায়গঞ্জে প্রতিবন্ধী কার্ডের নামে টাকা আদায়ের অভিযোগ

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০৫:১০:৪৮ অপরাহ্ণ, বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫
  • ৭১৪ বার পড়া হয়েছে

{"remix_data":[],"remix_entry_point":"challenges","source_tags":["local"],"origin":"unknown","total_draw_time":0,"total_draw_actions":0,"layers_used":0,"brushes_used":0,"photos_added":0,"total_editor_actions":{},"tools_used":{},"is_sticker":false,"edited_since_last_sticker_save":false,"containsFTESticker":false}

নজরুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ:সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার পাঙ্গাসী ইউনিয়নে প্রতিবন্ধী ভাতা ও সরকারি সুযোগ সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার নামে অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ কৃষ্ণদেব নুনিয়ার বিরুদ্ধে। শুধু প্রতিবন্ধী ভাতার ক্ষেত্রেই নয়, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন, বয়স্ক ও মাতৃত্বকালীন ভাতা, এমনকি বিভিন্ন নামে-বেনামে বিডাব্লিউবি প্রকল্পে নাম অন্তর্ভুক্ত করার ক্ষেত্রেও ঘুষ আদায়ের অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, কৃষ্ণদেব নুনিয়া নিজের প্রভাব ও অবস্থানকে কাজে লাগিয়ে ইউনিয়ন পর্যায়ের দরিদ্র ও অসহায় মানুষের কাছ থেকে নিয়মিতভাবে অর্থ আদায় করে থাকেন। এসব অভিযোগের মধ্যে অন্যতম হলো পাঙ্গাসী গ্রামের বোরহান নামে এক প্রতিবন্ধীর পরিবারের সঙ্গে প্রতারণা।

প্রতিবন্ধী বোরহানের মা বুলবুলি খাতুন জানান, ২০২০ সালে প্রতিবন্ধী কার্ড করে দেওয়ার কথা বলে কৃষ্ণদেব ১০ হাজার টাকা দাবি করে। পরে অনুরোধে ৮ হাজার টাকায় রাজি হয়। প্রথমে ৫ হাজার টাকা দেই, কার্ড হাতে পাওয়ার পর আরও ৩ হাজার দেই। কিন্তু সেই কার্ডে স্মার্ট কার্ড সংযোজিত না থাকায় এখন ব্যাংক থেকে কোনো টাকা তুলতে পারছি না। তিনি আরও জানান, সেই স্মার্ট কার্ড করে দেবে বলে কৃষ্ণদেব আরও ৫০০ টাকা নেয়। এরপর আজ বুধবার আবার ১ হাজার টাকা দাবি করে। আমার স্বামী দিনমজুর হওয়ায় এই টাকা জোগাড় করাও আমাদের জন্য অনেক কষ্টের।

স্থানীয়রা জানান, কৃষ্ণদেব শুধু বোরহানের ক্ষেত্রেই নয়, ইউনিয়নের আরও অনেক দরিদ্র পরিবারকেই নানা প্রলোভন ও ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় করে থাকে। সরকারি প্রকল্প ও ভাতা কার্যক্রমে এই ধরণের দুর্নীতিমূলক কর্মকাণ্ড ইউনিয়নের সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত গ্রাম পুলিশ কৃষ্ণদেব নুনিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান।

রায়গঞ্জের সমাজকর্মী ফজলুল হক বলেন, ৬মাস টাকা না তুললে হিসাব ব্লক হয়ে যেতে পারে এজন্য স্মার্ট কার্ড চাইতে পারে। প্রথমে কার্ডধারীকে দেওয়া হয়েছিল হয়ত হারিয়ে যাওয়ার পর আবেদন করেছে তবে এই কার্ড বিনামূল্যে পাবে। টাকা নেওয়ার কোন যুক্তিই আসে না।

এবিষয়ে পাঙ্গাসী ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক আনন্দ চন্দ্র বর্মন বলেন, আপনার মাধ্যমেই এ বিষয়ে প্রথম জানতে পারলাম। বিষয়টি জোড়ালোভাবে দেখা হবে।

উল্লেখ্য, গ্রাম পুলিশদের প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে ইউনিয়নে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা। সাধারণ জনগণকে সহায়তা করা এবং সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখা। কিন্তু পাঙ্গাসী ইউনিয়নে এই দায়িত্বকে কাজে লাগিয়ে গ্রাম পুলিশ কৃষ্ণদেব পরিষদ গিরে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

রায়গঞ্জে প্রতিবন্ধী কার্ডের নামে টাকা আদায়ের অভিযোগ

আপডেট সময় : ০৫:১০:৪৮ অপরাহ্ণ, বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫

নজরুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ:সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার পাঙ্গাসী ইউনিয়নে প্রতিবন্ধী ভাতা ও সরকারি সুযোগ সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার নামে অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ কৃষ্ণদেব নুনিয়ার বিরুদ্ধে। শুধু প্রতিবন্ধী ভাতার ক্ষেত্রেই নয়, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন, বয়স্ক ও মাতৃত্বকালীন ভাতা, এমনকি বিভিন্ন নামে-বেনামে বিডাব্লিউবি প্রকল্পে নাম অন্তর্ভুক্ত করার ক্ষেত্রেও ঘুষ আদায়ের অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, কৃষ্ণদেব নুনিয়া নিজের প্রভাব ও অবস্থানকে কাজে লাগিয়ে ইউনিয়ন পর্যায়ের দরিদ্র ও অসহায় মানুষের কাছ থেকে নিয়মিতভাবে অর্থ আদায় করে থাকেন। এসব অভিযোগের মধ্যে অন্যতম হলো পাঙ্গাসী গ্রামের বোরহান নামে এক প্রতিবন্ধীর পরিবারের সঙ্গে প্রতারণা।

প্রতিবন্ধী বোরহানের মা বুলবুলি খাতুন জানান, ২০২০ সালে প্রতিবন্ধী কার্ড করে দেওয়ার কথা বলে কৃষ্ণদেব ১০ হাজার টাকা দাবি করে। পরে অনুরোধে ৮ হাজার টাকায় রাজি হয়। প্রথমে ৫ হাজার টাকা দেই, কার্ড হাতে পাওয়ার পর আরও ৩ হাজার দেই। কিন্তু সেই কার্ডে স্মার্ট কার্ড সংযোজিত না থাকায় এখন ব্যাংক থেকে কোনো টাকা তুলতে পারছি না। তিনি আরও জানান, সেই স্মার্ট কার্ড করে দেবে বলে কৃষ্ণদেব আরও ৫০০ টাকা নেয়। এরপর আজ বুধবার আবার ১ হাজার টাকা দাবি করে। আমার স্বামী দিনমজুর হওয়ায় এই টাকা জোগাড় করাও আমাদের জন্য অনেক কষ্টের।

স্থানীয়রা জানান, কৃষ্ণদেব শুধু বোরহানের ক্ষেত্রেই নয়, ইউনিয়নের আরও অনেক দরিদ্র পরিবারকেই নানা প্রলোভন ও ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় করে থাকে। সরকারি প্রকল্প ও ভাতা কার্যক্রমে এই ধরণের দুর্নীতিমূলক কর্মকাণ্ড ইউনিয়নের সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত গ্রাম পুলিশ কৃষ্ণদেব নুনিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান।

রায়গঞ্জের সমাজকর্মী ফজলুল হক বলেন, ৬মাস টাকা না তুললে হিসাব ব্লক হয়ে যেতে পারে এজন্য স্মার্ট কার্ড চাইতে পারে। প্রথমে কার্ডধারীকে দেওয়া হয়েছিল হয়ত হারিয়ে যাওয়ার পর আবেদন করেছে তবে এই কার্ড বিনামূল্যে পাবে। টাকা নেওয়ার কোন যুক্তিই আসে না।

এবিষয়ে পাঙ্গাসী ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক আনন্দ চন্দ্র বর্মন বলেন, আপনার মাধ্যমেই এ বিষয়ে প্রথম জানতে পারলাম। বিষয়টি জোড়ালোভাবে দেখা হবে।

উল্লেখ্য, গ্রাম পুলিশদের প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে ইউনিয়নে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা। সাধারণ জনগণকে সহায়তা করা এবং সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখা। কিন্তু পাঙ্গাসী ইউনিয়নে এই দায়িত্বকে কাজে লাগিয়ে গ্রাম পুলিশ কৃষ্ণদেব পরিষদ গিরে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে।