শিরোনাম :
Logo চাঁদপুর জেলা ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের কার্যকরী কমিটির প্রথম সভা Logo নারী শিক্ষার্থীদের কটুক্তির প্রতিবাদে ইবি ছাত্রশিবিরের মানববন্ধন  Logo তারেক রহমান ও টুকুর খালাসে শিয়ালকোলে মিষ্টি বিতরণ Logo জাবির হল সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে মানহানি, ছাত্রদলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ Logo স্বাস্থ্যসেবা বঞ্চিত কয়রার জনগণ, নিরসনের দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান  Logo জবির দু’টি হলের কাজ আনুষ্ঠানিক ভাবে সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর Logo সর্বোচ্চ স্বচ্ছতার মাধ্যমে আমাদের নিয়োগের কাজ হচ্ছে: রাবি উপাচার্য Logo পলাশবাড়ীতে ভিডব্লিউবি তালিকা প্রণয়নে অনিয়মের অভিযোগ। Logo সাতক্ষীরায় কুখ্যাত সন্ত্রাসী কোপা মাসুদসহ গ্রেপ্তার-৩ Logo সিরাজগঞ্জে ধর্ষণ মামলায় কলেজ ছাত্র কারাগারে

সাজিদের মৃত্যু রহস্যে নতুন মোড়: প্রশ্নের মুখে প্রশাসন

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী সাজিদ আব্দুল্লাহর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় নতুন মোড় দেখা দিয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক প্রতিবেদনের তথ্য সামনে আসার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (২১ জুলাই) বিকেলে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন। এতে বিকেল ৪টার নির্ধারিত শহরগামী বাস আটকে পড়ে। প্রায় ৩ ঘন্টা ধরে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা।

এ সময় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগানে ক্যাম্পাস প্রকম্পিত করে তোলেন— ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’, ‘ক্যাম্পাসে লাশ পড়ে, প্রশাসন কী করে’, ‘সাজিদ হত্যার বিচার করতে হবে, করতে হবে’, ‘প্রশাসনের প্রহসন মানি না, মানবো না’ ইত্যাদি।

এসময় শিক্ষার্থীরা আরও কিছু নতুন দাবি উত্থাপন করেন এবং পরবর্তী কর্মসূচির ঘোষণা দেন।

শিক্ষার্থীদের দাবিসমূহ:-

১. সাজিদ হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক ও দ্রুত বিচার। দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালের মাধ্যমে নূন্যতম সময়ে বিচার সম্পন্ন করতে হবে।
২. সাজিদ হত্যার জন্য ক্যাম্পাস বাদি হয়ে মামলা করবে। ক্যাম্পাস সাজিদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিবে।
৩. মামালার তদন্তের ভার পিবিআইকে দিতে হবে।
৪. অধিকতর তদন্ত ও সাজিদ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত অন্যান্য প্রশ্নের সমাধানের জন্য বিচার বিভাগীয় তদন্ত করতে হবে। কারণ আমরা প্রশাসনকে বিশ্বাস করিনা।
৫. সম্পূর্ণ ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে, প্রয়োজনে আলটিমেটাম দাও। ক্যাম্পাসের আনাচেকানাচে ও প্রতি হলের প্রতি ফ্লোরে সিসি লাগাবে।
৬. নিরাপতা প্রশাসনের পরিপূর্ণ নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে সপষ্ট বিবৃতি দিবে এবং ক্ষমাপ্রার্থনা করতে হবে।
৭. ভিসেরা রিপোর্ট দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রদানের তাগিদ দিতে হবে।
৮. উল্লেখিত দাবিসমূহ না মানলে বিশ্ববিদ্যালয়কে কমমিট শাটডাউন ঘোষণা করা হবে।

সাজিদের বন্ধুরা অভিযোগ করে বলেন, “রাত সাড়ে ৩টার সময় কেউ গোসল করতে পুকুরে যায় না। এটি হত্যাকাণ্ড। সাজিদ তখন হলে ছিলেন, বাইরের কেউ ছিলেন না। হলের নিরাপত্তা কোথায় ছিল? প্রক্টরের দায়িত্ব কোথায়?”

তাদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে এ ঘটনার বাদী হয়ে মামলা করতে হবে। সেইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী রেজাউল রাকিব বলেন, “যখন সাজিদের লাশ উদ্ধার হয়, তখন থানা থেকে ওসি এলেও সঙ্গে কোনো পুলিশ সদস্য ছিল না, প্রশাসনের কেউও উপস্থিত ছিলেন না। পরে প্রক্টরিয়াল বডির একজন শিক্ষক এসে আমাদের আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখার কথা বলেন। এই ধরনের প্রশাসন আমরা চাই না।”

উল্লেখ্য, ময়নাতদন্তের প্রাথমিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ১৬ জুলাই দিবাগত রাত আনুমানিক সাড়ে ৩টার দিকে সাজিদ আবদুল্লাহ্’র মৃত্যু হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবিতে আগামীকাল সকাল ১১ টায় প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা সকল শিক্ষার্থীদের ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করার আহ্বান জানিয়ে আজকের মতো কর্মসূচি স্থগিত করেন।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

চাঁদপুর জেলা ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের কার্যকরী কমিটির প্রথম সভা

সাজিদের মৃত্যু রহস্যে নতুন মোড়: প্রশ্নের মুখে প্রশাসন

আপডেট সময় : ০৮:২২:২৪ অপরাহ্ণ, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী সাজিদ আব্দুল্লাহর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় নতুন মোড় দেখা দিয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক প্রতিবেদনের তথ্য সামনে আসার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (২১ জুলাই) বিকেলে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন। এতে বিকেল ৪টার নির্ধারিত শহরগামী বাস আটকে পড়ে। প্রায় ৩ ঘন্টা ধরে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা।

এ সময় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগানে ক্যাম্পাস প্রকম্পিত করে তোলেন— ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’, ‘ক্যাম্পাসে লাশ পড়ে, প্রশাসন কী করে’, ‘সাজিদ হত্যার বিচার করতে হবে, করতে হবে’, ‘প্রশাসনের প্রহসন মানি না, মানবো না’ ইত্যাদি।

এসময় শিক্ষার্থীরা আরও কিছু নতুন দাবি উত্থাপন করেন এবং পরবর্তী কর্মসূচির ঘোষণা দেন।

শিক্ষার্থীদের দাবিসমূহ:-

১. সাজিদ হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক ও দ্রুত বিচার। দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালের মাধ্যমে নূন্যতম সময়ে বিচার সম্পন্ন করতে হবে।
২. সাজিদ হত্যার জন্য ক্যাম্পাস বাদি হয়ে মামলা করবে। ক্যাম্পাস সাজিদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিবে।
৩. মামালার তদন্তের ভার পিবিআইকে দিতে হবে।
৪. অধিকতর তদন্ত ও সাজিদ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত অন্যান্য প্রশ্নের সমাধানের জন্য বিচার বিভাগীয় তদন্ত করতে হবে। কারণ আমরা প্রশাসনকে বিশ্বাস করিনা।
৫. সম্পূর্ণ ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে, প্রয়োজনে আলটিমেটাম দাও। ক্যাম্পাসের আনাচেকানাচে ও প্রতি হলের প্রতি ফ্লোরে সিসি লাগাবে।
৬. নিরাপতা প্রশাসনের পরিপূর্ণ নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে সপষ্ট বিবৃতি দিবে এবং ক্ষমাপ্রার্থনা করতে হবে।
৭. ভিসেরা রিপোর্ট দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রদানের তাগিদ দিতে হবে।
৮. উল্লেখিত দাবিসমূহ না মানলে বিশ্ববিদ্যালয়কে কমমিট শাটডাউন ঘোষণা করা হবে।

সাজিদের বন্ধুরা অভিযোগ করে বলেন, “রাত সাড়ে ৩টার সময় কেউ গোসল করতে পুকুরে যায় না। এটি হত্যাকাণ্ড। সাজিদ তখন হলে ছিলেন, বাইরের কেউ ছিলেন না। হলের নিরাপত্তা কোথায় ছিল? প্রক্টরের দায়িত্ব কোথায়?”

তাদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে এ ঘটনার বাদী হয়ে মামলা করতে হবে। সেইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী রেজাউল রাকিব বলেন, “যখন সাজিদের লাশ উদ্ধার হয়, তখন থানা থেকে ওসি এলেও সঙ্গে কোনো পুলিশ সদস্য ছিল না, প্রশাসনের কেউও উপস্থিত ছিলেন না। পরে প্রক্টরিয়াল বডির একজন শিক্ষক এসে আমাদের আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখার কথা বলেন। এই ধরনের প্রশাসন আমরা চাই না।”

উল্লেখ্য, ময়নাতদন্তের প্রাথমিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ১৬ জুলাই দিবাগত রাত আনুমানিক সাড়ে ৩টার দিকে সাজিদ আবদুল্লাহ্’র মৃত্যু হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবিতে আগামীকাল সকাল ১১ টায় প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা সকল শিক্ষার্থীদের ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করার আহ্বান জানিয়ে আজকের মতো কর্মসূচি স্থগিত করেন।