ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়ায় বিভাগের নাম পরিবর্তন ও সেশনজট নিরসনের দাবিতে প্রশাসন ভবনে অবরোধ করেছেন জিওগ্রাফি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) সকাল ১১টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের এ অবরোধ কর্মসূচি পালন শুরু করেন ঐ বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীরাদের ‘অ্যাকশান টু অ্যাকশান, ডাইরেক্ট অ্যাকশান’, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘নাম চেঞ্জ নিয়ে বাহানা, মানি না মানব না’, ‘বিভাগের নাম পরিবর্তন, করতে হবে করতে হবে’, ‘জি ই না ইএসটি, ইএসটি ইএসটি’, ‘আমাদের দাবি আমাদের দাবি, মানতে হবে মানতে হবে’, ‘সেশনজটের প্রহসন, মানি না মানব না’, ‘পরীক্ষা কমিটির কালো হাত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’, ‘আট মাসের প্রহসন, মানি না মানব না’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
এছাড়াও শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে দুই দফা দাবি পেশ করা হয়। প্রথমত, দুপুর ২টার মধ্যে এক্সপার্ট কমিটির রিপোর্ট সাবমিট করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জরুরি সিন্ডিকেট সভা করে বিভাগের নাম এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি করতে হবে। দ্বিতীয়ত, সেশনজট নিরসনে বিভাগে নানা কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত শিক্ষকদের অ্যাকাডেমিক কমিটি ও অভিযোগ আনয়নকারী সব ব্যাচের পরীক্ষা কমিটি থেকে বহিষ্কার করে দুপুর ২টার মধ্যে নতুন কমিটি তৈরি করতে হবে।
এসময় শিক্ষার্থীরা বলেন, বিভাগ চালুর পর থেকে নাম ছিল এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড জিওগ্রাফি। বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রসপেক্টাসে এ নাম দেওয়া হলেও ভর্তি পর শিক্ষার্থীরা জানতে পারেন, বিভাগের নাম জিওগ্রাফি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট। তারা দীর্ঘদিন ধরে জিওগ্রাফি অ্যান্ড এনভাইরনমেন্ট বিভাগের নাম পরিবর্তন করে ‘এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি’ করার দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রশাসন এর কোনও সুস্পষ্ট সমাধান দিতে পারেনি
শিক্ষার্থীদের দাবি, তিন বছর আগে স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে তাদের অজান্তে স্বাক্ষর নিয়ে বিভাগের নাম পরিবর্তন করা হয়। পরবর্তী সময়ে বিষয়টি জানার পর দীর্ঘদিন ধরে বিভাগের নাম পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে এলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। সর্বশেষ নতুন প্রশাসন দায়িত্ব নেওয়ার পরও একাধিকবার বিভাগীয় সভাপতি এবং সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে দাবি জানালেও দৃশ্যমান ব্যবস্থা না নেওয়ায় আজকে আবারও আন্দোলনে নেমেছেন তারা। বারবার দাবি জানানো সত্ত্বেও প্রশাসন সিদ্ধান্ত গ্রহণে কালক্ষেপণ করায় আজ তারা প্রশাসন ভবন অবরোধ করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, “আমরা শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেছি। তাদের দাবি শুনেছি। এ বিষয়ে গঠিত কমিটি আগামী মাসের ২০ তারিখের মধ্যে রিপোর্ট পেশ করবে। সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
উল্লেখ্য, এর আগে গতবছরের ২৪ নভেম্বর একই দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা দিয়ে বিক্ষোভ করেন বিভাগটির শিক্ষার্থীরা। সেদিন বিভাগীয় সভাপতি ও প্রক্টরিয়াল বডির আশ্বাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাতের শর্তে তালা খুলে দেয় শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে এবছরের ২৬ জানুয়ারী আবারো প্রশাসন ভবনের সামনে একই দাবিতে মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা।