শিরোনাম :
Logo হাসিনার গণহত্যা মামলার প্রতিবেদন জমা; মিলেছে অপরাধের প্রমাণ Logo কচুয়ায় টানা ৪১ দিন জামাতে নামাজ পড়ে সাইকেল পুরস্কার পেল ১০ শিশু-কিশোর Logo চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার দুর্ঘটনায় নিহত বেড়ে ১০ Logo দেশে জঙ্গিবাদ উত্থানের মতো কিছুই ঘটেনি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা Logo কচুয়ায় নিরাপদ সড়ক চাই উদ্যোগে ডা. আমিনুল ইসলামকে ফুলেল সংবর্ধনা Logo আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ কর্তৃক মাদক সম্রজ্ঞী মিনি বেগম মাদক বিক্রয়কালে হাতেনাতে গ্রেফতার Logo ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ঈদের আয়োজন Logo নির্বাচন ডিসেম্বরের মধ্যে না হলে দেশ অস্থিতিশীল হতে পারে, রয়টার্সকে মঈন খান Logo কলকাতাকে উড়িয়ে মুম্বাইয়ের প্রথম জয় Logo অস্ট্রেলিয়ার কেন্দ্রীয় চুক্তিতে চমক, তালিকায় ২ টেস্ট খেলা ব্যাটার

যে সম্প্রদায়ের লোকেরা বউদের ঠেলে দেয় পতিতাবৃত্তিতে!

  • amzad khan
  • আপডেট সময় : ১১:৩৬:০৯ পূর্বাহ্ণ, রবিবার, ৮ জানুয়ারি ২০১৭
  • ৭৫৭ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক:

৭০ বছর হয়েছে ভারত স্বাধীন হয়েছে। কিন্তু এখনও দেশটির নারীরা পাননি তাদের প্রাপ্য সম্মান। নারীর অবমাননার অজস্র ঘটনা প্রত্যেক দিন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘটে যাচ্ছে। কিন্তু দিল্লির নজফগড়ের পরনা সম্প্রদায়ের মধ্যে যে ভয়াবহ রীতি প্রচলিত রয়েছে, তা কল্পনার অতীত। কারণ এখানে বাড়ির বউদের দিয়ে পতিতাবৃত্তি করানোই রীতি। এবং এই অসম্মানজনক পেশায় নারীদের ঠেলে দেন তাঁদের শ্বশুরবাড়ির লোকেরাই।

যেভাবে এলো এই রীতি:
পরনা সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষদের বাড়িতে কন্যাসন্তান জন্মগ্রহণ করলে বাড়ির লোকজন খুশিই হন। কারণ তারা জানেন, একটু বড় হয়ে ওঠার পরে ‘পন্য’ হিসেবে এই মেয়েই খুলে দেবে তাদের উপার্জনের রাস্তা। পরনাদের মধ্যে ছোটবেলায় মেয়েদের লেখাপড়া শেখানোর রীতি নেই। বরং সাত-আট বছর বয়স হলেই বাবা-মা মেয়েকে পাঠিয়ে দেন কোন দালালের কাছে। সেই দালালের কাজ হয়, পতিতাবৃত্তিতে মেয়েদের প্রশিক্ষিত করা।

১২ থেকে ১৫ বছর বয়সের মধ্যে মেয়েদের বিয়ে দেওয়া হয়। অবশ্য বিয়েটাও এক রকম বাজার। কারণ মেয়েকে ঘরে নিয়ে যাওয়ার জন্য শ্বশুরবাড়ির লোকেরা মেয়ের বাবা-মার হাতে তুলে দেন মোটা অঙ্কের টাকা। যারা যত বেশি দর হাঁকতে পারেন, তাদের ঘরেই যায় মেয়ে।

বিয়ের কয়েক দিন পর থেকেই  বাড়ির বউয়ের জন্য ‘কাস্টমার’ খোঁজা শুরু হয়। এ ক্ষেত্রে ‘দালাল’-এর কাজ করেন মেয়েটির স্বামী। প্রত্যেক রাতে নতুন নতুন ক্রেতা আসে পতিতাবৃত্তিতে নামা নতুন বউয়ের কাছে। মেয়েটির পারিশ্রমিক ওঠে তার স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির অন্যান্য সদস্যদের হাতে।

পরনাদের মধ্যে বহু কাল থেকে এই রীতি চলে আসছে। দারিদ্রপীড়িত পরনাদের সংসার চলে মূলত পতিতাবৃত্তির মাধ্যমে বাড়ির বউয়ের উপার্জিত অর্থেই। মেয়েদের অভিভাবকরাও মেনে নিয়েছেন এই প্রথা। আর পরনা সম্প্রদায়ের মেয়েরা? তাদের মধ্যে এই রীতি নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে, কিন্তু প্রতিবাদের সাহস নেই। কারণ পতিতাবৃত্তিতে রাজি না হলে শ্বশুরবাড়িতে মেয়েদের উপর চলে অকথ্য অত্যাচার, এমনকী সময় বিশেষে হত্যাও করা হয়।

কোন মানবাধিকার সংগঠন কিংবা নারীবাদী সংগঠন পরনা নারীদের অধিকার রক্ষায় কখনও সরব হয়নি। কোন সরকারও তাদের দিকে বাড়িয়ে দেয়নি সাহায্যের হাত। সত্যি বলতে কী, পরনাদের মধ্যে প্রচলিত এই ভয়াবহ প্রথার কথা সম্প্রদায়ের বাইরে খুব একটা বেশি কেউ জানে না। তবে আশার কথা এই যে, সম্প্রতি বিভিন্ন জাতীয় সংবাদমাধ্যমে একটু একটু করে প্রকাশ পাচ্ছে এই আদিম প্রথার খবর। এতে পরনা নারীদের দুর্দশা মোচনে সরকার উদ্যোগী হবে বলে আশা করা যায়।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

হাসিনার গণহত্যা মামলার প্রতিবেদন জমা; মিলেছে অপরাধের প্রমাণ

যে সম্প্রদায়ের লোকেরা বউদের ঠেলে দেয় পতিতাবৃত্তিতে!

আপডেট সময় : ১১:৩৬:০৯ পূর্বাহ্ণ, রবিবার, ৮ জানুয়ারি ২০১৭

নিউজ ডেস্ক:

৭০ বছর হয়েছে ভারত স্বাধীন হয়েছে। কিন্তু এখনও দেশটির নারীরা পাননি তাদের প্রাপ্য সম্মান। নারীর অবমাননার অজস্র ঘটনা প্রত্যেক দিন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘটে যাচ্ছে। কিন্তু দিল্লির নজফগড়ের পরনা সম্প্রদায়ের মধ্যে যে ভয়াবহ রীতি প্রচলিত রয়েছে, তা কল্পনার অতীত। কারণ এখানে বাড়ির বউদের দিয়ে পতিতাবৃত্তি করানোই রীতি। এবং এই অসম্মানজনক পেশায় নারীদের ঠেলে দেন তাঁদের শ্বশুরবাড়ির লোকেরাই।

যেভাবে এলো এই রীতি:
পরনা সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষদের বাড়িতে কন্যাসন্তান জন্মগ্রহণ করলে বাড়ির লোকজন খুশিই হন। কারণ তারা জানেন, একটু বড় হয়ে ওঠার পরে ‘পন্য’ হিসেবে এই মেয়েই খুলে দেবে তাদের উপার্জনের রাস্তা। পরনাদের মধ্যে ছোটবেলায় মেয়েদের লেখাপড়া শেখানোর রীতি নেই। বরং সাত-আট বছর বয়স হলেই বাবা-মা মেয়েকে পাঠিয়ে দেন কোন দালালের কাছে। সেই দালালের কাজ হয়, পতিতাবৃত্তিতে মেয়েদের প্রশিক্ষিত করা।

১২ থেকে ১৫ বছর বয়সের মধ্যে মেয়েদের বিয়ে দেওয়া হয়। অবশ্য বিয়েটাও এক রকম বাজার। কারণ মেয়েকে ঘরে নিয়ে যাওয়ার জন্য শ্বশুরবাড়ির লোকেরা মেয়ের বাবা-মার হাতে তুলে দেন মোটা অঙ্কের টাকা। যারা যত বেশি দর হাঁকতে পারেন, তাদের ঘরেই যায় মেয়ে।

বিয়ের কয়েক দিন পর থেকেই  বাড়ির বউয়ের জন্য ‘কাস্টমার’ খোঁজা শুরু হয়। এ ক্ষেত্রে ‘দালাল’-এর কাজ করেন মেয়েটির স্বামী। প্রত্যেক রাতে নতুন নতুন ক্রেতা আসে পতিতাবৃত্তিতে নামা নতুন বউয়ের কাছে। মেয়েটির পারিশ্রমিক ওঠে তার স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির অন্যান্য সদস্যদের হাতে।

পরনাদের মধ্যে বহু কাল থেকে এই রীতি চলে আসছে। দারিদ্রপীড়িত পরনাদের সংসার চলে মূলত পতিতাবৃত্তির মাধ্যমে বাড়ির বউয়ের উপার্জিত অর্থেই। মেয়েদের অভিভাবকরাও মেনে নিয়েছেন এই প্রথা। আর পরনা সম্প্রদায়ের মেয়েরা? তাদের মধ্যে এই রীতি নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে, কিন্তু প্রতিবাদের সাহস নেই। কারণ পতিতাবৃত্তিতে রাজি না হলে শ্বশুরবাড়িতে মেয়েদের উপর চলে অকথ্য অত্যাচার, এমনকী সময় বিশেষে হত্যাও করা হয়।

কোন মানবাধিকার সংগঠন কিংবা নারীবাদী সংগঠন পরনা নারীদের অধিকার রক্ষায় কখনও সরব হয়নি। কোন সরকারও তাদের দিকে বাড়িয়ে দেয়নি সাহায্যের হাত। সত্যি বলতে কী, পরনাদের মধ্যে প্রচলিত এই ভয়াবহ প্রথার কথা সম্প্রদায়ের বাইরে খুব একটা বেশি কেউ জানে না। তবে আশার কথা এই যে, সম্প্রতি বিভিন্ন জাতীয় সংবাদমাধ্যমে একটু একটু করে প্রকাশ পাচ্ছে এই আদিম প্রথার খবর। এতে পরনা নারীদের দুর্দশা মোচনে সরকার উদ্যোগী হবে বলে আশা করা যায়।