শিরোনাম :
Logo বীরগঞ্জে ক্ষমতার অপব্যবহারকারী ডিপিইও নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে মানববন্ধন। Logo টাকার জন্য হরিদাস বাবু’কে হয়রানী তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার অনুসন্ধানে প্রমাণ। Logo খুবির সঙ্গে গবেষণা সহযোগিতায় আগ্রহ জাপানি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের Logo শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার পথে ট্রাকের ধাক্কায় এনজিও কর্মীর মৃত্যু Logo সাতক্ষীরায় রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ তরুণী, থানায় সাধারণ ডায়েরি Logo আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস ২০২৫ উপলক্ষে কয়রায় র‍্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত Logo দর্শনা থানা পুলিশের মাদকবিরোধী অভিযান, ৪ কেজি গাঁজাসহ আটক ১ Logo জীবননগরে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস-২০২৫ উদযাপন Logo আইএফএডিকে বাংলাদেশের তরুণ কৃষি উদ্যোক্তাদের জন্য সামাজিক ব্যবসা তহবিল গঠনের প্রস্তাব প্রধান উপদেষ্টার Logo চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ডিঙ্গেদহ এলাকায় বিষাক্ত মদপানে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে।

চরপাথালিয়া মাদরাসায় এক বছরে হাফেজ হয়েছে ৫৬ জন

  • নীলকন্ঠ অনলাইন নীলকন্ঠ অনলাইন
  • আপডেট সময় : ০২:৪৯:২০ অপরাহ্ণ, সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • ৭৪০ বার পড়া হয়েছে
মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়ার থানার চরপাথালিয়া সালমান ফারসি (রা.) মাদ্রাসা থেকে এক বছরে ৫৬ জন শিক্ষার্থী কুরআনের হেফজ সম্পন্ন করেছে। গত বুধবার মাদ্রাসার উদ্যোগে আয়োজিত মাহফিলে হাফেজ ছাত্রদের পাগড়ি এবং তাদের  পিতাকে ‘গর্বিত বাবা’ অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়।

মাদ্রাসার মুতাওয়াল্লি মো. শিকদার শিহাবুদ্দিনের সভাপতিত্বে পাগড়ি প্রদান মাহফিলে প্রধান অতিথি ছিলেন হুফফাজুল কুরআন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান উস্তাজুল হুফফাজ হাফেজ আবদুল হক, প্রধান মেহমান ছিলেন জামেয়া শারইয়্যাহ মালিবাগের প্রিন্সিপাল মাওলানা আবু সাঈদ এবং প্রধান আলোচক ছিলেন বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক মাওলানা যাইনুল আবেদীন। এ ছাড়াও গজারিয়ার স্থানীয় মাদরাসার পরিচালক ও আলেম-উলামা এবং হাফেজ ছাত্রদের অভিভাকরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক হাফেজ আল আমিন সরকার।

সভাপতির বক্তব্যে মো. শিকদার শিহাবুদ্দিন বলেন, ‘হাফেজরা আল্লাহর কাছে সবচেয়ে দামি মানুষ। তাদের কদর বোঝাও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আজকে যারা হাফেজ হলেন তারা হয়ত বড় হয়ে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের সঙ্গে মিশে যাবেন। কিন্তু সবার সঙ্গে থাকার পরও তাদের আলাদা একটা পরিচয় থাকবে, তারা হাফেজে কুরআন। তারা কোরআনের মতো দামি গ্রন্থ সিনায় ধারণ করেছেন। তাই হাফেজের মর্যাদা আমাদের বুঝতে হবে।’

প্রধান অতিথির বক্তেব্যে হাফেজ আবদুল হক বলেন, ‘হাফেজদের পাগড়ি প্রদান অনুষ্ঠান আসলে একটা ছায়া অনুষ্ঠান মাত্র। এসব হাফেজদের সম্মানীত করা হবে জান্নাতে। এখানে মাদরাসা পরিচালকরা হাফেজ ছাত্রদের বাবাকে গর্বিত পিতা অ্যাওয়ার্ড দিয়েছেন, এটাও একটা নমুনা। কেয়ামতের দিন আল্লাহ তায়ালা হাফেজ ছাত্রদে বাবামাকে নূরের টুপি পড়াবেন। হাফেজদের সম্মান দুনিয়া-আখেরাতে সব জায়গাতেই সবার ওপরে।’

প্রধান মেহমানের বক্তব্যে প্রিন্সিপাল মাওলানা আবু সাঈদ বলেন, ‘দুনিয়ার অনেক বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয় আছে। অক্সফোর্ড, ক্যামব্রিজসহ নামকরা অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা আমরা শুনি। কিন্তু আজ যে শিশুটি কুরআন বুকে ধারণ করল, তার মর্যাদা আর কোনো বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সঙ্গে মিলবে না। ধর্মীয় বিবেচনায় একজন হাফেজ সব মানুষের চেয়ে শ্রেষ্ঠ মানুষ। তাই হাফেজের স্থানও হবে জান্নাতে সবার ওপরে।’
প্রধান আলোচকের বক্তব্যে মাওলানা যাইনুল আবেদীন বলেন, ‘হাফেজরা শুধু যে ধর্মীয় দৃষ্টিতে শ্রেষ্ঠ তা নয়, তারা এখন দেশ-বিদেশের গুরুত্বপূর্ণ খাতেও অবদান রাখছে। একজন হাফেজ যখন ব্যবসায়ী হবে সে সবার মন জয় করবে তার সততা ও কুরআনি আচরণ দিয়ে। একজন হাফেজ যখন কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরি করবে সে সবার সেরা হবে তীক্ষ্ণ মেধা ও দক্ষতার কারণে। হাফেজরা দেশ ও জাতির সম্পদ। তাদের সঠিক পরিচর্যা করা আমাদের সবার দায়িত্ব।’

মাদ্রাসার পরিচালক হাফেজ আল আমিন সরকার বলেন, ‘এক বছরে ৫৬ জন ছাত্র  হাফেজ  হওয়া একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য বড় অর্জন কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু মুমিনের আসল সফলতা হল মাওলাকে রাজি-খুশি করা। মাওলা যদি আমাদের ইখলাস ও খেদমতে খুশি হন, তাহলে হাফেজ বেশি হল না কম হল সেটা বড় কথা নয়। আমাদের মাদরাসার বয়সও বেশি না। আমরা ২০১৬ সালে শুরু করেছি। আমরা শুরু থেকেই শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিতের বিষটি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছি। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশ ও শারীরীক সুস্থ্যতা ও পরিচ্ছন্নতার বিষয়েও জোর দিয়েছি। বর্তমান-সাবেক শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাক যারাই মাদরাসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং আছেন—সবাই আমাদের জন্য দেয়া করবেন। মাদরাসার জন্য দোয়া করবেন। আমরা আপনাদের সবার কাছে কৃতজ্ঞ। আপনাদের দোয়া ও ভালোবাসায় চরপাথালিয়া সালামান ফারসি (রা.) মাদরাসা আরো অনেক দূর এগিয়ে যাবে।’

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

বীরগঞ্জে ক্ষমতার অপব্যবহারকারী ডিপিইও নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে মানববন্ধন।

চরপাথালিয়া মাদরাসায় এক বছরে হাফেজ হয়েছে ৫৬ জন

আপডেট সময় : ০২:৪৯:২০ অপরাহ্ণ, সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়ার থানার চরপাথালিয়া সালমান ফারসি (রা.) মাদ্রাসা থেকে এক বছরে ৫৬ জন শিক্ষার্থী কুরআনের হেফজ সম্পন্ন করেছে। গত বুধবার মাদ্রাসার উদ্যোগে আয়োজিত মাহফিলে হাফেজ ছাত্রদের পাগড়ি এবং তাদের  পিতাকে ‘গর্বিত বাবা’ অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়।

মাদ্রাসার মুতাওয়াল্লি মো. শিকদার শিহাবুদ্দিনের সভাপতিত্বে পাগড়ি প্রদান মাহফিলে প্রধান অতিথি ছিলেন হুফফাজুল কুরআন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান উস্তাজুল হুফফাজ হাফেজ আবদুল হক, প্রধান মেহমান ছিলেন জামেয়া শারইয়্যাহ মালিবাগের প্রিন্সিপাল মাওলানা আবু সাঈদ এবং প্রধান আলোচক ছিলেন বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক মাওলানা যাইনুল আবেদীন। এ ছাড়াও গজারিয়ার স্থানীয় মাদরাসার পরিচালক ও আলেম-উলামা এবং হাফেজ ছাত্রদের অভিভাকরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক হাফেজ আল আমিন সরকার।

সভাপতির বক্তব্যে মো. শিকদার শিহাবুদ্দিন বলেন, ‘হাফেজরা আল্লাহর কাছে সবচেয়ে দামি মানুষ। তাদের কদর বোঝাও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আজকে যারা হাফেজ হলেন তারা হয়ত বড় হয়ে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের সঙ্গে মিশে যাবেন। কিন্তু সবার সঙ্গে থাকার পরও তাদের আলাদা একটা পরিচয় থাকবে, তারা হাফেজে কুরআন। তারা কোরআনের মতো দামি গ্রন্থ সিনায় ধারণ করেছেন। তাই হাফেজের মর্যাদা আমাদের বুঝতে হবে।’

প্রধান অতিথির বক্তেব্যে হাফেজ আবদুল হক বলেন, ‘হাফেজদের পাগড়ি প্রদান অনুষ্ঠান আসলে একটা ছায়া অনুষ্ঠান মাত্র। এসব হাফেজদের সম্মানীত করা হবে জান্নাতে। এখানে মাদরাসা পরিচালকরা হাফেজ ছাত্রদের বাবাকে গর্বিত পিতা অ্যাওয়ার্ড দিয়েছেন, এটাও একটা নমুনা। কেয়ামতের দিন আল্লাহ তায়ালা হাফেজ ছাত্রদে বাবামাকে নূরের টুপি পড়াবেন। হাফেজদের সম্মান দুনিয়া-আখেরাতে সব জায়গাতেই সবার ওপরে।’

প্রধান মেহমানের বক্তব্যে প্রিন্সিপাল মাওলানা আবু সাঈদ বলেন, ‘দুনিয়ার অনেক বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয় আছে। অক্সফোর্ড, ক্যামব্রিজসহ নামকরা অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা আমরা শুনি। কিন্তু আজ যে শিশুটি কুরআন বুকে ধারণ করল, তার মর্যাদা আর কোনো বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সঙ্গে মিলবে না। ধর্মীয় বিবেচনায় একজন হাফেজ সব মানুষের চেয়ে শ্রেষ্ঠ মানুষ। তাই হাফেজের স্থানও হবে জান্নাতে সবার ওপরে।’
প্রধান আলোচকের বক্তব্যে মাওলানা যাইনুল আবেদীন বলেন, ‘হাফেজরা শুধু যে ধর্মীয় দৃষ্টিতে শ্রেষ্ঠ তা নয়, তারা এখন দেশ-বিদেশের গুরুত্বপূর্ণ খাতেও অবদান রাখছে। একজন হাফেজ যখন ব্যবসায়ী হবে সে সবার মন জয় করবে তার সততা ও কুরআনি আচরণ দিয়ে। একজন হাফেজ যখন কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরি করবে সে সবার সেরা হবে তীক্ষ্ণ মেধা ও দক্ষতার কারণে। হাফেজরা দেশ ও জাতির সম্পদ। তাদের সঠিক পরিচর্যা করা আমাদের সবার দায়িত্ব।’

মাদ্রাসার পরিচালক হাফেজ আল আমিন সরকার বলেন, ‘এক বছরে ৫৬ জন ছাত্র  হাফেজ  হওয়া একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য বড় অর্জন কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু মুমিনের আসল সফলতা হল মাওলাকে রাজি-খুশি করা। মাওলা যদি আমাদের ইখলাস ও খেদমতে খুশি হন, তাহলে হাফেজ বেশি হল না কম হল সেটা বড় কথা নয়। আমাদের মাদরাসার বয়সও বেশি না। আমরা ২০১৬ সালে শুরু করেছি। আমরা শুরু থেকেই শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিতের বিষটি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছি। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশ ও শারীরীক সুস্থ্যতা ও পরিচ্ছন্নতার বিষয়েও জোর দিয়েছি। বর্তমান-সাবেক শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাক যারাই মাদরাসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং আছেন—সবাই আমাদের জন্য দেয়া করবেন। মাদরাসার জন্য দোয়া করবেন। আমরা আপনাদের সবার কাছে কৃতজ্ঞ। আপনাদের দোয়া ও ভালোবাসায় চরপাথালিয়া সালামান ফারসি (রা.) মাদরাসা আরো অনেক দূর এগিয়ে যাবে।’