শিরোনাম :
Logo চুয়াডাঙ্গায় মারধর করে নগদ টাকা ছিনতাই Logo ধর্ষকদের  কলিজা ছিঁড়ে চৌরাস্তার মোড়ে টাঙানো হবে: সাফফাতুল ইসলাম Logo ধর্ষণ ও নারী সহিংসতার প্রতিবাদে চুয়াডাঙ্গায় শিক্ষার্থীদের হুঁশিয়ার সমাবেশ ও মশাল-মোমবাতি প্রজ্জলন Logo শহিদ আবু সাইদকে নিয়ে কটুক্তি করায় বেরোবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ Logo নারী তুমি সর্বগুণান্বিতা, নির্ভীক Logo জুলাই বিপ্লবের চেতনায় ৫ম সিনেমাকিং আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব অনুষ্ঠিত Logo কচুয়ায় স্থানীয় সরকার দিবসে র‌্যালী ও আলোচনা সভা Logo লামী আন্দোলন বাংলাদেশ চাঁদপুর জেলা শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটির শপথ অনুষ্ঠান Logo পিলখানা হত্যাকাণ্ড নিয়ে যা বললেন সেনাপ্রধান Logo অদ্য অপরাহ্ন থেকে সাজেক পর্যটক ভ্রমণের জন্য উন্মুক্ত

যে চার আমল মহানবী (সা.) কখনো ছাড়তেন না

  • নীলকন্ঠ অনলাইন নীলকন্ঠ অনলাইন
  • আপডেট সময় : ০৫:৩২:৪৬ অপরাহ্ণ, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • ৭০৫ বার পড়া হয়েছে
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর প্রত্যেকটি কর্মই উম্মতের জন্য অনুসরণীয়, অনুকরণীয়। তিনি কিভাবে খেয়েছেন, ফরজ, ওয়াজিব ও সুন্নতে মুয়াক্কাদা ছাড়াও কিছু আমল আছে—যেগুলো সুন্নতে জায়েদা বা নফল। কিন্তু এই সুন্নত জায়েদা কাজগুলোর মধ্যেও এমন কিছু কাজ আছে, যেগুলো রাসুলুল্লাহ (সা.) কখনো ছাড়তেন না। তার মধ্যে নিম্নে এই চারটি আমল উম্মুল মুমিনিন হাফসা (রা.) বর্ণিত, যা রাসুলুল্লাহ (সা.) কখনো ত্যাগ করতেন না।এক. আশুরার রোজা। দুই. রমজানের শেষ দশকের ইতিকাফ। তিন. প্রতি মাসের তিন দিন তথা আইয়ামে বিজের রোজা, চার. ফজরের ফরজের আগের দুই রাকাত নামাজ। (নাসায়ি, মিশকাত : ২০৭০)

এক. আশুরার রোজা : মহররম মাসের দশম দিনকে আশুরার দিন বলা হয়।

এ দিনের রোজা রাখারও বিশেষ গুরুত্ব ও তাৎপর্য আছে। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) আশুরা ও রমজানের রোজা সম্পর্কে যেরূপ গুরুত্বারোপ করতেন, অন্য কোনো রোজা সম্পর্কে রাসুল (সা.)-কে সেরূপ গুরুত্ব প্রদান করতে দেখিনি। (বুখারি : ২০০৬, মুসলিম : ১১৩২)

আরেক বর্ণনায় উম্মুল মুমিনিন আয়েশা (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) প্রথমে আশুরার দিনে সওম পালনের নির্দেশ দিয়েছিলেন, পরে যখন রমজানের সাওম ফরজ করা হলো তখন যার ইচ্ছা (আশুরার) সাওম পালন করত আর যার ইচ্ছা করত না। (বুখারি, হাদিস : ২০০১)এর কিছু কারণের মধ্যে অন্যতম একটি কারণ হলো, রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার আগে আশুরার রোজা ফরজ ছিল। জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) আমাদের (রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার আগে) আশুরার রোজা রাখার নির্দেশ দিতেন এবং এর প্রতি উৎসাহিত করতেন। আর এ বিষয়ে তিনি নিয়মিত আমাদের খোঁজখবর নিতেন। যখন রমজানের রোজা ফরজ করা হল তখন আশুরার রোজার ব্যাপারে তিনি আমাদের নির্দেশও দিতেন না, নিষেধও করতেন না। আর এ বিষয়ে তিনি আমাদের খবরাখবরও নিতেন না। (মুসলিম, হাদিস : ১১২৮)

দুই. রমজানের শেষ দশকের ইতিকাফ : ইতিকাফ অর্থ অবস্থান করা। ইসলামের পরিভাষায় ইতেকাফ হলো, আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য জামে মসজিদে অবস্থান করা। মদিনায় অবস্থানকালে রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রতিবছর ইতিকাফ পালন করতেন। হাজার ব্যস্ততা সত্ত্বেও রমজানে তিনি ইতিকাফ ছাড়েননি। আয়শা (রা.) বলেন, নবী (সা.) রমজানের শেষ ১০ দিনে ইতেকাফ করতেন এবং বলতেন, তোমরা রমজানের শেষ দশকে শবেক্বদর অনুসন্ধান কর। (বুখারি, হাদিস : ২০২০, ২০১৭)

আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) প্রতি রমজানে ১০ দিন ইতিকাফ করতেন, তবে যে বছর তিনি ইন্তেকাল করেন, সে বছর তিনি ২০ দিন ইতিকাফে কাটান। (বুখারি, হাদিস : ১৯০৩)

তিন. আইয়ামে বিজের রোজা : আবু জার গিফারি (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, হে আবু জার, যদি তুমি প্রতি মাসে তিন দিন সিয়াম পালন করতে চাও, তাহলে (প্রতি চাঁদের) ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে তা পালন করো। (তিরমিজি, হাদিস : ৭৬১)রাসুল (সা.) প্রতি চাঁদের এই তিন দিন নিয়মিত রোজা রাখতেন। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বাড়িতে থাকাবস্থায় বা সফরে থাকাবস্থায় কখনোই আইয়ামে বিদের রোজা ছাড়তেন না। (নাসায়ি, রিয়াজুস সালেহিন : ১২৬৪)

চার. ফজরের আগের দুই রাকাত সুন্নত : উম্মুল মুমিনিন আয়েশা (রা.) বলেন, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জোহরের পূর্বে চার রাকাত এবং (ফজরের পূর্বে) দু’রাকাতত সালাত ছাড়তেন না। (বুখারি: ১১৮১, ১১৮২)

অন্য হাদিসে এসেছে, ফজরের দুই রাকাত (সুন্নত) দুনিয়া ও দুনিয়ার মধ্যে যা কিছু আছে তার চেয়ে উত্তম। (মুসলিম : ৭২৫)

আল্লাহ তায়ালা রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সঠিকভাবে অনুসরণ করে বেশি বেশি সুন্নত ও নফল ইবাদত করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

চুয়াডাঙ্গায় মারধর করে নগদ টাকা ছিনতাই

যে চার আমল মহানবী (সা.) কখনো ছাড়তেন না

আপডেট সময় : ০৫:৩২:৪৬ অপরাহ্ণ, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর প্রত্যেকটি কর্মই উম্মতের জন্য অনুসরণীয়, অনুকরণীয়। তিনি কিভাবে খেয়েছেন, ফরজ, ওয়াজিব ও সুন্নতে মুয়াক্কাদা ছাড়াও কিছু আমল আছে—যেগুলো সুন্নতে জায়েদা বা নফল। কিন্তু এই সুন্নত জায়েদা কাজগুলোর মধ্যেও এমন কিছু কাজ আছে, যেগুলো রাসুলুল্লাহ (সা.) কখনো ছাড়তেন না। তার মধ্যে নিম্নে এই চারটি আমল উম্মুল মুমিনিন হাফসা (রা.) বর্ণিত, যা রাসুলুল্লাহ (সা.) কখনো ত্যাগ করতেন না।এক. আশুরার রোজা। দুই. রমজানের শেষ দশকের ইতিকাফ। তিন. প্রতি মাসের তিন দিন তথা আইয়ামে বিজের রোজা, চার. ফজরের ফরজের আগের দুই রাকাত নামাজ। (নাসায়ি, মিশকাত : ২০৭০)

এক. আশুরার রোজা : মহররম মাসের দশম দিনকে আশুরার দিন বলা হয়।

এ দিনের রোজা রাখারও বিশেষ গুরুত্ব ও তাৎপর্য আছে। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) আশুরা ও রমজানের রোজা সম্পর্কে যেরূপ গুরুত্বারোপ করতেন, অন্য কোনো রোজা সম্পর্কে রাসুল (সা.)-কে সেরূপ গুরুত্ব প্রদান করতে দেখিনি। (বুখারি : ২০০৬, মুসলিম : ১১৩২)

আরেক বর্ণনায় উম্মুল মুমিনিন আয়েশা (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) প্রথমে আশুরার দিনে সওম পালনের নির্দেশ দিয়েছিলেন, পরে যখন রমজানের সাওম ফরজ করা হলো তখন যার ইচ্ছা (আশুরার) সাওম পালন করত আর যার ইচ্ছা করত না। (বুখারি, হাদিস : ২০০১)এর কিছু কারণের মধ্যে অন্যতম একটি কারণ হলো, রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার আগে আশুরার রোজা ফরজ ছিল। জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) আমাদের (রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার আগে) আশুরার রোজা রাখার নির্দেশ দিতেন এবং এর প্রতি উৎসাহিত করতেন। আর এ বিষয়ে তিনি নিয়মিত আমাদের খোঁজখবর নিতেন। যখন রমজানের রোজা ফরজ করা হল তখন আশুরার রোজার ব্যাপারে তিনি আমাদের নির্দেশও দিতেন না, নিষেধও করতেন না। আর এ বিষয়ে তিনি আমাদের খবরাখবরও নিতেন না। (মুসলিম, হাদিস : ১১২৮)

দুই. রমজানের শেষ দশকের ইতিকাফ : ইতিকাফ অর্থ অবস্থান করা। ইসলামের পরিভাষায় ইতেকাফ হলো, আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য জামে মসজিদে অবস্থান করা। মদিনায় অবস্থানকালে রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রতিবছর ইতিকাফ পালন করতেন। হাজার ব্যস্ততা সত্ত্বেও রমজানে তিনি ইতিকাফ ছাড়েননি। আয়শা (রা.) বলেন, নবী (সা.) রমজানের শেষ ১০ দিনে ইতেকাফ করতেন এবং বলতেন, তোমরা রমজানের শেষ দশকে শবেক্বদর অনুসন্ধান কর। (বুখারি, হাদিস : ২০২০, ২০১৭)

আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) প্রতি রমজানে ১০ দিন ইতিকাফ করতেন, তবে যে বছর তিনি ইন্তেকাল করেন, সে বছর তিনি ২০ দিন ইতিকাফে কাটান। (বুখারি, হাদিস : ১৯০৩)

তিন. আইয়ামে বিজের রোজা : আবু জার গিফারি (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, হে আবু জার, যদি তুমি প্রতি মাসে তিন দিন সিয়াম পালন করতে চাও, তাহলে (প্রতি চাঁদের) ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে তা পালন করো। (তিরমিজি, হাদিস : ৭৬১)রাসুল (সা.) প্রতি চাঁদের এই তিন দিন নিয়মিত রোজা রাখতেন। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বাড়িতে থাকাবস্থায় বা সফরে থাকাবস্থায় কখনোই আইয়ামে বিদের রোজা ছাড়তেন না। (নাসায়ি, রিয়াজুস সালেহিন : ১২৬৪)

চার. ফজরের আগের দুই রাকাত সুন্নত : উম্মুল মুমিনিন আয়েশা (রা.) বলেন, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জোহরের পূর্বে চার রাকাত এবং (ফজরের পূর্বে) দু’রাকাতত সালাত ছাড়তেন না। (বুখারি: ১১৮১, ১১৮২)

অন্য হাদিসে এসেছে, ফজরের দুই রাকাত (সুন্নত) দুনিয়া ও দুনিয়ার মধ্যে যা কিছু আছে তার চেয়ে উত্তম। (মুসলিম : ৭২৫)

আল্লাহ তায়ালা রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সঠিকভাবে অনুসরণ করে বেশি বেশি সুন্নত ও নফল ইবাদত করার তাওফিক দান করুন। আমিন।