শিরোনাম :
Logo বীরগঞ্জে ক্ষমতার অপব্যবহারকারী ডিপিইও নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে মানববন্ধন। Logo টাকার জন্য হরিদাস বাবু’কে হয়রানী তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার অনুসন্ধানে প্রমাণ। Logo খুবির সঙ্গে গবেষণা সহযোগিতায় আগ্রহ জাপানি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের Logo শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার পথে ট্রাকের ধাক্কায় এনজিও কর্মীর মৃত্যু Logo সাতক্ষীরায় রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ তরুণী, থানায় সাধারণ ডায়েরি Logo আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস ২০২৫ উপলক্ষে কয়রায় র‍্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত Logo দর্শনা থানা পুলিশের মাদকবিরোধী অভিযান, ৪ কেজি গাঁজাসহ আটক ১ Logo জীবননগরে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস-২০২৫ উদযাপন Logo আইএফএডিকে বাংলাদেশের তরুণ কৃষি উদ্যোক্তাদের জন্য সামাজিক ব্যবসা তহবিল গঠনের প্রস্তাব প্রধান উপদেষ্টার Logo চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ডিঙ্গেদহ এলাকায় বিষাক্ত মদপানে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে।

ফিকাহ সংকলনে ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-এর কর্মপন্থা

  • নীলকন্ঠ অনলাইন নীলকন্ঠ অনলাইন
  • আপডেট সময় : ০৫:০১:৩০ অপরাহ্ণ, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • ৭৪৮ বার পড়া হয়েছে

ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-এর ওস্তাদ ছিলেন ইমাম হাম্মাদ (রহ.)। তাঁর ইন্তেকালের পর ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-এর অন্তরে ফিকাহ সংকলনের চিন্তা উদিত হয়। ততদিনে ইসলামী রাষ্ট্রের পরিসীমা সিন্ধু থেকে সেপন পর্যন্ত, আর আফ্রিকা থেকে এশিয়া মাইনর পর্যন্ত। সঙ্গত কারণে ইবাদত-আমল, সামাজিকতা ও লেনদেনের ক্ষেত্রে দিন দিন এত সমস্যার উদ্ভব হয়েছিল যে একটি বিন্যস্ত আইন বিধি ছাড়া শুধু বর্ণনার ভিভিতে জনসময়ে পর্যালোচনা করে সমাধানের ব্যবস্থা করা সম্ভব ছিল না। তাই ইমাম আবু হানিফা (রহ) এই দায়িত্ব পালনে এগিয়ে আসেন। তিনি ফিকাহ সংকলনের জন্য ৪০ জন তত্কালীন বিখ্যাত ইসলামী আইনজ্ঞের সমন্বয়ে বোর্ড গঠন করেন। এই ফিকাহ মজলিসে প্রশ্নের আলোকে কোনো মাসআলা উত্থাপন করে সদস্যদের প্রত্যেককে সে বিষয়ে মতামত পেশ করতে বলতেন এবং আলোচ্য বিষয়ে প্রত্যেকের অভিমত পর্যালোচনা করতেন। সদস্যবর্গ তাদের জ্ঞানগর্ব অভিমত, যুক্তি ও পাল্টা যুক্তি পেশ করতেন। তিনি মনোযোগসহ সবার মন্তব্য শুনতেন এবং নিজের অভিমত প্রকাশ করতেন। সদস্যদের সবাই কোনো প্রশ্নের জবাবে ঐকমত্য পোষণ করলে সর্বসম্মত সিদ্ধান্তরূপে তা নথিবদ্ধ করা হতো।

এই সিদ্ধান্তগুলো লিখন ও সংরক্ষণের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন আসাদ ইবনে ওমর, ইয়াহইয়া ইবনে জাকারিয়া ইবনে আবু জায়েদ এবং ইমাম আবু ইউসুফ (রহ.)। কোনো মাসআলায় মতপার্থক্য দেখা দিলে বিষয়টি নিয়ে পূর্ণ স্বাধীনতার সাথে তর্ক ও আলোচনা অনুষ্ঠিত হতো। যুক্তি, পাল্টা যুক্তির ধারায় কখনো কখনো একটি বিষয়ের আলোচনা চলত মাসের পর মাস ধরে। ইমাম আজম আবু হানিফা (রহ) অত্যন্ত নীরবতার সঙ্গে সবার যুক্তি-প্রমাণ শ্রবণ করতেন।

আলোচ্য বিষয়টি কোনো এক দিকে প্রাধান্য পেলে তা অভীষ্ট সিদ্ধান্তের রূপ পরিগ্রহ করত এবং তখন তা নথিবদ্ধ করা হতো। কখনো কখনো এমন হতো যে ইমাম সাহেবের সিদ্ধান্ত প্রদানের পর কোনো সদস্য স্বীয় অভিমতে অটল ও অবিচল থাকতেন তখন সেসব ভিন্ন মতামতসহ সকলের অভিমত নথিবদ্ধ করা হতো। আর মজলিসে দৃঢ়ভাবে এ নিয়ম মেনে চলা হতো যে বিশিষ্ট সদস্যরা সবাই উপস্থিত না হলে কোনো মাসআলার সিদ্ধান্ত গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হতো।

এভাবে দীর্ঘ ২২ বছর ফিকহ সংকলনে তিনি তাঁর অসামান্য অবদান রেখে যান এবং ‘হানাফি ফিকাহ’ সংকলন করেন। এ সংকলন সমষ্টিতে ৮৩ হাজার মাসআলা নথিবদ্ধ করা হয়েছিল। এ সকংলন সমষ্টির বিন্যাস ছিল প্রথমে তাহারাত, পরে সালাত অধ্যায় এবং ক্রমান্বয়ে অন্যান্য ইবাদতসমূহ। অতঃপর মুয়ামালাত ও অন্যান্য অধ্যায়। এ সংকলন সমষ্টি ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-এর জীবনদশাতেই সমাদৃত হয়। (সূত্র : ইসলামের ধর্মীয় নীতি ও প্রতিষ্ঠানসমূহ এবং সাহিত্য ও বিজ্ঞানের ক্রমোন্নতি)

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

বীরগঞ্জে ক্ষমতার অপব্যবহারকারী ডিপিইও নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে মানববন্ধন।

ফিকাহ সংকলনে ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-এর কর্মপন্থা

আপডেট সময় : ০৫:০১:৩০ অপরাহ্ণ, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-এর ওস্তাদ ছিলেন ইমাম হাম্মাদ (রহ.)। তাঁর ইন্তেকালের পর ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-এর অন্তরে ফিকাহ সংকলনের চিন্তা উদিত হয়। ততদিনে ইসলামী রাষ্ট্রের পরিসীমা সিন্ধু থেকে সেপন পর্যন্ত, আর আফ্রিকা থেকে এশিয়া মাইনর পর্যন্ত। সঙ্গত কারণে ইবাদত-আমল, সামাজিকতা ও লেনদেনের ক্ষেত্রে দিন দিন এত সমস্যার উদ্ভব হয়েছিল যে একটি বিন্যস্ত আইন বিধি ছাড়া শুধু বর্ণনার ভিভিতে জনসময়ে পর্যালোচনা করে সমাধানের ব্যবস্থা করা সম্ভব ছিল না। তাই ইমাম আবু হানিফা (রহ) এই দায়িত্ব পালনে এগিয়ে আসেন। তিনি ফিকাহ সংকলনের জন্য ৪০ জন তত্কালীন বিখ্যাত ইসলামী আইনজ্ঞের সমন্বয়ে বোর্ড গঠন করেন। এই ফিকাহ মজলিসে প্রশ্নের আলোকে কোনো মাসআলা উত্থাপন করে সদস্যদের প্রত্যেককে সে বিষয়ে মতামত পেশ করতে বলতেন এবং আলোচ্য বিষয়ে প্রত্যেকের অভিমত পর্যালোচনা করতেন। সদস্যবর্গ তাদের জ্ঞানগর্ব অভিমত, যুক্তি ও পাল্টা যুক্তি পেশ করতেন। তিনি মনোযোগসহ সবার মন্তব্য শুনতেন এবং নিজের অভিমত প্রকাশ করতেন। সদস্যদের সবাই কোনো প্রশ্নের জবাবে ঐকমত্য পোষণ করলে সর্বসম্মত সিদ্ধান্তরূপে তা নথিবদ্ধ করা হতো।

এই সিদ্ধান্তগুলো লিখন ও সংরক্ষণের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন আসাদ ইবনে ওমর, ইয়াহইয়া ইবনে জাকারিয়া ইবনে আবু জায়েদ এবং ইমাম আবু ইউসুফ (রহ.)। কোনো মাসআলায় মতপার্থক্য দেখা দিলে বিষয়টি নিয়ে পূর্ণ স্বাধীনতার সাথে তর্ক ও আলোচনা অনুষ্ঠিত হতো। যুক্তি, পাল্টা যুক্তির ধারায় কখনো কখনো একটি বিষয়ের আলোচনা চলত মাসের পর মাস ধরে। ইমাম আজম আবু হানিফা (রহ) অত্যন্ত নীরবতার সঙ্গে সবার যুক্তি-প্রমাণ শ্রবণ করতেন।

আলোচ্য বিষয়টি কোনো এক দিকে প্রাধান্য পেলে তা অভীষ্ট সিদ্ধান্তের রূপ পরিগ্রহ করত এবং তখন তা নথিবদ্ধ করা হতো। কখনো কখনো এমন হতো যে ইমাম সাহেবের সিদ্ধান্ত প্রদানের পর কোনো সদস্য স্বীয় অভিমতে অটল ও অবিচল থাকতেন তখন সেসব ভিন্ন মতামতসহ সকলের অভিমত নথিবদ্ধ করা হতো। আর মজলিসে দৃঢ়ভাবে এ নিয়ম মেনে চলা হতো যে বিশিষ্ট সদস্যরা সবাই উপস্থিত না হলে কোনো মাসআলার সিদ্ধান্ত গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হতো।

এভাবে দীর্ঘ ২২ বছর ফিকহ সংকলনে তিনি তাঁর অসামান্য অবদান রেখে যান এবং ‘হানাফি ফিকাহ’ সংকলন করেন। এ সংকলন সমষ্টিতে ৮৩ হাজার মাসআলা নথিবদ্ধ করা হয়েছিল। এ সকংলন সমষ্টির বিন্যাস ছিল প্রথমে তাহারাত, পরে সালাত অধ্যায় এবং ক্রমান্বয়ে অন্যান্য ইবাদতসমূহ। অতঃপর মুয়ামালাত ও অন্যান্য অধ্যায়। এ সংকলন সমষ্টি ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-এর জীবনদশাতেই সমাদৃত হয়। (সূত্র : ইসলামের ধর্মীয় নীতি ও প্রতিষ্ঠানসমূহ এবং সাহিত্য ও বিজ্ঞানের ক্রমোন্নতি)