যুক্তরাজ্যে টিউলিপের সম্পদ জব্দে কাজ করছে দুদক

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০২:৫৪:৩৪ অপরাহ্ণ, সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • ৭১২ বার পড়া হয়েছে
বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যুক্তরাজ্যে টিউলিপ সিদ্দিকের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার পরিকল্পনা করছে। দুদক বলছে, বিশ্বব্যাপী মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে টাকা অর্জিত হয়েছে। এক প্রতিবেদনে এমন তথ্যই দিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদপত্র টেলিগ্রাফ।

দুর্নীতি দমন কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা শেখ হাসিনার শাসনামলে বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার জন্য সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। দুদক মহাপরিচালক আখতার হোসেন জানিয়েছেন, তারা ‘বহু দেশের’ সঙ্গে এই তদন্ত নিয়ে কাজ করছে।

গত মাসে যুক্তরাজ্যের সিটি মিনিস্টারের পদ থেকে পদত্যাগের পরও টিউলিপ সিদ্দিকের সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা এবং তার খালা শেখ হাসিনার সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের নৈতিক উপদেষ্টা স্যার লরি ম্যাগনাসের তদন্তে জানা যায়, তিনি ভুলক্রমে এক ফ্ল্যাট সম্পর্কিত তথ্য গোপন করেছেন, যা আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত এক ব্যক্তির কাছ থেকে উপহার পেয়েছিলেন।

শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির মামলা তদন্তাধীন রয়েছে, যার মধ্যে টিউলিপ সিদ্দিকের নামও অন্তর্ভুক্ত। সবচেয়ে গুরুতর মামলাটি রাশিয়ার সঙ্গে ৪ বিলিয়ন পাউন্ডের পারমাণবিক চুক্তি থেকে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ সংক্রান্ত।

রোববার টেলিগ্রাফে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানা যায়, মানি লন্ডারিং তদন্তের পরিধি সম্প্রসারিত করে ১২টি দেশে অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে। এ বিষয়ে ব্রিটেনের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সির (এনসিএ) কর্মকর্তারা জানুয়ারির শেষ দিকে ঢাকা সফর করেন এবং দুদক কর্মকর্তাদের তদন্তে সহায়তা করেন।

দুদক মহাপরিচালক আখতার হোসেন বলেছেন, আমরা এখনও টিউলিপ সিদ্দিকের সম্পৃক্ততা তদন্ত করছি এবং বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে প্রতিবেদন প্রস্তুতের নির্দেশ দিয়েছি। আমাদের প্রাথমিক অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে লন্ডন ছাড়াও বিভিন্ন দেশে এই অর্থ স্থানান্তর করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, আমরা যথাযথ চ্যানেলের মাধ্যমে মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিসট্যান্স অনুরোধ পাঠানোর চেষ্টা করছি। বিদেশি সহযোগিতা পাওয়ার পর আমাদের তদন্ত দল পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করবে।

দুদকের মুখপাত্র জানিয়েছেন, ব্রিটেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং অন্যান্য দেশের সহযোগিতায় পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার জন্য কাজ চলছে। ইতোমধ্যে এই বিষয়ে একাধিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং তদন্ত দল আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অর্থ ফেরত আনার জন্য সক্রিয়ভাবে কাজ করছে।

অন্যদিকে, টিউলিপ সিদ্দিকের মুখপাত্র এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, এই অভিযোগের পক্ষে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি। টিউলিপ সিদ্দিককে এ বিষয়ে কেউ যোগাযোগ করেনি এবং তিনি সম্পূর্ণভাবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

যুক্তরাজ্যে টিউলিপের সম্পদ জব্দে কাজ করছে দুদক

আপডেট সময় : ০২:৫৪:৩৪ অপরাহ্ণ, সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যুক্তরাজ্যে টিউলিপ সিদ্দিকের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার পরিকল্পনা করছে। দুদক বলছে, বিশ্বব্যাপী মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে টাকা অর্জিত হয়েছে। এক প্রতিবেদনে এমন তথ্যই দিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদপত্র টেলিগ্রাফ।

দুর্নীতি দমন কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা শেখ হাসিনার শাসনামলে বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার জন্য সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। দুদক মহাপরিচালক আখতার হোসেন জানিয়েছেন, তারা ‘বহু দেশের’ সঙ্গে এই তদন্ত নিয়ে কাজ করছে।

গত মাসে যুক্তরাজ্যের সিটি মিনিস্টারের পদ থেকে পদত্যাগের পরও টিউলিপ সিদ্দিকের সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা এবং তার খালা শেখ হাসিনার সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের নৈতিক উপদেষ্টা স্যার লরি ম্যাগনাসের তদন্তে জানা যায়, তিনি ভুলক্রমে এক ফ্ল্যাট সম্পর্কিত তথ্য গোপন করেছেন, যা আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত এক ব্যক্তির কাছ থেকে উপহার পেয়েছিলেন।

শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির মামলা তদন্তাধীন রয়েছে, যার মধ্যে টিউলিপ সিদ্দিকের নামও অন্তর্ভুক্ত। সবচেয়ে গুরুতর মামলাটি রাশিয়ার সঙ্গে ৪ বিলিয়ন পাউন্ডের পারমাণবিক চুক্তি থেকে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ সংক্রান্ত।

রোববার টেলিগ্রাফে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানা যায়, মানি লন্ডারিং তদন্তের পরিধি সম্প্রসারিত করে ১২টি দেশে অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে। এ বিষয়ে ব্রিটেনের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সির (এনসিএ) কর্মকর্তারা জানুয়ারির শেষ দিকে ঢাকা সফর করেন এবং দুদক কর্মকর্তাদের তদন্তে সহায়তা করেন।

দুদক মহাপরিচালক আখতার হোসেন বলেছেন, আমরা এখনও টিউলিপ সিদ্দিকের সম্পৃক্ততা তদন্ত করছি এবং বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে প্রতিবেদন প্রস্তুতের নির্দেশ দিয়েছি। আমাদের প্রাথমিক অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে লন্ডন ছাড়াও বিভিন্ন দেশে এই অর্থ স্থানান্তর করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, আমরা যথাযথ চ্যানেলের মাধ্যমে মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিসট্যান্স অনুরোধ পাঠানোর চেষ্টা করছি। বিদেশি সহযোগিতা পাওয়ার পর আমাদের তদন্ত দল পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করবে।

দুদকের মুখপাত্র জানিয়েছেন, ব্রিটেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং অন্যান্য দেশের সহযোগিতায় পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার জন্য কাজ চলছে। ইতোমধ্যে এই বিষয়ে একাধিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং তদন্ত দল আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অর্থ ফেরত আনার জন্য সক্রিয়ভাবে কাজ করছে।

অন্যদিকে, টিউলিপ সিদ্দিকের মুখপাত্র এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, এই অভিযোগের পক্ষে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি। টিউলিপ সিদ্দিককে এ বিষয়ে কেউ যোগাযোগ করেনি এবং তিনি সম্পূর্ণভাবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।