নিউজ ডেস্ক:
আমাদের দেশের অনেক মা বোনকে দেখা যায়, আজানের ধ্বনি শোনামাত্র তারা মাথায় কাপড় দেন। এটা কি ইসলামের সঠিক রীতি কিনা? উত্তরে বলা যায়, এখানে দুটি বিষয় লক্ষ্যণীয়:
১. মাথায় কাপড় কখন দেয়া উচিৎ ? নারীদের মুখমণ্ডল ও হাতের কব্জি ছাড়া শরীরের সমস্ত কিছুই তাদের লজ্জাস্থান। যা গায়ের মাহরাম বা পরপুরুষের সামনে সর্বাবস্থায় ঢেকে রাখতেই হবে। কাজেই আজান শুনে নয় বরং মাহরাম ছাড়া অন্য যেকোনো পুরুষের সামনে মাথাসহ সমস্ত শরীর ভালভাবে ঢেকে রাখা ফরজ। আজানের সাথে মাথা ঢেকে ফেলার কোনো সম্পর্ক নেই।
২, আজানের ডাকে মেয়েদের মাথায় ঘোমটা টেনে দেয়ার প্রচলন অনেক আগ থেকেই। যদিও ইসলামে মেয়েদের ক্ষেত্রে সব সময়ই মাথা আবৃত করে রাখার আদেশ দেয়া আছে। তবে আজান শোনা গেলেই কেবল এ আদেশ পালনের হিড়িক পড়ে যায়। শুধু আজানের সময় মাথায় ঘোমটা দেয়ার বিষয়ে ইসলামে কোন নির্দেশনা আছে বলে আমার জানা নেই। এটা একটা সামাজিক প্রচলন। কেউ কেউ আবার অতিভক্তি থেকে আজানের সময় মাথা ঢেকে রাখেন। তবে অনেক ক্ষেত্রে এটা একেবারেই লোক-দেখানো একটা বিষয় বা কুসংস্কার বা অজ্ঞতা থেকে করে থাকেন। তা না হলে অন্য যেসব সময়ে মাথায় ঘোমটা দেয়া অত্যাবশ্যক সে সময়ে ঘোমটাহীন থেকে কেবল আজানের সময় ঘোমটা দিয়ে মাথা ঢাকার আর কী মানে থাকতে পারে? আজানের সময় খোশগল্প, গান শোনা এবং ইসলামনিষিদ্ধ অনেক কাজে লিপ্ত থেকে কেবল মাথায় ঘোমটা টেনে ধরলে সেটা কোন উপকারে আসবে বলে মনে হচ্ছে না। পর্দা কাউকে দেখানোর জন্য নয়, নিজেকে সংযত রাখার জন্য হওয়া উচিত। মাথায় কাপড় না দেওয়া প্রসঙ্গে ড. বিলাল ফিলিপস যা বলেছেন, ‘বর্তমান বিশ্বের অধিকাংশ মুসলিম যে ইসলাম পালন করে তা হচ্ছে বাপ দাদাদের সূত্রে পাওয়া ‘কালচারাল ইসলাম’, এই কালচারাল ইসলামের কিছু জিনিস যদিওবা সত্যিকারের ইসলামের সাথে মিলে যায়, অধিকাংশ জিনিসই বরং মিলে না। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, বিভিন্ন দেশের কালচারাল মুসলিম মহিলারা মাথায় কাপড় না দেয়াকে কোন পাপ মনে করে না বা এভাবে বাইরে চলাফেরা করা ও পরপুরুষের সামনে যাওয়াকে কোন লজ্জার বিষয় মনে করে না।’
তাহলে আজান শুনলে কি করা উচিৎ? উত্তর হচ্ছে আজানের ধ্বনি শুনে নারী-পুরুষ সবার করণীয় হল- আজানে যা বলা হতে থাকে তার জবাব দেয়া। এবং আজান শেষে এই দোয়া পাঠ করা– ‘আল্লা-হুম্মা রাব্বা হা-যিহিদ দা’অতিত্ তা-ম্মাহ, অসসালা- তিলক্বা-ইয়িমাহ, আ-তি মুহাম্মাদানিল অসীলাতা অনফাযীলাহ, অবাষহু মাক্বা-মাম মাহমুদানাল্লাযীঅয়াত্তাহ।’
অর্থ: ‘হে আল্লাহ এই পূর্ণাঙ্গ আহবান ও প্রতিষ্ঠা লাভকারী নামাজের প্রভু! মুহাম্মাদ (সাঃ) কে তুমি অসীলা (জান্নাতের একউচ্চ স্থান) ও মর্যাদা দান কর এবং তাঁকে সেই প্রশংসিত স্থানে পৌঁছাও, যার প্রতিশ্রুতি তুমি তাঁকে দিয়েছ।’(সহীহ মুসলিম ৩৮৬; তিরমিযী ২১০; নাসায়ী ৬৭৯; আবূ দাউদ ৫২৫; ইবনু মাজাহ ৭২১; আহমাদ১৫৬৮)