নীলকন্ঠ ডেক্সঃ
আষাঢ় মাসের শেষ সময়ে রাজশাহীতে মৌসুমের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড করা হয়েছে। বৃষ্টিতে নগরীতে জলাবদ্ধতায় ভোগান্তি তৈরি হলেও চাষিরা উপকৃত হবেন। বিশেষত মাছ চাষের জন্য এ বৃষ্টি আর্শিবাদ। এছাড়া আমন ধান রোপণ ও পাট কাটার সময় এখন। এসময় পানির খুব দরকার। গত কয়েক বছরে পানির অভাবে চাষিরা পাট জাগ দিতে পারেননি। তাই এ বৃষ্টিতে ডোবা নালা খাল পুকুরে জমে থাকা পানিতে চাষিরা সহজেই পাট জাগ দিতে পারবেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিট থেকে শুরু হয়ে শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত প্রায় ১২ ঘণ্টার বৃষ্টিতে চলতি বর্ষা মৌসুমে রাজশাহীতে সর্বোচ্চ ১৩৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের রেকর্ড করা হয়েছে। এমন বৃষ্টিতে সবচেয়ে লাভবান হয়েছেন কৃষক। উপকৃত হয়েছেন মাছ চাষিরাও। তবে দীর্ঘ খরার পর এমন বৃষ্টির কারণে মরিচ, ঝিঙ্গা ও করোল্লার অনেক ক্ষতি হয়েছে বলে গতকাল দাবি করেছেন, রাজশাহীর পবা উপজেলার সফল কৃষক আহসান হাবীব। যার প্রভাব আগামী দুয়েক দিনের মধ্যেই নিত্যপ্রয়োজনীয় বাজারে পড়বে বলেও শঙ্কা করা হচ্ছে।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গত ২৯ জুন রাজশাহীতে ১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। এর পরের দিন ৩০ জুন রাজশাহীতে বৃষ্টিপাত হয়েছিল ৩০ দশমিক ৬ মিলিমিটার। এরপর গত ১ জুলাই ৭ দশমিক ৪ মিলিমিটার এবং ৩ জুলাই ৫৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে রাজশাহীতে বৃষ্টিপাত শুরু হয়। যেটি কখনো গুঁড়ি গুঁড়ি আকারে আবার কখনো মুষলধারে। তবে দীর্ঘক্ষণ বৃষ্টির মধ্যে বেশির ভাগ সময় মুষলধারে বৃষ্টিপাত হয়েছে।
এদিকে, সর্বশেষ বৃহস্পতিবার থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত চলা বৃষ্টিপাতের ফলে রাজশাহী নগরীর লক্ষীপুর, ভাটাপাড়া, ডিঙ্গাডোবা ব্যাংক কলোনি, বর্ণালী মোড়, উপশহর, সপুরা, সাহেব বাজার, তালাইমারী, ভদ্রাসহ অধিকাংশ এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা যায়। তবে এ নগরীর ড্রেনেজব্যবস্থা আগের চেয়ে অনেকাংশ ভালো হওয়ায় রাতের মধ্যেই জলাবদ্ধতা কেটে যায়। আর নগরীর ফ্লাইওভারসহ বিভিন্ন সড়কেরই উন্নয়নকাজ চলমান থাকায় কিছু কিছু এলাকার জলাবদ্ধতা কাটতে অনেকটাই সময় লাগছে। তবে চলমান সড়কের উন্নয়ন কাজগুলো শেষ হয়ে গেলে জলাবদ্ধতা সেভাবে দেখা যাবে না বলে মন্তব্য নগরীর সচেতন মহলের।
সর্বশেষ বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে শুরু হওয়া প্রায় ১২ ঘণ্টার ধারাবাহিক বৃষ্টিপাতের বিষয়ে রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক শহিদুল ইসলাম বলেন, এ সময়ের মধ্যে রাজশাহীতে ১৩৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ সময় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির চেয়ে মুষলধারে বৃষ্টিপাতের সময়টি বেশি ছিল। এটি মৌসুমের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত। এর আগে গত ৩ জুলাই বৃষ্টিপাত হয়েছিল ৫৮ মিলিমিটার।
এ বিষয়ে রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোছা. উম্মে ছালমা বলেন, আষাঢ়ের শেষ সময়ের এমন বৃষ্টিতে কৃষকের অনেক উপকার হয়েছে। অধিকাংশ ফসলের জন্য এ বৃষ্টি কাজে আসবে। বর্তমানে জমিতে কৃষকের ক্ষতি হওয়ার মতো উল্লেখযোগ্য কোনো ফসল নেই। তবে যে সব ফসলের জমিতে দীর্ঘ সময় পানি আটকে থাকলে ক্ষতির শঙ্কা রয়েছে সে সব জমি থেকে পানি বের করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। যদিও এমন সাধারণ বিষয় এখনকার কৃষকরা খুব ভালোভাবে জনেন বলেও জানান এ কৃষিবিদ।