ভিডিওতে দেখা যায়, কালীগঞ্জ খাদ্যগুদাম থেকে ৪টি শ্যালো ইঞ্জিনচালিত নসিমনযোগে ২৬৪ বস্তা ভিজিএফ কর্মসূচির চাল নিয়ে যাওয়া হচ্ছে মহেশপুরের খালিশপুরে। প্রতি গাড়িতে ৬৬ বস্তা ভিজিএফ কর্মসূচির চাল বহন করা হচ্ছে। পাচারকৃত বস্তায় খাদ্য অধিদপ্তরের স্টিকারযুক্ত সিলমোহর রয়েছে। গাড়ি চালকের কাছে পাওয়া ডিও লেটারে উল্লেখ আছে চালগুলো কালীগঞ্জ উপজেলার ৪ নম্বর নিয়ামতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাজু আহমেদ রনি লস্কর, ৬ নম্বর ত্রিলোচনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম ঋতু হিজড়া ও ৮ নম্বর মালিয়াট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান খানের নামে বরাদ্দ।
গত ১২ জুন চালগুলো কালীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন থেকে বরাদ্দ দেওয়া হয় এবং চাল বিতরণের মেয়াদ ৩০ জুন পর্যন্ত। এই চালের মধ্যে চেয়ারম্যান রাজু আহমেদ রনি লস্করের ২.৫ মেট্রিক টন, চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম ঋতু হিজড়ার ৩ মেট্রিক টন ও আজিজুর রহমান খানের ২ মেট্রিক টন বরাদ্দ দেওয়া হয়।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কালীগঞ্জ খাদ্যগুদাম থেকে এ চাল দরিদ্র মানুষের জন্য বিশেষ বরাদ্দ দেয়া হয়। যা ঈদুল আজহার আগেই গরীব ও দুস্থ মানুষদের মাঝে বিতরণ করা কথা।
প্রত্যক্ষদর্শী রাকিবুল ইসলাম রকি জানান, কালীগঞ্জ খাদ্যগুদাম থেকে চালগুলো মহেশপুর উপজেলা খালিশপুর বাজারের দীপুর দোকানে নিয়ে যাচ্ছিল। মোট ৪ গাড়ি চাল খাদ্যগুদাম থেকে পাচার করা হয়। প্রতি গাড়িতে ৬৬ বস্তা চাল ছিল। এ বিষয়ে কালীগঞ্জের নিয়ামতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাজু আহমেদ রনি লস্কর বলেন, ‘বিষয়টি আমি জানি না। খোঁজ নিয়ে জানাচ্ছি।’ ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম ঋতু হিজড়ার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘ফোনে আমি কিছুই বলব না। আপনি সরাসরি ইউনিয়নে আসলে সব খুলে বলব।’
বিষয়টি জানতে কালীগঞ্জের ৮ নম্বর মালিয়াট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান খানের মোবাইলে একাধিক বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। কালীগঞ্জ উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মাহদী হাসান শিহাব বলেন, গত ১৫ জুন সরকারি বরাদ্দের চাল গুদাম থেকে দেওয়া হয়েছে। ডিও লেটার দেখালে আমরা চাল প্রদান করি। তবে এখন এই চাল কে কোথায় বিক্রি করেছে, সেটা আমি জানি না।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ইশরাত জাহান বলেন, এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্তে কেউ দোষী হলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরও জানান, এই চালগুলো ভিজিএফ না অন্য কোনো বরাদ্দের চাল কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে তদন্তের পরই সব জানা যাবে।