কয়রাডাঙ্গা থেকে ট্রাক নিয়ে খুলনায় যাওয়া পিতা-পুত্রের ওপর হামলার ঘটনা
নিউজ ডেস্ক:খুলনায় আলমডাঙ্গা উপজেলার কয়রাডাঙ্গা গ্রামের পিতা-পুত্রের ওপর হামলার সঙ্গে জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার ভোর পাঁচটার দিকে হাতিকাটা ও আলুকদিয়া এলাকায় খুলনা ও চুয়াডাঙ্গা সদর থানার পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করে। পরে খুলনা পুলিশ গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের তাঁদের নিজ হেফাজতে খুলনা থানায় নিয়ে যায়। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন রফিকুল ইসলাম হ্যাপি (৩৪), ইয়াছিন আলী (৩২) ও রাকিব উদ্দীন রিয়াদ (৩২)।
জানা যায়, খুলনায় বাঁশবোঝাই ট্রাকে পিতা-পুত্রের ওপর হামলা চালায় এক দল সন্ত্রাসী। ওই হামলায় ঘটনাস্থলেই নিহত হন পিতা সমশের ম-ল। নিহত সমশের ম-ল চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার কয়রাডাঙ্গা গ্রামের মৃত তমেজ আলীর ছেলে। সন্ত্রাসীদের হামলায় নিহত সমশের ম-লের ছেলে রোকনুজ্জামান রোকনও গুরুত্বর জখম হন। পরে খানজাহান আলী থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহত সমশের ম-লের লাশ উদ্ধারসহ আহত রোকনকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। ওই ঘটনায় তদন্তে নামে খুলনা পুলিশ। তদন্তের অল্প সময় পরই তারা হামলাকারীদের বিষয়ে সন্ধান পান। পরে খুলনা গোয়েন্দা বিভাগের উপপরিদর্শক (এসআই) বদিউজ্জামান ফোর্স নিয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার পুলিশের সহায়তায় আলুকদিয়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানকালে একই এলাকার মৃত রজব আলীর ছেলে ট্রাকচালক রকিবুল ইসলাম হ্যাপিকে তাঁর নিজ বসতবাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করেন। এ সময় তাঁর অপর সহযোগীদের নামও স্বীকার করেন গ্রেপ্তার হ্যাপি। পরে অভিযানকারী দল আলুকদিয়া এলাকার মৃত মাহাবুব উদ্দীনের ছেলে মাইক্রোবাসচালক রাকিব উদ্দীন রিয়াদ ও হাতিকাটা এলাকার মৃত মতলেব ম-লের ছেলে মুরগির ব্যবসায়ী ইয়াছিন আলীকে গ্রেপ্তার করে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা হেফাজতে নেয়। এরপর খুলনা পুলিশ গ্রেপ্তার আসামিদের তাদের হেফাজতে খুলনায় নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) লুৎফুল কবীর বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া আসামিরা আলমডাঙ্গা উপজেলার কয়রাডাঙ্গা গ্রামের সমশের ম-লকে হত্যা ও তাঁর ছেলে রোকনের ওপর হামলার সঙ্গে জড়িত। তিনি আরও বলেন, খুলনা পুলিশ চুয়াডাঙ্গাতে এসে আসামিদের বিষয়ে তথ্য দেওয়াসহ তাঁদের গ্রেপ্তারে সহযোগিতা চায়। পরে সদর থানা পুলিশ তাঁদের সহযোগিতা করে হাতিকাটা ও আলুকদিয়া এলাকার তিনজনকে গ্রেপ্তার করে থানা হেফাজতে নেয়। এরপর গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের খুলনা পুলিশের হেফাজতে দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, গত রোববার ট্রাকের চালক অসুস্থ থাকায় ট্রাকের মলিক নিহত সমশের ম-ল ছেলে রোকনকে বলেছিলেন, আলমডাঙ্গার কয়রাডাঙ্গা, পীরপুর ও ব্রিজ মোড় এলাকা থেকে ট্রাকে বাঁশ লোড করতে। ট্রাকে বাঁশ লোড করা হয়ে গেলে সমশের ম-ল ও ছেলে রোকন ট্রাক নিয়ে খুলনার উদ্দেশে রওনা দেন। পরদিন সোমবার ভোরে তাঁরা খুলনার খানজাহান আলী থানার রূপসা সেতুর বাইপাস সড়কের পাশে চিংড়িখারী এলাকায় পৌঁছালে এক দল সন্ত্রাসী তাঁদের ওপর হামলা চালায়। এ ঘটনায় ঘটনাস্থলেই নিহত হন সমশের ম-ল। এ ছাড়াও ছেলে রোকন গুরুতর জখম হন। পরে খানজাহান আলী থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহত সমশের ম-লের লাশ উদ্ধার করাসহ রোকনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেলে ভর্তি করে। এরপর আহত রোকনের উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেলের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে ঢাকায় স্থানান্তর করেন।