কি কারনে কমে যাচ্ছে ঝিনাইদহে সোনালী আশ পাট চাষ !

  • Nil Kontho
  • আপডেট সময় : ১১:৫৩:০১ অপরাহ্ণ, রবিবার, ৮ জুলাই ২০১৮
  • ৭৩০ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব সংবাদাতা জাহিদুর রহমান তারিক,ঝিনাইদহঃ আশ পাশের জেলা গুলোর মধ্যে পাট চাষে কয়েক বছর আগেও বেশ এগিয়ে ছিলো ঝিনাইদহ জেলা। তবে দামের তুলনায় উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় এ বছর এই জেলায় পাটের চাষ কমেছে। এছাড়া পাট পচনের স্থান স্বল্পতায় চাষিদের মধ্যে পাট চাষে আগ্রহ কমেছে। বৈরি আবহাওয়ার কারণেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অনেক চাষি। ঝিনাইদহ জেলা কৃষি স¤প্রসরাণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, জেলার ছয় উপজেলায় গত বছর পাটের আবাদ হয়েছিল ২৪ হাজার একশ ৭২ হেক্টর জমিতে। আর চলতি মৌসুমে আবাদ হয়েছে ১৫ হাজার চারশ ৮০ হেক্টর জমিতে। গত বছরের তুলনায় এ বছর আবাদ কমেছে ৮ হাজার ছয়শ ৯২ হেক্টর জমিতে। জানা যায়, বেশ কয়েক বছর আগে দেশের অন্যান্য এলাকার মত ঝিনাইদহের চাষিরা পাট চাষ একেবারেই কমিয়ে দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে দাম বাড়ার পর পাট চাষের দিকে ঝুঁকে পড়েন এই অঞ্চলের কৃষকরা। তবে গত দু-তিন বছর ধরে পাট চাষ করে উৎপাদন খরচ উঠছে না চাষিদের। ক্ষেত থেকে পাট কাটা, বহন করে এনে নদী, বিল, খাল ও পুকুরে জাগ দিতে অনেক টাকা ব্যয় হয়। যে কারণে চলতি মৌসুমে পাটের আবাদ কমিয়ে দিয়ে অন্য ফসলের দিকে ঝুঁকছেন কৃষকরা। ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার পার্বতীপুর গ্রামের চাষি নাজির উদ্দিন বলেন, ‘এক বিঘা জমিতে পাট চাষে ১৬-১৭ হাজার টাকা ব্যয় হয়। বিঘাতে পাট হয় ১০-১২ মণ। প্রতিমণ পাট বিক্রি হয় এক হাজার থেকে ১৪শ টাকা পর্যন্ত । এ দামে পাট বিক্রি করে উৎপাদন খরচ উঠে না। গত বছর আমি ২৫ কাঠা জমিতে পাট চাষ করেছিলাম। এবার কমিয়ে ১৬ কাঠা চাষ করেছি।’ একই উপজেলা বিজুলিয়া গ্রামের চাষি বাচ্চু মোল্লা বলেন, ‘গত বছর আমি সাড়ে ৯ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছিলাম। এবার কমিয়ে ৭ বিঘা চাষ করেছি। বৃষ্টির কারণে ৫ বিঘা জমির পাট নষ্ট হয়ে গেছে।’ সদর উপজেলার কাষ্টসাগরা গ্রামের কৃষক এনামুল হক বলেন, ‘এবার তিন বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছিলাম। শিলাবৃষ্টিতে পাটের ডগা ভেঙে গেছে। গাছের বাড়তি থেমে গেছে। কয়েক দিন অপেক্ষা করব। গাছ না বাড়লে ক্ষেত মেরে ধান চাষ করবো।’ এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক জি এম আব্দুর রউফ বলেন, ‘চাষিরা ধান চাষে ঝুঁকে পড়ায় পাট চাষ কমেছে। শিলাবৃষ্টি ও বৈরি আবহাওয়ার কারণে পাটের ক্ষতি হয়েছে। এরপরও কৃষকদের পাট চাষে আগ্রহ বাড়াতে নানাভাবে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

কি কারনে কমে যাচ্ছে ঝিনাইদহে সোনালী আশ পাট চাষ !

আপডেট সময় : ১১:৫৩:০১ অপরাহ্ণ, রবিবার, ৮ জুলাই ২০১৮

নিজস্ব সংবাদাতা জাহিদুর রহমান তারিক,ঝিনাইদহঃ আশ পাশের জেলা গুলোর মধ্যে পাট চাষে কয়েক বছর আগেও বেশ এগিয়ে ছিলো ঝিনাইদহ জেলা। তবে দামের তুলনায় উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় এ বছর এই জেলায় পাটের চাষ কমেছে। এছাড়া পাট পচনের স্থান স্বল্পতায় চাষিদের মধ্যে পাট চাষে আগ্রহ কমেছে। বৈরি আবহাওয়ার কারণেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অনেক চাষি। ঝিনাইদহ জেলা কৃষি স¤প্রসরাণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, জেলার ছয় উপজেলায় গত বছর পাটের আবাদ হয়েছিল ২৪ হাজার একশ ৭২ হেক্টর জমিতে। আর চলতি মৌসুমে আবাদ হয়েছে ১৫ হাজার চারশ ৮০ হেক্টর জমিতে। গত বছরের তুলনায় এ বছর আবাদ কমেছে ৮ হাজার ছয়শ ৯২ হেক্টর জমিতে। জানা যায়, বেশ কয়েক বছর আগে দেশের অন্যান্য এলাকার মত ঝিনাইদহের চাষিরা পাট চাষ একেবারেই কমিয়ে দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে দাম বাড়ার পর পাট চাষের দিকে ঝুঁকে পড়েন এই অঞ্চলের কৃষকরা। তবে গত দু-তিন বছর ধরে পাট চাষ করে উৎপাদন খরচ উঠছে না চাষিদের। ক্ষেত থেকে পাট কাটা, বহন করে এনে নদী, বিল, খাল ও পুকুরে জাগ দিতে অনেক টাকা ব্যয় হয়। যে কারণে চলতি মৌসুমে পাটের আবাদ কমিয়ে দিয়ে অন্য ফসলের দিকে ঝুঁকছেন কৃষকরা। ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার পার্বতীপুর গ্রামের চাষি নাজির উদ্দিন বলেন, ‘এক বিঘা জমিতে পাট চাষে ১৬-১৭ হাজার টাকা ব্যয় হয়। বিঘাতে পাট হয় ১০-১২ মণ। প্রতিমণ পাট বিক্রি হয় এক হাজার থেকে ১৪শ টাকা পর্যন্ত । এ দামে পাট বিক্রি করে উৎপাদন খরচ উঠে না। গত বছর আমি ২৫ কাঠা জমিতে পাট চাষ করেছিলাম। এবার কমিয়ে ১৬ কাঠা চাষ করেছি।’ একই উপজেলা বিজুলিয়া গ্রামের চাষি বাচ্চু মোল্লা বলেন, ‘গত বছর আমি সাড়ে ৯ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছিলাম। এবার কমিয়ে ৭ বিঘা চাষ করেছি। বৃষ্টির কারণে ৫ বিঘা জমির পাট নষ্ট হয়ে গেছে।’ সদর উপজেলার কাষ্টসাগরা গ্রামের কৃষক এনামুল হক বলেন, ‘এবার তিন বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছিলাম। শিলাবৃষ্টিতে পাটের ডগা ভেঙে গেছে। গাছের বাড়তি থেমে গেছে। কয়েক দিন অপেক্ষা করব। গাছ না বাড়লে ক্ষেত মেরে ধান চাষ করবো।’ এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক জি এম আব্দুর রউফ বলেন, ‘চাষিরা ধান চাষে ঝুঁকে পড়ায় পাট চাষ কমেছে। শিলাবৃষ্টি ও বৈরি আবহাওয়ার কারণে পাটের ক্ষতি হয়েছে। এরপরও কৃষকদের পাট চাষে আগ্রহ বাড়াতে নানাভাবে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’