বেলকুচিতে ৮ শতক জমি নিয়ে হামলা-মামলার অভিযোগ

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০৬:২২:০৫ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ১২ আগস্ট ২০২৫
  • ৭১৩ বার পড়া হয়েছে

নজরুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:

সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে ৮ শতক জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ, হামলা ও মামলার ঘটনা চলমান রয়েছে। ক্রয়কৃত সম্পত্তির বৈধ দলিল থাকা সত্ত্বেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে জমি বুঝিয়ে না দেওয়ায় মালিক নুরনবী সরকার ও ওসমান গনি প্রামানিক বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে ডেপুটি কমিশনার বরাবর মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্ত, শুনানি ও যুক্তিতর্ক শেষে ২০২২ সালের ২ নভেম্বর আদালত প্রকৃত মালিকদের পক্ষে রায় দিয়ে খাজনা খারিজ নেওয়ার নির্দেশ দেয়। এ সংক্রান্ত আদেশ বাস্তবায়নের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর অনুলিপি প্রেরণ করা হয়।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, জমির খাজনা দিতে গেলে ধুকুড়িয়া বেড়া ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা তা গ্রহণ না করে উল্টো বেদখলকারী পক্ষকে ডেকে বসতবাড়ি উচ্ছেদের পরামর্শ দেন। এরপর বেদখলকারী পক্ষ দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে প্রকৃত মালিকের বসতবাড়ি ও দোকানপাট ভাঙচুর করে।
এ ঘটনায় ক্ষমতার অপব্যবহার ও পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠেছে ধুকুড়িয়া বেড়া ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা হারুনর রশিদের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীরা ২২ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা আসামিদের অন্তর্ভুক্ত করে বেলকুচি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এসএ রেকর্ড অনুযায়ী প্রকৃত মালিকদের কাছ থেকে তিনটি দলিলের মাধ্যমে নুরনবী সরকার ও ওসমান গনি প্রামাণিক একটি জমি ক্রয় করেন। তবে আরএস রেকর্ডে উক্ত সম্পত্তির মালিকানা সরকারের নামে থাকায় তারা আদালতে মামলা করেন। আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও এখনো জমি তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়নি। এ বিষয়ে এলাকায় একাধিকবার মীমাংসার চেষ্টা হলেও কোনো সমাধান হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, গত ৩১ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) অবৈধ স্থাপনার দোকানের তালিকা নিতে গেলে দোকানীরা ভূমি কর্মকর্তার কাছে কারণ জানতে চান। তখন ওই কর্মকর্তা তাদের জানান, আমার কিছু করার নেই, যদি দোকান রক্ষা করতে চান তবে বৈধ মালিকদের সরিয়ে দিন। পরে আদালতের স্বীকৃতি থাকা সত্ত্বেও প্রকৃত মালিকদের দোকান ও বসতবাড়ি ভাঙচুর করে অবৈধ দখলকারীরা।
ধুকুড়িয়া বেড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যানের ভাই সাইফুল ইসলাম বলেন, ভুক্তভোগীদের বিপক্ষে অনেকেই আছে। দফায় দফায় বিচার শালিসে তারাই আমাকে ডেকেছে। কিন্তুু তাদের পাশে লোক না থাকায় তাদের ন্যায্য হিস্যা বুঝে পাচ্ছে না। দিনের পর দিন মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে।
এ বিষয়ে ধুকুড়িয়া বেড়া ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা হারুনর রশিদ বলেন, আদালতে টাকা-পয়সা খরচ করে একতরফা রায় এনে জমির দাবি করছে নুরনবী ও ওসমান গনি। সরকারের পক্ষ থেকে ওই মামলায় ইতোমধ্যে আপত্তি (ছানি) দাখিল করা হয়েছে। তাই আদালতের দেওয়া রায় এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তিনি আরও বলেন, বেদখলকৃত দোকান উচ্ছেদের বিষয়ে কিছু দোকান মালিক আমার কাছে এসে জানতে চেয়েছিলেন—রায় পাওয়া মালিকদের দোকান ও বসতঘর ভেঙে দেব কি না। এ বিষয়ে আমি কোনো নির্দেশ বা মন্তব্য করিনি।
বেলকুচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হাই বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। মিমাংসার জন্য উভয়পক্ষকে ডেকেছি। আশা করছি দ্রুতই বিষয়টি নিষ্পত্তি হবে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

বেলকুচিতে ৮ শতক জমি নিয়ে হামলা-মামলার অভিযোগ

আপডেট সময় : ০৬:২২:০৫ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ১২ আগস্ট ২০২৫

নজরুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:

সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে ৮ শতক জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ, হামলা ও মামলার ঘটনা চলমান রয়েছে। ক্রয়কৃত সম্পত্তির বৈধ দলিল থাকা সত্ত্বেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে জমি বুঝিয়ে না দেওয়ায় মালিক নুরনবী সরকার ও ওসমান গনি প্রামানিক বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে ডেপুটি কমিশনার বরাবর মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্ত, শুনানি ও যুক্তিতর্ক শেষে ২০২২ সালের ২ নভেম্বর আদালত প্রকৃত মালিকদের পক্ষে রায় দিয়ে খাজনা খারিজ নেওয়ার নির্দেশ দেয়। এ সংক্রান্ত আদেশ বাস্তবায়নের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর অনুলিপি প্রেরণ করা হয়।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, জমির খাজনা দিতে গেলে ধুকুড়িয়া বেড়া ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা তা গ্রহণ না করে উল্টো বেদখলকারী পক্ষকে ডেকে বসতবাড়ি উচ্ছেদের পরামর্শ দেন। এরপর বেদখলকারী পক্ষ দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে প্রকৃত মালিকের বসতবাড়ি ও দোকানপাট ভাঙচুর করে।
এ ঘটনায় ক্ষমতার অপব্যবহার ও পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠেছে ধুকুড়িয়া বেড়া ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা হারুনর রশিদের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীরা ২২ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা আসামিদের অন্তর্ভুক্ত করে বেলকুচি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এসএ রেকর্ড অনুযায়ী প্রকৃত মালিকদের কাছ থেকে তিনটি দলিলের মাধ্যমে নুরনবী সরকার ও ওসমান গনি প্রামাণিক একটি জমি ক্রয় করেন। তবে আরএস রেকর্ডে উক্ত সম্পত্তির মালিকানা সরকারের নামে থাকায় তারা আদালতে মামলা করেন। আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও এখনো জমি তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়নি। এ বিষয়ে এলাকায় একাধিকবার মীমাংসার চেষ্টা হলেও কোনো সমাধান হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, গত ৩১ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) অবৈধ স্থাপনার দোকানের তালিকা নিতে গেলে দোকানীরা ভূমি কর্মকর্তার কাছে কারণ জানতে চান। তখন ওই কর্মকর্তা তাদের জানান, আমার কিছু করার নেই, যদি দোকান রক্ষা করতে চান তবে বৈধ মালিকদের সরিয়ে দিন। পরে আদালতের স্বীকৃতি থাকা সত্ত্বেও প্রকৃত মালিকদের দোকান ও বসতবাড়ি ভাঙচুর করে অবৈধ দখলকারীরা।
ধুকুড়িয়া বেড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যানের ভাই সাইফুল ইসলাম বলেন, ভুক্তভোগীদের বিপক্ষে অনেকেই আছে। দফায় দফায় বিচার শালিসে তারাই আমাকে ডেকেছে। কিন্তুু তাদের পাশে লোক না থাকায় তাদের ন্যায্য হিস্যা বুঝে পাচ্ছে না। দিনের পর দিন মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে।
এ বিষয়ে ধুকুড়িয়া বেড়া ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা হারুনর রশিদ বলেন, আদালতে টাকা-পয়সা খরচ করে একতরফা রায় এনে জমির দাবি করছে নুরনবী ও ওসমান গনি। সরকারের পক্ষ থেকে ওই মামলায় ইতোমধ্যে আপত্তি (ছানি) দাখিল করা হয়েছে। তাই আদালতের দেওয়া রায় এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তিনি আরও বলেন, বেদখলকৃত দোকান উচ্ছেদের বিষয়ে কিছু দোকান মালিক আমার কাছে এসে জানতে চেয়েছিলেন—রায় পাওয়া মালিকদের দোকান ও বসতঘর ভেঙে দেব কি না। এ বিষয়ে আমি কোনো নির্দেশ বা মন্তব্য করিনি।
বেলকুচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হাই বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। মিমাংসার জন্য উভয়পক্ষকে ডেকেছি। আশা করছি দ্রুতই বিষয়টি নিষ্পত্তি হবে।