নিউজ ডেস্ক:
আমরা অনেক সময় মজা করে বলি, এটা পরিচালকের চোখ, ক্যামেরার চেয়ে কম নয়! কিন্তু এমন মজাও যে বাস্তব হতে পারে কে সেটা জানতো?
রব স্পেন্স নামের জনৈক পরিচালকের একটি চোখ নষ্ট ছিল। তিনি এক চোখ নিয়েই পরিচালনার কাজ চালিয়ে যেতেন। তিনি মূলত ডকুমেন্টারি তৈরির জন্য বিখ্যাত। সম্প্রতি তিনি ‘আইবর্গ’ প্রজেক্ট নিয়ে কাজ শুরু করেছেন।
আইবর্গ শব্দটি সাইবর্গ থেকে এসেছে, যার মানে হলো মানুষের দেহে কৃত্রিম যন্ত্র স্থাপন। অর্থাৎ যার হাত নেই সেখানে রোবটিক হাত কিংবা যার পা নেই সেখানে যান্ত্রিক লাগানো। আর যেহেতু এই ডকুমেন্টারি চোখ দিয়ে ধারণ করা হবে সেহেতু এর নাম করা হয়েছে আইবর্গ।
সে যাই হোক, রব স্পেন্স যখন দেখলেন আসলে তিনি নিজেই বিজ্ঞানভিত্তিক কল্পকাহিনিতে অনুপ্রাণিত, সেহেতু এর প্রয়োগ নিজের দেহেই শুরু করলেন। তিনি তার নষ্ট চোখটি একটি কৃত্রিম চোখ দ্বারা প্রতিস্থাপন করলেন। ফিল বয়েন নামের একজন প্রথমে তার কৃত্রিম চোখের ডিজাইন করেন। এরপর কস্তা গ্রামাটিস নামের একজন বহুমাত্রিক গুণের অধিকারী প্রকৌশলী বাকি কাজ এগিয়ে নেন, এই কৃত্রিম চোখকে ক্যামেরায় রুপ দিতে।
কিন্তু কৃত্রিম চোখের ক্যামেরায় ফুটেজ শুধু ধারণ করলেই হবে? ফুটেজ বাইরে এনে ব্যবহার তো করতে হবে। তাছাড়া রবের এই চোখ কিন্তু মস্তিষ্কের সঙ্গে যুক্ত নয়। এটা সম্পূর্ণই কৃত্রিম। কিছু কৃত্রিম চোখ আছে যা মস্তিষ্কের সঙ্গে যুক্ত হয়ে আসল চোখের ন্যায় কাজ করে। কিন্তু রব চাইছিলেন চোখ তার ক্যামেরা হয়েই কাজ করুক! এরপর দৃশ্যপটে আসেন তড়িৎ প্রকৌশলী মার্টিন লিং। বলা যায় ইনিই আসল কাজটি করেন। ‘আর এফ ট্রান্সমিট’ প্রযুক্তির কল্যানে এই চোখে ক্ষুদ্র ব্যাটারির সাহায্যে একে ওয়াই-ফাই বা তারহীন ভাবে যুক্ত করতে সক্ষম হন।
যার মানে দাঁড়াল, রব স্পেন্স চোখে যা দেখবেন তা শুধু ধারণই হবে না, সেই ফুটেজ সংগ্রহ করে ডকুমেন্টারি তৈরি করা যাবে। চোখই তার ভিডিও ক্যামেরা! এভাবেই একজন পরিচালক ক্যামেরাকে তার দেহের অবিচ্ছেদ্য অংশ করে ফেললেন। সাধারণত কোনো ব্যক্তি কোনো কাজ ভালোবাসলে সেটাতে মজে যান। তার শয়নে স্বপনে শুধু সেটাই বিরাজ করে। কিন্তু তাই বলে দেহের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ? রব স্পেন্সই হয়তো প্রথম ব্যক্তি যিনি তার ভালোবাসাকে দেহে স্থান দিলেন !