শনিবার | ১৫ নভেম্বর ২০২৫ | হেমন্তকাল
শিরোনাম :
Logo সুদানে অর্ধেকের বেশি মানুষের মানবিক সাহায্য প্রয়োজন Logo শেখ হাসিনার রায়কে কেন্দ্র করে সতর্ক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা Logo ইবিতে বার্ষিক ক্রীড়া উৎসবের উদ্বোধন! Logo রোটারী ক্লাব অব চাঁদপুর হিলশা সি‌টির ফ্রি মে‌ডি‌কেল ক‌্যাম্প ও ‌শিক্ষা উপকরণ বিতরণ Logo চাঁদপুরে ড্যাবের আয়োজনে ৭ নং ওয়ার্ডে সহস্রাধিক রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও ওষুধ প্রদান Logo পঞ্চগড় সীমান্তে বিজিবির অভিযানে টাকা সহ ভারতীয় শাড়ী ও শাল চাদর আটক। Logo নোবিপ্রবিতে রাতের আঁধারে বিশ্ববিদ্যালয় বাসের তেল চুরি Logo কামারখন্দে জামায়াত নেতার শেল্টারে এক যুবকের সাথে প্রতারণা Logo বেপরোয়া মোটরসাইকেলের ধাক্কায় দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু Logo ইসলামীপন্থী শাসনে মুসলিম-অমুসলিম সকলের জান-মাল-মর্যাদা সমানভাবে সুরক্ষিত থাকবে -পীর সাহেব চরমোনাই

কামারখন্দে জামায়াত নেতার শেল্টারে এক যুবকের সাথে প্রতারণা

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সিপাহি পদে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে সিরাজগঞ্জের এক যুবকের কাছ থেকে ২১ লাখ ৭০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র। স্থানীয়ভাবে অভিযোগ উঠেছে— চক্রটির রক্ষাকবচ হিসেবে প্রকাশ্যে ভূমিকা রাখছেন কামারখন্দ উপজেলার জামায়াত নেতা ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আতাউর রহমান।

অভিযোগ অনুযায়ী, কামারখন্দ উপজেলার জামতৈল ইউনিয়নের চরটেংরাইল গ্রামের ফিরোজ উদ্দিন, যিনি বর্তমানে সামরিক বাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে অফিস সহায়ক কাম কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে কর্মরত, এবং তার শ্যালক রাশিদুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে সরকারি চাকরি পাওয়ানোর নামে এলাকার সহজ-সরল বেকারদের টার্গেট করে আসছিলেন।

ভুক্তভোগী মো. আব্দুল মালেক জানান— ফিরোজ ও তার শ্যালক রাশিদুল কখনো ব্যাংক চেক, কখনো নগদ টাকা, কখনো আবার স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়ার মাধ্যমে নিয়মিতভাবে টাকা তুলতেন। মোট ২১ লাখ ৭০ হাজার টাকা নেওয়ার পর তারা মালেকের হাতে তুলে দেয় ভুয়া নিয়োগপত্র, ভুয়া পুলিশ ভেরিফিকেশন, ভুয়া পদায়ন আদেশ (টেকনাফ) প্রশিক্ষণে যোগ দিতে গেলে সব নথি যে জাল— তা অফিস কর্তৃপক্ষ মালেককে জানিয়ে দেন।

পরেপ্রতারিত মালেক টাকা ফেরত চাইতে গেলে শুরু হয় প্রতারণার দ্বিতীয় অধ্যায়— সালিশের নামে সময়ক্ষেপণ।
স্থানীয়ভাবে একাধিক সালিশ বৈঠক বসে, যেখানে মধ্যস্থতার দায়িত্ব নেন ফিরোজের মামা ও জামায়াত নেতা আতাউর রহমান। অভিযোগ উঠেছে— সালিশে টাকা নেওয়ার সত্যতা নিশ্চিত হওয়া সত্ত্বেও আতাউর রহমান সমস্যার সমাধান হচ্ছে বলে ১০ মাস ধরে প্রতারকদের সুরক্ষা ও সময় বর্ধনের ভূমিকা পালন করেন।

মালেক দাবি করেন সালিশের নাম করে আতাউর রহমান আসলে ফিরোজদেরই শেল্টার দেন। একবার ১০টি চেক দিলেও পরে ব্যাংক জানায়— সবগুলোর স্বাক্ষরই জাল।

এ ঘটনায় মালেক জেলা জামায়াত নেতৃত্বকেও অবহিত করলেও সেখান থেকেও কেবল “তদন্ত চলছে” বলে আশ্বাস ছাড়া কিছু পাননি।

জামায়াত নেতা আতাউর রহমান টাকা নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করলেও দোষ চাপান তার বোন-ভাগ্নের ওপর। তিনি বলেন, ভাগ্নে ফিরোজ ও বোন জামাই টাকা দিচ্ছে না। সম্পত্তি বিক্রি করে টাকার ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছি।

কামারখন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপাশা হোসাইন জানান, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সিরাজগঞ্জ জেলা জামায়াতের আমির বলেন,
অভিযোগ তদন্ত করা হচ্ছে। সত্যতা পাওয়া গেলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, এ ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ড জামায়াতের সদস্য করতে পারে না। তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

সুদানে অর্ধেকের বেশি মানুষের মানবিক সাহায্য প্রয়োজন

কামারখন্দে জামায়াত নেতার শেল্টারে এক যুবকের সাথে প্রতারণা

আপডেট সময় : ১০:১৫:৩৪ অপরাহ্ণ, শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সিপাহি পদে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে সিরাজগঞ্জের এক যুবকের কাছ থেকে ২১ লাখ ৭০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র। স্থানীয়ভাবে অভিযোগ উঠেছে— চক্রটির রক্ষাকবচ হিসেবে প্রকাশ্যে ভূমিকা রাখছেন কামারখন্দ উপজেলার জামায়াত নেতা ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আতাউর রহমান।

অভিযোগ অনুযায়ী, কামারখন্দ উপজেলার জামতৈল ইউনিয়নের চরটেংরাইল গ্রামের ফিরোজ উদ্দিন, যিনি বর্তমানে সামরিক বাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে অফিস সহায়ক কাম কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে কর্মরত, এবং তার শ্যালক রাশিদুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে সরকারি চাকরি পাওয়ানোর নামে এলাকার সহজ-সরল বেকারদের টার্গেট করে আসছিলেন।

ভুক্তভোগী মো. আব্দুল মালেক জানান— ফিরোজ ও তার শ্যালক রাশিদুল কখনো ব্যাংক চেক, কখনো নগদ টাকা, কখনো আবার স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়ার মাধ্যমে নিয়মিতভাবে টাকা তুলতেন। মোট ২১ লাখ ৭০ হাজার টাকা নেওয়ার পর তারা মালেকের হাতে তুলে দেয় ভুয়া নিয়োগপত্র, ভুয়া পুলিশ ভেরিফিকেশন, ভুয়া পদায়ন আদেশ (টেকনাফ) প্রশিক্ষণে যোগ দিতে গেলে সব নথি যে জাল— তা অফিস কর্তৃপক্ষ মালেককে জানিয়ে দেন।

পরেপ্রতারিত মালেক টাকা ফেরত চাইতে গেলে শুরু হয় প্রতারণার দ্বিতীয় অধ্যায়— সালিশের নামে সময়ক্ষেপণ।
স্থানীয়ভাবে একাধিক সালিশ বৈঠক বসে, যেখানে মধ্যস্থতার দায়িত্ব নেন ফিরোজের মামা ও জামায়াত নেতা আতাউর রহমান। অভিযোগ উঠেছে— সালিশে টাকা নেওয়ার সত্যতা নিশ্চিত হওয়া সত্ত্বেও আতাউর রহমান সমস্যার সমাধান হচ্ছে বলে ১০ মাস ধরে প্রতারকদের সুরক্ষা ও সময় বর্ধনের ভূমিকা পালন করেন।

মালেক দাবি করেন সালিশের নাম করে আতাউর রহমান আসলে ফিরোজদেরই শেল্টার দেন। একবার ১০টি চেক দিলেও পরে ব্যাংক জানায়— সবগুলোর স্বাক্ষরই জাল।

এ ঘটনায় মালেক জেলা জামায়াত নেতৃত্বকেও অবহিত করলেও সেখান থেকেও কেবল “তদন্ত চলছে” বলে আশ্বাস ছাড়া কিছু পাননি।

জামায়াত নেতা আতাউর রহমান টাকা নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করলেও দোষ চাপান তার বোন-ভাগ্নের ওপর। তিনি বলেন, ভাগ্নে ফিরোজ ও বোন জামাই টাকা দিচ্ছে না। সম্পত্তি বিক্রি করে টাকার ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছি।

কামারখন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপাশা হোসাইন জানান, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সিরাজগঞ্জ জেলা জামায়াতের আমির বলেন,
অভিযোগ তদন্ত করা হচ্ছে। সত্যতা পাওয়া গেলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, এ ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ড জামায়াতের সদস্য করতে পারে না। তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।