শিরোনাম :
Logo গোপন ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ইবি ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিল Logo জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ইবিতে মাসব্যাপী বর্ণাঢ্য কর্মসূচি Logo পলাশবাড়ীতে রাতের আধারে বিদ্যালয়ের ছাদ ঢালাই! দেখার কেউ নেই Logo শহীদ জিয়া ও তারেক রহমানকে অবমাননার ঘটনায় ইবিতে উত্তাল বিক্ষোভ Logo কচুয়ার তেগুরিয়া শিশু বিদ্যা নিকেতনে শিক্ষার্থীদের মাঝে সনদ বিতরণ ও আলোচনা সভা Logo বরগুনা জেলা নির্বাচন অফিস কার্যালয়ে অগ্নিকাণ্ড Logo সিরাজদিখানে ঢাবির নবীন শিক্ষার্থীদের ঝিকুটের সংবর্ধনা ২৫ জুলাই Logo মব সন্ত্রাস নিয়ে সমাজের আতঙ্ক ও রাষ্ট্রের নীরবতা Logo ইবিতে সাংবাদিকের ওপর হামলা, শিক্ষার্থীদের বজ্রকণ্ঠে প্রতিবাদ Logo ইবিতে খুলনা জেলা সমিতির নবীন বরণ ও প্রবীণ সম্মাননা

চুয়াডাঙ্গার মাটিতে কালো আঙুর চাষ করে বাজিমাত কলেজছাত্র শামিমের

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ১০:৪৫:৩৪ পূর্বাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫
  • ৭৪০ বার পড়া হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার:

ইউটিউবে প্রতিবেদন দেখে অনুপ্রেরিত হয়ে কালো আঙুর চাষের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করেন অনার্স তৃতীয়বর্ষের শিক্ষার্থী শামিম হোসেন। এরপর পরীক্ষামূলকভাবে ৮ কাঠা জমিতে আঙুরের চারা রোপণ করেন। এখন তার বাগানের প্রতিটি থোকায় থোকায় ঝুলছে আঙুর। ব্যাপক সাড়া পাওয়ায় এবার তিনি আড়াই বিঘা জমিতে আঙুর চারা রোপন করেছেন। দেশের মাটিতে অর্থাৎ চুয়াডাঙ্গায় আঙুর চাষ ও চারা উৎপাদন করে বাণিজ্যিকভাবে রপ্তানির স্বপ্ন দেখছেন তরুণ উদ্যোক্তা ও কলেজছাত্র শামিম হোসেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, বিদেশের মাটি ছেড়ে এখন দেশেই আঙুর চাষে ঝুঁকছেন অনেকে। এতে দেশের মানুষের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করা সম্ভব। আমরা সব উদ্যোক্তাদের পরামর্শ দিচ্ছি।

শামিম হোসেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নবগঠিত মাখালডাঙ্গা ইউনিয়নের গাড়াবাড়ীয়া গ্রামের জামাল উদ্দিনের ছেলে। তিনি দামুড়হুদার আবদুল ওয়াদুদ শাহ ডিগ্রি কলেজের অর্নাস তৃতীয়বর্ষের শিক্ষার্থী।

সরজমিনে আঙুর বাগানে গিয়ে দেখা যায়, বন্যপ্রাণী কিংবা পাখি থেকে রক্ষা পেতে চারপাশে তারকাটা, মশারি ও নেটের জাল দিয়ে আঙুর বাগান ঘেরা রয়েছে। আঙুর গাছের প্রতিটি থোকায় থোকায় আঙুর দোল খাচ্ছে।

তরুণ উদ্যোক্তা কলেজছাত্র শামিম হোসেন বলেন, একদিন ইউটিউবে হঠাৎ বিদেশি ফল কালো আঙুরের প্রতিবেদন আমার সামনে আসে। ভিডিও দেখার পর কৌতুহলবশত আঙুর চাষ করার জন্য উদ্যোগ নিলাম। এবং পরীক্ষামূলকভাবে ৮ কাটা জমিতে আঙুর চাষ শুরু করি। এতে আমি যে পরিমাণ ফলন পেয়েছি তাতে আমি নিজেকে একজন সফল উদ্যোক্তা মনে করি। এই ৮ কাটা জমিতে আঙুর চাষ করতে আমার প্রায় ২ লাখ টাকার মতো খরচ হয়েছে। যে পরিমাণ আঙুর ধরেছে তা প্রায় চার লাখ টাকার অধিক আঙুর বিক্রি করতে পারব বলে আশা করছি।

কলেজছাত্র শামিম হোসেন বলেন, আমি আরও দুই বিঘা জমি বাড়িয়েছি। বর্তমানে আঙুরের বাগান আড়াই বিঘা। গত বছর আঙুর লাগিয়েছিলাম এবং এই বছরে যথেষ্ট পরিমাণ ফল পেয়েছি। তার জন্য আমার দেখাদেখি এলাকার অনেক চাষি আমায় দেখে অনুপ্রাণিত হচ্ছে এবং তারা এই নতুন নতুন চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। অনেক চাষি আমার কাছ থেকে পরামর্শ নিচ্ছেন ও আঙুরের চারা রোপণ করছেন। আমাদের মতো উদ্যোক্তা যদি বাংলাদেশে থাকে ও সবাই যদি ঘরে ঘরে উদ্যোক্তা তৈরি হয় তাহলে আমাদের আঙুর ফল পার্শ্ববর্তী দেশগুলো থেকে আমদানি করতে হবে না।

শামিম হোসেন বলেন, এখন পর্যন্ত কৃষি অধিদপ্তর থেকে কোনো প্রকার সহযোগিতা পাইনি। কৃষি অধিদপ্তরের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, তারা যদি আমাদের এই উদ্যোগের পাশে দাঁড়ায় তাহলে ভবিষ্যতে এর থেকে আরো ভালো কিছু করতে পারব।

চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মাসুদুর রহমান সরকার বলেন, চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন উদ্যোক্তা নিজ উদ্যোগে বাইরে থেকে চারা সংগ্রহ করে এখানে বাগান তৈরি করছে। ফলনও পাচ্ছেন। আমরা অনেক বাগানে দেখেছি তার মধ্যেই একজন সফল চাষি শামীম হোসেন যিনি এখনো পর্যন্ত ছাত্র। শখের বর্ষবর্তী হয়ে তিনি প্রথম ৮ কাটা জমিতে এই বাগান তৈরি করে। সফলতা আসায় পরবর্তীতে তিনি আরও বাগান বৃদ্ধি করেছেন। আমাদের এই আঙুর চাষ চুয়াডাঙ্গা সদরের পাশাপাশি জীবননগরে ও ব্যাপকভাবে বিস্তৃতি লাভ করেছে। আমরা আশা করি এই আঙুর চাষ যদি সফল হয় তাহলে বাইরে থেকে আমাদের যে আঙুর আমদানি করতে হয় তা আমদানিকৃত অর্থ সাশ্রয় করা সম্ভব হবে এবং সেটা দেশের জন্য মঙ্গল বয়ে নিয়ে আসবে।

তিনি আরও বলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলার মাটি, আবহাওয়া আঙুর চাষের জন্য অনেকটাই উপযোগী। আমরা কৃষি অধিদপ্তর এই মুহূর্তে তাদেরকে কোনো আর্থিক কিংবা অন্য কোনো সহযোগিতা করতে পারছি না। তবে আমরা তাদের সঙ্গে আছি তাদেরকে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে আসছি।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

গোপন ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ইবি ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিল

চুয়াডাঙ্গার মাটিতে কালো আঙুর চাষ করে বাজিমাত কলেজছাত্র শামিমের

আপডেট সময় : ১০:৪৫:৩৪ পূর্বাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫

স্টাফ রিপোর্টার:

ইউটিউবে প্রতিবেদন দেখে অনুপ্রেরিত হয়ে কালো আঙুর চাষের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করেন অনার্স তৃতীয়বর্ষের শিক্ষার্থী শামিম হোসেন। এরপর পরীক্ষামূলকভাবে ৮ কাঠা জমিতে আঙুরের চারা রোপণ করেন। এখন তার বাগানের প্রতিটি থোকায় থোকায় ঝুলছে আঙুর। ব্যাপক সাড়া পাওয়ায় এবার তিনি আড়াই বিঘা জমিতে আঙুর চারা রোপন করেছেন। দেশের মাটিতে অর্থাৎ চুয়াডাঙ্গায় আঙুর চাষ ও চারা উৎপাদন করে বাণিজ্যিকভাবে রপ্তানির স্বপ্ন দেখছেন তরুণ উদ্যোক্তা ও কলেজছাত্র শামিম হোসেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, বিদেশের মাটি ছেড়ে এখন দেশেই আঙুর চাষে ঝুঁকছেন অনেকে। এতে দেশের মানুষের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করা সম্ভব। আমরা সব উদ্যোক্তাদের পরামর্শ দিচ্ছি।

শামিম হোসেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নবগঠিত মাখালডাঙ্গা ইউনিয়নের গাড়াবাড়ীয়া গ্রামের জামাল উদ্দিনের ছেলে। তিনি দামুড়হুদার আবদুল ওয়াদুদ শাহ ডিগ্রি কলেজের অর্নাস তৃতীয়বর্ষের শিক্ষার্থী।

সরজমিনে আঙুর বাগানে গিয়ে দেখা যায়, বন্যপ্রাণী কিংবা পাখি থেকে রক্ষা পেতে চারপাশে তারকাটা, মশারি ও নেটের জাল দিয়ে আঙুর বাগান ঘেরা রয়েছে। আঙুর গাছের প্রতিটি থোকায় থোকায় আঙুর দোল খাচ্ছে।

তরুণ উদ্যোক্তা কলেজছাত্র শামিম হোসেন বলেন, একদিন ইউটিউবে হঠাৎ বিদেশি ফল কালো আঙুরের প্রতিবেদন আমার সামনে আসে। ভিডিও দেখার পর কৌতুহলবশত আঙুর চাষ করার জন্য উদ্যোগ নিলাম। এবং পরীক্ষামূলকভাবে ৮ কাটা জমিতে আঙুর চাষ শুরু করি। এতে আমি যে পরিমাণ ফলন পেয়েছি তাতে আমি নিজেকে একজন সফল উদ্যোক্তা মনে করি। এই ৮ কাটা জমিতে আঙুর চাষ করতে আমার প্রায় ২ লাখ টাকার মতো খরচ হয়েছে। যে পরিমাণ আঙুর ধরেছে তা প্রায় চার লাখ টাকার অধিক আঙুর বিক্রি করতে পারব বলে আশা করছি।

কলেজছাত্র শামিম হোসেন বলেন, আমি আরও দুই বিঘা জমি বাড়িয়েছি। বর্তমানে আঙুরের বাগান আড়াই বিঘা। গত বছর আঙুর লাগিয়েছিলাম এবং এই বছরে যথেষ্ট পরিমাণ ফল পেয়েছি। তার জন্য আমার দেখাদেখি এলাকার অনেক চাষি আমায় দেখে অনুপ্রাণিত হচ্ছে এবং তারা এই নতুন নতুন চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। অনেক চাষি আমার কাছ থেকে পরামর্শ নিচ্ছেন ও আঙুরের চারা রোপণ করছেন। আমাদের মতো উদ্যোক্তা যদি বাংলাদেশে থাকে ও সবাই যদি ঘরে ঘরে উদ্যোক্তা তৈরি হয় তাহলে আমাদের আঙুর ফল পার্শ্ববর্তী দেশগুলো থেকে আমদানি করতে হবে না।

শামিম হোসেন বলেন, এখন পর্যন্ত কৃষি অধিদপ্তর থেকে কোনো প্রকার সহযোগিতা পাইনি। কৃষি অধিদপ্তরের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, তারা যদি আমাদের এই উদ্যোগের পাশে দাঁড়ায় তাহলে ভবিষ্যতে এর থেকে আরো ভালো কিছু করতে পারব।

চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মাসুদুর রহমান সরকার বলেন, চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন উদ্যোক্তা নিজ উদ্যোগে বাইরে থেকে চারা সংগ্রহ করে এখানে বাগান তৈরি করছে। ফলনও পাচ্ছেন। আমরা অনেক বাগানে দেখেছি তার মধ্যেই একজন সফল চাষি শামীম হোসেন যিনি এখনো পর্যন্ত ছাত্র। শখের বর্ষবর্তী হয়ে তিনি প্রথম ৮ কাটা জমিতে এই বাগান তৈরি করে। সফলতা আসায় পরবর্তীতে তিনি আরও বাগান বৃদ্ধি করেছেন। আমাদের এই আঙুর চাষ চুয়াডাঙ্গা সদরের পাশাপাশি জীবননগরে ও ব্যাপকভাবে বিস্তৃতি লাভ করেছে। আমরা আশা করি এই আঙুর চাষ যদি সফল হয় তাহলে বাইরে থেকে আমাদের যে আঙুর আমদানি করতে হয় তা আমদানিকৃত অর্থ সাশ্রয় করা সম্ভব হবে এবং সেটা দেশের জন্য মঙ্গল বয়ে নিয়ে আসবে।

তিনি আরও বলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলার মাটি, আবহাওয়া আঙুর চাষের জন্য অনেকটাই উপযোগী। আমরা কৃষি অধিদপ্তর এই মুহূর্তে তাদেরকে কোনো আর্থিক কিংবা অন্য কোনো সহযোগিতা করতে পারছি না। তবে আমরা তাদের সঙ্গে আছি তাদেরকে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে আসছি।