এই সুরার সূচনাতে এ কথা বলা হয়েছে যে, কোরআন নাজিলের মূল উদ্দেশ্য হলো মানুষের হেদায়েত। কোরআনের আগের আরো নবী ও কিতাব এসেছে। তার মধ্যে মুসা (সা.)-এর ঘটনা সবিস্তারে বিবৃত হয়েছে। মুসা (আ.)-এর পর নুহ, হুদ, সালেহ, লুত ও শোয়াইব (আ.) সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে। এই সুরার শেষেও কোরআন সম্পর্কে অবিশ্বাসীদের অপপ্রচারের উত্তর দেওয়া হয়েছে। সুরার শেষের দিকে সত্য পরিত্যাগ করে কল্পনার ময়দানে বিচরণকারী কবিদের সমালোচনা করা হয়েছে।
আদেশ-নিষেধ-হেদায়েত
১. মানুষের সত্যবিমুখতা মুমিনের মর্মবেদনার কারণ। (আয়াত : ২)
২. দ্বিনি কাজে আল্লাহ মুমিনের সঙ্গী হন তাঁর দয়া, অনুগ্রহ ও সাহায্যের সঙ্গে। (আয়াত : ১৫)
৩. কোনো ভালো কাজ অপর মন্দ কাজের বৈধতা দেয় না। (আয়াত : ২২)
৪. জীবন-মৃত্যু ও সুস্থতা আল্লাহর হাতে। (আয়াত : ৮০-৮১)
৫. মুমিন আল্লাহর কাজে জ্ঞান ও কর্মদক্ষতা চাইবে। (আয়াত : ৮৩)
৬. বাকপটুতাও আল্লাহর অনুগ্রহ। (৮৪-৮৫)
৭. বিপদগামী মা-বাবার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কোরো। (আয়াত : ৮৬)
৮. অন্তরের বিশুদ্ধতা পরকালের পাথেয় ও মুক্তির উপায়। (আয়াত : ৮৮-৮৯)
৯. মানুষকে দূরে সরিয়ে দেওয়া মুমিনের কাজ নয়। (আয়াত : ১১৪-১১৫)
১০. দ্বিন প্রত্যাখ্যানের শাস্তি ধ্বংস। (আয়াত : ১৩৯)
১১. সমকামিতা জঘণ্যতম পাপ। যা সমাজ ও সভ্যতার জন্য ধ্বংস ডেকে আনে। (আয়াত : ১৬৬)
১২. মাপে কম দিয়ো না এবং ত্রুটিপূর্ণ দাড়িপাল্লা ব্যবহার কোরো না। (আয়াত : ১৮১-১৮২)
১৩. নিজ পরিবারকে দ্বিনের ব্যাপারে সতর্ক করা আবশ্যক। (আয়াত : ২১৪)
১৪. মুমিনদের প্রতি বিনয়ী হও। (আয়াত : ২১৫)
সুরা নামল
এই সুরায় অন্যান্য মাক্কি সুরার মতো ইসলামের মৌলিক বিশ্বাস তাওহিদ, রিসালাত ও আখিরাত সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে। মুসা, দাউদ, সুলায়মান, সালেহ ও লুত (আ.)-এর জীবনের আশ্চর্য ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে। নবীরা কিভাবে নিজ নিজ উম্মত থেকে নিপীড়নের শিকার হয়েছে, সে বিষয়ে তুলে ধরা হয়েছে। দাউদ ও সুলায়মান (আ.)-এর ওপর মহান আল্লাহ কত কত নিয়ামত দিয়েছেন, তার একটি বিবরণ রয়েছে এখানে। নবুয়ত ও রাজত্ব কিভাবে একসঙ্গে চলতে পারে, তার একটি চিত্র এই সুরায় তুলে ধরা হয়েছে। সুলায়মান (আ.)-এর অধীনে কিভাবে মানুষ, জিন ও পাখি কাজ করেছেন, তার খণ্ডচিত্র এই সুরায় তুলে ধরা হয়েছে। বর্ণনা করা হয়েছে রানি বিলকিসের কথাও। কোরআন নাজিলের উদ্দেশ্য বর্ণনার মধ্য দিয়ে সুরা শেষ হয়েছে।
আদেশ-নিষেধ-হেদায়েত
১. অবিশ্বাসীরাই পার্থিব জীবনকে প্রাধান্য দেয়। (আয়াত : ৪)
২. মন্দ কাজের প্রতিবিধানে ভালো কাজ কোরো। (আয়াত : ১১)
৩. আল্লাহর নিদর্শন প্রত্যাখ্যান কোরো না। (সুরা নামল, আয়াত : ১৪)
৪. জ্ঞান শ্রেষ্ঠত্ব লাভের উপায়। (আয়াত : ১৫)
৫. চিঠিপত্রের শুরুতে বিসমিল্লাহ লেখা মুসলমানের নিয়ম। (আয়াত : ২৯-৩০)
৬. জাতীয় সংকটে পরামর্শ কোরো। (আয়াত : ৩২)
৭. নির্বাহী ক্ষমতার অধিকারী ব্যক্তিই কোনো জাতীয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন। (আয়াত : ৩৩)
৮. যুদ্ধ মুসলমানের কাম্য নয়। কেননা তা জনজীবন বিপর্যস্ত করে। (আয়াত : ৩৪)
৯. যুদ্ধের সময় বীরত্ব প্রদর্শন কোরো। (আয়াত : ৩৭)
১০. নবী-রাসুলদের প্রতি সালাম পাঠ কোরো। (আয়াত : ৫৯)
১১. অন্তরের গোপন কথাও আল্লাহ জানেন। (আয়াত : ৭৪)
১২. নেক আমল কিয়ামতের ভয় দূর করবে। (আয়াত : ৮৯)
১৩. আল্লাহর অনুগত হও। (আয়াত : ৯১)