শিরোনাম :
Logo বিএসএফের হাতে আটক বাংলাদেশী কিশোরকে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বিজিবির নিকট হস্তান্তর Logo ব্যানসন গ্ৰুপের কোনো ঘরবাড়ি থাকবে না; রাবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক রাহী Logo নতুন পোপ নির্বাচিত হবে যেভাবে Logo শুল্কযুদ্ধ থামাতে যুক্তরাষ্ট্রকে যে বার্তা দিলো চীন Logo পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক Logo পারভেজ হত্যার বিচারের দাবিতে ইবি ছাত্রদলের মানববন্ধন Logo পঞ্চগড়ে ট্রাক মেরামতের সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মেকানিক নিহত, আহত সহকারী Logo সড়ক অবকাঠামো উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে চাঁদপুর সওজ বিভাগ Logo জাবিতে বটতলাসহ ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলো ওয়াশরুম স্থাপনের দাবি লাল সবুজের Logo যবিপ্রবিতে সক্রিয় তেল চুরির সিন্ডিকেট, হাতেনাতে ধরা

কাঠগড়ায় দোয়া পড়তে থাকেন আরাফাত সানী !

  • amzad khan
  • আপডেট সময় : ০১:৫৮:০২ অপরাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ১৬ মার্চ ২০১৭
  • ৭৪৬ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক:

টানা ৫৩ দিন কারাগারে আটক থাকার পর মুক্ত হতে যাচ্ছেন জাতীয় দলের ক্রিকেটার আরাফাত সানী।
গতকাল বুধবার তথ্যপ্রযুক্তি আইনে দায়ের করা মামলায় সানীকে  জামিন দেন আদালত। জামিন পাওয়ায় সানীর মুক্তিতে বাঁধা কাটল। বাংলাদেশ সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. সাইফুল ইসলাম ৫০ হাজার টাকা মুচলেকায় আরাফাত সানীর জামিন মঞ্জুর করেন। আর এর মাধ্যমে দীর্ঘদিনের কারাভোগের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে যাচ্ছেন সানী।

সানীর বিরুদ্ধে তিনটি মামলা দায়ের করেছেন তার স্ত্রী দাবিদার নাসরিন সুলতানা। মামলাগুলোর মধ্যে যৌতুক আইনের ৪ ধারায় একটি মামলায় সানীকে ৫ এপ্রিলের মধ্যে আদালতে হাজির হতে সমন জারির আদেশ রয়েছে। আর গত ৯ মার্চ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে দায়ের করা আরেক মামলায় এক মাসের জামিন পান সানী। তবে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মামলায় কারাগারে আটক থাকায় কারামুক্ত হতে পারেননি সানী। এই মামলায় জামিন পাওয়ায় তার কারামুক্তিতে আর কোনো  বাঁধা নেই।

তবে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মামলায় সানীর জামিন নাকচ করে দেন বাংলাদেশ সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনাল। ওই মামলায় একই আদালতে আজও সানীর জামিন শুনানি করেন তার আইনজীবী। তবে এ সময় তাকে আনেকটাই চিন্তিত দেখা যাচ্ছিল। সানীর পক্ষে কাজী নজিবুল্লাহ হিরু শুনানি করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, উভয়পক্ষের পরিবারের মধ্যে সমঝোতা হয়ে গেছে। এই মামলায় জামিন দিলে বাদীর আপত্তি নেই। ইতিমধ্যে সানী মহানগর দায়রা জজ আদালত থেকে একটি মামলায় জামিন পেয়েছে। তাই আমরা সানীর জামিন প্রার্থনা করছি।

এ সময় নাসরিন সুলতানা আদালতে হাজির ছিলেন। তবে তার পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। এ সময় বিচারক নাসরিনকে জিজ্ঞাসা করেন, জামিনে আপত্তি আছে কি না? নাসরিন বিচারককে বলেন, জামিন দিলে আমার কোনো আপত্তি নেই। সে (আরাফাত সানী) আমাকে নিয়ে সংসার করতে চাচ্ছে। সংসার করতে তার আপত্তি নেই। আমাকে সে মেনে নিয়েছে। তা ছাড়া পারিবারিকভাবে মিমাংসা হয়েছে। এ অবস্থায় জামিন দিলে আমার কোনো আপত্তি নেই। এরপর বিচারক আরাফাত সানীকে ৫০ হাজার টাকা মুচলেকায় জামিন দেন।

জামিন শুনানিকালে আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে দোয়া পড়তে থাকেন সানী। তবে নাসরিন সুলতানা আর সানীর মধ্যে মিমাংসা নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি করছেন উভয়পক্ষ। নাসরিন বলছেন সানী তাকে নিয়ে সংসার করতে চাচ্ছেন। তবে সানীর ভগ্নিপতি আবু সাঈদ ঈসরাফিল বলছেন, নাসরিন তার ভুল বুঝতে পেরেছেন। এজন্য সে আর জামিনের বিরোধিতা করছে না। নাসরিন স্ত্রীর দাবি চাই এমন প্রশ্নের জবাবে আবু সাঈদ বলেন, এটা আমরা জানি না। সানী কারাগারে রয়েছে। কারাগার থেকে বের হলে এ বিষয়ে কথা হবে। বিয়ের বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি। কারণ হিসেবে নাসরিনের কাবিননামাকে ভুয়া বলে উল্লেখ করেন।

তবে নাসরিন যে মামলাগুলো করছে, সেগুলো মিথ্যা বলে দাবি করেছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা কোনো ব্যবস্থা নিব না।

নাসরিন সুলতানা গত ৫ জানুয়ারি সানীর বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় তথ্যপ্রযুক্তি আইনে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় গত ২২ জানুয়ারি সানীকে ঢাকার সাভার থানাধীন আমিনবাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওইদিন তার এক দিনের রিমান্ডও মঞ্জুর করেন আদালত। ২৪ জানুয়ারি রিমান্ড শেষে সানীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। এরপর থেকে কারাগারে আছেন সানী।

এদিকে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মামলায় রিমান্ড চলাকালে সানীর বিরুদ্ধে ২৩ জানুয়ারি যৌতুক আইনের ৪ ধারায় আরেকটি মামলা করেন নাসরিন সুলতানা। ওই মামলায় সানীকে আগামী ৫ এপ্রিলের মধ্যে আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেছেন আদালত।

এরপর গত ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকার ৪ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এস এম রেজানুর রহমানের আদালতে আরো একটি মামলা করে নাসরিন সুলতানা। ওই দিন আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণের পর মামলার অভিযোগ মোহাম্মাদপুর থানাকে তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। গত ৮ ফেব্রুয়ারি মোহাম্মদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জামাল উদ্দীন মীর মামলাটি এজাহার হিসেবে রেকর্ড করে ঢাকার মুখ্য মহানগর আদালতে (সিএমএম) নথি পাঠান। এরপর আদালত মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। এ মামলায় সানীর মা নার্গিস আক্তার আসামি।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

বিএসএফের হাতে আটক বাংলাদেশী কিশোরকে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বিজিবির নিকট হস্তান্তর

কাঠগড়ায় দোয়া পড়তে থাকেন আরাফাত সানী !

আপডেট সময় : ০১:৫৮:০২ অপরাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ১৬ মার্চ ২০১৭

নিউজ ডেস্ক:

টানা ৫৩ দিন কারাগারে আটক থাকার পর মুক্ত হতে যাচ্ছেন জাতীয় দলের ক্রিকেটার আরাফাত সানী।
গতকাল বুধবার তথ্যপ্রযুক্তি আইনে দায়ের করা মামলায় সানীকে  জামিন দেন আদালত। জামিন পাওয়ায় সানীর মুক্তিতে বাঁধা কাটল। বাংলাদেশ সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. সাইফুল ইসলাম ৫০ হাজার টাকা মুচলেকায় আরাফাত সানীর জামিন মঞ্জুর করেন। আর এর মাধ্যমে দীর্ঘদিনের কারাভোগের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে যাচ্ছেন সানী।

সানীর বিরুদ্ধে তিনটি মামলা দায়ের করেছেন তার স্ত্রী দাবিদার নাসরিন সুলতানা। মামলাগুলোর মধ্যে যৌতুক আইনের ৪ ধারায় একটি মামলায় সানীকে ৫ এপ্রিলের মধ্যে আদালতে হাজির হতে সমন জারির আদেশ রয়েছে। আর গত ৯ মার্চ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে দায়ের করা আরেক মামলায় এক মাসের জামিন পান সানী। তবে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মামলায় কারাগারে আটক থাকায় কারামুক্ত হতে পারেননি সানী। এই মামলায় জামিন পাওয়ায় তার কারামুক্তিতে আর কোনো  বাঁধা নেই।

তবে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মামলায় সানীর জামিন নাকচ করে দেন বাংলাদেশ সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনাল। ওই মামলায় একই আদালতে আজও সানীর জামিন শুনানি করেন তার আইনজীবী। তবে এ সময় তাকে আনেকটাই চিন্তিত দেখা যাচ্ছিল। সানীর পক্ষে কাজী নজিবুল্লাহ হিরু শুনানি করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, উভয়পক্ষের পরিবারের মধ্যে সমঝোতা হয়ে গেছে। এই মামলায় জামিন দিলে বাদীর আপত্তি নেই। ইতিমধ্যে সানী মহানগর দায়রা জজ আদালত থেকে একটি মামলায় জামিন পেয়েছে। তাই আমরা সানীর জামিন প্রার্থনা করছি।

এ সময় নাসরিন সুলতানা আদালতে হাজির ছিলেন। তবে তার পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। এ সময় বিচারক নাসরিনকে জিজ্ঞাসা করেন, জামিনে আপত্তি আছে কি না? নাসরিন বিচারককে বলেন, জামিন দিলে আমার কোনো আপত্তি নেই। সে (আরাফাত সানী) আমাকে নিয়ে সংসার করতে চাচ্ছে। সংসার করতে তার আপত্তি নেই। আমাকে সে মেনে নিয়েছে। তা ছাড়া পারিবারিকভাবে মিমাংসা হয়েছে। এ অবস্থায় জামিন দিলে আমার কোনো আপত্তি নেই। এরপর বিচারক আরাফাত সানীকে ৫০ হাজার টাকা মুচলেকায় জামিন দেন।

জামিন শুনানিকালে আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে দোয়া পড়তে থাকেন সানী। তবে নাসরিন সুলতানা আর সানীর মধ্যে মিমাংসা নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি করছেন উভয়পক্ষ। নাসরিন বলছেন সানী তাকে নিয়ে সংসার করতে চাচ্ছেন। তবে সানীর ভগ্নিপতি আবু সাঈদ ঈসরাফিল বলছেন, নাসরিন তার ভুল বুঝতে পেরেছেন। এজন্য সে আর জামিনের বিরোধিতা করছে না। নাসরিন স্ত্রীর দাবি চাই এমন প্রশ্নের জবাবে আবু সাঈদ বলেন, এটা আমরা জানি না। সানী কারাগারে রয়েছে। কারাগার থেকে বের হলে এ বিষয়ে কথা হবে। বিয়ের বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি। কারণ হিসেবে নাসরিনের কাবিননামাকে ভুয়া বলে উল্লেখ করেন।

তবে নাসরিন যে মামলাগুলো করছে, সেগুলো মিথ্যা বলে দাবি করেছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা কোনো ব্যবস্থা নিব না।

নাসরিন সুলতানা গত ৫ জানুয়ারি সানীর বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় তথ্যপ্রযুক্তি আইনে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় গত ২২ জানুয়ারি সানীকে ঢাকার সাভার থানাধীন আমিনবাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওইদিন তার এক দিনের রিমান্ডও মঞ্জুর করেন আদালত। ২৪ জানুয়ারি রিমান্ড শেষে সানীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। এরপর থেকে কারাগারে আছেন সানী।

এদিকে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মামলায় রিমান্ড চলাকালে সানীর বিরুদ্ধে ২৩ জানুয়ারি যৌতুক আইনের ৪ ধারায় আরেকটি মামলা করেন নাসরিন সুলতানা। ওই মামলায় সানীকে আগামী ৫ এপ্রিলের মধ্যে আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেছেন আদালত।

এরপর গত ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকার ৪ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এস এম রেজানুর রহমানের আদালতে আরো একটি মামলা করে নাসরিন সুলতানা। ওই দিন আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণের পর মামলার অভিযোগ মোহাম্মাদপুর থানাকে তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। গত ৮ ফেব্রুয়ারি মোহাম্মদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জামাল উদ্দীন মীর মামলাটি এজাহার হিসেবে রেকর্ড করে ঢাকার মুখ্য মহানগর আদালতে (সিএমএম) নথি পাঠান। এরপর আদালত মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। এ মামলায় সানীর মা নার্গিস আক্তার আসামি।